আব্বু গাড়ি এক্সিডেন্টে করেছে,আব্বু এমনই আগে থেকে অসুস্থ ছিলেন
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম.....
💢আজ আপনাদের সাথে আমার জীবনের এলোমেলো গল্প টা শেয়ার করব ইন আল্লাহ💢
আশা রাখছি সবাই শেষ পর্যন্ত একবার পড়ে,আমাকে অনুপ্রেরণা দিবেন.......
সূচনাঃ
শুরু তে সকলে আমার সালাম নিবেন,
আসসালামু আলাইকুম......
সর্বপ্রথম মহান আল্লাহ তায়ালা প্রতি লক্ষ কোটি শুকরিয়া জানাই, যিনি আমাকে আমার পরিবারের সকলকে বিশ্ব মহামারী থেকে সুস্থ এবং নিরাপথ রেখেছেন।আলহামদুলিল্লাহ🕋🤲✅
🔶লক্ষ কোটি দরুদ সালাম প্রেরণ করছি বিশ্ব মানবতার মুক্তির দূত প্রিয় নবী হযরত মোহাম্মদ (স:) এর প্রতি।
♥আমি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি আমার জন্মদাতা পিতা মাতার এবং শিক্ষক শিক্ষিকা মণ্ডলী প্রতি❤️✅ আরও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি আমাদের প্রিয় শিক্ষক,মেন্টর লাখো তরুন তরুনীর স্বপ্নদ্রষ্টা। জাগ্রত দিশেহারা মানুষের পদ প্রদর্শক হতাশাগ্রস্থ মানুষের আশার আলো জনাব #ইকবাল_বাহার_জাহিদ স্যারের প্রতি।যিনি অক্লান্ত পরিশ্রম করে #নিজের_বলার_মত_একটা_গল্প_ফাউন্ডেশন আমাদের হাতে তুলে দিয়েছেন।এই প্লাটফর্ম শেখায় সততা,নমনীয়তা, লেগে থাকা এবং ধৈর্যশীল হওয়া।আরো শেখায় উদ্যোক্তা,বিনয়ী,মানবিক ও ভালো মানুষ হতে।
♦আমার পরিচয় ♦️
নামঃ মোঃ আবদুল হামিদ,
(আমি একজন সেচ্ছসেবক)
জন্মঃ ১০/০২/২০০০ সালে।
পিতাঃ শমসুল ইসলাম
মাতাঃ খতিজা বেগম।
আমরা ৪ভাই ১বোন
আমি বাড়ির ২য় সন্তান।
বাবা বাসের হেলপার ছিলেন,
মা গৃহিণী।
বাড়ি, লোহাগাড়া উপজেলা, পদুয়া ইউনিয়ন, উত্তর পদুয়া ঘোনা পাড়া।
🔶♪♪♪শৈশব ও কৈশোর জীবন:🔶
গ্রামেই যেহেতু আমার বসবাস তাই গ্রামের পরিবেশে আমার বেড়ে ওঠা।আমার যতটুকু মনে আছে।সকালে ঘুম থেকে ওঠে এলাকার মক্তবে যেতে হতো।তাছাড়া আমি ছোট থাকতে খুব বেশি দুষ্টুমি করতাম,আব্বু আম্মু আমাকে স্থানীয় একটা নূরানী মাদ্রাসা ভর্তি করে দিয়েছিল, আলহামদুলিল্লাহ আমি লেখাপড়া অনেক ভালো ছিলাম,যার কারণে প্রতিটা পরিক্ষা ভালো রেজাল্ট করতাম।সেই জন্য মাদ্রাসা হুজুর গুলো আমাকে খুব বেশি স্নেহ করতেন,তাদের অতি স্নেহের কারণে আমি সবার থেকে একটু দুষ্টুমি বেশি করতাম,,,যে ফলাফল সরূপ আমি একদিন একটা দূর্ঘটনা করে ফেলেছি,যেটা জন্য আমাকে হুজুর প্রচুর মারছেন, যেটা এখনো মনে পড়লে পিঠে ব্যথা অনুভব হয়।কিন্তু দূরভাগ্য বেশি দিন নূরানী মাদ্রাসা পড়ার সুযোগ হয় নি।
