আমার জীবনের গল্প কিন্ত এখানেই শেষ নয়। এটা মাত্র শুরু
💝 আসসালামুয়াাইকুম 💝
🌼🌿 অষ্টম শ্রেণীতে অংকে বিশেষ বিবেচনায় পাস করা মেয়েটি অর্থনীতিতে অনার্স / মাস্টার্স কমপ্লিট করতে পারার গল্প শুনাবো আজকে🌿🌼
💛💚 চলে আসলাম #নিজের_বলার_মত_একটা_গল্প এ নিজের জীবনের গল্প বলতে।💚💛
💛💚প্রথমে শুকরিয়া আদায় করছি মহান আল্লাহ্ পাকের যার অশেষ রহমতে পৃথিবীতে সুস্থ সবল আছি, ভোগ করছি সব নিয়ামত💚💛
💛💚 তার পর শুকরিয়া আদায় করতে চাই , আমার প্রাণ প্রিয় বাবা, মার। যাদের ভালোবাসা , স্নেহ , শাসন আর আত্মত্যাগ না করলে আমি হয়তো এখানে আশা হতো না। যাদের ঋণ শোধ করার মতো নয়।💛💚
💚💛 তার পর যার প্রতির কৃতজ্ঞতা প্রকাশ না করলেই নয়। উনি হচ্ছে,, প্রিয় মেন্টর # ইকবাল বাহার জাহিদ স্যারের প্রতি। যিনি এত অসাধারণ একটি গ্রুপ তৈরি করেছেন শুধু মাত্র আমাদের জন্য।
স্যারের কথা যত বলি ততই কম বলা হবে। আমার যোগ্যতা নাই তাকে যথাযথ মূল্যায়ন করার।💚💛
🌿🌼মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম আমার। পরিবারে ৬ ভাইয়ের পর আমার জন্ম । পৈতৃক নিবাস আদি বিক্রম পুর হলেও ছোটো বেলা পুরোটা কেটেছে পুরান ঢাকায়।
ছয় বছর বয়সে প্রথম স্কুল ছিল ওয়ারীর গোল্ডেন ক্রিসিদেন্ট হাই স্কুল। এক বছর পরার পর ভর্তি হই টিকাটুলির শের - ই - বাংলা বালিকা মহা বিদ্যালয়ে। 🌼🌿
🌿🌼খুব সাদা সিধা মানুষ আমি। সাভাবিক ভাবেই চলছিল আমার স্কুল জীবন। প্রথম ধাক্কাটা খাই অষ্টম শ্রেণীতে বার্ষিক পরীক্ষায় অংকে ফেল করে। বিশেষ বিবেচনায় আমাকে নবম শ্রেণীতে সুযোগ দেওয়া হয় , কারণ আগের দুই পরীক্ষায় ভালো করে ছিলাম। যায় হোক,,,,,,,,বাসায় রেজাল্ট শুনার পর বাবা,মা ছাড়া বাকি সবার অনেক রাগ। বুঝতে পারলাম ভুল কিছু করে ফেলেছি। সায়েন্স ছাড়া নাকি জীবন অচল।
তার উপর আমার এক আত্মীয় তো বলেই ফেললো,,,,,,,,,আর্টস নিয়ে জীবনে আমি কিছুই করতে পারবোনা। তখনই প্রতিজ্ঞা করেছিলাম যে , এই আর্টস নিয়ে জীবনে কিছু আমি করে দেখাবো🌿🌼
🌿🌼 স্কুল আর কলেজে থাকার সময় আমার ভাইরা বিয়ে করে আলাদা হয়ে যায়। সংসারের সমস্ত ভার চলে আসে আব্বার উপর। অনেক টা অনিশ্চিত ছিলো আমার পড়া শুনা। শুধু আল্লাহ উপর ভরসা করে ভর্তি হয় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে। ঢাকা ইউনিভার্সিটি ও ইডেন মহিলা কলেজে ভর্তির সুযোগ পায় কিন্তু শুধু মাত্র একটা ভালো সাবজেক্ট পরার জন্য জগন্নাথে ভর্তি হওয়া।অনার্স ও মাস্টার্স আসতে আসতে আমাদের অর্থ নৈতিক সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করে। তখনই বুঝতে পেরেছিলাম যে পরা শুনাটা ভালো করে শেষ করে কিছু একটা করতে হবে।
অর্থনীতিতে অনার্স ও মাস্টার্স করি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।🌿🌼
🌿🌼আমার উদ্যোক্তার জীবন শুরু করি অনার্স সেকেন্ড ইয়ারে। দুইটা শাড়িতে নিজের হাতে কাজ করে বিক্রি করি। কিন্ত সেটাও চালিয়ে যেতে পারি নাই পড়া-শুনার জন্য।
মাস্টার্স কমপ্লিট করে জবে ঢুকি , এখানেই কয়েক বছর পার হয়। কিন্ত মনের ভিতর সেই #নিজে_কিছু_করা ব্যাপারটা থেকেই যায়।
🎀আমার উদ্যোক্তার জীবন 🎀
