দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে আমার আগামীর পথ চলা।
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
আসসালামু আলাইকুম।
সন্মানিত প্রিয় বন্ধুগন,
আশা করি আল্লাহর অশেষ রহমতে সবাই ভাল আছেন। আমিও আল্লাহর রহমতে ভাল আছি আলহামদুলিল্লাহ । নিজের বলার মতো একটা গল্প ফাউন্ডেশন-এর সবাইকে জানাই আন্তরিক ভালোবাসা ও অভিনন্দন ।
(কৃতজ্ঞতা প্রকাশ)
প্রথমেই শুকরিয়া জানাই মহান আল্লাহ পাকের দরবারে যিনি এই করোনাকালীন সময়ে আমাদের সুস্থ্য রেখেছেন,ভালো রেখেছেন আলহামদুলিল্লাহ। কৃতজ্ঞতা জানাই নিজের বলার মতো একটা গল্প ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা, এই সময়ের সেরা আবিষ্কারক কিংবদন্তি ,আমাদের প্রিয় ম্যান্টর, প্রি শিক্ষক - ম্যাজিক ম্যান জনাব Iqbal Bahar Zahid স্যারের প্রতি। যিনি বর্তমান সময়ের শিক্ষিত বেকার তরুন তরুণীদেরকে স্বাবলম্বী করার লক্ষ্যে অনলাইন বিওিক ৯০ দিনের শিক্ষা কর্মশালা চালু করেছে।
এই প্লাটফর্ম থেকে শিক্ষা গ্রহন করে ইতিমধ্যে অনেকেই তার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করে যাচ্ছেন।
আমার কাছে সব চেয়ে বড় বিষয় হলো ভালো মানুষের প্লাটফর্মে অপরিচিত মানুষদের সাথে যেই একটা সম্পর্ক তৈরী করে দিয়েছেন তার জন্য আবার ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি প্রিয় স্যার।
তার পাশাপাশি অনেক অনেক ভালোবাসা ও শুভেচ্ছা জানাতে চাই """"নিজের বলার মতো একটা গল্প ফাউন্ডেশনের কাজে নিয়জিত, সেচ্ছাসেবী আমাদের সকলের প্রিয় এই প্লাটফর্ম এর প্রতিটি কোর ভলেন্টিয়ার, মডারেটর, জেলা এম্বাসেডর, উপজেলা এম্বাসেডর, কমিউনিটি ভলান্টিয়ার এবং আজীবন সদস্যবৃন্দদের কে। তারা যার যার অবস্থান থেকে ৬ লক্ষ মানুষের পরিবারকে সব সময় বিভিন্ন ভাবে সহযোগীতা করে যাচ্ছেন। সকলের প্রতি অফুরন্ত ভালোবাসা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
💞🥀 🌱 প্রত্যেক মানুষের জীবনে একটি ছোটগল্প থাকে, তদরুপ আমার জীবনেও একটি গল্প আছে বিশাল ভয়ঙ্কর একটি গল্প ।
আমার ফ্যামিলিতে আমার মা, বাবা , দুই ভাই দুই বোন নিয়ে আমাদের একটি মধ্যবিত্ত পরিবার । বাবা বন্দর নারায়ণগঞ্জ বাড়ি করায় বন্দরেই বড় হই। আমার বাবা ছিল দেওয়ানজী। মা আমাদের কে সারা সপ্তাহ পড়াশোনা করার থেকে সবই করাতো সপ্তাহে একদিন বাবা বাড়ি আসতো। আমার মাই আমাদের সবকিছু করা তো পড়াশোনা থেকে শুরু করে। আমার মা তেমন শিক্ষিত ছিল না তারপর লাখ লাখ শুকরিয়া এমন একটি মা আমাকে আল্লাহ উপহার দিয়েছেন ।
