দিন রাত পরিশ্রম করে যাচ্ছি একটু সচ্ছলতার আশায়
🕌 বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম🕌
🌿প্রিয় প্লাটফর্ম #নিজের_বলার_মতো_একটা_গল্প_ফাউন্ডেশনের সকল প্রিয় ভাই বোনদের প্রতি সালাম শুভেচ্ছা ও আন্তরিক ভালোবাসা।
💠আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ💠
🌿আশাকরি আল্লাহর মেহেরবানিতে সবাই ভালো আছেন। আমার ও একমাত্র কামনা তাই। আপনাদের ভালোবাসা এবং অনুপ্রেরণা আমায় লিখতে সাহস জুগিয়েছে। আজ আমি আমার জীবন গল্প ও তার প্রাপ্তি টুকু আপনাদের সবার জন্য উৎসর্গ করলাম❣️❣️
🥇আমার জীবনের কিছু বাস্তব গল্প🥇
🤲সর্ব প্রথম আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেতেছি মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের দরবারে যিনি আমাকে সহ আমাদের পরিবারের সবাইকে সুস্থ্য রেখেছেন এবং এতো বড় সুন্দর একটি প্রিয় প্লাটফর্মে আমার জীবন গল্প লেখার সুযোগ করে দিয়েছেন-- আলহামদুলিল্লাহ❣️
💠নবীর প্রতি দুরুদ ও সালাম💠
🌿দুরুদ ও সালাম পেশ করছি আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ মুস্তফা (সাঃ)এর প্রতি যাকে সৃষ্টি না করলে আল্লাহ দুনিয়াকে সৃষ্টি করতেন না এবং যাকে সারা মানবজাতির কল্যাণের দূত হিসেবে পৃথিবীতে প্রেরণ করেছিলেন।
💠মা বাবার প্রতি কৃতজ্ঞতা 💠
🌿কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি আমার প্রিয় মমতাময়ী মায়ের প্রতি, যিনি ১০ মাস ১০ দিন পরম মমতায় মাতৃগর্ভে রেখে অসহনীয় প্রসব বেদনার মধ্যে দিয়ে আমাকে এই দুনিয়াতে আসতে সহায়তা করেছেন এবং কৃতজ্ঞা প্রকাশ করছি আমার ভালোবাসার প্রিয় পাত্র, দুর্দিনের সাথী, মাথার তাজ, এক টুকরো নীল আকাশের ছায়া আমার প্রিয় বাবার প্রতি। যার অক্লান্ত পরিশ্রমের উছিলায় খেয়ে পরে বড় হয়ে আজ এ পর্যন্ত আসতে পেরেছি। যতো সুন্দর ভাষাতেই মা বাবার প্রশংসা করিনা কেনো শেষ হবার নয়। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন দুনিয়ার সকল মা বাবাকে জান্নাতুল ফিরদউস নসীব করুন --আমীন। 🤲রাব্বিল হামহুমা কামা রাব্বাইয়ানি সাগিরা🤲
💠স্যারের প্রতি কৃতজ্ঞতা 💠
🌿পরম ভালোবাসা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি আমাদের সবার প্রিয় মেন্টর, শিক্ষা গুরু , ফাউন্ডেশনের কর্নধার , মানুষ গড়ার কারিগর, যিনি বিনা পারিশ্রমিকে লাখো যুবক-যুবতী তরুণ-তরুণী ও স্কুল কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের শিখিয়েছেন জীবনে ঘুরে দাঁড়ানোর মহা মন্ত্র। অসহায় হতাশা গ্রস্ত মানুষের মাঝে করেছেন প্রাণ সঞ্চার ও বেঁচে থাকার স্বপ্ন। দৃঢতার প্রমাণ রেখেছেন আমাদের প্রিয় মেন্টর জনাব ইকবাল বাহার জাহিদ স্যার। প্রিয় স্যারের জন্য অন্তরের অন্তস্থল থেকে অনেক অনেক দোয়া ও ভালোবাসা। প্রিয় স্যারের অনুপ্রেরণায় আমি যেনো নিজের জীবনে নিজের বলার মতো একটা গল্প তৈরি করতে পারি এবং আগামী দিনে সফল হতে পারি। ইনশাআল্লাহ🌺