🌿🌼২০১৪ সাথে বাবা যখন মারা যায় , তার পর থেকেই আমি আমার ছোটো একটা ব্যবসা করার কথা চিন্তা করি,,,,,,,,আমার চিন্তার কথা বান্ধবীদের কাছে শেয়ার করি এবং তাদের হেল্প চাই,,,,,কোনো টাকা পয়সার হেল্প না, কাজ শুরু করার হেল্প। তারা আমাকে কথা দেয় যে তারা হেল্প করবে।
অনেক সাহস করে ২০১৫ সালে রমজানে বাবার রেখে যাওয়া ৩০০০ টাকা আর দুইটা ড্রেস ছিলো আমার বেবসার পুঁজি।।।।।।।।
খুব ভালো ভাবেই আমি ওই ঈদে প্রায় ১০০০০ টাকার ব্যাবসা করি।।।।।। এভাবেই একবছরের মাথায় আমার লাভের পরিমাণ দাড়ায় মাসে ২০,০০০ টাকা।।।।।।
বলে রাখা ভালো, যে পুরো ব্যাবসা টা আমি করেছি অফলাইন আর কোনো রকম পেজ ছাড়াই কারণ তখন আমার অনলাইন পেজ সম্পর্কে কোনো ধারণা ছিল না।।।।।।।
যায় হোক, আমি যখন ব্যাবসা টি বড় করার চিন্তা করার ভাবছিলাম , ঠিক তখনই আমার বান্ধবীর প্রতিহিংসার শিকার হয়।।।।।
কারণ, আমার এত তাড়া তাড়ি সাফল্য, ব্যবসার লাভ, কাস্টমারের কাছে আমার ড্রেসের ডিমান্ড কোনোটাই সে সহ্য করতে পারছিল না।।।।।।।।
শেষ যখন ২০১৬ সালে আমি। আরো কিছু ড্রেস সেল করার জন্য আমার বান্ধবীর কষে পাঠাই , সে সেগুলি সেল না করে গড়িমসি শুরু করে, কাস্টমারের কাছে শো করে নাই। এভাবেই সে ড্রেস গুলি ৩ মাস রেখে দেয়।।।।।।।।।।
আমি জিজ্ঞেস করলে বলতো, কাকে দেখাবে, আমার শরীর ভালো না, এই সমস্যা, সেই সমস্যা, প্রথম দিকে বেপার টা সত্যিই মনে করি, আর তাকে বলি , শরীর ভালো হলেই সেল করিস।।।।।।।।।
এইভাবে আরো ৩ মাস চলে যায়। সে ড্রেস গুলি এই ৬ মাসে একবার ও বের করি নাই আর কাওকে দেখায় ও নাই।।।।।।।
যেমন প্যাকেট ছিলো , তেমনি আছে।
ওই দিকে কাস্টমার কে বলেছিল , ড্রেস নাই আর এই দিকে সে ড্রেস গুলি ওইভাবেই রেখে দেয়।।।।।।।
সব যখন বুঝতে পারি আমি ড্রেস গুলি ফেরত নিয়ে আসি। কিছুই বলি নাই। আমি ড্রেস গুলি যদি সে মেরে দিত বা টাকা গুলি মেরে দিত তাহলে ও এত কষ্ট পেতাম না ।
সে যা করেছে তাহলো আমার কাস্টমার গুলিকে দিস্ট্রাক করে দিয়েছে। যাতে তারা আমার ড্রেস গুলির জন্য ওয়েট না করে।
এই রকম প্রতিহিংসার কি জবাব হতে পারে। কিছু না বলে শুধু আল্লাহ দিকে তাকিয়েছি। আল্লাহ আছেন , যা করার উনি করবেন।
আমার ফ্রেন্ড ভেবেছিল , আমি তাকে ছাড়া কিছু করতে পারব না। আমার ব্যাবসা আর করা হবেনা।।।।।।।।।।।
কিন্ত যে শুরু করতে জানে সে সব সময়ই শুরু করতে পারে।।।।।।।
এখন প্রিয় মেন্টর #Iqbal_Bahar_Zahid স্যারের সেই কথা মানে বুঝতে পেরেছি, তাহলো, ব্যাবসায় করো প্রতি নির্ভরশীল না হলে নিজে একা কিছু করা। পার্টনারশিপ কাজ করলেও নিজের হাতে কন্ট্রোল রাখা।
আসলে কি , জীবনে কিছু ঘটনা ঘটা ভালো, তাহলে , আপনি বুঝতে পারবেন কে আপন কে পর। মুখোশ পরা আসল মানুষ গুলি চিনতে পারবেন।
আমি ঘুরে দাঁড়িয়েছি, মানুষ গুলি চিনেছি। এটাই আমার বড় পাওয়া
🌿🌼আমি আবার শুরু করেছি, নতুন করে । জীবনে একটাই স্বপ্ন মা কে নিজের একটা ফ্ল্যাটে উঠানো। আমার মা এখন অনেক অসুস্থ। আপনারা আমাকে দোয়া করবেন যাতে আমার এই স্বপ্ন টা পূরণ করতে পারি এবং একজন সফল উদ্যোক্তা আর ভালো মানুষ হয়ে উঠতে পারি।
আমার জীবনের গল্প কিন্ত এখানেই শেষ নয়। এটা মাত্র শুরু
📌স্ট্যাটাস অফ দ্যা ডে ৮০৪
তারিখ ২০-০৫-২০২২
সায়মা আখতার রাজ
🌹ব্যাচ নং ১৭
🌹রেজিঃনং - ৯৩১৭৯
🌹জেলা - ঢাকা
🌹অবস্থান -কদমতলী থানা
🌹 জোন - ওয়ারী