একজন সৎ পরিশ্রমি ও ন্যায়বান এবং একজন সফল বাবা, আমার বাবা, আমার জীবনের আইডল। তার গল্প,,,,,,,,, 🌹🌹
"" সবার দৃষ্টি আকর্ষন করছি ""
🌷বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম 🌷
🌹আসসালামু আলাইকুম।
রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতু 🌹
আমি সর্বপ্রথম শুকরিয়া জ্ঞাপন করছি। মহান রব্বুল আলামীনের প্রতি। যিনি এই বিশ্ব জগতের মালিক যিনি মহান করুণাময় ও দয়াময় রিজিকদাতা,
,যিনি আমাকে আমার পরিবারের সকলকে এই মহামারী তাণ্ডবের ভিতরে ভালো রেখেছেন সুস্থ রেখেছেন আলহামদুলিল্লাহি।
দরুদ ও সালাম পেরন করছি।মানবতার দূত নূরের আলো আলোকিত করেছে দিশেহারা পথ প্রদর্শক "হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম" এর প্রতি।
💖আমি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি আমার জন্মদাতা পিতা মাতার প্রতি যারা আদর যত্ন ভালোবাসা দিয়ে অক্লান্ত কষ্ট করে আমাকে লালন পালন করেছে।
আমি আমার বাবা মাকে অনেক ভালোবাসি।
💞আমি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি। আমাদের প্রিয় শিক্ষক মেন্টর লাখো তরুণ তরুণীর স্বপ্ন জাগ্রত দিশেহারা মানুষের পথ প্রদর্শক হতাশাগ্রস্ত মানুষের আশার আলো জনাব ইকবাল বাহার জাহিদ স্যারের প্রতি। যিনি অক্লান্ত পরিশ্রম করে আমাদের জন্য নিজের বলার মত একটা গল্প ফাউন্ডেশন আমাদের হাতে তুলে দিয়েছেন। 🌏
🌹আজ আমি লিখবো একজন সৎ পরিশ্রমি ও ন্যায়বান এবং একজন সফল বাবা, আমার বাবা, আমার জীবনের আইডল। তার গল্প,,,,,,,,, 🌹
🏠 ষাট দশকের কথা,, আমার দাদার ছিল তিন ছেলে ও এক মেয়ে। বড় চাচা, ফুপু ও মেজ চাচার পর জন্ম হয় বাবার। বাবার বয়স যখন আড়াই বছর, তখন হঠাৎ জর হয়ে আমার দাদী মারা যায়। তখন বড় চাচার (১২) ফুপুর (৮) এবং মেজ চাচার (৫) বছর। কথায় বলে বড়বোন মায়ের সমান। সেই আট বছর বয়সী ফুপু কোলে পিঠে করে লালন-পালন করেন বাবাকে। এভাবে কিছুদিন ভালোই যাচ্ছিলো।হঠাৎ দাদা ২য় বিয়ে করেন,, শুরু হয় চার ভাই - বোনের এক দূর্বিষহ জীবন। সৎমার শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হন তারা। আর্থিকভাবে সচ্ছল থাকলেও এই মায়ের নির্যাতনের জন্য ফুপু ছোট দুই ভাইকে নিয়ে মামা বাড়ীতেই বেশী থাকেন।দাদা তাদের জন্য কিছু করতে চাইলেও পারতেন না। এরপর দাদার ২য় ঘরে জন্ম হয় একে একে আরও ৩ ছেলে। তাদের সবকাজও ফুপুকে দিয়ে করাতো, দাদাী তার ছেলেদের লুকিয়ে লুকিয়ে খাওয়াতো কিন্তু এদের কয় ভাই বোনকে ঠিকভাবে খেতেও দিতোনা। বাবা খাবারের জন্য কান্না করতো, ফুপু নিজে না খেয়ে বাবাকে খাবার দিতো। ফুপু মামাবাড়ি থেকে তাদের বিভিন্ন কাজ করে দিতেন এবং দুই ভাইকে পড়ালেখা করাতেন। বাবা ও মেজ চাচা একটু বড় হলে তারাও পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন কাজ করতেন। হঠাৎ ফুফুকে তার মামা এক বিবাহিত লোকের সাথে বিয়ে দিয়ে দেন। ঐ লোকের বউ বাচ্চা থাকা সত্ত্বেও। সেখানেও ফুফুকে বিভিন্নভাবে নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে। মা নেই বাবা থেকেও নেই কার কাছে অভিযোগ করবে সব মেনে নিয়েছে।