💠অনুপ্রেরণা 💠
🌿স্যারের শিক্ষাকে বুকে ধারণ করে সবার ন্যায় আমিও প্রিয় ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে জীবন গল্প লেখার সাহসিকতা অর্জন করি। আশা করি ভালোবেসে সবাই পাশে থাকবেন এবং আমার জন্য দোয়া করবেন।
💠আমার পিতৃ পরিবার, দাদির মুখে শুনা💠
🌿আমার বাবা ছিলেন সমৃদ্ধ শালী পরিবারের সন্তান। বিশাল পরিবার ছিলো দাদার এবং পুর্ব দাদার কিন্তু আজানা এক আদ্ধাতিক কালো সোবলে দাদা সহ পুরো বাড়ীর সবাই একের পর এক মৃত্যু বরন করতে শুরু করেন। বেচে থাকেন আমার দাদী, আমার বড় একজন চাচা, আমার বাবা, এক ফুফু ও বাবার এক চাচাতো ভাই। বাকি সবাই একটি বছরের মধ্যে মৃত্যু বরন করেন। দাদার মৃতুতে দাদি তিন সন্তান নিয়ে অসহায় হয়ে পরেন।এক ফাকা বাড়ি আরো যেনো মৃত্যু পুরি। সব সহ চলে আসেন দাদির বাবার বাড়িতে যদিও তার ও বাবা মা কেউই বেচে ছিলেন না। ভাইদের আশ্রয় তিন টি ছোট ছোট ছেলে মেয়েকে নিয়ে দিন চলতে থাকে তার। এর ভিতর পুর্বের ন্যায় ৭ বছর বয়সে আমার বড় চাচা ও মারা যান। বাকি আমার বাবা এবং ফুফুকে নিয়ে কোন মতে দিন চলতে থাকে দাদির । বাবার বয়স যখন ৮ বছর তখন তার মেজো মামার সাথে কাজের উদ্দেশ্য পারি জমান বরিশালে। শুরু করেন হোটেলে কাজ। বলতে গেলে পেটে ভাতে। বলতে বলতে চলে আসে ৭১ সাল। শুরু হয় যুদ্ধের দামা ডোল। সান্নিধ্যে পান ৯ নং সেক্টর কমান্ডার বীর মুক্তি যোদ্ধা জনাব মেজর জলিল সাহেব এর। তার হাত ধরে যোগ দেন মুক্তিযুদ্ধে প্রায় এক বছর নিখোঁজ থাকেন। সবাই ভেবে নিয়েছিলেন যুদ্ধে শহীদ হয়েছেন। কিন্তু ততক্ষণে বাবা ও তার আরো একজন বন্ধু সহ আশ্রয় পেয়েছিলন আর এক অভাগী মায়ের আচলে। পরম মমতায় যিনি দীর্ঘ অনেক দিন তাদের দুজকে শত্রুদের হাত থেকে বাচিয়ে রাখতে সহায়তা করেছেন। সেই মাকেও যেনো আল্লাহ জান্নাতুল ফিরদউস নসীব করেন।
যখন সব কিছু পরিস্থিতি অনুকুলে আসলো তখন মমতার টানে বাড়িতে ফিরে আসেন। কিন্তু পরিতাপের বিষয় এতোটা বছর অতিবাহিত হলেও আজ পর্যন্ত তার নাম অন্তর্ভুক্ত হয়নি মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায়, পাননি সামান্য সম্মাননা টুকু।
পরবর্তীতে পারিবারিক ভাবে আমার মায়ের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন এবং পুনরায় চলে যান ভোলায়। শুরু করেন হোটেল ব্যাবসা এবং সফল ও হন। পরবর্তীতে মাকে সহ ভোলা শহরেই বসবাস শুরু করেন বাবা।
💠আমার জন্ম
