আমার মনে মধ্যে চিন্তা ভাবনা আসতে থাকলো আমাকে কিছু একটা করতে হবে
🌿বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম🌿
☘️আসসালামু আলাইকুম☘️
☝সকল প্রশংসা মহান রবের জন্য, যিনি সৃষ্টি করেছেন এবং পৃথক করেছেন আসমান ও জমিন। এই কঠিন বৈশ্বিক করোনা মহামারীর মধ্যে আমাদেরকে সুস্থ রেখেছেন,আলহামদুলিল্লাহ
💞💞 দুরুদ ও সালাম পেশ করছি বিশ্ব মানবতার মুক্তির দূত, প্রীয় নবী হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) এর প্রতি, যাঁর জন্য আমরা পেয়েছি শান্তি পূর্ণ জীবন বিধান।
💞💞কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি আমার মা ও বাবার প্রতি, যারা আমাকে জন্ম দিয়েছেন, লালন পালন করেছেন এবং পৃথিবীর বুকে বড় করে তুলেছেন।
💞💞শ্রদ্ধা, ভালোবাসা, কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি এই শতাব্দীর সেরা মানুষ, লাখো তরুণ তরুণীর আইডল প্রিয় মেন্টর, প্রিয় শিক্ষক জনাব ইকবাল বাহার জাহিদ স্যারের প্রতি, যার অক্লান্ত পরিশ্রমে গড়ে উঠেছে "নিজের বলার মতো একটা গল্প" ফাউন্ডেশনের মতো একটা সুবিশাল প্লাটফর্ম ।
💞সবাই কেমন আছেন,,,? আশা করি আল্লাহর অশেষ রহমতে সবাই ভালো আছেন,আল্লাহর রহমতে আমিও ভালো আছি, আলহামদুলিল্লাহ ।
💘"পরিবেশ পরিস্থিতির কাছে বার বার হেরে গিয়ে আবার ঘুরে দাড়ানো এই আমার জীবনের বাস্তব চিত্র আজ আপনাদের মাঝে তুলে ধরলাম,আমার সকল ভাইয়া ও আপুদের কে শেষ পর্যন্ত পড়ার অনুরোধ রইল।
🙇আমার শৈশব জীবনঃ
আমরা দুই ভাই ও এক বোন, আমি বড়। বাবা-মা আর আমাদের দুই ভাই ও বোনকে নিয়ে ছোট্ট একটা সুখের পরিবার। আমি আমার মা বাবার আদরের বড় সন্তান ছিলাম,,,,
আমার সাত বছর পর আমার বোন হয়,ও তার ছয় বছর পর ছোট ভাই টা হয়,,,।
আমার আব্বু কৃষি কাজ করেন,আমাদের একটা আলমশাধু গাড়ি ছিলো,কাজের ফাকে ফাকে আব্বু মাঝে মধ্যে চালাতেন,
অনেক শান্তিতে কাটতো আমাদের জীবন।
আমরা মধ্যবিত্ত ছিলাম, তারপরও অনেক সুখ ছিলো আমাদের পরিবারে,আমার আব্বু আম্মুকে কখনো ঝগড়া গন্ডগোল করতে দেখতাম না ।
আমার আম্মু অনেক ভালো একজন মানুষ ছিলেন,অনেক দ্বীনদারীতা ছিলো তার মধ্যে,কখনো উচু গলায় কারোর সাথে কথা বলতেন না, এমনকি আমার বাবার সাথেও উচু গলায় কথা বলতেন না,আমি কোন দিন তাকে জোর গলায় কথা বলতে শুনিনি,,।
আমি আমার আম্মুকে খুব ভালোবাসতাম,আমাদের বাড়ির পাশে একটা বোরই গাছ ছিলো,বেশির ভাগ সময় আমি ওখানেই খেলতাম,গাছ থেকে যখন বোরই পড়তো,যদি দুইটা বোরই ও আমি পেতাম,ভালো বোরইটা সব সময় আমি আমার আম্মুর জন্য নিয়ে যেতাম,তখন আমার আম্মু অনেক খুশি হয়ে,আমাকে কোলে নিয়ে জড়ায়ে ধরতো।