ছোট বেলা থেকেই পড়াশোনার প্রতি আমার আগ্রহ ছিল অনেক। আমাকে কেউ বলতে হতো না যে, তুমি পড়তে বসো, আমি নিজ দায়িত্বেই পড়তে বসতাম। আমি যখন ক্লাস এইটে পড়ি তখন থেকেই টিউশনি করি। একটি বাচ্চা পড়ালে 50 টাকা দিত আমিতো মহাখুশী। পড়াশোনার পাশাপাশি হাতের কাজও করতাম।
খুব শখ ছিল হাতের কাজের প্রতি। এভাবে কেটে গেল কয়েকটি বছর। এসএসসি পরীক্ষায় পাশ করি ফার্স্ট ডিভিশন পেয়ে। বাবা-মার দায়িত্ব শেষ,,
এখন সিদ্ধান্ত নিল বিয়ের।
বাবা-মা সিদ্ধান্ত নিতে নিতে নারায়ণগঞ্জ মহিলা কলেজে ভর্তি পরীক্ষা দেই,, আমি আর আমার এক আন্টি। ভর্তি পরীক্ষায় পাশ করে যাই,,, কিন্তু দুঃখের বিষয় আমি আর ভর্তি হতে পারিনি। টাকা জোগাড় করতে করতে ভর্তির ডেট চলে যায়।
হোসেনপুর একটি নতুন ডিগ্রি কলেজ হয়, সেখানে বাবা-মাকে লুকিয়ে ভর্তি হই। নানার বাড়ি ছিল সেখানে আমি ফার্স্ট ইয়ার পর্যন্ত পড়াশোনা করে উত্তীর্ণ হয়ে সেকেন্ড ইয়ারে পদার্পণ করি।
তার পর বিয়ে হয়ে যায়। তবে বিয়ের 24 বছর পর আমি ইন্টার পরীক্ষা দেই। তবে আমার সাহেব খুব ভালো মানুষ তাছাড়া ইচ্ছা থাকলে উপায় হয়। যেই কোন জিনিস মন থেকে চাইলে কোন না কোন ভাবে এটা পীরন হয়ে যায়।
তারপর শুরু হলো আমার শ্বশুরবাড়ির কর্মজীবন। আমার একটি পুত্র সন্তান হয়। জন্মের দুইদিন পরই মারা যায়। জীবন হয়ে গেলে এলোমেলো, ডিপ্রেশনে চলে যাই এমন পাপ করেছি এত বড় সাজা দিলো আল্লাহ।
তখন আমার বয়স ছিল 16, 17 বছর। তার তিন বছর পর আমার আরও একটি পুত্র সন্তান হয় শুকরিয়া আল্লাহর কাছে আমার ছেলের জন্য। ছেলের জন্মের আট বছর পর একটি ফুটফুটে কন্যা সন্তান দান করলেন। সবাই খুব খুশি। এই খুশির মোধ্যে আমার জীবনে নেমে এলো কালো ছায়া, হতাশার জীবন, মেয়ের বয়স যখন 45 দিন। ডাক্তার জানান ওর অপারেশন লাগবে তাও আবার তিনটা, অনেক কিছুর সাথে মোকাবেলা করতে হয়েছে। যুদ্ধ করতে হয়েছে জীবনের সাথে। দুই বছরের মধ্যে তিনটা অপারেশন শেষ করলাম।
বিপদ এখানেই শেষ নয়। আমাদের একটি দোকান ছিল বাজারে, মেয়ের জন্য চিন্তা ভাবনা করতে করতে সে রাতেই কয়েলের আগুন থেকে আমাদের দোকান টি পুড়ে যায়। চার দিকে যখন অন্ধকারে হাবু ডুবু খাচ্ছি । তখন আমার শাশুড়ী সাপোর্ট করলো তুমি এত কাজ জান কিছু একটা করতে পার, অনেক চিন্তা করে চলে আসি বন্দর নারায়নগঞ্জ বাবার বাড়ি এলাকায়, ঘর ভাড়া নেই। ২০০৯ সালে একটা কিন্ডার গার্ডেন স্কুল জব করি আর সেই সাথে অফ লাইনে কুশিকাটা ও হাতের কাজ শুরু করি। আমি অনুপ্রেরনা পেয়েছি আমার দাদী শাশুড়ীর কাছ থেকে তিনি সব সময় বলতেন আকাশে পাখি উড়ে গেলেও নাকি আমি শিকার করতে পারতাম।৷ আমার নাকি এত প্রতিভা ছিল, জবের পাশাপাশি কাজ ও ভালোই চলতো । করোনার কারনে স্কুল ও বন্ধ হয়ে যায়। আবার শুরু হয় সমস্যা।
