ছোট বেলা থেকেই সব কিছুতেই আমার খুব আগ্রহ ছিলো বিভিন্ন ডিজাইনের হাতের কাজ সেলাই ,কাটিং ,ব্লক ,বাটিক, কারচুপি, জারদৌসি,
⛪বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
❤️আসসালামু আলাইকুম
ওয়ারহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ❤️
সকল প্রসংশা সৃষ্টিকর্তা মহান রাব্বুল আলামিনের প্রতি যিনি আমাকে আশরাফুল মাখলুকাত হিসেবে সৃষ্টি করেছেন ও সুস্থ রেখেছেন।
👉দুরুদ ও সালাম প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সঃ) প্রতি। যিনি পৃথিবীতে এসেছিলেন সমস্ত মানবজাতির মুক্তি ও কল্যাণের দূত হিসেবে।
👉শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি প্রিয় বাবা-মাকে। যাদের উছিলায় সুন্দর এই পৃথিবীতে এসেছি। বড় হয়েছি তাদের অকৃত্রিম ভালোবাসায়। যাদের ঋণ কখনো শোধ হবার নয়।
👉কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি আমাদের সকলের প্রিয় মেন্টর #Iqbal_Bahar_Zahid স্যারের প্রতি। যার অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে আমরা পেয়েছি এই ভালবাসার প্লাটফর্ম । যিনি আমাদের শিক্ষক, মোটিভেশনাল স্পিকার, লক্ষ তরুণ-তরণীর হৃদয়ের স্পন্দন, পথহারা বেকারদের পথের দিশারি।
আমাদের সবার অভিভাবক প্রিয় মেন্টর
জনাব ইকবাল বাহার জাহিদ স্যার। স্যার এর প্রতি কৃতজ্ঞতার শেষ নেই,, যতই বলি শেষ হবে না কি অসাধারণ মেন্টালিটি আর ধৈর্য থাকলে একটা মানুষ এত গুলো মানুষের দায়িত্ব নিতে পারেন, তাদের ভবিষৎ জীবনকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য দিকনির্দেশনা দিতে পারেন স্যার কে না দেখলে বুঝতামই না। শুধু মাএ দিকনির্দেশনা নয়, স্যার সার্বিক ভাবে আমাদেরকে দক্ষ করে তুলতে দিনরাত সার্বক্ষনিক কাজ করে যাচ্ছেন। আমি সত্যি খুব ভাগ্যবান এমন মহৎ এবং দয়ালু মানুষের সান্নিধ্যে আসার সুযোগ পেয়েছি বলে এবং পেয়েছি অগনিত ভাই ও বোন ।
🌹আমার পরিচয়
আমার পরিচয় দেয়ার আগে আমার বাবা মায়ের কথা না বললেই নয়। আমার বাবা ছিলেন সরকারি প্রাইমারী স্কুলের প্রধান শিক্ষক। মা ছিলেন গৃহিণী অসম্ভব ভালো মানুষ ছিলেন ।আমি আমার বাবা ও মাকে নিয়ে গর্ব করি এমন দুজন ভালো মানুষের সন্তান হিসেবে জন্ম নিয়ে। শিক্ষক হিসেবে আমার বাবা ছিলেন একজন আদর্শ শিক্ষক।আমার মা গত ২০১৯ সালে রমজান মাসে আমাদের এতিম করে এই দুনিয়ার মায়া কাটিয়ে চলে গেছেন ওপারে। আমার মায়ের জন্য সবাই দোয়া করবেন। আমরা তিন ভাই বোন দুই বোন এক ভাই আমি সবার বড়। আমার বাবা আমাদের খুব ভালবাসেন। বাবার জন্য সবাই দোয়া করবেন যতদিন বেঁচে থাকেন যেন সুস্থ থাকেন।
🌹আমার শিক্ষা ও বিবাহিত জীবন
পড়াশুনোয় বরাবরই ভালো ছিলাম। আমার স্কুল ছিল আমার বাসা থেকে ৩ কিলোমিটার দূরত্বে। প্রতিদিন হেটে যেতাম। স্কুল শেষ করে কলেজ। আমার স্কুল ও কলেজ ছিলো বরগুনা জেলাতেই।
ক্লাস টেনে উঠার পরই আমার বিয়ে হয়ে যায়। এর পর এস এস সি এবং এইচ এস সি পাশ করার পড়ে আমার (একমাত্র সন্তান) ছেলের জন্ম হয়। এরপর স্বামী সন্তান সংসার সব কিছুর দায়িত্ব কর্তব্য করতে গিয়ে পড়াশুনা শেষ করা হয়নি বিয়ের আগে ও পরবর্তী সময়ে আমার জীবন চলার পথ খুব বেশি আলাদা ছিলোনা। আমার হাসবেন্ড ছিলো খুবই ভালো মনের একজন মানুষ এবং তার মনমানসিকতা খুবই ভালো হওয়ার কারনে খুবই ভালো ভাবে দিন কাটতে লাগলো। আমি সব সময়ই ভাবতাম বিয়ের পড়ে একটা মেয়ে পরের অধীন হয়ে যায়। কিন্তু আমার জীবনটা ছিলো সম্পূর্ন আলাদা প্রচন্ড ভালোবাসা এবং শ্রদ্ধা ছিলো আমাদের সংসারে।