আমার আম্মু বাড়িতে সব সময় আমাকে পড়াতো,, আমার জীবনে কোন দিন প্রাইভেট পড়তে হয়নি।
আমাকেও আম্মু অনেক ভালবাসতো,
আমাকে অনেক শ্বাসন করতো,খেলা ধুলা করতে গেলে কেউ যদি আমাকে মারতো, কাঁদতে কাঁদতে আম্মুকে বলতাম,আম্মু ওদের কিছু না বলে উল্টো আমাকে আবার মারতো,তাই তারপর থেকে কেউ যদি আমাকে মারতো ভয়তে বাইরে থেকে কাঁদা শেষ করে তারপর বাসায় ঢুকতাম,যাতে আম্মু বুঝতে না পারে,বুঝতে পারলে তো আবার আমাকে মার দিবে। আমার আম্মু সব সময় আমাকে বলতো,তোর জন্য কখনো কারো কাছে যেন কথা না শুনি,তোর কোন কারনে যেন আমাদের মাথা নিচু না হয়, আমিও সেই ভাবেই চলতাম,ছোট থেকেই আমি এটা মেনে চলি,খারাপ বন্ধুদের কে সব সময় এড়িয়ে চলতাম,বন্ধুদের আড্ডায় পড়ে অনেকেই অনেক কিছু করে ফেলে,আমার জীবনে আমি সব সময় আম্মুর দেওয়া শিক্ষা গুলো মেনে চলতাম,আর এখনো মেনে চলি ইনশাআল্লাহ।
একটু বড় হই,আমাকে ভর্তি করে দিলো প্রাইমারী স্কুলে,
🌷 শুরু হলো শিক্ষা জীবনঃ
ক্লাস ওয়ান, ক্লাস টু , পার হলো,ক্লাস থ্রিতে উঠলাম,আম্মুর ইচ্ছা ছিলো আমাকে মাদ্রাসা লাইনে পড়াবে,তাই ক্লাস থ্রীতে দুই তিন মাস ক্লাস করার পরে,আমাকে ভর্তি করে দেয়া হয় মাদ্রাসায়।
মায়ের সপ্ন পূরন করার জন্য,,,
-চল্লিশ থেকে পঁয়তাল্লিশ কি: মি: দূরে, আল- জামিয়াতুল ইসলামীয়া বুজরুক গড়গড়ি মাদ্রাসা চুয়াডাঙ্গায় ভর্তি হয়, চলে যায় মাদ্রাসায় ।
♥শুরু হলো মাদ্রাসার শিক্ষা জীবন♥
ভালোই চলতে থাকলো পড়া লেখা,
আমরা একই গ্রামের দশ থেকে পনেরো জন ঐ মাদ্রাসায় পড়তাম,ছুটিতে যদি কেউ বাড়ি যেতো,আমার আম্মু যদি কখনো শুনতো আমার গ্রামের কেউ ছুটিতে বাড়ি এসেছে, তার কাছে,মাংশো,পরোটা,ভাজি,পিঠা পুলি যত রকম আছে,সব আমার জন্য বানাইয়ে পাঠাই তো মাদ্রাসায়,অনেক আনন্দে কাটতো মাদ্রাসার জীবন, খুব মিছ করি সেই হারিয়ে যাওয়া দিন গুলো,এবং খুব মিছ করি সেই মাদ্রাসা জীবনের ফ্রেন্ড গুলোকে।
কথাই আছে না যে,ছাত্র জীবন সুখের জীবন,যদি না থাকতো পরিক্ষা,আসলে কথা বাস্তব।
এভাবে মাদ্রাসার জীবন দির্ঘ চার পাঁচ বছর ভালো ভাবে কেটে যায় আলহামদুলিল্লাহ ।
😭😭 মায়ের অসুস্থতা আমার কষ্টের জীবন 😭😭
হঠাৎ করেই কাল বৈশাখি ঝড় নেমে আসে আমার আম্মুর জীবনে,সেই সাথে আমার সাজানো জীবনটাকে পূরো এলো মেলো করে দেয়। ছাত্র জীবনেই শুরু হয় দুঃখ কষ্টের জীবন।
আমি মাদ্রাসার ছুটিতে বাড়িতেই ছিলাম,