🏠 বড়ো চাচা ছোট ভাই- বোনের জন্য কিছুই করেনি,সে শুধু নিজেকে নিয়ে ভাবতো। এরপর বড়ো চাচা বিয়ে করে এবং বরিশালে একটা চানাচুরের কারখানা দেয় সেখানে বাবা ও মেজ চাচাকে দিনরাত খাটায় টাকাতো দিতোই না, দুমুঠো ভাতও ঠিকভাবে খেতে দিতোনা বড় চাচী।মাঝে মাঝে বাড়িতে গেলেও দাদা তাদের সেখানে থাকতে দিতোনা কতরাত মসজিদে ও রাস্তায় ইট মাথার নিচে দিয়ে ঘুমিয়েছে। কাজের ফাঁকে ফাঁকে যদি তারা একটু বই পরতো সেটা দেখলেও বড়চাচা মারতো এভাবে লুকিয়ে লুকিয়ে পড়ে স্কুলে গিয়ে পরীক্ষা দিয়ে আসতো। মেজ চাচা এস এস সি পরীক্ষা দিয়ে ঢাকা চলে যায়। বাবা তখন একটা দোকানে কাজ নেয় এবং পাশাপাশি পড়ালেখা করে। এভাবে এস এস সি পরীক্ষা দেয়। এরপর অফসোনিন কোম্পানিতে ২৫০ টাকা বেতনে চাকরি পায়। শুরু হয় আর এক জীবন, চাকরির পাশাপাশি মেকানিক্যাল এ ডিপ্লোমা করে। এরপর প্রোমোশন হয়ে যায় বাবার। ফুপু বাবাকে বিয়ে করিয়ে দেয়, বাবা মাকে নিয়ে বাসা ভাড়া করে বরিশালে থাকে, তার দুই বছর পর আমার জন্ম হয়। এরপর বাবা বাড়িতে গিয়ে থাকে । বাড়ি থেকে বরিশালের দূরত্ব (১৩-১৪) কিলোমিটার, এতদূর সাইকেল চালিয়ে প্রতিদিন অফিস করতো। এরমধ্যে ফুফা মারা যায় এবং ফুফুকে তার দুই মেয়ে ও এক ছেলে সহ বাড়ি থেকে বের করে দেয় তার সতিনের ছেলে মেয়েরা। ফুফু এসে বাবার কাছে উঠে, বাবা তাদের ভরন পোষণের দায়িত্ব নেয় এবং যে সঞ্চয়টুকু ছিল বাবার তা দিয়ে ফুফুকে একটা চানাচুরের কারখানা দিয়ে দেয় এবং ফুপুর বড় মেয়েকে বিয়ে দিয়ে দেয়,। তখন আমার এক ভাইয়ের জন্ম হয় দুই বছর বয়সে সেই ভাইটি পানিতে পরে মারা যায়। এরপর আর এক ভাইয়ের জন্ম হয়। দাদা একদিন আমার মাকে ডেকে বলে তোমার শাশুড়ী যখন মারা যায় তখন ( বাবার) কথা বলে ওকে দেখে রাখতে বলছিল। আমিতো পারিনি। এখন তুমি কি চাও আমার কাছে। মা বলছিলো কিছুই লাগবেনা শুধু আপনি আমাদের দোয়া করেন তাতেই হবে। তখন দাদা অনেক দোয়া করছিল আমার বাবা মাকে। ১৯৯৬ সালে দাদাও মারা যান তারপর থেকে দাদাী ও তার ছেলেদের সব দায়িত্ব নেয় বাবা। দাদাী মারা যান ২০১৫ সালে, তার ছেলেদের চাকরি দিয়ে দেন বাবা। তাদেরকে অনেক ভালোবাসেন আমার বাবা মা, কিন্তু এখনও তারা আমাদের ভালো চোখে দেখে না।
কিন্তু আল্লাহ আমার বাবাকে অনেক ভালো রাখছেন। তার সততা, পরিশ্রম, ও বিনয়ী হওয়ার জন্য।
🧕আমার পরিচয় 🧕
🌻 আমি, শাহিদা কবির,
জেলা বরিশাল, উপজেলা বাকেরগঞ্জ। আমার বাবা একজন ডিপ্লোমা ইন্জিনিয়ার মা গৃহিনী। আমরা এক ভাই ও দুই বোন আমি সবার বড়ো।
