রমজান মাসেই প্রায় ২লাখ ৪৬হাজার টাকা সেল হল
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ।সকল প্রশংসা আল্লাহ তাআলার জন্য,যিনি আমাকে আশরাফুল মাখলুকাত হিসেবে সৃষ্টি করেছেন। আমি আরোও শুকরিয়া জানাই মাবুদের কাছে, আমাকে আমাদের সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ নবী আমাদের জীবনের চেয়েও প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উম্মত হিসেবে এই পৃথিবীতে পাঠানোর জন্য।
আমি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানাচ্ছি আমাদের সকলের প্রিয় মেন্টর জনাব Iqbal Bahar Zahid স্যার কে।
যিনি নিজের অক্লান্ত পরিশ্রম,মেধা, কর্ম ও ভালো মানুষী মন মানসিকতা নিয়ে ভালো মানুষ গড়ার কারিগর "নিজের বলার মত একটা গল্প ফাউন্ডেশন" তৈরি করেছেন। যেখান থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে লক্ষ লক্ষ তরুণ তরুণী ভালো মানুষ হওয়ার স্বপ্ন দেখছে এবং বাস্তবে তা বাস্তবায়ন করে ভালো মানুষ হিসেবে নিজেদের জীবনকে পরিচালিত করে যাচ্ছে। শুধুমাত্র স্যারের দিকনির্দেশনা অনুসরণ করে পজিটিভ হয়ে গিয়েছে লক্ষ লক্ষ মানুষ। তার মধ্যে আমিও একজন।
আমি মুহাম্মদ আইয়ুব আলী।
প্রিয় মীর মুর্শিদ ভাইয়ের আইডিতে নিজের বলার মত একটা গল্পের নাম দেখে কৌতুহল জাগল যে দেখি এটা কি! (মীরসরাই উপজেলা এম্বাসেডর ছিলেন তখন) বর্তমানে তিনি ডিএ হয়েছেন ৷ তারপর এই গ্রুফে মেসেজ করা রেজি: করার জন্য, প্রিয় সাইফুল ভাই সবকিছু করে দিলেন ৷ স্যারের ইউ টিভি লাইভ, ট্রেইনিং , সেশন চর্চা ইত্যাদি দেখে ভালোবেসে যুক্ত আছি এই ফাউন্ডেশনে ১৫তম ব্যাচ ,(রেজি: ৬৯৩৭৬)থেকে এখন পর্যন্ত!
আজ আমি আমার জীবনের গল্প শেয়ার করব আপনাদের সাথে।
""আমার ছোটবেলা""
আমার জন্ম বন্দর নগরী, বাণিজ্যিক রাজধানী খ্যাত চট্টগ্রাম জেলার সু প্রসিদ্ধ উপজেলা বাঁশখালীর বাঁশখালা গ্রামে এক নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারে। দাদা ,নানা দুজনেই জাহাজে কর্মরত ছিলেন। আমার দাদার নাম ছিল আকবর আলী গাজী৷
আমার আব্বা স্থানীয় পালেগ্রাম দাখিল মাদরাসার একজন স্বনামধন্য সহসুপার ছিলেন এবং একটা মসজিদের খতিব ছিলেন ৮ম শ্রেণি থেকে,ছাত্র জীবন থেকেই সংগ্রামী জীবন ছিল, তিনি ডাবল কামিল ডিগ্রী প্রাপ্ত৷
