স্বপ্ন ভুনতেছি, সাহস নিতেছি স্যারের সেশন গুলি থেকে।
বিসমিল্লাহির রাহমানুর রাহিম।☪️☪️☪️☪️
🖋️🖋️আমার,, জীবনের গল্প🖋️🖋️
এই জীবন মানেই যুদ্ধ। আর তাই তো একে বলা হয় জীবনযুদ্ধ। প্রত্যেকের জীবনেই বিভিন্ন রূপে আসে এই যুদ্ধ তেমনি আমার বেলায় আসলো আমার জীবনের সাথে যুদ্ধ।
🥀আসসালামুআলাইকুম ওরাহমাতুল্লাহ।🥀
আমার সকল প্রশংসা মহান রব্বুল আলামীনের জন্য তিনি আমাদেরকে মানুষ রূপে সৃষ্টি করেছে।হাজার বিপদ ঝড় তুফান বালা মুসিবত থেকে হেফাজতে রেখেছেন শুকরিয়া জানাই তার দরবারে আলহামদুলিল্লাহ।শান্তি বর্ষিত হোক মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এর উপর ( সাঃ) আমি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি নিজের বলার মত একটি গল্প ফাউন্ডেশনের পরিচালক জনাব মেন্টর ইকবাল বাহার জাহিদ স্যারের প্রতি,যিনি আমাদের এত সুন্দর একটি প্ল্যাটফর্ম উপহার দিয়েছেন। ধন্যবাদ জানাই নিজের বলার মতোএকটি গল্প পরিবারের সকল সদস্যদের।যারা অক্লান্ত শ্রম মেধা ত্যাগ ভালোবাসা দিয়ে সাজিয়েছেন এ প্ল্যাটফর্ম কে।
🖋️গল্প শুরু🖋️
🔶আমার শৈশবকা🔶
🌺আমি আমার মা-বাবার ২য় সন্তান, মা-বাবার অনেক অপেক্ষার পর আমার এবং আমার বড় বোন এর আগমন হয় তাদের ঘরে, আমার মা’র কোনো এক সমস্যার কারনে গর্ভে থাকাবস্তায় তার সন্তান মারা যেতো, সবাই বলেছিলো আমার মা-বাবা কখনো জীবীত সন্তানের মুখ দেখতে পারবে না, সন্তান না বাঁচার কারনে আমার মাকে অনেক কষ্ট পেতে হয়েছে,😭 অনেকের অনেক কথা শুনতে হতো প্রতিনিয়ত, তাই আমার মা সবাই কে লুকিয়ে অনেক কান্না করতেন😭 আর আল্লাহর কাছে চাইতেন যেনো তাদের একটা সন্তান হয়, অনেক অপেক্ষা এবং আল্লাহর কাছে চাওয়ার ফলে আল্লাহর রহমতে আমার বড় আপুর জন্ম হয় তারপর আরও ৬ বছর অপেক্ষার পর আমার জন্ম হয়, আমরা ২ বোন এর পরে আমার আর কোনো ভাই-বোন জীবন্ত অবস্তায় পৃথিবীতে আসে নি।😭আল্লাহর রাহমতে আমারা দুই বোন কে অনেক কষ্ট করে বাঁচিয়েছেন, আমাদেরকে বাঁচানোর জন্য আমার মা-বাবা অনেক ডাক্তার ও হুজুরের সহযোগীতা নিয়েছেন, অনেক সময় আমার অবস্থা এমন ও হতো যে, আমার মা ভেবে’ই নিতেন আমি না ফেরার দেশে চলে গেছি, এইভাবে কাটে আমার জন্মের পর প্রথম ৬ মাস। আমার কোনো ভাই বোন বেঁচে থাকতো না যার কারনে আমার জন্মের ৬ মাস পর আমার মা-বাবা আদর করে আমার নাম রেখেছিলেন মাসুমা জান্নাত।
🧚♂️কষ্টের ফল সব সময় মিষ্টি হয়🧚♂️
