বিনা পুঁজিতে এক মাসের উদ্যোক্তা হয়ে ২৬০০০ টাকা আয়...
⛪⛪বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম ⛪⛪
আসসালামু আলাইকুম
ওয়ারহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ
🕺আজ আপনাদের সাথে আমার জীবনের গল্প শেয়ার করলাম আশা করি সবাই শেষ পর্যন্ত সাথে থাকবেন। জানতে পারবেন জব এর পাশাপাশি বিনা পুঁজিতে এক মাসের উদ্যোক্তা হয়ে ২৬০০০ টাকা কিভাবে আয় করেছি✌️
🤲সকল প্রসংশা মহান রাব্বুল আলামিনের প্রতি যিনি আমাকে আশরাফুল মাখলুকাত হিসেবে সৃষ্টি করেছেন ও সুস্থ রেখেছেন। (আলহামদুলিল্লাহ)
এবং আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সঃ) প্রতি দুরুদ ও সালাম । যিনি পৃথিবীতে এসেছিলেন সমস্ত মানবজাতির মুক্তি ও কল্যাণের দূত হিসেবে।
💞শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি প্রিয় বাবা-মাকে। যাদের উছিলায় মায়াবী এই পৃথিবীতে এসেছি। বড় হয়েছি তাদের পরম মমতা ও অকৃত্রিম ভালোবাসায়। যাদের ঋণ কখনো শোধ হবার নয় 🤲দোয়া করি আল্লাহ নিকট (রাব্বির হাম-হুমা কামা রাব্বা ইয়ানি ছাগিরা) আল্লাহ যেন আমার বাবাকে জান্নাতুল ফিরদাউস দান করেন এবং আম্মুকে সুস্থতার সহিত বাকি জীবন কাটাতে পারেন আমিন 🤲।
💓কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি আমাদের সকলের প্রিয় মেন্টর এবং তরুণ প্রজন্মের আইডল 💚ইকবাল _বাহার _জাহিদ 💚 স্যারের প্রতি। যার অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে আমরা পেয়েছি এই ভালবাসার প্লাটফর্ম । যিনি আমাদের শিক্ষক, মোটিভেশনাল স্পিকার, লক্ষ লক্ষ তরুণ-তরণীর হৃদয়ের স্পন্দন, পথহারা বেকার তরুণ তরুণীর ভাগ্য পরিবর্তন করেছেন। শুধু তাই নয় স্যার সার্বিক ভাবে আমাদেরকে দক্ষ করে তুলতে দিনরাত সার্বক্ষনিক কাজ করে যাচ্ছেন এবং একজন ভালো মানুষ হিসেবে তৈরি করে ভালো মানের উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য যত ধরণের কৌশল আছে A to Z স্যার এর নব্বই দিনের সেশন এ শিখিয়ে যাচ্ছেন। আলহামদুলিল্লাহ চেষ্টা করছি স্যার এর আদর্শ বুকে ধারণ করে সামনে এগিয়ে যাওয়ার💓।
👉👉👉 আমার জীবনের গল্প👌👌👌
👉আমার পরিচয় : আমি মো :ফজলুর রহমান (ফরহাদ), বাবা মো :ফয়েজ উল্লাহ, মাতা নূরের নাহার। বাবা ছিলেন ব্যবসায়ী এবং মা ছিলেন গৃহিণী। আমি ১৯৮৮ সালের 15 ফেব্রুয়ারি ফেনী জেলার, ফুলগাজী উপজেলার জগতপুর গ্রামে একটি মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করি। 5 ভাই ও ১ বোনের মধ্যে আমি ছিলাম পরিবারের মেজ সন্তান। গর্ববোধ করি এমন বাবা মায়ের সন্তান হয়ে এবং বাবার আদর্শে বড় হতে পেরে,
গ্রাম থেকে শহর অবধি বাবার সুনাম ছিল প্রতিটি পরতে পরত মানুষের কাছে বাবা ছিল একজন ভালো মানুষ। 03/01/2015 ইং তারিখে বাবা না ফেরার দেশে চলে যান 😢 বাবাকে হারিয়ে আমরা শোকাহত, আমার বাবা এবং পরিবারের সকালের জন্য দোয়া করবেন🤲।