আমার জীবনে হাতে খড়ি মা বাবার মাধ্যমেই ৷মা ছিলেন হাফেজা,বাবা হলেন আলেম ৷ স্থানীয় স্কুলেই ভর্তি হওয়ার পর ১ম শ্রেণি তে উঠার পর রোল এক হয়েছিল, মেধাবী ছাত্র ছিলাম, কখনও পড়ার জন্য বলা লাগেনি,তারপর হিফজে ভর্তি হয়ে ৩বছরে হিফজ শেষ করে ৫ম শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছিলাম মাদরাসায়, সেই থেকেই অনার্স- মাস্টার্স (অর্থনীতি) এবং কামিল পর্যন্ত জীবনে পড়াশোনাতে ভালো ছাত্র হিসেবে স্বাক্ষর ও সুনাম অর্জন করেছি আমি। ৮ম শ্রেণি থেকেই টিউশনি,লজিং, ফার্মেসীর দোকানে সময় দেয়া ইত্যাদি করে নিজের উপার্জনে পড়ালেখা শেষ করছি মাস্টার্স পর্যন্ত ৷ ইমামতি করে আলিম,অনার্স এবং ফাজিল শেষ করলাম ৷ অনার্স শেষ করার পর বিয়ে করি তখন কিন্তু কোন চাকুরী কিংবা উপার্জনের ব্যবস্থাও ছিল না আমার৷ সঞ্চয় থেকে খরচ করতে হয়েছে,ঋণ নিয়ে বিয়ে করতে হয়েছে কারো থেকে ১টাকাও পাইনি, পরিবার থেকেও না ৷ শুরু হল সংগ্রামের আরেকটি জীবন ৷ আমাদের দুঃখের জীবন । জমানো টাকা শেষ, বিয়েতে কয়েকটা আংটি পেয়েছিলাম সেগুলো বিক্রি করে দায় পকিশোধ করলাম। এর মধ্যে কিছুদিন পর একজন হিতাকাংখী একটা মাদরাসার চাকুরীর ব্যাপারে বলল, নিজেও ছাত্র ছিলাম বর্তমানে যেটাতে কর্মরত আছি সেই প্রতিষ্টানে ৷
চাকুরী , টিউশনি আস্তে আস্তে টাকা জমাইয়ে দায় পরিশোধ করা ৷ এভাবে কেটে গেল বেশ কিছুদিন! বাসা ভাড়া,নিজস্ব খরচ, পড়ালেখা,সংসার চালানো সবকিছু হিমশিম অবস্থা! চাকুরীর প্রায় ২বছর পর লকডাউন চলে আসল কোভিডের আক্রমণে! কয়েকটা টিউশনি,আর মসজিদের খতিবের দায়িত্ব চলছিল,মাদরাসায় অনলাইন কার্যক্রম চলছিল, বেতন ছিল নাম মাত্র! তারপরও আলহামদুলিল্লাহ!
প্রায় সময়ে বাসায় বসে বা নেটে সময় কেটে যেত লেখালিখি বা কোন মোটিভেশনাল কিছু দেখে ,কোন কাজ নেই, ১বছর কেটে গেল দেখতে দেখতে ৷ এর মধ্যে একদিন মোবাইল চাপতে গিয়ে ইউটিভি লাইভ এ "জীবনে বলার মত একটি গল্প ফাউন্ডেশনে" ইকবাল বাহার জাহিদ স্যারের সামনে বসা দুজনের সাক্ষাৎকার শুনি।তাদের জীবনের দুঃখ-কষ্ট, পড়ে যাওয়া এবং আবার উঠে দাঁড়ানো। অনলাইনে অনেকে দেখি শূন্য হাতে নেমে লাখ টাকা ইনকাম করছে৷এইগুলা দেখে নিজেও সিদ্ধান্ত নিই কিছু একটা করার! আহলিয়্যার সাথে পরামর্শ করে তার কিছু টাকা ঈদের উপহার বাবদ জমা ছিল , সেগুলো নিয়ে আল্লাহর উপর ভরসা করে নেমে পড়লাম অনলাইন বিজনেস ২৯জুন ২১তারিখ শুক্রবার জুমার নামাজ পড়ানোর পর বাসায় এসে পেইজ ও গ্রুফ খুললাম! এই দিকে প্রায় ৩৫০০টাকার পাঞ্জাবী,পায়জামা অর্ডার করলাম, শুধু মাত্র কুরিয়ার খরচটা দিলাম অগ্রীম ঢাকার এক ভাইকে, পরে সেগুলো কিছু বিক্রি করে এবং জমানো টাকা থেকে পরিশোধ করলাম উনার টাকা ৷জুলাইতে এই গ্রুফে যুক্ত হওয়া, মীরসরাই সীতাকুন্ড জোনের প্রতিদিন সেশন চর্চা মিটআপে যুক্ত হচ্ছি, এখনও যুক্ত আছি বৃহত্তর চট্টগ্রাম সেশন চর্চা মিটাপে ৷
আস্তে আস্তে অনেকের সাথে পরিচিত হয়েছি, পণ্যের সোর্স পেয়েছি ৷ কাপড়ের পাশাপাশি শুরু করলাম অর্গানিক ফুড সরিষার তৈল,ঘি,মধু,গুড়,খেজুর ,নারিকেল তৈল কালোজিরার তৈল,কাঠ বাদাম,কাজু বাদাম, কিসমিস , আমইত্যাদি নিয়ে কাজ করা ফাউন্ডেশনের ভাইদের থেকে নিয়ে ৷ ৪র্থ উদ্যোগতা সম্মেলনে আসলাম, স্যারের সাথে তখন দেখা হল ,কথা হল ৷ প্রোগ্রামে স্যারের স্পীচ শুনলাম সরাসরি , আরো অনেকে ছিলেন সেদিন সবার কথাগুলো ভাল লাগল, সকলেই ভাল মানুষ, অনেকের সাথে দেখা,পরিচিত হওয় সরাসরি!
আলহামদুলিল্লাহ! সেই ৩৫০০টাকা থেকে ইনভেস্ট হতে লাগল, সেল বাড়তে লাগল ৷আলহামদুলিল্লাহ! আমার সেল হল ১০মাসে প্রায় সাড়ে ৪লাখ টাকা! রমজান মাসেই প্রায় ২লাখ ৪৬হাজার টাকা সেল হল ৷ স্যারের থেকে অণুুপ্রাণিত হয়ে লেগে থাকা নিজের উদ্যেগের সাথে! একটা টাকাও নিইনি বিজনেস থেকে নিজের খরচের জন্য৷ ২/৩বছর নিব না কোন খরচ ৷ সফল উদ্যেক্তা কিংবা ব্যবসায়ী হওয়ার জন্য দোয়া চাই সকলের ৷
ছোট থেকেই ইচ্ছা ছিল নিজের পরিচয়ে বড় হওয়া, পরিচিত হওয়া, অমুক তমুকের পরিচয়ে না! আলহামদুলিল্লাহ! এখন অনেকেই দেখলে বলে আপনি ত্বহা শপের আইয়ুব ভাই না!! খুব ভাল লাগে তখন! নিজের পরিচয় হচ্ছে ধীরে ধীরে, স্যারের পোস্ট থেকেই স্বপ্ন পূরণের দিকে যাচ্ছি ৷
অনেক ধন্যবাদ সবাইকে। দোয়া করবেন আমার পরিবারের জন্য,আমার ব্যবসার জন্য।
দোয়া করি স্যার আপনার জন্যও। আল্লাহ তা'আলা যেন আপনাকে নেক হায়াত দেন,সুস্থ থাকুন সবসময় ।আমরা যেন আপনার কাছ থেকে আরো অনেক ভালো ভালো জিনিস শিখি এবং আজীবন ভালো মানুষ হিসেবে বুক ফুলিয়ে বেঁচে থাকতে পারি।
জাযাকাল্লাহ!
📌স্ট্যাটাস অফ দ্যা ডে ৭৯৫
তারিখ ৯-০৫-২০২২
Ayub Ali
ব্যাচঃ ১৫
রেজিস্ট্রেশন ৬৯৩৭৬
নিজ জেলাঃ চট্টগ্রাম
বর্তমান অবস্থান: মীরসরাই উপজেলা,চট্টগ্রাম
ভালোবেসে যুক্ত আছি: চট্টগ্রাম জেলা সিলেট টিম ,সীতাকুন্ড , মীরসরাই জোনের সাথে।
পেইজ: উদ্যোগের নাম Taha Shop- ত্বহা শপ