♦নিজের পড়াশোনা প্রাইমারি, উচ্চ মাধ্যমিক, কলেজ♦️
আমি নূরানী মাদ্রাসা ২-৩ বছর নিয়মিত হওয়ার পরে আর মাদ্রাসা পড়ার সুযোগ হয় নি,ভর্তি করিয়ে দিলেন স্থানীয় একটা প্রাইমারি স্কুলে ২০০৬ সালে, (উত্তর পদুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়)এই বিদ্যালয় আমাদের উপজেলা মধ্যে বেশ কয়েক বার সেরা স্কুল হিসাবে স্বীকৃতি পাই,আলহামদুলিল্লাহ।এই স্কুল থেকে ২০১০ সালে পঞ্চম শ্রেণীর সমাপনি পরিক্ষা দিয়,এতে ২য় বিভাগে উত্তির্ন হয়(প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনা পাশাপাশি আমি অনেক সময় স্থানীয় মাদ্রাসা সভায়,মেলায় নিজের উদ্যোগে বিভিন্ন কিছু বিক্রি করতাম, যেটা আমার খুব বেশি ভালো লাগতো)।পরে মাধ্যমিক স্কুল উত্তর পদুয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হই,২০১৩ সালে অষ্টম শ্রেণী থেকে জে এস সি পরিক্ষা দিয়, সেই পরিক্ষা তে (এ-)৩.৫০ নবম শ্রেণির তে উত্তির্ন হয়,নবম শ্রেণীতে মানবিক বিষয় কে গ্রুপ বই হিসাবে নিয়,২০১৬ সালেমমাধ্যমিক স্কুলের গুরুত্বপূর্ণ পরিক্ষা এসএসসি পরিক্ষা সমাপ্ত করি,আলহামদুলিল্লাহ সেই পরিক্ষা ৩.৬১ পয়েন্ট নিয়ে (এ-); (গ্রুপ সাবজেক্ট বিষয় টা অবশ্যই স্যার সিলেক্ট করেছিল কোন একটা কারণে)
তারপর কলেজ ভর্তি হওয়ার জন্য অনলাইনে আবেদন করলাম, বেশ কয়েক টা সরকারি এবং বেসরকারি কলেজ কে সিলেক্ট করলাম, কিন্তু মনে প্রচুর ইচ্ছা আছে একটা সরকারি কলেজে পড়ব,আলহামদুলিল্লাহ মহার আল্লাহ তায়ালা আমার ইচ্ছা পূরণ করেছে, #বান্দরবান_সরকারি_কলেজে আমার ভর্তি হওয়ার সুযোগ হয়।কিন্তু ভাগ্য নির্মম পরিহাস কলেজ লাইফের লেখা পড়া ইতি টানতে হল,পরিবারের কারণে।
এতটুকু লেখাপড়া করতে পারার পিছনে আমার মা এবং বড় ভাইয়ের যথেষ্ট ভুমিকা ছিল। বিশেষ করে আমার মা আমাকে এতটুকু লেখাপড়া করার জন্য অনেক বার অন্যের জমিতে কাজ পর্যন্ত করতে গিয়েছিল 😥
💢♪♪♪কর্মজীবন:🔶