স্বপ্ন পূরণের প্রত্যয় নিয়ে আমার পথ চলা প্রতিটি মানুষের জীবনেই কিছু না কিছু স্বপ্ন থাকে। আর সে লক্ষ্যেই 2022 সালের জানুয়ারী মাসে Rita Aktery আপু মাধ্যমে এই প্রিয় গ্রুপে নিজের বলার মত গল্প ফাউন্ডেশনের রেজিষ্ট্রেশন করি। এর পর থেকে আমি যেন জীবনের মোড় ঘুরাতে পরি।
এত ভালো মানুষের সন্নিধ্য আমাকে যেন নতুন করে স্বপ্ন দেখাতে সাহায্য করে । আর স্যারের কথা তো বলে শেষ করাই যাবে না। প্রিয় স্যারের প্রতিটি সেশন অনেক ভালো লাগে। আমার কাছে মনে হয়েছে প্রতিটি সেশন যেন আমাকে উদ্দেশ্য করে লিখেছেন। এত উৎসাহ উদ্দীপনা সামনে এগিয়ে যাবার পথ প্রদর্শক। কোনোদিন ভাবিনি একজন ভালো মানুষ ভালো উদ্যোগ নিতে পারবো। সবাই সম্ভব হয়েছে স্যার এর জন্য
। মানুষের সামনে গিয়ে কথা বলতে পারতাম না। লজ্জা,ভয়-শংকা বাধা হয়ে দাঁড়াতো। সেই আমি আজ কথা বলতে শিখেছি। কথা বলার জড়তা কেটে যাচ্ছে। আমার জন্য সবাই দোয়া করবেন
কোনো শেষ নেই। জড়তা কাটানোর জন্য ভিডিও করছি।
প্রতিদিন সেশন চর্চা করে যাচ্ছি। খুবই ভালো লাগার জায়গা এটা। এখন একটার পর একটা ব্যবসায়িক আইডিয়া মনের মধ্যে উঁকি দেয়। আফসোস এর ব্যাপার একটা তা হলো জীবন থেকে কতটা বছর পার হয়ে গেছে। আরো আগে যদি ইকবাল বাহার জাহিদ স্যারের মতো মানুষের আগমন ঘটতো।
তাহলে হয়তো জীবনের মোড় ঘুরে দাঁড়াতো।নতুন করে স্বপ্ন দেখি। ইনশাল্লাহ আমি ও আবার ঘুরে দাঁড়াবো। নিশ্চয়ই আল্লাহ ধৈর্যশীলদের পছন্দ করেন।
স্যারের দেয়া শিক্ষা
"স্বপ্ন দেখুন, সাহস করুন,
শুরু করুন এবং লেগে থাকুন,, সফলতায় আসবেই "
স্যারের এই স্লোগানগুলো যেন জীবনে চলার পথে নতুন করে বেঁচে থাকার শক্তি জোগায়। আধার শেষে যেমন আলো উদ্ভাসিত হয়, তেমনি দুঃখের পরে সুখ আসবে ইনশাআল্লাহ। আমি নিজেই নিজের উপর অবাক হয়ে যাই কোথা থেকে আমি এত শক্তি-সাহস, উদ্দীপনা ও ধৈর্য পাই! তার উত্তর হলো আমাদের প্রিয় প্লাটফর্ম ও স্যারের শিক্ষা। লেগে থাকার কোনো বিকল্প নেই।
আমি ছোটবেলা থেকেই একটু শান্ত,
ছোটবেলা থেকেই একটু শান্ত, ধৈর্যশীল এবং পড়াশোনার প্রতি খুব আগ্রহী ছিলাম। একারণে বিয়ের ২৪ বছর পর ইন্টার পরীক্ষা দেই। স্বপ্ন দেখতে সবারই ভালো লাগে। তবে স্বপ্ন দেখা এবং তা বাস্তবায়ন করা দুটো দুই জিনিস সম্পূর্ণ আলাদা । স্বপ্ন দেখা শেষ করে সাহস করে শুরু করতে লাগলাম। এখন শুধু লেগে থাকার পালা । আমি সবসময় আল্লাহর কাছে শুধু বলি, "হে আল্লাহ বিপদে আমি যেন, ভয় না পেয়ে ধৈর্য ধরে আপনার উপর ভরসা করে লেগে থাকতে পারি সেই শক্তি, সাহস ও ধৈর্য্য আমার মনের ভিতর বিরাজমান রেখো।
আমার স্বামী,
সত্যি বলতে আমার স্বামী মতো মানুষ ভাগ্যের গুনে এমন মানুষ মিলে। আমার ২৪ বছর বিবাহিত জীবনে আমাকে তিনি অনেক সাপোট করেছে।
