আমাদের গ্রুপের মাধ্যমে আমাদের দেশের জনশক্তিকে জনসম্পদে রূপান্তর করতে,,,
🎿আসসালামু আলাইকুম 🎿
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম
এক স্বপ্নবাজ ছেলের জীবনের গল্প
🕹🕹🕹🕹🕹🕹🕹🕹🕹🕹🕹🕹
🌋 আমি সর্বপ্রথম শুকরিয়া জ্ঞাপন করছি মহান রাব্বুল আলামীনের দরবারে যিনি আমাকে একজন সুস্থ মানুষ হিসেবে পৃথিবীতে প্রেরণ করেছেন। 🌋
🎈হাজারো দুরুদ ও সালাম প্রেরণ করছি মানবতার মুক্তির দূত হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর প্রতি। 🎈
,🚸আমি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি আমার জন্মদাতা মা-বাবার প্রতি যারা অক্লান্ত পরিশ্রম করে আমাকে লালন পালন করে বড় করেছেন।🚸
🎈আমি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি আমার প্রিয় শিক্ষক, মেন্টর, লাখো তরুণ তরুণীর স্বপ্নদ্রষ্টা, দিক হারা মানুষের পথপ্রদর্শক, হতাশাগ্রস্ত মানুষের আশার প্রদীপ "জনাব ইকবাল বাহার জাহিদ" স্যারের প্রতি.।যিনি অক্লান্ত পরিশ্রম করে আমাদের জন্য" নিজের বলার মতো একটা গল্প" ফাউন্ডেশন উপহার দিয়েছেন। এটা এরকম একটা প্লাটফর্ম যেখানে শুধু কর্মের শিক্ষা দেওয়া হয় না সাথে সাথে একজন ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে আমাদের সাহায্য করেন। তিনি একমাত্র ব্যক্তি যিনি আমাদের জন্য নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন যা আজ অবধি পৃথিবীর আর কোন লোক করে দেখাতে পারে নি। 🎈
🌻🌻🌻 আমি একটা জিনিস সবসময় ভাবতাম চীন তার এত বড় জনশক্তিকে জনসম্পদে রূপান্তর করলো আমরা কেন পারিনা। আমি এই গ্রুপে যুক্ত হয়ে বুঝলাম ইনশাআল্লাহ আমরাও পারবো। আমাদের মেন্টর ইকবাল বাহার স্যার এবং এই গ্রুপে অনেক ভাই আছে যাদের দ্বারা দেশের জনশক্তিকে জনসম্পদে রূপান্তর করা যাবে। সবাই সবার নিজ নিজ অবস্থান থেকে এগিয়ে আসবেন। সাবার কাছে আমার আকুল আবেদন।🌻🌻🌻🌻
আমার পরিচয়
🌐🌐🌐🌐🌐🌐🌐
🌹আমি মিল্লাত হোসেন আমার জন্ম চট্টগ্রাম জেলার স্বন্দীপ উপজেলার বাউরিয়া ইউনিয়নের এক অজপাড়া গাঁয়ে এক মধ্যবিত্ত পরিবারে। আমরা ৪ ভাই। আমার তিন নাম্বার ভাই কারেন্টে শক লেগে মারা যায়।আমার বাবা একজন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী এবং আমার মা একজন গৃহিণী।🌹
🌹আমার জীবনের গল্প।🌹
🌹 আমার পড়া লেখার জীবন 🌹
আমার পড়ালেখা শুরু হয় বাইতুল ইজ্জত বি জি বি
ক্যাম্প প্রাইমারি স্কুল থেকে। আমার বাবা বি জি বি তে চাকরি করতো। আমি তৃতীয়, চতুর্থ এবং পঞ্চম শ্রেণীতে অধ্যয়ন করেছিলাম সাতক্ষীরায়। আমার প্রাইমারি শেষ হয় সাতক্ষীরায়। আমার মাধ্যমিক শুরু হয় কাচিয়া টগবী মাধ্যমিক বিদ্যালয় বোরহানউদ্দিন ভোলা থেকে।
