জীবনের এই বর্ণময় যাত্রাতে অনেক সময়েই আমাদের অনুপ্রেরণা ও মোটিভেশনের প্রয়োজন হয়
জীবন হলো এমন একটি বর্ণময় যাত্রা যা একদিকে যেমন আনন্দ, হাসি, খুশি ও সুন্দর-সুন্দর মুহূর্তের সাথে ভরপুর থাকে তেমন অন্য দিকে তেমনি থাকে বাধা বিপত্তি, দুঃখ কস্ট, হার - জিত ইত্যাদি।
জীবনের এই বর্ণময় যাত্রাতে অনেক সময়েই আমাদের অনুপ্রেরণা ও মোটিভেশনের প্রয়োজন হয়। প্রয়োজন হয় কিছু সাহস ও উৎসাহের।আর এই সবকিছুই পাওয়া যায় " নিজের বলার মত একটা গল্প ফাউন্ডেশন থেকে উদ্যোক্তা তৈরীর কেন্দ্রে"।
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় সহপাঠী ভাই ও বোনেরা। আপনারা সবাই কেমন আছেন?
আশা করি সকলেই ভালো আছেন। আল্লাহর অশেষ রহমতে আমিও ভালো আছি। আজ আমি আপনাদের মাঝে আমার জীবনের গল্প তুলে ধরছি, সকলে আশা করি আমার গল্পটা পড়বেন।
প্রথমেই কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি তরুন প্রজন্মের আইডল💖 আমাদের সকলের প্রিয় মেন্টর "জনাব ইকবাল বাহার জাহিদ "স্যার কে যার জন্য এরকম একটি সুন্দর প্ল্যাটফর্ম পেয়েছি। যার জন্ম না হলে এই প্ল্যাটফর্ম হতো না, আজ তার জন্য বাংলাদেশের অসংখ্য তরুণ তরুণী অনুপ্রাণিত হয়ে নিজে কিছু একটা করার ইচ্ছা নিয়ে নিজের বলার মত একটি গল্প তৈরি করতে পারছে।💐💐💐🌺
আমি তারেক আহাম্মেদ, পরিবারের বড় সন্তান আমার জন্মস্থান কিশোরগঞ্জ জেলার করিমগঞ্জ থানায়। আমার বাবা একজন কৃষক আমরা ৪ ভাই বোন আমি সবার বড় আমার ছোট আমার বোন তার পর ২ ভাই। আমি আমার বাবা মার ছিলাম প্রথম সন্তান এবং আমার নানা নানির ও ছিলাম প্রথম নাতি তাই আদর যত্নের কোন কমতি ছিলোনা আমার। ছোট বেলাই নিজের বাড়ী থেকে বেশি সময় কাটিয়েছি নানা বাড়ী।
👉আমার ছেলেবেলাঃ
আমার ছেলেবেলার জীবনটা ছিল অনেক সুন্দর জীবন সেই সময়গুলো অনেক মিস করি। সকলে একসাথে খেলাধুলা একসাথে স্কুলে যাওয়া স্কুল থেকে এসে আবার চলে যেতাম খেলতে খেলার জন্য কত মার খেয়েছি বাবার হাতে এমনো হয়েছে খাওয়া দাওয়া বাদ দিয়ে চলে যেতাম খেলতে আর স্কুল যদি কোন দিন ছুটি থাকতো থাহলে তো হলোই😵 যৌথ ফ্যামিলিতে বড় হয়েছি অনেক চাচাতো ফুফাতো ভাই বোন ছিল তাই অনেক আড্ডা ও খেলাধুলার মধ্যে কেটেছে ছেলে বেলার সময়টা, তখনকার সময়গুলো অনেক মজার ছিল সেই ছেলেবেলা টা অনেক মিস করি 😢 যেহেতু কৃষক ফ্যামিলির ছেলে আমি তাই ছোটবেলা থেকেই কৃষি কাজ টা করা হয়েছে অনেক বাবার সাথে সাথে কৃষিকাজে অনেক সহযোগিতা করেছি। আমরা চার ভাই বোন এই যেহেতু পড়ালেখা করতে ছিলাম আমার বাবার পক্ষে একা ইনকাম দিয়ে আমাদের চলাটা খুব কষ্টসাধ্য হয়ে যেতো যেহতু মধ্যবিত্ত ফ্যামিলির সন্তান 😪 কৃষি কাজ করে বাবার তেমন ইনকাম হতো না যে আমাদের সংসার চালানোর মতো। এক পর্যায়ে এসে বাবা চিন্তা করলো আমাদের কিছু জমি বন্ধক রেখে আমাদের পড়ার খরচ চালাবে তারপরও বাবা কোনদিন আমাদেরকে পড়ালেখায় কোন কমতি হতে দেয় নাই। বাবার ইচ্ছা ছিল আমার যতো কষ্টই হোক তারপরেও আমার ছেলে-মেয়ে গুলা মানুষের মত মানুষ হবে। কিন্তু ছোটবেলা থেকেই আমার ইচ্ছা ছিলো আমি একটা কিছু করতে চাই যেন বাবাকে কিছুটা সহযোগিতা করতে পারি, আমার ফ্যামিলিকে যেন আমি কিছু দিতে পারি বাট বাবা করতে দেয়নি বাবা চাইতো যেন ভাল ভাবে পড়ালেখাটা চালিয়ে যায়।