👉আমার শিক্ষা :
আমি পড়াশুনায় খুব বেশি মনোযোগী ছিলাম না। প্রয়োজনে কাজে মন দিতাম, আব্বুর কঠোর অবস্থানের কারণে খুব বেশি পাকি দিতেও পারতাম না। আমার প্রাথমিক শিক্ষা আমাদের গ্রামের স্কুলে । জগতপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ৫ম শ্রেণী পাশ করি এবং এস. এস. সি জগতপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে সম্পূর্ণ করি ২০০৬ সালে । আমি এইচএসসি সম্পূর্ণ করি ২০০৮ সালে পরশুরাম সরকারি কলেজ থেকে। তারপর ফেনী সরকারি কলেজ থেকে ডিগ্রি সম্পূর্ণ করি।
👉পড়ালেখার পাশাপাশি পারিবারিক কাজে আমার ভূমিকা :
আব্বু ব্যবসা করতেন গ্রামেই, প্রথমে ছিল মুদি দোকান, রাইস মেইল, ধানের ব্যবসা , পাশাপাশি আমাদের কৃষি জমি গুলো চাষাবাদ করতেন আমরা তখন ছোট ছিলাম।আব্বু একলা সব সামলে নিতে কষ্ট হত। যখন আমার বয়স ৮ তখন আমার বড় ভাইয়ের বয়স ১০, তখন আব্বু নতুন ব্যবসা যোগ করছে মুরগির খামার ২০০০ মুরগির সেট। আব্বুর পাশাপাশি বড় ভাই খামারে কাজ শুরু করে, তার পরে আমিও শুরু করলাম, খামারে, রাইস মেইল, দোকানে এবং মুরগির রিটেইল সেন্টারে, পাশাপাশি পড়ালেখা, শুধু তাই নয় কুয়াশা ডাকা ভোরে কৃষি কাজে সহযোগিতা করেছি। যাইহোক মুরগির খামারে প্রথম দিকে ভালোই লাভজনক হচ্ছিল হঠাৎ মুরগির মহামারী দেখা দিল, R কি ধরে রাখা যায়। চোখের সামনে শত শত মুরগি মারা গেল।
এভাবে পর পর তিন বছর লস R লস কাটিয়ে উঠতে পারিনি সব ব্যবসার অবস্থা খারাপ🤔 যাই হোক মুরগির খামার বন্ধ হয়ে গেল, ধানের ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেল, দোকান R রাইস মেইল নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি কিন্তু হচ্ছে না,সংসারে পড়ালেখার খরচ, সংসার খরচ, তাছাড়া আমাদের ফ্যামিলি ছিল রীতিমতো একটা মেডিসিন দোকান...! আব্বু আম্মু দুই জন খুব অসুস্থ হয়ে গেছে, প্রতি মাসে ঢাকা ডাক্তার দেখাতে হত। এর মধ্যে বড় ভাই চলে গেলো দেশের বাইরে... আমি এস এস সি শেষ করে এইস এইস সি পর্যন্ত সময় রাইস মেইল চালিয়েছি দোকান করেছি, ইত্যাদি। আব্বুর অবস্থা দিন দিন খারাপ হতে লাগলো এর মধ্যে চট্রগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে অপারেশন হয়। ওনার অবস্থার আরো অবনপতি। এরমধ্যে ঘটে গেল এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনা আমাদের রাইস মেইল এবং দোকানে কারা যেন রাতে আগুন লাগিয়ে দিল, চোখের সামনে সব শেষ হয়ে গেল 😢😢😢,
ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে মাসের পর মাস থাকতে হত। এর মধ্যে প্রচুর অর্থ খরচ করতে হচ্ছে। সার্বিক ভাবে এই অর্থের যোগান দিয়েছেন আমার বড় ভাই। উনি আমাদের পরিবারের জন্য যা করেছেন লক্ষ কোটি মানুষের মধ্যে ও এমন বড় ভাই খুঁজে পাওয়া যাবেনা। সব শেষে বাবা ২০১৫ সালে ৩ জানুয়ারি ঢাকা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু বরণ করেন 😢। তার পর থেকেই গ্রাম থেকে আমরা ছিটকে গেলাম R গ্রামে কোন ব্যবসা করবোনা সিদ্ধান্ত নিলাম ।