তার প্রমান হল আমার জন্ম এবং আমার বেঁচে থাকা, আমার জন্মের পর আমাকে সবাই দেখে বলতো পূর্ণিমার চাঁদ ঘরে নেমে এসেছে, আমি এতটা’ই সুন্দর ছিলাম যে, যদি কেউ আমাকে একবার দেখতো তাহলে পরের দিন’ই আমি অসুস্থ হয়ে যেতাম, আমার সমস্ত শরীরে কালো দাগ পরে যেতো 😭, তাই আমাকে কারো সামনে বের করা হতো না, কিন্তুু সবাই আমাকে দেখার জন্য পাগল হয়ে যেত, তখন আমার মা ভিশন ভয় পেতেন যদি কেউ আমাকে চুরি করে নিয়ে যায়, সেই ভয় এ আমার মা আমাকে এক মূহুর্তের জন্যও চোখের আড়াল হতে দিতেন না, আমি যদি চোখের আড়াল হয়ে যেতাম তাহলে আমার মা পাগল হয়ে যেতেন।প্রতিনিয়ত আমাকে এইভাবেই আগলিয়ে রাখতো।
🖋️🖋️"আমার শিক্ষা জীবন"🖋️🖋️
আমি আমার মাকে ছাড়া থাকতে’ই পারিনা, আমি যখন প্রথম শ্রেণীতে ভর্তি হই, তখন আমার সহপাঠিরা একা একা স্কুলে যেতো কিন্তুু আমি আমার মাকে ছাড়া স্কুলে যেতাম না, যদি আমাকে জুর করে স্কুলে পাঠানো হত তাহলে আমি স্কুলে খুব বেশি কান্না করতাম, কারো সাথে মিশতাম না, একা একা বসে কান্না করতাম😭 আমার কান্না দেখে সবাই আমাকে নিয়ে হাসাহাসি করত, এবং আমাকে খুব মারত, ওদের মার খেয়ে যদি কান্না করতাম এবং স্কুল এর ম্যাম দের কাছে বিচার দিতাম তাহলে ওরা বলত ম্যাম ও ওর মা’র জন্য কান্না করছে, ম্যাম ও তাদের কথা শুনে আমাকে মারত, একদিন ম্যাম আমাকে ওদের কথা শুনে খুব বেশি মেরেছে, মেরে আমার শরীরের অনেক জায়গা’ই কেটে দিছে😭কাটার পর ম্যাম আমকে তাদের অফিস রুমে নিয়ে গিয়ে হুমকি দে আমি যদি বাসায় গিয়ে বলি ম্যাম আমাকে মেরে আমার শরির কেটে দিছে তাহলে আমাকে আরও মারবে,😭 এই ভয়ে আমি বাসায় গিয়ে কিছু বলিনি, বাসায় যাওয়ার পর মা আমাকে জিজ্ঞেস করে কাটল কিভাবে? আমি বলেছিলাম পরে গেছি।আমি আমার স্কুলের সব থেকে ছোটো ছাত্রী ছিলাম আমি, যে কারনে সবাই আমকে মারত এবং ভয় দেখাতো, যদি কাউকে বলি তাহলে আমাকে আরও মারবে, এই ভয়ে কাউকে বলতাম না, শুধু নিরবে কেঁদে যেতাম,😭 এভাবে চলে যায় আমার স্কুল জীবনের চার বছর। আমি এইবার ক্লাস ফোরে, আমি এখনও আমার মায়ের জন্য কান্না করি ক্লাসের এক কুনায় বসে। এই চার বছরে আমার ম্যামরা আমকে চিনে ফেলেছেন 🥰এবং এটাও বুঝে ফেলেছেন যে সবাই আমাকে ইচ্চা করে ম্যামদের হাতে মার খাওয়াতো।