👉আমার শিক্ষা জীবনঃ
ছোটবেলা থেকেই আমি ছিলাম নম্র ভদ্র এবং সৎ সাহসী একজন মানুষ। তাই সকলের কাছে আদর স্নেহ ও ভালোবাসা পেয়েছি বরাবরই। আমার জীবনের স্কুল লাইফ টা ছিল অনেক আনন্দের, বড় ভাই ও বড় আপুদের সাথে একসাথে স্কুলে যেতাম এক সাথে টিফিন করতাম খুব মজার ছিলো সেই সময় গুলি।
আমি যখন প্রাইমারি শেষ করি তখন আমি ভর্তি হই হাইস্কুলে আর এই হাই স্কুল টি ছিলো আমার বাড়ি থেকে 20 কিলোমিটার এর রাস্তা তাই তখন কার সময়টা ছিলো অনেক কষ্টের সকালে বের হতাম আর ফিরতাম রাতে। সকালে প্রাইভেট তার পর স্কুল তার পর আবার কোচিং করতে হতো। অনেক স্ট্রাগল এর মধ্য দিয়ে শেষ করলাম হাই স্কুল জীবন।
তার পর আমি যখন কলেজে ভর্তি হয় তখন ইচ্ছে ছিলো ইঞ্জিনিয়ারিং-এ পড়ার। তারপর ফ্যামিলিগত বিভিন্ন কারণে আর ইঞ্জিনিয়ারিং পড়া হয়ে উঠে না। তারপর কিশোরগঞ্জ শহরের একটি কলেজে থেকে একাউন্টিং এর উপরে ইন্টার কমপ্লিট করি। ইন্টার শেষ করে ঢাকা তে ভর্তি হওয়ার চেষ্টা করি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে রেজাল্টের জন্য অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারিনি। অবশেষে ভর্তি হই আলহাজ্ব মকবুল হোসেন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে। সেখান থেকে একাউন্টিং এ গ্রাজুয়েশন শেষ করি । আমার ছোটবেলা থেকেই ইচ্ছা ছিলো নিজে কিছু একটা বিজনেস করার তাই একাউন্টিং বিষয়টাকে বেছে নিয়েছিলাম।
👉আমার প্লাটফর্মে যুক্ত হওয়াঃ
নিজের বলার মত একটা গল্প ফাউন্ডেশনে যুক্ত হয়েছি এক বড় ভাইয়ের মাধ্যমে। আমি প্রায়ই স্যারের ভিডিও গুলো দেখতাম যখনি সময় পেতাম তখনই স্যারের ভিডিও গুলো দেখতাম স্যারের কথা যত শুনতাম ততই মুগ্ধ হয়ে যেতাম💗 স্যারের কথা যতই শুনি ততই বিজনেস সম্পর্কে ধারণা পাচ্ছি। আমি এই ফাউন্ডেশনটাকে অনেক আগে থেকেই ফলো করতাম। তখন আমি জানতাম না যে এখানে রেজিস্ট্রেশন করতে হয় তার পর হটাৎ একদিন UTV live চ্যানেলে কমেন্ট করলাম যে আমি রেজিস্ট্রেশন করতে চাই তারপর এক বড় ভাই আমাকে রেজিস্ট্রেশন করে দেন।
এই প্লাটফর্মে যুক্ত হয়ে আমি অনেক কিছু পেয়েছি। অনেক ভালো মানুষদের সাথে পরিচিত হতে পেরেছি একজন পজিটিভ মানুষ হতে পেরেছি নিজেকে উদ্যোগতা হিসেবে তৈরি করার জন্য অনেক দিকনির্দেশনা পাচ্ছি এখান থেকে। এখান থেকেই স্যারের কথা গুলা শুনেই আমার উদ্যোগক্তা জীবন শুরু করা।
👉আমার উদ্যোক্তা জীবনঃ
আমার ছোট বেলা থেকেই ইচ্ছে ছিলো নিজে কিছু করার অন্যের অধিনে কাজ করাটাকে আমি কখনো পচন্দ করতাম না, সব সময় ভাবতাম নিজে কিছু একটা করার সেই ধারাবাহিকতাই নিজেকে তৈরি করেছি ছোট বেলা থেকেই। আর ফ্যামিলিতে চাইতো ছেলে পড়ালেখা শেষ করে ভালো একটি জব করবে আর আমার চাওয়াটা ছিলো বিপরীত আমি চাইতাম সব সময় আমার নিজের একটি প্রতিষ্টান হউক আর সেই ধারাবাহিকতাই নিজের ইচ্ছায় যেই কাজটায় করতাম সেই কাজটা ভালো ভাবে শিখার চেষ্টা করতাম।