👉সামাজিক কাজে আমার ভূমিকা :
আমি সামাজিক বিভিন্ন কাজের সাথে যুক্ত ছিলাম। সামাজিক প্রতিষ্ঠান মসজিদ,সমাজের অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো কারো মেয়ের বিয়েতে সহায়তা করা। আমরা বন্ধুরা মিলে সব ধরনের কাজে সহযোগিতা করা। রমজান মাসে ইফতার পার্টি করা ইত্যাদি।
👉আমার কর্ম জীবন :
আমার খুবই ইচ্ছা ছিল আমি একটা ভালো কাজ শিখব। তাই এইস এইস সি পাশের পর আমি পত্রিকার পাতায় একটা বিজ্ঞাপন দেখে চট্রগ্রাম আসি। RAC নিয়ে এক বছর মেয়াদের কোর্স কমপ্লিট করি। কোর্স শেষে আমি ডলফিন এ জব নিলাম। এর এক মাসের মধ্যে আমি একটি মোটর সাইকেল দুর্ঘটনায় আহত হয়ে ফেনী চলে যাই
সুস্থ হওয়ার পর মাথায় আসে ওই কাজে আর যাব না। ইচ্ছে হলো গার্মেন্টস এর একটা টেকনিক্যাল কাজ শিখব।খুঁজতে শুরু করলাম যারা গার্মেন্টস জব করে কেউ পাত্তা দেয় না। আমার এক বড় ভাই সাহস দিল শুরু কর। সাহস একটু বেড়ে গেছে, হঠাৎ একটি কাজের সন্ধান পেলাম Pattern Making and fashion design কোর্স এর আলহামদুলিল্লাহ আবার চট্রগ্রাম আসলাম শুরু করলাম,ল্যাপটপ কিনলাম সফটওয়্যার কিনলাম বড় ভাই হেল্প করেন যথেষ্ঠ। অনেকেই নিষেধ করেছেন গার্মেন্টস এ জব করতে পারবো না।
আমিও নিজের সাথে প্রতিজ্ঞা করে নিলাম আমাকে পারতেই হবে। দের বছর কোর্স করার পর ওই প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব আমাকে দিয়ে দেয় । আরো এক বছর Pattern making and fashion design technology প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব পালন করি। আমার ওখানে স্যার এর সাথে Sam's superior Ltd company তে প্রথম জব শুরু হয়, শুরু টা খুব বেশি সহজ ছিল না তবুও নিজেকে কৌশলে ফিট করে নিয়েছি! আলহামদুলিল্লাহ সুনামের সাথে এক বছর সাত মাস চাকরি করি।
একটা ভালো আফার পেয়ে আমি comilla Brandix casual wear Ltd এ যোগ দিলাম
শ্রীলঙ্কার একটা কোম্পানি । ওখানে আরো অভিজ্ঞতা নিয়ে দুই বছর পর আমি চট্রগ্রাম এ valiant group এ executive হিসেবে যোগদান করিলাম আলহামদুলিল্লাহ এখানেই আমি আরো ভালো মানের কাজের অভিজ্ঞতা পেলাম। এখানে দীর্ঘ দুই বছর জব করে আমি CEPZ এর সুনাম ধান্য প্রতিষ্ঠান pacific Jeans group ltd e Sr Executive (Sr. Pattern master)
হিসেবে জয়েন করি। আলহামদুলিল্লাহ বর্তমানে তিন বছর অতিক্রম করেছি খুবই ভালো আছি।
একটা কথা না বললেই নয় মনে রাখবেন গার্মেন্টস মানেই অভিজ্ঞতা, এখানে অভিজ্ঞতা ছাড়া চাকরি কল্পনা করা যায় না। এই যে আমি দুই বছর পর পর জব চেঞ্জ করলাম, আমার বেতন ও খুব ভালোই আপডেট হয়েছে কিন্তু এটা এতটা সহজ বিষয় ছিল না, গার্মেন্টস জব মানেই লড়াই করে জব করতে হয়। এখানে আপনাকে ঠেলে পেলে দেয়ার জন্য লোকের অভাব নেই। আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহর রহমতে খুবই ভালো আছি