🥰তাই এখন ম্যামরা আমাকে নিজের মেয়ের মতো করে খেয়াল রাখত এবং আমি যখন ক্লাস ফোর এ পড়ি তখন নতুন একজন ম্যাম এসেছেন, একদিন ক্লাস টাইমে আমার সহপাঠিরা বাইরে দৌড়াদৌড়ি করছে এমন সময় আমাদের নতুন ম্যাম এর আগমন ক্লাসে, সবাই ম্যামকে দেখে দৌড়ে ক্লাসে এসে পড়েছে কিন্তুু আমি ক্লাসের বাইরে যাইনি তাও ম্যামকে সবাই বলছে আমি ক্লাস এর বাইরে গেছি এই বলে ম্যামকে দিয়ে আমাকে মার খাইয়েছে,আমার সহপাঠী রা ম্যাম আমাকে এত মেরেছে যে আমার হাত ফেটে রক্ত পরছিল😭 এবং এইদিন রাতে’ই জ্বর উঠে গেছিল, এইভাবে টরচার সহ্য করে করে প্রাইমারী স্কুল শেষ করি এবং ২০২১ সালে এস এস সি শেষ করলাম, আমার বাবার আর্থিক অবস্থা খারাপ হওয়ার কারনে আর লেখাপড়া আর হলোনা।
তখন আমি হতশার মাঝেই বিরাজ করতে লাগলাম। আমার হতাশা দেখে উদয় হলো আমার এক বন্ধু যার কারনে আশার আলো দেখতে পেলাম,,, নিজের বলার মতো একটা গল্প ফাউন্ডেশন।
🍀"আমি কিভাবে এই ফাউন্ডেশন এ যুক্ত হলাম"🍀
আমি “নিজের বলার মতো একটা গল্প ফাউন্ডেশন” এর বিষয়ে কিছু’ই জানতাম না, আমার বাবার পক্ষে আমাদের পরিবার পরিচালনা করা খুব’ই কষ্টকর হয়ে পরার কারনে আমি অনলাইনে চাকুরি খুজি, একদিন আমার একজন বন্ধু আমাদের গ্রুপ সদস্য কামরুজ্জামান চৌধুরি আমাকে “নিজের বলার মতো একটা গল্প ফাউন্ডেশন” এর ব্যাপারে সব কিছু বলেন এবং তিনি’ই আমাকে রেজিস্টেশন করিয়ে দেন, আমি অনেক অনেক কৃতজ্ঞ উনার কাছে।উনি না থাকলে হয়তবা প্রিয় প্লাটফর্মের সাথে যুক্ত হতে পারতাম না।
🔶এই ভালো মানুষের ফাউন্ডেশনে যার সহযোগিতা আমি সবচেয়ে বেশী পেয়েছি উনি হলেন আমাদের মৌলভীবাজার এর কৃতী সন্তান এবং একজন পরোপকারী মালদ্বীপ কান্ট্রি এম্বাসেডর প্রাণপ্রিয় #মোহাম্মদ_মোতালেব ভাইয়া।
যে কিনা শতব্যাস্তায়
থেকেও যে কোনো সময় যে কোনো বিষয়ে জানতে চাইলে তা বুজিয়ে দেন। আমি শ্রদ্ধেয়ের ভাইয়ের প্রতি অনেক অনেক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। তাছাড়া আমাদের জেলার অনেক ভাইবোন আছেন সবাই খুবই আন্তরিক, আমি সকলের প্রতি অনেক কৃতজ্ঞ।
এই ফাউন্ডেশন থেকে আমি কি পেয়েছি এই অল্প দিনের মধ্যে? তা হলো এই অল্প দিনে যেই ভালোবাসা ও আন্তরিকতা পেয়েছি তা আমি আমার জীবনে আর কোথাও পাইনি। অনেক অনেক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি
প্রিয় মেন্টর Iqbal Bahar Zahid স্যার এর প্রতি। আল্লাহ যেন স্যার কে সবসময় পরিপুন্য সুস্থ ও ভালো রাখে। প্রিয় মেন্টর এর এই স্লোগান টি আমার খুবই ভালো লেগেছে যে, স্বপ্ন দেখুন, সাহস করুন, ও শুরু করুন। আর সেই অনুপ্রেরণা থেকেই আমি একজন ভালো মানুষ হয়ে ভালো উদ্দোক্তা হতে চাই।