আমার কর্মজীবন শুরু হয়েছে মাধ্যমিক স্কুলে পড়ার মধ্যে দিয়ে নবম শ্রেণির থেকে, তখন থেকে আমি একটা স্থানীয় ফার্মেসী তে চাকরি করা শুরু করি দৈনিক ২০ টাকা খরচে। একটা বছর সেই ফার্মেসী কাজ করার পরে দশম শ্রেণির পরিক্ষা দিতে পারব কি পারব না, অনেক টা বাধা হয়ে দাড়িয়ে ছিল, কারণ একটা বছর একদিনের জন্য স্কুলের যায় নি,কিন্তু আমার একজন শিক্ষক আমাকে এই স্থানে যথেষ্ট সহযোগিতা করেছে,যেকারণে আমি দশম শ্রেণির রেজিষ্ট্রেশন টা করতে সক্ষম হয়। সেই শিক্ষক এর প্রতি আমি আজীবন কৃতজ্ঞতা।তারপর এসএসসি পরিক্ষা শেষ করার পরের দিন আবার যুক্ত হলাম সেই ফার্মেসী পেশায়। আমি মধ্যবিত্ত পরিবারের একজন ছেলে।
আমার বাবা অল্প কিছু টাকা আয় করতেন,বড় ভাই চট্টগ্রাম একটা কাপড়ের দোকানে চাকরি করতেন,
আমার ছোট ২ভাই ১বোন সবাই পড়ালেখা ছিলেন,,এখানে বাবা এবং বড় ভাইয়ের ইনকামের টাকা দিয়ে পরিবার কোন রকম নুন আনতে পান্ত শেষ হবে এই ভাবে চলতেছিল,,,কিন্তু মহান আল্লাহ অশেষ রহমত,সেই সময়ে আমার ছোট বোন টা কঠিন একটা রুগে আক্রান্ত হয়ে পড়ে, সেই বোন কে নিয়ে আম্মু থেকে দিনের পর দিন মাসের পরে মাস হসপিটালের মধ্যে কাটিয়ে দিতে হয়েছে, বড় ভাই চাকরি টাকা আব্বু ইনকাম এর টাকা এই টাকা গুলো দিয়ে চিকিৎসা পরিপূর্ণ করার কোন ভাবে সম্ভব হচ্ছে না,,তখন আমি দশম শ্রেণীর একজন ছাত্র। পরিবারের সব কাজ রান্না করা সহ আমার করা লাগত,আমার বয়স্ক নানি ছিল,যিনি একটু একটু সহযোগিতা করতেন।কোন রকম দশম শ্রেণির পরিক্ষা আল্লাহর রহমতে দিলাম, তারপর একদিনের জন্য বাড়িতে বসে থাকিনি, সেই ফার্মেসী চাকরিতে যুক্ত হয়ে গেলাম,পাশাপাশি কলেজ লেখাপড়া টা চালিয়ে নিতে চেয়েছিলেন, কিন্তু পুরোপুরি সম্ভব হল না,কারণ বোনের রোগ টা একটু ভালো হতে না হতে আব্বু গাড়ি এক্সিডেন্টে করেছে,আব্বু এমনই আগে থেকে অসুস্থ ছিলেন, তখন পরিবারের অবসর আগের চেয়ে আরও খারাপের দিকে চলে গিয়েছে।শেষমেষ আব্বু কে ২০২০ সালের জানুয়ারি ৭ তারিখ মহান আল্লাহ ডাকে সাড়া দিয়ে এই পৃথিবীর তে আমাদের এতিম করে চলে যায়।সবাই আমার বাবা জন্য দোয়া করবেন।
💢বর্তমান নিজের অবস্থান 💢
ফার্মেসী পেশায় দীর্ঘদিন থেকে যুক্ত থাকার কারণে এই পেশায় তে আমার একটা ভালো আইডিয়া হয়েছে আলহামদুলিল্লাহ।কিন্তু এই চাকরি তে নিজে কে স্বাধীন ভাবে পরিচালনা করতে পাচ্ছি না,,তাই সিদ্ধান্ত নিলাম নিজ উদ্যোগে কিছু একটা করব,,যেটা সম্পূর্ণ অবদান এই প্লাটফর্ম এবং স্যারের নিয়মিত সেশন গুলো। তারপর এই চাকরি পাশাপাশি পাট টাইম কাজ হিসাবে বেঁচে নিলাম একটা নেটওয়ার্ক মার্কেটিং বিজনেস,,কিছু হেলথ্ পোডাক্ট নিয়ে,