হঠাৎ আম্মু অসুস্থ হয়ে যায়,আব্বু আম্মুকে নিয়ে চুয়াডাঙ্গা জেলার দর্শনা উপজেলার একটা ক্লিনিকে নিয়ে যান,ডাক্তার পরিক্ষা নিরিক্ষা করার পরে বলে, পেটে টিউমার ধরা পড়ে,ডাক্তার বললো জরুরী অপারেশন করতে হবে, না হলে ক্যান্সার হয়ে যাওয়ার সম্ভনা রয়েছে,বাড়ির কাউকে কোন কিছু না জানিয়ে জরুরী অপারেশন করে ফেলে, এবং পরবর্তিতে আম্মু কিছু দিন পর সুস্থ হয়ে যায়,আলহামদুলিল্লাহ ।
পরের বছর আবার ভর্তি হলাম মাদ্রাসায়, আবার শুরু হলো আগের মতোই পড়াশোনা,বাড়ি যাই আসি এভাবে
আরো এক বছর কেটে গেলো।
পরে আম্মু আবারও অসুস্থ হয়ে যায়,
ডাক্তারের কাছে নিয়ে যায় আব্বু, পরিক্ষা করার পর, রিপোর্ট আসে, পরে ডাক্তার জানাই, ধরা পড়ে মরন ব্যাধী রোগ, ব্লাড ক্যান্সার, যার নেই কোন উত্তর।
অনেক দিন যাবত চিকিৎসা করার পর আম্মু অনেক টা সুস্থ হয়ে যায়,, আলহামদুলিল্লাহ,,
আমার পড়াশোনা কিন্তু চলছে,, আম্মু একদম পুরো সুস্থ, একটা সাধারন মানুষের মতো সুস্থ হয়ে য়ায়, আম্মুকে দেখে বোঝায় যেতো না আম্মু এই রোগে আক্রান্ত,সবাই বলতে থাকলো ভালো হয়ে গেছে তোর আম্মু,,, তখন আমার ছোট ভাইয়ের বয়স দুই বছর,।
💞💞মায়ের সপ্ন পূুরন করার জন্য
আমি আবার মাদ্রাসায় চলে আসি,
আমি পনেরো বিশ দিন পর পর বাড়ি যেতাম,কয় একবার বাড়িও গিয়েছিলাম তখন পুরো পুরি আম্মু সুস্থ ছিল,আবার মাদ্রাসায় চলে আসি।
,,,,,,,কিছু দিন পর,,,
হুজুরের কাছে ফোন দেয় বাসা থেকে,,,এবং হুজুর আমাকে ডাকে,কিছু না বলেই,বলে বাড়ি যেতে,আমার কাছে ফোন না থাকায়, বাড়িতে যোগাযোগ না করেই বাড়ি চলে আসি, এসে দেখি বাড়িতে কেউ নাই,দাদি আমাকে দেখেই কান্না শুরু করে দেয়,দাদির কান্না শুনে কাকিরা চলে আসে,,,
কাকিদের কাছ থেকে শুনি, মা রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছে,আমি বাড়িতে যাওয়ার দুই তিন আগে ভর্তি করায় মাকে,,দাদি কাকিরা বলে তোকে জানাতে মানা করে গিয়েছিলো তোর মা,তোর পড়ার ক্ষতি হবে বলে,তাই বলিনি তোকে।
কাকিরা আরো বলে তোর মার অবস্থা খুবই খারাফ জীবিত দেখতে চাইলে তাড়াতাড়ি যা।
তখনি মেজো আব্বুর সাথে রওনা দিই,কোটচাঁদপুর থেকে রাজশাহীর পথে,ট্রেন না পাওয়াই লোকাল ট্রেনে উঠি ,পরে রাত এগারো টার দিকে পৌছায় রাজশাহী,পরে রিকশা ভাড়া করে হাসপাতালে আসি ।
পরে খালা ছিলো আম্মুর কাছে, খালা, আম্মু,ও আব্বু আমাকে দেখেই কান্না শুরু করে দিলো,তখন আম্মুর অবস্থা খুব খারাফ ছিলো, এবং বলতেছে শেষ বারের মতো দেখে নাও তোমার মা কে,হয়তো আর সুযোগ পাবা না, মা বলে ডাকার,আমিও অনেক কান্না করতেছি,কিছুক্ষণ পরে ডাক্তার এসে আমাদের বাইরে বের করে দেয়,এবং বাইরের বেলকুনিতে রাত কাটালাম।
পরের দিন ডাক্তার বললো, ক্যমো দিতে হবে,- আটটা দশটা মতো, এক এক টা ক্যমোর মূল্য ছিলো মনে হয় পনেরো হাজার টাকা করে।
আমার ছোট ভাইটা আম্মুর কাছে ছিলো,তখন ও অনেক ছোট, ভাইটা দুধ খেতো,আম্মুকে আব্বুকে অনেক জালাতন করতো হাসপাতালে, আমার ছোট ভাইটার নাম আল-আমীন,তাই আমাকে বলে আল-আমীন কে বাড়ি নিয়ে যেতে,পরের দিন ছোট ভাইকে কোলে নিয়ে কাঁদতে কাঁদতে ট্রেনে উঠি,ছিট না পাওয়াই, দাড়িয়ে দাড়িয়ে কিছু দূর আসি,তারপরে ছিট পায়, আবার ফিরে আসি রাজশাহী থেকে কোটচাঁদপুর আসি,,,।
তিন টা কি চার টা ক্যমো দিয়েছিলো তারপর আম্মুর কোন পরিবর্তন না হওয়াই আম্মুকে বাড়িতে নিয়ে চলে আসে আব্বু ।
পরে আমি আবার মাদ্রাসায় চলে যায়।
আমার বড় মামা থাকে ময়মনসিংহ,
মামা ফোন দিয়ে বলে মামার ওখানে নিয়ে যেতে,পরে আব্বু আমাকে ফোন দেই আবার বাড়ি চলে আসি,যেহুতু বাসায় ছাগল গরু ছিলো, অবুলা প্রানি না খেতে পেলে তো মরে যাবে,মামার কাছে গেলে,অনেক দূরের পথ,সাত আট দিন পর বাড়ি আসতো আব্বু, তারজন্য আব্বু চলে গেলে ঐ গুলো দেখবে কে,দেখার মতো কেউ ছিলো না,তাই আমাকে বাড়ি আসতে হতো। পরে আব্বু, আম্মুকে মামার ওখানে নিয়ে যাই,এবং রেখে আসে মামার কাছে,মামা চিকিৎসা করায়,,,
কিছু দিন পরপর আব্বু আম্মুর কাছে যেতো, যখন যেতো, তখন আমাকে বাড়ি আসতে হতো,পরে ছুটি নিয়ে আমি আবার বাড়ি চলে আসতাম,এভাবে কেটে যায় চার পাঁচ মাস,এক পর্যায়ে আমি মাদ্রাসা থেকে একবারে চলে আসি।
আম্মুর চিকিৎসা চলছে,এক পর্যায়ে আম্মুর চিকিৎসার জন্য আব্বুর আলমসাধু গাড়িটিও বিক্রি করে দেয় আব্বু,আম্মুর চিকিৎসা করানোর জন্য।
আমি মাদ্রাসায় ছিলাম,এমন সময় একটা কিতাব ( আরবি বই) কিনতে বলে হুজুর,টাকা না থাকায় বাবা কে বলি,,,বলে টাকা নাই,আব্বু বলে পরে কিনিস,পরে আম্মুকে বলি ফোন করে আম্মু চিকিৎসার টাকার মধ্যে থেকে কিতাব কেনার জন্য আমাকে টাকাটা দেয়,,।
পরে ময়মনসিংহ চিকিৎসা করাই,সাত আট মাস, আম্মুর কোনো পরিবর্তন না হওয়াই আম্মুকে বাড়িতে নিয়ে চলে আসে আব্বু,,,
পরে নানির বাড়ি নিয়ে যায়, নানির কাছেই থাকে আম্মু, নানিদের বাসা নিকটে হওয়ায় দুই একদিন পরপর দেখে আসতাম আম্মুকে ।
😭😭মায়ের মৃত্যু 😭😭
কিছু দিন পর নানি ফোন দেয়,বলে খাওয়া দাওয়া করছে না, তোর আম্মু, কোন কিছু হুস নাই,কাউকে চিন্তে পারছে না,,নানি বলে তুই আয়, হয়তো তোকে চিনতে পারবে,নানির কথা মতো তাড়াতাড়ি চলে যায় নানির বাড়ি।
পরে আমি আম্মুর সামনে গেলাম আমাকেও চিনতে পারেনা,,,
খাওয়া দাওয়া পুরো বন্ধ,শুধু কোন রকম পানি বা,তরল জাতীয় জিনিশ খেতে পারে,পরের দিন আম্মুকে শুধু পানি খাওয়ায়ে,পাশের আরএক মামার বাড়ি আসি,,,সারা রাত ঘুম না হওয়ার কারনে,,এখানে কখন যেন ঘুমাই পড়ি বুঝতে পারিনা।