আমি অষ্টম শ্রেণীতে অধ্যয়ন করি মাটিরাঙা খাগড়াছড়িতে। নবম দশম শ্রেণী অধ্যায়ন করি কাচিয়া টগবী মাধ্যমিক বিদ্যালয় বোরহানউদ্দিন ভোলা এবং এস এস সি পরীক্ষা দেই বোরহানউদ্দিন সেন্টার থেকে। আমি উচ্চ মাধ্যমিক ভর্তি হয় মেট্রোপলিটন কলেজ রাজশাহী। ডিগ্রিতে ভর্তি হয় সিটি কলেজ চট্টগ্রাম। আমি ডিগ্রি সম্পুর্ন করতে পারি নাই সাংসারিক অভাব অনটনের কারণে। আমরা চট্টগ্রাম ভাড়া বাসায় থাকতাম। আমার ছোট ভাই বি জি বি তে চাকরি নেয়। আমার বাবার এবং ছোট ভাইয়ের বেতন দিয়ে কোন রকম ভাবে আমাদের সংসারের খরচ চলে যায়। আমার কলেজে যাওয়ার গাড়ি ভাড়া, কলেজের বেতন এবং অন্যান্য খরচ দিতে কষ্ট হত। ক্লাসে কোন কিছু জিজ্ঞাসা করলে শিক্ষক বলতো প্রাইভেট পড়ার জন্য ক্লাসে বিস্তারিত বুঝাতে পারবে না। প্রাইভেট পড়লে বিস্তারিত বুঝিয়ে দিবে। শিক্ষকের বাসা কলেজ থেকে দূরে ছিল। হিসাব করে দেখলাম কলেজে যাওয়া আসার গাড়ি ভাড়া যোগাতে কষ্ট হয়ে যায়। এরউপর শিক্ষকের বেতন গাড়ি ভাড়া কোথায় থেকে যোগার করবো।তাই আমি পড়ালেখা ছেড়ে দেই।
🌹 কর্ম জীবনের সুচনা🌹
পড়ালেখা ছেড়ে দিয়ে আমি চট্টগ্রাম কে ডি এস গার্মেন্টসে চাকরি শুরু করি। আমি দুই বছর কে ডি এস গার্মেন্টসে কাজ করি। ঢাকা জিরানি বাজার লোকাস ব্যাটারি কোম্পানিতে আমার এক বন্ধু কাজ করতো। সে বললো তুই ঢাকায় আয় আমার সাথে লোকাস কোম্পানিতে যোগ দে। এখানে সুযোগ সুবিধা ভালো। আমি চলে গেলাম আমার বন্ধুর কাছে। কোম্পানিতে তো সব সময় লোক নেয় না। ঐ কোম্পানিতে বায়োডাটা জমা দেওয়ার সিরিয়াল অনুযায়ী ইন্টারভিউর জন্য ডাকে। আমি ইন্টারভিউর অপেক্ষায় থাকতে থাকতে পনের দিন চলে গেল।
আমার বন্ধুকে বললাম আর কত দিন বসে থাকবো।
পরে সে আমাকে একটা সুয়েটার কোম্পানিতে চাকরি দিল। সে বললো যতদিন ইন্টারভিউর জন্য ডাক না আসে ততদিন সুয়েটার কোম্পানিতে কাজ করেন। আমি দেড় মাসের মত সুয়েটার কোম্পানিতে কাজ করি। আমার বাড়ি থেকে কল করে আমার আম্মা বলেন তোর জন্য মেয়ে দেখা হয়েছে চট্টগ্রাম চলে আয়।
তারপর আমি চট্টগ্রাম চলে আসি। এর পর বিয়ে করি।
বিয়েতে শর্ত ছিল আমার শশুর আমাকে বিদেশ নিয়ে যাবে। আমি বিদেশে আসার পক্ষে ছিলাম না কখোনোইয়।
আমি চাইছিলাম কোন একটা ব্যাবসা করার জন্য।
আমার শশুর দুবাই থাকে সে তার কোম্পানিতে আনার জন্য পাসপোর্ট পাঠাতে বললো। পাসপোর্ট বানিয়ে পাঠিয়ে দিলাম। ভিসা দিতে দেরি হৈতেছিল তখন আমি আমার স্ত্রীকে বললাম তোমার বাবাকে বল ভিসা না দিয়ে আমাকে কিছু টাকা দিতে আমি ব্যাবসা করবো। আমি তোমার বাবার টাকা ফিরিয়ে দিব।
আমি মনে করেছিলাম আমার শশুর টাকা দিয়ে ভিসা কিনতেছে। পরে দুবাই এসে জানলাম কোম্পানি ভিসা ফ্রি দিছে।২০০৭ এর আগষ্টে দুবাই আসি। আমি যোগ দেই কাঠমিস্ত্রির কোম্পানিতে ইলেকট্রিশিয়ান হেলপার হিসেবে। দুবাইতে গাড়ির লাইসেন্স নেই। এক মাদরাজির কাছে অটোক্যাড এর কাজ শিখি। আড়াই বছর পর ইলেকট্রিশিয়ান থেকে ট্রেড চেঞ্জ করে CNC প্রোগ্রামার হিসেবে কাজ শুরু করি। এরপর সুপারভাজার হিসেবে দায়িত্ব নেই। দায়িত্ব বারে সাথে সাথে কাজ বারে কিন্তু বেতন বারে না। একদিন ম্যানেজারকে বললাম আমি CNC এবং Beam saw মেসিনের প্রোগ্রাম করি এবং সুপারভাইজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেছি। আমার বেতন মাত্র ১২০০ দেরহাম। যদি বেতন বাড়িয়ে দিতেন তাহলে উপকৃত হতাম। সে বললো মহনোত কর বেতন বাড়ানো হবে। আমি বায়োডাটা বানাই অনলাইনে ডালি। একদিন গ্রীন লাইন কোম্পানি থেকে কল আসে ইন্টারভিউর জন্য।ইন্টারভিউ দেই এবং পাস করি। পরে গ্রীন লাইন কোম্পানিতে চলে আসি। প্রথম কোম্পানিতে পাঁচ বছর এবং পরের কোম্পানিতে নয় বছর। এইভাবে দুবাইতে আমার চোদ্দ বছর কেটে গেল।
আমি অনেক বার চেয়েছিলাম ব্যাবসা করার জন্য। কিন্তু সংসারের পিছুটানের জন্য পারি নাই।
কারন আমি হিসেব করতাম এটা যে আমি যদি ব্যাবসা করতে যাই তাহলে প্রথমে আমাকে ছয় মাসের সংসার খরচের টাকা রাখতে হবে, ব্যাবসার জন্য পূজি লাগবে এবং ছয় মাসের নিজের খরচের টাকা লাগবে। এত কিছু হিসেব করে আগাতে পারি নাই।
২০১৯ থেকে আমার কোম্পানির অবস্থা খারাপের দিকে যায়। ২০২১ এপ্রিল এ এসে কোম্পানি বন্ধ হয়ে যায়। তারপর ২০২১ এর অক্টোবরে আমি সৌদি পাড়ি জমাই।
🌹প্রিয় ফাউন্ডেশনের সাথে পরিচিত🌹
আমি সৌদি আসছি ইন্টারভিউ দিয়ে। আমার কাছে টাকা ছিলো না যে ভিসা কিনে আসবো। কোম্পানিতে আমার ছয় মাসের বেতন, লিভ সেলারি এবং গ্রাজুটি পড়ে রয়েছে দেয় নাই। আমি যার মাধ্যমে সৌদি আসছি সে আমাকে বললো তুমি তো বেকার বসে আছো। রাসুল খায়মায় ট্রেনিং হিসেবে এক মাস কাজ করো। তোমাকে বেতন দেওয়া হবে। আমি ঐখানে যাওয়ার পর ঐ কোম্পানিতে আমাদের চট্টগ্রামের এক ভাই পেলাম । তার নাম জানে আলম। তার মাধ্যমে আমি "নিজের বলার মত গল্প" গ্রুপের খবর পাই। আমি দুবাই থেকে গ্রুপে জয়েন হয়েছি। রেজিস্ট্রেশন করেছি সৌদি এসে। ৬ নভেম্বর ২০২১ আমি রেজিস্ট্রেশন করি।
আমাকে রেজিস্ট্রেশন করতে সহযোগিতা করেছেন সানে রাফি ভাই। সানে রাফি ভাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই আমাকে এই গ্রুপে রেজিস্ট্রেশন করে দেওয়ার জন্য।
আপনারা সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন আমি যেন এখান থেকে শিক্ষা নিয়ে ভালো মানুষ হতে পারি । একজন ভালো উদ্যোক্তা হতে পারি এবং দেশ ও দেশের মানুষের সাহায্য করতে পারি। আমাদের গ্রুপের মাধ্যমে আমাদের দেশের জনশক্তিকে জনসম্পদে রূপান্তর করতে চাই। ইনশাআল্লাহ,,,,,,
পরিশেষে সবাই কে অনেক ধন্যবাদ ভালোবাসা আপনার মূল্যবান সময় নিয়ে আমার বাস্তব গল্পটা পড়ার জন্য।
অনেক অনেক কৃতজ্ঞতা আবারও প্রিয় স্যারের প্রতি ভালোবেসে আমাদের জন্য চমৎকার সুন্দর ফাউন্ডেশন তৈরি করে দেবার জন্য। দোয়া আর ভালোবাসা সব সময়।
📌স্ট্যাটাস অফ দ্যা ডে ৮০৫
তারিখ ২২-০৫-২০২২ ইং
🏟নামঃ মিল্লাত হোসেন
🏟ব্যাচঃ১৬
🏟রেজিষ্ট্রেশনঃ ৭৭৮৬৯
🏟থানাঃ হাটহাজারী।
🏟জেলাঃ চট্টগ্রাম।
🏟বর্তমান অবস্থানঃ রিয়াদ, সৌদি।