🔶আমি কেন উদ্যোক্তা হতে চাই🔶
ছোট থেকে’ই আমার বাবাকে দেখছি অনেক কষ্ট করে সংসার চালাচ্ছেন তাই আমি আমার বাবার একটু হলেও যেন সম্বল হতে পারি এবং আমার ছোট বেলা থেকে’ই স্বপ্ন ছিল নিজের পায়ে দাড়াবার, নিজে কিছু একটা করে নিজে স্বাধিন মতো নিজের চাহিদা পুরন করব।
🔶আমি কত দিন/বছর এর মধ্যে এই জায়গায় যেতে চাই🔶
আমি স্যার এর শিক্ষা বুকে ধারন করে আগামি ১/২ বছরের মধ্যে আমার স্বপ্নের ঠিকানায় পৌছাতে চাই ইনশাআল্লাহ! আপনাদের সহযোগীতা পেলে আমি আমার স্বপ্নের ঠিকানায় পৌছাতে পারবো ইনশাআল্লাহ!
🔶এই প্লাটফর্ম থেকে আমি যা শিখলাম🔶
🍁ভালো মানুষ হতে হবে।
🍁হতাশ হওয়া যাবেনা।
🍁প্রত্যেকটা কাজ ধৈর্য নিয়ে করতে হবে।
🍁উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন দেখা
🍁অনেক গুলো ভালো মানুষের পেলাম!
🍁এই পরিবারের প্রত্যেকটা ভাই বোন খুব আন্তরিক।
🍁মা বাবার দোয়া ছাড়া কেউ সফল হতে পারেনা।
🍁অন্যের জন্যে কিছু করা
🍁ভালো কাজে প্রতিযোগিতা করা।
আসলে এ পরিবারের থেকে পাওয়া লিখে শেষ করা যাবেনা। প্রতি দিন শিখতেছি নতুন করে। স্বপ্ন ভুনতেছি, সাহস নিতেছি স্যারের সেশন গুলি থেকে। নিজেকে তৈরি করতেছি নতুন ভাবে!
স্যারকে অনেক অনেক ধন্যবাদ আমাদেরকে এত সুন্দর একটা প্লাটফর্ম উপহার দেয়ার জন্যে। স্যারের অক্লান্ত পরিশ্রমে আমাদের মত লক্ষ লক্ষ তরুন তরুণী নিজের লালিত স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে হাটতে শিখতেছে।
এছাড়াও আমাদের প্রিয় স্যারের উপহার প্রতিদিনের সেশন থেকে আরও অনেক কিছু প্রতিনিয়ত শিখছি এবং শিখে যাবো ইনশাআল্লাহ। নিয়মিত বিভিন্ন মিটআপে উপস্থিত হয়েও অনেক কিছু শিখছি।
সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন।
পরিশেষে আবারও আমাদের সকলের প্রিয় মেন্টর জনাব ইকবাল বাহার স্যারকে ধন্যবাদ জানাই স্যার যেন আমাদের মাঝে এভাবেই অভিভাবক হয়ে শিক্ষা দিয়ে যেতে পারেন।
আল্লাহ স্যারের নেক হায়াত দান করুন।
অনেক ভালো থাকুন প্রিয় স্যার।
সকলের কাছে আমার এবং আমার পরিবারের জন্য দোয়া চাই। সকলেই আমার পাশে থেকে সহযোগিতা করবেন আশাকরি।
📌📌স্ট্যাটাস অফ দ্যা ডে -৭৮৫
তারিখ ১৫-০৪-২০২২
মাছুমা জান্নাত
✅প্রমোশন টিম মেম্বার
✅ব্যাচ: ১৭
✅রেজি নং: ৮৩৫০৪
✅জেলা মৌলভীবাজার