🌷 আমার জন্ম 🌷
১৯৮৯ সালে আমার জন্ম। আমার জন্মের পর বাবা তার হারানো মাকে ফিরে পেয়েছিল। কারন মায়ের আদর কি জিনিস তার মনে নেই। সেই থেকে আমাকে মা ডাকে এবং আমিও আমার বাবাকে অনেক ভালোবাসি।
🌱 শৈশব ও স্কুল জীবন 🌱
শৈশবে আমি খুবই দুরন্ত ছিলাম এবং পড়ালেখায় খুব ফাঁকিবাজি ছিলাম। তুলাতলী নদীর পাড়ে আমাদের বাড়ি, নৌকায় চড়া, হৈ হুল্লোড় করা ও খেলাধুলায় বেশি মগ্ন থাকতাম। ৪ বছরেই স্কুলে ভর্তি করে দেয় আমাকে। বাড়িতে সব সময় প্রাইভেট টিচার থাকতো কিন্তু টিচার আসলেই লুকিয়ে পরতাম পরবোনা তাই। এই ফাঁকিবাজির কারণে দুই বার এস এস সি পরীক্ষা দিতে হয়েছে। বাবা মার নিরলস প্রচেষ্টায় এস এস সি কমপ্লিট হয়েছে।
✏️ কলেজ ও ভার্সিটি জীবন 📝
ইন্টারে ভর্তি হলাম, বাকেরগঞ্জ ইসলামিয়া মহিলা কলেজে। এটা ছিল বাবার ফুফাতো ভাইদের প্রতিষ্ঠীত কলেজ।। ইন্টার থেকেই পড়াশোনায় মনোযোগী হই এবং 4.00 পেয়ে পাস করি।এরপর ভর্তি হই বরিশাল বি. এম কলেজে, ইতিহাস বিভাগে। অনার্সে 2nd ক্লাস পাই।
👩❤️👨বিবাহিত জীবন 👩❤️👨
অনার্স শেষ হওয়ার পর আমার বিয়ে হয়ে যায়। এবং বিয়ের পরে Master’s করি ফাস্ট ক্লাস পাই। এরপর কিছুদিন একটা কলেজে শিক্ষকতা করি । আমার বর খুব ভালো মনের মানুষ, সে ঢাকা কবি নজরুল থেকে রাস্ট্রবিজ্ঞানে অনার্স Master’s করে একটা প্রাইভেট কোম্পানিতে এজিএম হিসেবে কর্মরত আছে । সে আমাকে চাকরি বা ব্যাবসার জন্য সব সময় উৎসাহ দেয়।
🌹 প্রিয় প্লাটফর্মে যুক্ত 🌹
আমি সবসময় নারী উদ্দোক্তাদের ভিডিও দেখতাম। এবংকিভাবে শুরু করবো তাই চিন্তা করতাম। তাই একটি প্রতিষ্ঠান থেকে ব্লক, বাটিকের কোর্স করি কিন্তু বিজনেস কিভাবে শুরু করবো বুজতে পারছিলাম না। হঠাৎ একদিন প্রিয় স্যারের একটা ভিডিও চোখে পরলো এবং ভিষণ ভালো লাগলো সাথে সাথে আমার বরকে বলি এখানে আমাকে রেজিষ্ট্রেশন করে দিতে ও লিংকে ঢুকে রেজিষ্ট্রেশন করে দিলো। কিন্তু রেজিষ্ট্রেশন হয়েছে কিনা তা কিভাবে বুঝবো তখন বরগুনার খোকন গাজী ভাই ও মাসুদ রানা ভাই আমাকে সাহায্য করলো এবং বললো আপনার রেজিষ্ট্রেশন হয়ে গেছে ১৫ তম ব্যাচ। সেই থেকে প্রিয় প্লাটফর্ম এ লেগে আছি।আলহামদুলিল্লাহ শুরু করেছি এবং প্রিয় প্লাটফর্ম থেকে প্রতিনিয়ত শিখছি।
সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন আমি যেন আমার বাবার জন্য কিছু করতে পারি এবং আমার হাজবেনড এর পাশে দাঁড়াতে পারি।
এতক্ষন যারা আমার গল্পটি ধৈর্য ধরে পড়ছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
আমার লেখায় যদি কোন ভূল হয়ে থাকে, ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
📌"স্ট্যাটাস অব দ্যা ডে"- ৭৬৮
Date:- ২১/০৩/২০২২ইং
শাহিদা কবির
জেলা, বরিশাল
বর্তমানে,মিরপুর ঢাকা
ব্যাচ ১৫
রেজিষ্ট্রেশন ৬৭৭৭৭