👉বিনা পুঁজিতে এক মাসের উদ্যোক্তা হয়ে ২৬০০০ টাকা আয়... 👌
সময় ২০১৫ রমজান মাস আমি জব করছি তখনো, বেতন ছিল খুবই কম। সামনে ছিল ঈদ, মনের মধ্যে একটা বিষন্নতা এই বেতন দিয়ে কি হবে, কিভাবে বাড়ি যাবো, কিভাবে ঈদের কেনাকাটা ইত্যাদি🤔 যাহোক 2য় রমজান ইফতারের পরে বের হলাম,চট্রগ্রাম ছোটপুল সিঙ্গাপুর মার্কেটে। কিছু গার্মেন্টস প্রোডাক্ট এর দোকান ছিল, ওখানে গিয়ে ঘুরে ঘুরে দেখলাম এক ভাই আমার বয়সী বসে আছে একা কাস্টমার নেই!। পরিচিত হলাম আমিও গার্মেন্টস জব করি বলাতে উনি সব কিছু শেয়ার করল। উনি হোল সেল করে, এর মধ্যে একটি প্রস্তাব দিলাম আমার কিছু কাস্টমার আছে যদি আপনি আমাকে সুযোগ দেন আমি আপনার প্রোডাক্ট সেল করতে পারবো। উনি সায় দিল, আমি দেখে দুই টা সেম্পল নিলাম। আমি সেম্পল এর জন্যে দুই হাজার টাকা দিলাম, পরে উনি টাকা রাখে নাই বলল সমস্যা নেই। আপনি নিয়ে যান আপনার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করলাম...। আমি ওনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে চলে গেলাম অগ্রবাদ সাউথ ল্যান্ড মার্কেট. ওটা ছিল পুরোটাই এক্সপোর্ট প্রোডাক্ এর জন্যে বেস্ট। সেম্পল দেখে পছন্দ করে, কম লাভে আমি অর্ডার নিলাম ৫০ পিস। সব কনফার্ম করে আবার ছুটে এলাম পার্টির নিকট, বললাম আমার ৫০ পিস অর্ডার নিয়েছি। আপনি এগুলো দেখে রেডি করেন আমি তারাবির পরে আসবো। যেই কথা সেই কাজ প্রোডাক্ট ডেলিভারি দিয়ে এসে টাকা দিলাম. পার পিস এ লাভ ৫০ টাকা টোটাল ২৫০০ টাকা লাভ👌 আমি মহা খুশি 😆 তবে একটা অভিজ্ঞতা হলো প্রোডাক্ট নিয়ে যাওয়ার পর আমি টাকার জন্য অপেক্ষা করছি! আমার ৩৫০ টাকার প্রোডাক্ট আমার সামনে ৯০০ টাকা বিক্রি করে অমিত আরো অবাক...! মনে মনে আফসোস করি মনে হয় আমি আরো বেশি দামে বিক্রি করতে পড়তাম। পুরো রমজান ভালোই সেল করলাম সব মিলিয়ে ভালোই লাভ হলো, টাইম সেটিং ছিল খুবই অসাধারন । আমার জীবনে খুবই স্মরণীয় হয়ে থাকবে I 😢তবে দুঃখের বিষয় হলো ঈদের ছুটি শেষে R ওই ভাইকে পাই নাই। মোবাইল বন্ধ দোকান ও বন্ধ ছিল অনেক দিন পরে জানতে পারি ওর বাবা খুবই অসুস্থ দোকানও বিক্রি করে দিয়েছে। তারপর আমি R ওই সুযোগ পাইনি, আমিও নতুন জব নিয়ে চট্রগ্রাম ছেড়ে যাই।
📌📌📌স্ট্যাটাস অফ দ্যা ৭৮৭
তারিখ -১৯-০৪-২০২২
🌻নাম : মো:ফজলুর রহমান
🌻নিজ জিলা : ফেনী
🌻বর্তমান: চট্রগ্রাম
🌻ব্যাচ :11
🌻রেজিস্ট্রেশন : 16238
🌻পেশা : চাকরি (প্যাটার্ন ম্যকিং & ফ্যাশন ডিজাইনার.
সি ই পি জেড চট্টগ্রাম.।
🌻আমার ফেইসবুক লিঙ্ক: https://www.facebook.com/fajlur.rahamanpotol
🌻আমার পেইজ লিংক
(আশা করি সবাই লাইক দিয়ে সাথে থাকবেন)
https://www.facebook.com/Classic-mart-bd-106181034482729/