২৫/০৯/১৯৭৯ সালের ২৫ শে সেপ্টেম্বর বাংলাদেশে সবচেয়ে দ্বীপ জেলা ভোলার সদর টাউন স্কুল এলাকায় একটি ভারা বাষায় মায়ের কোল জুড়ে জন্ম হই আমি। আমরা ৪ ভাই ১ বোন, ভাই বোনদের মাঝে আমার অবস্থান প্রথম। আমার জন্মের মুহূর্তে বাবা হোটেল ব্যাবসা করেন ও অনেক সফল হন। সফলতার সাথে সাথে প্রতিহিংসা মুলক শত্রুও বেড়ে গেলো অনেক। একে একে দুই বার ডাকাতির কবলে পরেন। হাল ছাড়েননি। ঘুরে দাড়ালেন।
💠শিশু জীবনঃ
আমার জন্মের প্রায় দেড় বছর পরে আমার শ্রদ্ধেয় নানা জান বেড়াতে নিয়ে আসার উদ্দেশ্য ভোলা যান। সময় আনুমানিক ৬ টা। নানা এক রুমে নামাজ পরতেছিলেন। মা রাতের রান্না নিয়ে ব্যাস্ত। আমি দু পা হাটি হাটি দুস্টমিতে ব্যাস্ত। মা শিং মাছ রান্না শেষ মুলো শাক ভাজি করার জন্য কেরোসিন স্টোপে পাতিল বসিয়ে পিয়াজ কুচিতে ব্যাস্ত। নতুন সংসার বডি খুন্তি সবই নতুন। পিয়াজ নিয়ে দৌড়ে যাই, মা ধরে নিয়ে আসেন। একে একে দুই বার। তিন বাড়ে দৌড়ে গেলে মা পিয়াজ ছিনিয়ে নিয়ে আনেন এবং নানার রুমে দিয়ে দড়জা টেনে বন্ধ করে রাখেন। চঞ্চলা মন মানতে না পেরে কান্না করতে করতে দড়জা খুলে দ্রুত গতিতে পিছন থেকে ছুটে এসে মায়ের গলা ধরে পিয়াজ নেয়ার চেস্টা করি। কিন্তু দুর্ভাগ্য গলা ধরে না রাখতে পাড়ায় বডির উপর পড়ে যাই এবং পায়ের ধাক্কায় স্টোপ পরে গিয়ে আগুন ধরে যায়। মা আমাকে উঠিয়ে বুকে চেপে ধরেন এবং সাহায্যর জন্য পাশের বাষার লোকদের ডাক দেন। কেউ আগুন নিভালেন, কেউ আমাকে কোলে নিতে ব্যাস্ত কিন্তু মা কিছুতেই কারো কোলে ছাড়লেন না। কেদেছিলাম না আমি, শুধু কুহ কুহ শব্দ করতেছিলাম। ততক্ষণে মা বুজতে পারেননি আমার বড় ধরনের কিছু হয়েছে। হঠাৎ মা অনুমান করলেন তা পা ভিজে কিছু একটা বেয়ে পরছে । চেয়ে দেখলেন কাপর, ছায়া ভিজে রক্ত ফুট কেটে পরছে পায়ের পাতায়। মা জোড়ে বাবা বাবা বলে ডাক দিয়ে পাশে শুকাতে দেয়া আব্বুর একটা ব্যাবহারিক গামছা দিয়ে পূড়ো গলাটা পেছিয়ে রেখে সোজা রিক্সা যোগে বাবার হোটেল এ চলে গেলেন। এ দিকে নানাজান রক্ত দেখে বেহুশ হলেন।হোটেলের সব স্টাফ ছুটে এলেন সাথে ছিলেন বাড়িতে থাকা ৮ /১০ জন কলেজ স্টুডেন্ট। সবাই স্থানীয়। উন্নত চিকিৎসার জন্য নেয়া হয় ক্লিনিকে কিন্ত পুলিশ কেচ সন্দেহ করে তারা সদর সরকারি হাসপাতালে রেফার করলেন। তখন বাবা বেহুশ হয়ে পরে গেলেন। নিয়ে আসা হলো হাসপাতালে, নেই বিদ্যুৎ। ডাক্তার কিছুই করতে পারছেন না এবং রিক্স ও নিচ্ছেন না। বিদ্যুতের জন্য বার বার ফোন করেও পাচ্ছিলেন না বিদ্যুৎ। ফোন দেয়া হলো তখন কার মাননীয় এম পি মহোদয়ের কাছে। বাবার খুব ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন এবং তিনিই বাবার হোটেল বিল্ডিং এর মালিক ছিলেন। এম পি মহোদয় এর পরামর্শ ক্রমে হ্যাজাক লাইট জ্বালিয়ে অপারেশন শুরু করলেন। এদিকে আমার রুহ যাই যাই প্রায়। ডাক্তারগন বার বার বিদ্যুৎ বিদ্যুৎ বলে আফসুস করতেছিলেন। এ অবস্থা দেখে ফুসে উঠেন কিছু ছাত্র ভাইয়েরা। শুরু হয় ভাঙচুর। একে একে ৪/৫ টি হাসপাতাল কক্ষ ভাঙ্গচুর করেন তারা। নজরে আসে প্রশাসনের চলে আসে বিদ্যুৎ ততক্ষণে ডাক্তার গন হাফ ছাড়ছিলেন। ৬/৭ ঘন্টা অচ্রপাচার শেষে একটু আশ্বাস দিলেন ডাক্তার গন। আরো জানালেন আমার দুটি চোখের দুটি সিরা কেটে গিয়েছে। একটি সোজা আর একটি ক্রস কাট। ক্রস কাট ১০০% জয়েন্ট দিতে পেরেছেন কিন্ত সোজা ভাবে কাটা যেটা সেটি আপ-ডাউন করে যুক্ত করতে হয়েছে যার ফলে একটি চোখ অন্ধ বা ড্যামেজ হতে পারে। কিন্তু আলহামদুলিল্লাহ ধীরে ধীরে সব কিছু ঠিক হয়ে গেছে। এদিকে মা ৮ ঘন্টাই বেহুশ, বাবাকে সুস্থ্য করা হলো। সব কিছু মেনে নিয়ে আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় ছাড়া তাদের হাতে আর কিছু করার ছিলো না। এদিকে শুরু হলো পুলিশ ইনভেস্টিগেশন। মায়ের রক্ত মাখা কাপর চুপর থানায় নিয়ে নেয়া হয়। চির কৃতজ্ঞতা মহান রাব্বুল আলামীনের প্রতি, কৃতজ্ঞতা এমপি মহোদয় সহ প্রিয় ছাত্র ভাইয়েরা এবং ডাক্তারদের প্রতি যারা আমার জীবন বাচাতে সহায়তা করেছিলেন। সব কিছু মিলিয়ে আব্বুর মন ভিশন খারাপ হয়ে যায়। হোটেল ব্যাবসাটি ছেড়ে দিয়ে ফুল ফ্যামিলি নিয়ে পুনরায় চলে আসেন বরিশালে এবং নতুন করে হোটেল বিজনেস শুরু করেন। আমরা মা ছেলে নানা বাড়িতে বসবাস শুরু করি। এতো দিনে আমার দাদাদের বাড়ী ঘর ভিটা ছাড়া হয়ে যায়। কেউ নেই। আমরা গ্রামে আসার কয়েক দিনের মাথায় একমাত্র ফুফুও প্রথম ডেলিভারি কেচে মারা জান।খুব সুন্দর ছিলেন ফুফু একদম বাবার মতো।আমায় খুব আদর করতেন। আল্লাহ তাকে যেনো বেহেশত নসীব করেন। এতোদিনে দাদাদের পুরো বাড়ী চলে যায় কালোবাজারিদের দখলে। বাবা অনুপায় হয়ে নানা বাড়ির পাশের একটি বাড়ি কিনতে সক্ষম হন। সেখানেও অনেক দুর্বিষহ ইতিহাসকে মোকাবিলা করে ঘর নির্মাণ করতে সক্ষম হন। এবং সেখানেই নানা, নানী, মামা খালাদের পরম মমতায় বড় হই।
🌹শিক্ষা জীবন 🌹
প্রথম শিক্ষা জীবন মায়ের হাতে খরি। ক্লাস ওয়ান, টু বরিশালে মায়ের কাছেই পড়া। ফিরে আসি নিজ গ্রামে। ক্লাশ থ্রিতে ভর্তি হতে চাইলে বাধে বিপত্তি। ভর্তি নিবেনা ক্লাশ থ্রিতে। স্যারেরা চ্যালেঞ্জ করে নিলেন একক ভাবে পরিক্ষা। সেখানে ভালো ফলাফল অর্জন করায় কমিটি থেকে ভর্তির সুযোগ পাই। শহরে বড় হওয়া ছোট ছেলেটির সুন্দর মার্জিত পোশাকে স্কুলে যাওয়া অনেকের শত্রু চোখে শত্রুর মতো। সবাই ট্রোল করতো। সাথে একই ক্লাসে আর একটি মেয়ে ছিলো ঢাকা থেকে আগত। অনেক উচু লাম্বা এখনকার সময় মনে হবে সেভেন এইটের ছাত্রী। দুজনে খুব মিল ছিলো। ছোট বেলার খেলার সাথি যেমন হয়। নজর পরে বাংলা শিক্ষকের। ওর সাথে চলা একদম পছন্দ করতেন না। তখন বিষয়টি কিছু বুজতে পারতাম না। ও যে দিন ক্লাশে থাকতো আমার জন্য সে দিন বেত্রাঘাত অবধারিত। বিষয়টি মাকে বার বার জানাই। কিন্তু মা ভাবতো ক্লাশে মনে হয় পড়া পারেনা তাই মারে। মা তাই বাড়িতে ও পড়াশোনায় প্রচুর চাপ দিতো।