👉সবকিছু মিলিয়ে কোটি টাকার সম্পদ না থাকলেও কোটি টাকার সুখ ছিলো। সব ভালোভাবেই চলতে লাগলো। আমার স্বামী খুব ভালো একটা কোম্পানিতে চাকরি করতো। পড়ে ২০০৫ সালে এস এস প্রিন্স কার্গো সিস্টেম নামে ঢাকা এয়ারপোর্ট ও আইসিডি ,মংলা পোর্ট ,চট্রগ্রাম পোর্ট সি এন্ড এফ লাইসেন্স করে চাকরি এবং ব্যাবসা দুটোতেই খুবই সফল ছিলো। আমাকে সবসময় ব্যাবসায়িক কাজ শিখাতে চাইতো। কিন্তু আমি ছিলাম নাছরবান্দা ।মনে হতো ব্যাবসায়িক কাজ শিখে আমি কি করবো। আমার কোনো আগ্রহই ছিলো না আমি ছেলে স্বামী সংসার নিয়ে খুবই সুখী ছিলাম, এটাই ছিলো আমার জগত। ছেলে একটু বড় হলো ওর ইংরেজির প্রতি অনেক আগ্রহ ছিলো। তাই ওকে একটা ইংলিশ মিডিয়ামে ভর্তি করালাম। ক্লাস ফাইভের পড়ে আবার সিক্স এ বাংলা মিডিয়ামে ভর্তি করাই কারন ওকে আমিই পড়াতাম তাই ও কি পড়ছে সেটা যেনো আমি ঠিকমত পরাতে এবং বুজাতে পারি এর কারন আমি তো বাংলা মিডিয়ামে পড়েছি তাই।
___২০১o সালের ২৩শে আগস্ট মাস, আমার ছেলে মাত্র ক্লাস সিক্স এ পড়ে হঠাৎ আমার সুখের মধ্যে একটা ভয়ংকর বিপদ ঘনিয়ে আসল। আমার জীবন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হলো । আমার জীবন কালো মেঘে ডেকে গেলো, এক মুহুর্তে সব শেষ হয়ে গেলো। আমার প্রিয় স্বামীর এক্সিডেন্ট এবং তার মৃত্যু। ব্যাবসায়িক কাজে চিটাগাং যাওয়ার পথে ফৌজদারহাটে বাস এবং কাভার ভ্যানে এক্সিডেন্ট হয়। রমজান মাস ছিলো। ওই দিন ছিলো ১২ই রমজান ভোর ৫:১৫, বাস ও কাভার ভ্যান এর মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। আমার স্বামী চট্টগ্রাম মেডিকেলে ওই দিনই সকাল ১০:৩০মিনিটে ইন্তেকাল করেন। শুরু হয়ে গেলো জীবন যুদ্ধ। কি করবো কোথায় যাবো সব অন্ধকার হয়ে গেলো।
👉আমাকে তো ওই মানুষ টা কোনো কিছুর আচ লাগতেই দেয় নাই। এখন আমি কি ভাবে আমার সন্তান ,আমার ব্যাবসায়ীক প্রতিষ্ঠান, আমার সংসার চালাবো কোন কিছুই বুঝে উঠতে পারছিলাম না। কিন্তু তারপরও হাল ছেড়ে দিলে তো সব শেষ। আমার উঠে দাড়াতে হবে আমার সন্তান, আমার ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান সেটা ও আমার আরেক সন্তান। এই দুই সন্তানের দায়িত্ব আমি ছাড়া কে নিবে ! আমি মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ি। করো সাথে কোনো কথা বলতাম না। একদম বাকরুদ্ধ হয়ে যাই রাতে ঘুমাতে পারতাম না ।আমার এই অবস্থা দেখে একদিন আমার ছেলে আমাকে জড়িয়ে ধরে খুব কাদে এবং বলে আম্মু তোমার থেকে তো আমার অনেক বেশি কষ্ট তুমি তো এখনো তোমার বাবাকে বাবা বলে ডাকতে পারো আমার তো বাবা নাই আমি কাকে বাবা বলে ডাকবো আমার বাবা তো আর কোনদিন আমাকে আদর করবেনা। তখন আমিও ছেলেকে ধরে অনেক কাদলাম এবং বললাম বাবা আমি তো আছি তখন শুধু নামাজ পড়ে আল্লাহর কাছে সাহায্য চাইতাম আল্লাহ আপনি আমাকে শক্তি দেন আমি যেনো আমার সমস্ত দায়িত্ব ও কর্তব্য সঠিক ভাবে পালন করতে পারি। তবে উপর আল্লাহ অনেক মহান। আমি আল্লাহর ইচ্ছায় আপনাদের সবার দোয়ার বরকতে আমার ছেলে ও আমার ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান খুব ভালো ভাবেই এই পর্যন্ত নিয়ে এসেছি।