চিল্লাচিল্লির আওয়াজ শুনে হটাৎ ঘুম ভেঙ্গে যায়,এসে দেখি আম্মু আর নাই,
চলে গেছে না ফেরার দেশে,😭😭সবাই দোয়া করবেন আমার আম্মুর জন্য,আল্লাহ তায়ালা তাকে জান্নাতের উচ্চ মাকাম দান করেন।
আমার আম্মু পর্দা করতেন দ্বীনদারি ছিলেন,এই জন্য বেশি দেরি না করে,খুব তাড়াতাড়ি দাফনের ব্যবস্থা করা হয়।
জানাযা শেষ করে,নিজ কাধে করে নিয়ে যায় শেষ বিদায় দেওয়ার জন্য,😭😭😭
এবং আমিই আম্মুকে কবরে নামাই,
😭খুব কষ্ট কর মূহুর্ত,যখন মা বাবার লাশ সন্তানের কাঁধে থাকে😭, দোয়া করি আমার মতো কপাল পোড়া আল্লাহ তায়ালা যেন আর কাউকে না করাই,
দোয়া করি হাজার বছর বেচে থাকুক, পৃথিবীর সকল মা বাবা,এবং যাদের মা বাবা দুনিয়াতে নাই,তাদের মা বাবার কবরকে জান্নাতের আলোই আলোকিত করে দাও আল্লাহ ।
সবাই আমার আম্মুর জন্য দোয়া করবেন,আল্লাহ তায়ালা যেন তার কবর কে জান্নাতের সাথে সংযোগ করে দেন,,আমীন।
🌱🌱বাবার বিয়ে 🌱🌱
কয়েক মাস কেটে গেলো, রান্না করার মতো কেউ নাই বাড়িতে,দাদি কিছু দিন রান্না করে দেয়,তিনিও অসুস্থ ছিলেন, বোনটা ছোট,তেমন পারে না,আমি নিজেই রান্না করতাম,তরকারী রান্না করতে পারতাম না,শুধু ভাজির উপরেই চলতো খাওয়া দাওয়া,অনেক কষ্ট হতো খাওয়া দাওয়ার,যার যার সংসার তার তার কাছে,প্রতিদিন তো আর কেউ রান্না করে দিবে না, আব্বু বলে এভাবে আর কতে দিন খাবো, যার যার সংসার তারতার কাছে,কে রান্না করে দিবে আমাদের।
তখন আমার ছোট ভাইয়ের বয়স তিন বছর পার হয়,
কোন উপায় না থাকায় আব্বু আবার দ্বিতীয় বিয়ে করেন কয়েক মাস কেটে গেলো,,,।
😭😭কষ্টময় শিক্ষা জীবন 😭😭
মায়ের সপ্ন তো আমাকে পূরন করতে হবে
তাই আমি আবার ভর্তি হলাম মাদ্রাসায়,পরে বাড়িতে যাওয়া আসা করতাম,ভালো লাগতো না কোন কিছু,আবার মাদ্রাসায় চলে যেতাম ।
বাড়িতে আসলে একটুও ভালো লাগতো না আমার,মনে হতো পুরো বাড়িটা ফাকা পড়ে আছে।
এভাবে কিছু দিন যায়, বাড়িতে যায়,একদিন দুইদিন থেকে আবার চলে আসতাম,আগের মতো আর খোজ খবর নিতো না আমাকে বাড়ি থেকে,আমিও রাগে রাগে ফোন দিতাম না বাড়িতে,আস্তে আস্তে দূরত্ব সৃষ্টি হলো বাসা থেকে,এভাবে কেটে যেতে থাকলো দিন গুলো,এক পর্যায়ে এভাবে এক সাপ্তাহ,দুই সাপ্তাহ, তিন সাপ্তাহ, এক মাস,দেড় মাস,প্রিরাই দুই মাস কেটে যায়,কোন যোগাযোগ নাই বাড়িতে,একবারের জন্যেও ফোন করিনি,যার সাথে অন্তত সপ্তাহে দুইবার কথা না বলে থাকতে পারতো না বাড়ির লোকজন ,সেই মানুষ টার সাথে,প্রিরাই দুই মাস যোগাযোগ নাই,আসলে আমি আমার শতমাকে ও বাবাকে ছোট করার উদ্দেশ্যে কথা গুলো আপনাদের মাঝে তুলে ধরিনি, আসলে আমার কপালে এমনটা হওয়ার ছিলো,আমি কাকে দোষ দিবো,আসলে সব কিছুই তো কপালের লেখন।