আমি স্টুডেন্ট থাকা অবস্থায় ফ্রিতে কাজ করতাম যেনো আমি আগে ভালো করে কাজটা শিখতে পারি।আমাদের স্যার বলে থাকেন স্টুডেন্ট অবস্থায় পার্টটাইম কিছু একটা করার, স্যার এর কথা গুলি ও স্যার এর ভিডিও আমি সব সময় দেখি ও ফলো করি। স্যার আরও বলেন যে স্টুডেন্ট থাকা অবস্থায় কিছু একটা করলে তার কাজের জন্য বসে থাকতে হবে না, স্যারের কথাগুলোকে বুকে ধারণ করে আমিও উদ্যোগ নিলাম বিজনেস করার পড়ালেখার পাশাপাশি আমি মামার বিজনেস ছিলো হার্ডওয়ার বিজনেস, আমি যখনি সুযোগ পেতাম তখনই চলে যেতাম মামার ওখানে সেখানে যেয়ে মামার থেকে শিখতাম কিভাবে হার্ডওয়ার বিজনেস করতে হয় সেই ধারণা গুলো মামার কাছ থেকে নিতাম মামার বিজনেস এ শ্রম দিতাম বিনা স্বার্থে। সেখানে আমি কাজটাকে অনেক বড় করে দেখতাম কারণ হচ্ছে আমি একজন উদ্যোক্তা হতে চাই সেই ধারণা থেকে। সেখান থেকে কোন কাজের বিনিময়ে কিছু নিতাম না সর্বপ্রথম উদ্দেশ্য ছিলো আমার এই বিজনেটাকে শিখতে হবে, বিনা স্বার্থে আমি অনেকদিন কাজ করেছি মামার বিজনেস এ তার পর যখন আমি মনে করলাম যে আমি এখন এই বিজনেসটা নিজে করতে পারবো।
তার পর এভাবে কাজ শিখে আমি স্টুডেন্ট থাকা অবস্থায় উদ্যোগ নিলাম বিজনেস করার তার পর কিছু টাকা মেনেজ করে শুরু করলাম আমার বিজনেস,শুরু করার কিছু দিন যাওয়ার পরেই শুরু হলো করোনা পরিস্তিতি। তার পর বন্ধ হয়ে যায় আমার বিজনেস😪 হতাশায় ভুগছিলাম করোনার টাইমটা যে কি করবো?? এত দিন বসে আছি কিছু একটা হচ্ছে না করোনা যে অবস্থা কিছু একটা করতে পারবো কিনা 😭 তখন যখনি সুযোগ পেতাম স্যারের ভিডিওগুলোকে দেখতাম স্যারের কথাগুলা শুনতাম তখন নিজে অনেক ইন্সপায়ার হতাম স্যারের কথাগুলো শুনে তখন অনেক করুণ অবস্থার মধ্যে দিয়ে কাটিয়েছি সেই করোনার সময়টুকু 😭যেহেতু পরিবারের বড় ছেলে তো কিছু একটা করতে হবে পরিবারকে সাপোর্ট দেওয়ার জন্য কিছু একটা করতে হবে সেই চিন্তা ধারা সবসময় মাথায় কাজ করতো তার পর করোনা কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ার পর আবার শুরু করলাম আমার বিজনেস। আলহামদুলিল্লাহ আগের যে পার্টি গুলা ছিলো তাদের সাথে আবার নতুন করে যোগাযোগ শুরু করলাম, আলহামদুলিল্লাহ তাদের যতেষ্ট ভালো সারা পেলাম 😶 আস্তে আস্তে বিজনেসটা ভালো হতে শুরু করলো আলহামদুলিল্লাহ সকলের দোয়াই চলছে আমার বিজনেস ভালোই মাস শেষে ভালো একটা এমাউন্ট ফ্যামিলিকে দিতে পারতেছি সেটাই আমার বড় পাওয়া।
সকলের কাছে দোয়া চাই আমি যেন অনেক বড় একজন উদ্যোক্তা হতে পারি সে আশা রাখছি 🙂
আলহামদুলিল্লাহ স্যারের দেখানো পথেই হাটছি ধৈর্য ও সাহস নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি। আমার জীবনে কখনো কারো ক্ষতি করি নাই, কারো উপকার করতে না পারলেও তার ক্ষতি করার চেষ্টা করি নাই কখনো।
আমাদের প্রিয় স্যার সব সময় বলেন
🌺স্বপ্ন দেখুন,🌺
🌺সাহস করুন🌺
🌺শুরু করুন🌺
🌺 লেগে থাকুন🌺
🌺 সফলতা আসবেই🌺
স্যারের সেই কথা গুলাকে বুকে ধারণ করে লেগে আছি সফলতার আশায়। আমি চাই আমার মাধ্যমে কিছু মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে ইনশাআল্লাহ্ আল্লাহ চাইলে সেটা সম্ভব হবে। সকলের কাছে দোয়া চাই আমি যেন আমার জীবনের লক্ষে পৌছাতে পারি।
📌স্ট্যাটাস অফ দ্যা ডে ৮০৪
তারিখ ২০-০৫-২০২২
তারেক আহাম্মেদ
ব্যাচঃ১৩
রেজিঃ ৫৪৯৬৭
জেলাঃ কিশোরগঞ্জ
বতর্মান অবস্থান কেরানীগঞ্জ ঢাকা