আমি এখোনো প্রতিটা মুহুর্তে সংগ্রাম করে যাচ্ছি সব কিছু নিয়ে তারপরও বলবো আলহামদুলিল্লাহ। আমার ছেলে অনেক লক্ষী একটা ছেলে। ওর সব ক্লাসেই খুবই ভালো রেজাল্ট এখন সে কম্পিউটার সাইন্সে অনার্স ফাইনাল ইয়ারে আছে ।আমার ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানও মোটামুটি ভালো আছে। আমি মালিক হিসেবে আছি। আলহামদুলিল্লাহ সব কিছুর জন্য মহান রাব্বুল আলমীনের দরবারে শুকরিয়া জানাচ্ছি। আমার জন্য সবাই দোয়া করবেন।
🌹আমার উদোক্তা হওয়ার গল্প
ছোট বেলা থেকেই সব কিছুতেই আমার খুব আগ্রহ ছিলো বিভিন্ন ডিজাইনের হাতের কাজ সেলাই ,কাটিং ,ব্লক ,বাটিক, কারচুপি, জারদৌসি,
এগুলো আমি দর্জি বিজ্ঞান কলেজ থেকে কোর্স কমপ্লিট করি। কিন্তু শখের বসে শেখা আমার খুব ভালো লাগতো। আমি বাসায়ও ট্রেনিং সেন্টার দিয়েছিলাম। সব সামলিয়ে বিকেল বেলা মহিলাদের শিখাতাম। আমার সব সময় মহিলাদের নিয়ে কাজ করার খুব ইচ্ছা ছিলো কিন্তু আমার স্বামী মারা যাওয়ার পর জীবনের সাথে লড়াই করতে গিয়ে আমার সব সপ্ন শেষ হয়ে যায়।
টুকটাক করতাম সাথে আমার ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানে একটু সময় দেওয়া লাগতো তাই বড় পরিসরে করতে পারি নাই। এই কষ্টটা সব সময়ই আমার ভিতরে কাজ করতো এভাবেই সব কিছু মিলিয়ে ভালো চলছিলো।
👉হটাৎ ২০২১শের অক্টোবরের লাস্ট আমি প্রচন্ড অসুস্থ হয়ে পড়ি এবং আমি পুরো ডিপ্রেশনে চলে যাই। ডাক্তার আমাকে ঘুমের ঔষধ দিয়েছিলো। কিন্তু আমি তারপরও ঘুমাতে পারতাম না আমি মোটিভেশনাল ভিডিও দেখতাম একটু ভালো থাকার জন্য। হটাৎ আমাদের প্রিয় স্যারের একটা ভিডিও দেখলাম এবং অনেক প্রশান্তি ফিল করলাম। এরপর আমার কাজ ছিলো প্রতিরাতে স্যারের মিনিমাম ৪ টা ভিডিও দেখতাম।
👉আমি আলহামদুলিল্লাহ্ এখন ভালো আছি। এখানে যে শিক্ষা টা আমরা পাচ্ছি সেটা আর কোথাও নেই ।আমি প্রাণের গ্রুপের সাথে কি ভাবে যুক্ত হবো জানতম না। হটাৎ আমাদের মানসুরা আপুর একটা utv লাইভ ভিডিও দেখি এবং আপুকে নক করি। আসলেই আপু খুবই আন্তরিক এবং অনেক ভালো একজন মানুষ। আপুর কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি আপু আমাকে ও আমার একমাত্র ছেলে সানজিদ প্রিন্স কে ১৬ তম ব্যাচে রেজিস্ট্রেশন করিয়ে দেন। আমরা মা ছেলে এই প্রাণের প্লাট ফর্মে আছি এবং একসাথে ক্লাস করি। এখান থেকে অনেক কিছু শিখছি এখনো প্রতিনিয়ত শিখে যাচ্ছি ।
👉বিশেষ করে বরগুনা জেলার সকল ভাইয়া ও আপুরা আমাকে অনেক সাহস দিয়েছে অনেক সহযোগিতা করেছে এমন একটা জেলার মেয়ে হয়ে নিজেকে গর্বিত মনে করছি।প্রিয় স্যার বলেছেন সপ্ন দেখুন সাহস করুন শুরু করুন এবং লেগে থাকুন সফলতা আসবেই। স্যারের অসাধারন এই বাণী বুকে ধারন করে আমি ভালোবেসে এবং সততার সাথে ছোট একটা উদ্বেগ শুরু করেছি আমি যেনো সফলতা অর্জন করতে পারি আপনারা সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন। সর্বপরি আমি যেনো স্যারের শিক্ষা ধারন করে ভালো একজন মানুষ হিসেবে বেচে থাকতে পারি। আপনারা সবাই আমার একমাত্র সন্তান সানজিদ প্রিন্স ও আমার জন্য দোয়া করবেন।
📌"স্ট্যাটাস অব দ্যা ডে"- ৭৭৫
Date:- ৩০/০৩/২০২২ইং
নাম: সাবিনা ইয়াসমিন
ব্যাচ: ১৬
রেজিঃ ৮০৪৭৬
জেলা: বরগুনা
থানা: বরগুনা