হুজুররা বেতনের টাকার জন্য চাপ দিতে লাগলো,পরে আমার এক কাকা থাকতো মালোইশিয়া, বলি এই বিষয় টাকা লাগবে,পরে কাকা টাকা পাঠিয়ে দেই,,,
অনেক কষ্টে মধ্যে কাটছিলো দিন গুলো,আমি তিন তালায় থাকতাম মাদ্রাসায় , বেলকুনিতে এসে মাঝে মাঝে খুব কান্না করতাম, কাউকে কখনো বুঝতে দিতাম না,যখন রাতে ঘুমাতাম কাঁদতে কাঁদতে বালিশ ভিজে যেতো,তখন খুব কষ্টে কাটতো দিন গুলো।
মানুষ অন্ততো বছরের দুই টা দিন,সবাই সবার পরিবারের সাথে আনন্দে কাটাই,আর এই হতোভাগা কপাল পোড়া ছেলেটার এমন ও দিন গেছে ঈদ ও মাদ্রাসায় কাটিয়েছি।
👉একটা মেসেজ আমি আপনাদের কে দিতে চায়,মনে করিয়ে দিচ্ছি, নায়ক রিয়াজের শ্বশুর এর কথা,মোহশিন খান।
একাকীত্ব জীবন, যার শেষ পরিনতি হয় মৃত্যু।
👉এই কথাটা বলার উদ্দেশ্য, আমিও কিছু দিন এই একাকীত্ব জীবন পার করে এসেছি,খুব কষ্ট কর একটা মূহুর্ত, অনেক জন্ত্রনা দায়ক একটা মূহুর্ত, যার প্রমান,মোহশিন খান,,।
✌️আল্লাহ তায়ালা আমাকে এখনো আপনাদের মাঝে,বাঁচিয়ে রেখেছেন এর জন্য শুকরিয়া আদায় করছি, আলহামদুলিল্লাহ।
,,,,,,শুরু হলো কর্ম জীবন,,,,,,
এভাবে এক বছর কেটে যায় । আস্তে আস্তে পড়ার প্রতি মন উঠে গেলো, আমি ডিসিশন নিই, আমি আর পড়বো না,ছুটিতে বাড়ি আসি,,পরের বছর আর ভর্তি হয়নি,এখানেই শেষ হয় শিক্ষা জীবন
বাড়িতে কিছু দিন আমি থাকি,পরে চিন্তা ভাবনা করি আমাকে কিছু একটা তো করতে হবে, কিন্তু কি করবো, বাসায় কাউকে না জানায়ে এক বন্ধুর সাথে ঢাকায় চলে যাই।
ঢাকায় যাওয়ার পনেরো দিন পরে চিকন গুনিয়া জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ফিরে আসি বাড়িতে,,,,।
👉বাড়িতে কিছু দিন থাকার পরে, আমার দ্বিতীয় পক্ষের মামা ফোন দেয়,বলে মামা বাসায় যেতে,মামার বাসায় আসি,মামার ক্রোকারীজ এবং প্লাস্টিক ফার্নিচারের বড় দোকান আছে,যশোর চৌগাছা বাজার,বললো দোকান দারি কর,শুরু করলাম দোকানদারী ।
👉এভাবে আস্তে আস্তে কেটে যায় দুই বছর,দুই বছর পর মামার ম্যানেজার মালাইশিয়া চলে যায়,এর মধ্যে সব কিছু আমি শিখে ফেলি,ঐ দায়িত্ব চলে আসলো আমার কাঁধে,,,এভাবে আরো তিন বছর কেটে গেলো,এখনো ঐ দায়িত্ব পালন করছি আল্লাহর রহমতে ।