আল্লাহর কাছে প্রার্থণা করি আমার স্বামীর জন্য। তার মন মানুষিকতা যেন সব সময় ভালো থাকে । নতুন করে যেন স্বপ্ন দেখতে পরি পরিবারের সবাইকে নিয়ে । নতুন করে শুরু করতে হবে আমাদের এই পথ চলা।
যেকোনো কাজ ধৈর্য্য সহকারে করতে হবে। লেগে থাকার কোনো বিকল্প নেই। আমার ধীর বিশ্বাস আমার এই সাময়িক সমস্যা থাকবে না চিরকাল। আবার আমি আমার কাংখিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবো ইনশাআল্লাহ। তা শুধু সময়ের ব্যাপার।
স্বামী স্ত্রীর ভালোবাসার বন্ধন চিরকালের, চিরদিনের। অভাবের তারনায় ভালোবাসা যেন জানালা দিয়ে পালিয়ে না যায়। করুণা বা দয়া নিয়ে বেঁচে থাকতে চাই না। চাই সম্মান নিয়ে বেঁচে থাকতে। নতুন নতুন স্বপ্নগুলো আমাকে ঘুমাতে দেয় না। আমি কাজ পাগল মানুষ। আমাকে কিছু করতেই হবে।
এই দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে আমার আগামীর পথ চলা। কবে আমি আমার স্বপ্নগুলো বাস্তবে পরিণত করতে পারব? জীবন থেকে কতটা সময় চলে গেল! সেই চাওয়া পাওয়ার হিসাব না হয় নাই করলাম। আমি এখন এবং আগামীতে কি করব সেটাই বড় ব্যাপার।
পরিশেষে এই টুকু বলবো, আমার প্রিয় ভাই ও বোনেরা আমার পাশে থেকে সহযোগিতা করবেন। ইনশাআল্লাহ। আমার এই লেখার মাঝে কোনো ভুল ত্রুটি হলে, বা না জেনে কারো মনে কষ্ট দিলে আমাকে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
আমার প্রিয় এই প্লাটফর্ম এর কারণেই আজকে আমার এই অগোছালো কথাগুলো আপনাদের মাঝে তুলে ধরার সুযোগ হয়েছে। এজন্য স্যারকে জানাই অসংখ্য ধন্যবাদ। স্যারকে এবং স্যারের পরিবারের সবাইকে আল্লাহ সুস্থ ও নিরাপদে রাখুক এবং দীর্ঘ নেক হায়াত দান করুক। আমিন।
কাজ করছি
👉 বাটিক কুশন কভার, বাটিক ওয়ান পিস, বাটিক কাজ করছি বাটিক কুশন কভার, বাটিক ওয়ান পিস, বাটিক টু পিস , বাটিক থ্রী পিস,। বাটিক পাঞ্জাবির পিস, বাটিক রেডিমেড পাঞ্জাবি, হাতের কাজের ওয়ান পিস, টু পিস, থ্রী পিস, পাঞ্জাবি। হ্যান্ড প্রিন্ট ও কুশিকাটার বেবি ড্রেস। হোম মেড কেক, পিঠা, বালাচাও, চ্যাপা শুটকি, পিস , ।
নিজের বলার মতো একটা গল্প ফাউন্ডেশনের প্রিয় ভাই ও বোনেরা আশা করছি ভালোবেসে সব সময় পাশে থাকবেন। ও আমার জন্য দোয়া করবেন। আপনাদের সহযোগিতা পেলে ইনশাআল্লাহ আমি অনেক দুর এগিয়ে যেতে পারবো। ভালো থাকবেন সবাই আপনাদের সকলের সুস্বাস্থ্যে ও দীর্ঘায়ু কামনা করছি।
আমার জন্য সবাই দোয়া করবেন। আল্লাহ হাফেজ।
📌📌স্ট্যাটাস অফ দ্যা ডে ৭৮৬
তারিখ ১৭-০৪-২০২২
মহসীনা আলম
বন্দর নারায়নগঞ্জ থেকে
ব্যাচ নাম্বার ১৬
রেজিস্ট্রেশন নাম্বার ৮১৬৬৪
পেইজ অপুর্ব ফ্যাশন
Apurbo Organic Food