যে বিজনেস টা উন্নত করতে স্যারের প্রতিদিনের সেশন গুলো এন্টিবায়োটিক ওষুধে মত কাজে দিয়েছে।আলহামদুলিল্লাহ।
এখন সেই বিজনেস এর সাথে এক্টিভ আছি।
💢এই ফাউন্ডেশনের সাথে সন্ধান 💢
আজ থেকে ১বছর আগে অনলাইনে ফেন্ড স লিষ্ট এ থাকা একটা বড় ভাইয়ের সাথে রক্তদান সংক্রান্ত কিছু বিষয় নিয়ে ইনবক্সে আলোচনা করতে ছিলাম,,তখন সেই ভাই টা কথা প্রসঙ্গে এই প্লাটফর্ম সম্পর্কে বলেছে, এবং সাথে সাথে এই গ্রুপে লিংক টা ইনবক্সে করেন।
তখন আমি সেই গ্রুপ টা একবার ভিজিট করে আসলাম। এই গ্রুপে কিছু লেখা আমার খুব ভালো লেগেছিল, তখন থেকে নিয়মিত এই গ্রুপে সাথে থাকা।
তখন দেখতাম ১২ তম ব্যাচের রেজিষ্ট্রেশন চলতেছে এই রকম একটা স্যারের আইডি থেকে পোস্ট করেছে, তখন আমি কৌতহল সরূপ বড় ভাই টার কাজ থেকে জানতে চাইলাম, তখন এই ভাই টা ১২ তম ব্যাচের সদস্য হিসাবে রেজিষ্ট্রেশন করতে সহযোগিতা করেন।
এই ভাইয়ের প্রতি আজীবন কৃতজ্ঞতা।
২য় যে মানুষ টা আমাকে এই প্লাটফর্ম নিয়মিত হতে বিশেষ অবদান রেখেছেন,
সাতকানিয়া উপজেলা এই প্লাটফর্ম এর একজন নিয়মিত সুপার এক্টিভ আপু, প্রিয় Sadia Kausar.
যার সহযোগিতা মাধ্যমে আমি এখন নিয়মিত এই প্লাটফর্ম এর অনলাইন অফলাইনে বিভিন্ন মিট আপ যুক্ত হওয়ার সুযোগ হচ্ছে। এই প্লাটফর্ম সম্পর্কে নতুন কিছু জানতে সুযোগ হচ্ছে।
আপু অনেক অনেক কৃতজ্ঞতা।
💢সর্বশেষ এই প্লাটফর্ম নিয়ে আমার পরিকল্পনা💢
নিজের বলার মত একটা গল্প ফাউন্ডেশন হয়ে নিজে কে একজন সফল উদ্যোক্ত হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করব,এবং সমাজে অসংখ্য শিক্ষিত যুবক আছে তাদের কে এই প্লাটফর্ম এর সদস্য হতে আহ্বান করব।সবাই কে নিয়ে এই প্লাটফর্ম মাধ্যমে আগামী তে একটা বেকার মুক্ত সুন্দর বাংলাদেশ উপহার দিব,,,ইনশাআল্লাহ।
সর্বশেষ একটা আবেদন সকলের কাছে,
আমার জন্মদাতা মা জননী দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ সবাই আমার মায়ের জন্য দোয়া করবেন🤲✅।
এত লম্বা লেখা আগে কখনো লেখার সুযোগ হয়নি,যদি লেখা মধ্যে কোন ভুলত্রুটি হয় ক্ষমা এবং সুন্দর দৃষ্টি তে দেখবেন।
আল্লাহ হাফেজ।
স্ট্যাটাস অফ দ্যা ডে -৭৭৬
তারিখ- ৩১/০৩/২০২২
মোঃ আবদুল হামিদ
ব্যাচ নংঃ ১২
রেজিষ্ট্রেশন নংঃ ৩৯৭৫৭
বাড়িরঃচট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা, সাতকানিয়া উপজেলা।