আর একটা কথা আমি আপনাদের কে জানাবো,সব দোকান্দার কিন্তু মালের একটা দাগ দিয়ে রাখে, যে এটা এতো কেনা, ওটা এতো কেনা,আমার মামার দোকানে,সব ছোট বড়,আয়টেম মিলায়ে,পাঁচশত+ আয়টেমে মাল আছে,আজ পর্যন্ত আমি কোন দিন কোন মালে দাগ দিয় নাই,আমি যখন দোকানে না থাকি,এমনকি আমার মাহাজন,অর্থাৎ আমার মামা আমার কাছে ফোন দিয়ে মালের দাম জিগাসা করে নেই, তারপর বিক্রি করে,আমি অহংকার করছি না,আমি যদি দোকান থেকে বাইরে কোন কাজে যাই,কোম্পানির এস আর আসলে শুধু আমার সাথে কথা বলার জন্য,ঘন্টার পর ঘণ্টা বসে থাকে দোকানে।আমি কাজে কখনো 9- 5টা দেখতাম না,এমন ও দিন গেছে রাত এগারোটা বারটা পর্যন্ত কাজ করেছি, যার কারনে তার সুফল আমি এখন পাচ্ছি, আলহামদুলিল্লাহ ।
🤜উদ্দ্যোক্তা জীবন 🤛
ইউটিউব এ ভিডিও দেখতে দেখতে স্যারের একটা ভিডিও সামনে আসে,এবং স্যারের ঐ ভিডিও টা দেখার পর আমার খুব ভালো লাগে,আস্তে আস্তে স্যারের ভিডিও গুলো কন্টিনিউ করতে থাকলাম,পরে সতেরো তম ব্যাচ এ রেজিট্রেশন করি,এবং স্যারের প্রতি অনেক ভালবাসা সৃষ্টি হয়,দোয়া করি আল্লাহ তায়ালা স্যারকে নেক হায়াত দান করুন,আমীন ।
👉আমার মনে মধ্যে চিন্তা ভাবনা আসতে থাকলো আমাকে কিছু একটা করতে হবে,ঠিক মতো ঘুমাইতে পারতাম না,কি করবো আমি,পরে চিন্তা ভাবনা করি,আমি ক্রোকারীজ ও প্লাস্টিক ফার্নিচারের ব্যাবসা করবো,এই বিষয়ে সব তো আমার জানা,তাই দোকান নিয়েছি আমি মোট তিনটা দোকান নিয়েছি, ঝিনাইদহ জেলার, কোটচাঁদপুর উপজেলার,সাফদার পুর বাজারে,এখনো দোকান চালু করিনি,কয় এক মাস পরে করবো,সবাই দোয়া করবেন আমার জন্য ।
✌️✌️এতোক্ষন ভালবেসে আপনার মূল্যবান সময় টুকু দিয়ে,আমার জীবনের গল্পটা পড়ার জন্য আপনাদের সবাইকে আমার মনের গভীর থেকে জানাই অনেক অনেক ধন্যবাদ, দোয়া করি শুভ হোক আপনাদের আগামী দিনের পথচলা।
💞💞আপনারা সবসময় আমার পাশে থাকবেন, এবং আমার আম্মু ও ছোট ভাইটার জন্য দোয়া করবেন, আমার আম্মুর সপ্নটা,আমি আমার ছোট ভাইয়ের মাধ্যমে পূরন করতে চায়,ও এখন ক্লাস ফোর এ পড়ে,সামনে বছর ওকে মাদ্রাসায় ভর্তি করে দিব,ইনশাআল্লাহ।
💞💞সবশেষে আপনাদের সবার সুখি ও সুন্দর জীবন কামনা করি, সুন্দর জীবনের প্রতিটি দিনের প্রতিটি ক্ষণ, শুভ কামনায় আজকের মত এখানেই বিদায় নিচ্ছি, ভালোবাসা অবিরাম,আসছালামু আলাইকুম ।
আমি কাজ করছি,ক্রোকারীজ এবং আরএফএল প্লাস্টিক, হ্যামকো, বেঙ্গল, আকিজ,লিরা,এনপলি,এই সব কোম্পানির হাউজওয়্যার ও প্লাস্টিক ফার্নিচার আয়টেম নিয়ে ।
📌স্ট্যাটাস অফ দ্যা ডে ৭৮৬
তারিখ ১৬-০৪-২০২২
মো: আমিনুর রহমান
ব্যাচ নং: 17
রেজিট্রেশন নং: 91145
জেলা: ঝিনাইদহ
থানা: কোটচাঁদপুর।
বর্তমান ঠিকানা : যশোর, চৌগাছা,
সবাই আমাকে সহযোগীতা করবেন, দোয়া করবেন আমার জন্য।
❤️ভালবাসা রইলো সবার জন্য♥