এদিকে মায়ের পড়ার শাষন ও দিকে স্যারের প্রতিহিংসার টর্চার সয্য হচ্ছিলো না। মা ততক্ষণে একটু একটু বুজতে পারেন কিছু একটা মিসটেক হচ্ছে। আমার দুইজন খালা ছিলেন ক্লাশ ফাইভে পরতেন। তাদের কাছে মা খুলে বলেন বিষয় টি। অভিযোগ আকারে স্কুলে জানালে অই স্যার আরো ক্ষিপ্ত হন। খালারা বুজতে পেরে আমাকে বিষয় টি জানায়। বাংলা প্রিয়ড শুরু,খালারা সহ আরো কয়েকজন স্টুডেন্ট হাজির দরজার সামনে। স্যার আজ আসলেন সিলেটের স্পেশাল বেত নিয়ে। ছোট মানুষ ভয়ে শরীর থর থর করে কাপছিলো। অথছ আমার অপরাধ খুজে পাইনা যে নিজেকে সংশোধন করবো। পড়া জিজ্ঞেস করলেন একে একে। কেউকে মারলেন না। আমি কবিতা বললাম, একে একে পিছন থেকে জিজ্ঞেস করতে শুরু করলেন। একজায়গায় আটকে গেলাম। বেঞ্চ থেকে বের করে সেই মোটা বেত দিয়ে একে একে বেত্রাঘাত শুরু করেন । কিন্তু আমার একটাই নিতে কষ্ট হচ্ছিলো। অসহায় হয়ে নেক্সট বেত আমি দক্ষতার সাথে ধরে ফেলি। অভিযোগ দেই হেড স্যারের কাছে। মিমাংসা হওয়ার পুর্বেই স্কুল ছুটি হয়ে যায়। ঘটনা জানাজানি হলে পর দিন কাছাকাছি অন্য স্কুল থেকে অফার আসে মায়ের কাছে এবং সেই স্কুলে ভর্তি হই। সব স্যারদের অতি আদর ভালোবাসায় শিক্ত হয়ে ১৯৮৮ সালের সেন্টার পরিক্ষায় প্রথম স্থান অধিকার করি। সব স্যারদের অনুরোধে বৃত্তি পরিক্ষার প্রুস্তুতি নেই। দুক্ষের বিষয় পরিক্ষার আগের দিন আমার বড় মামা অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন, আমার মাও সেখানে চলে যান। মনে একটু কষ্ট পেলাম। যেহেতু বাবা কাছে নেই, মা পরিক্ষা রেখে ভাইকে দেখতে হাসপাতালে গেলেন। পায়ের ধুলা কার নিবো??তাই পরিক্ষা দিতে ও যাইনি জিদ ধরে। এদিকে আমার অই জুলুমবাজ স্যার সেই মেয়েটিকে ক্লাশ ফাইভে থাকা অবস্তায় নিকা করেন। স্যার তখন দুই ছেলের জনক ছিলেন। কলংকের মালা গলায় নিয়ে অই শিক্ষক স্কুল ত্যাগ করেন।
🌹১৯৮৯ সালের শুরুতে ক্লাশ সিক্স ভর্তি হই। কমিটির লোকদের নাতি পুতিদের চাপা চাপিতে রোল নাম্বার ৩/৪ এর উপরে যেতে পারতাম না। ১৯৯১ সালের অস্টম শ্রেনীর পরিক্ষায় জানতে পারি নাতি পুতিরা প্রশ্ন পত্র ফাস করেন। মাথা খারাপ হয়ে যায়। সিদ্ধান্ত নেই পরিক্ষা বর্জনের। ক্লাশের বেশির ভাগ বন্ধু বান্ধবীদের আমার পক্ষে সারা পাই সাথে অনেক প্রিয় স্যারদের ও সহযোগিতা পাই। এর মধ্যে সমস্ত ডকুমেন্টস হাতে পাই। বিকালের পরিক্ষা সবাই চলে আসি সকালে। আমাদের শান্ত করার জন্য পরিক্ষা নিয়ন্ত্রণ কমিটি সিদ্ধান্ত নেয় বিকাল ১ টার পরিক্ষা শুরু করবেন সকাল ১১ টায়। অন্যান্য স্কুলের পরিক্ষা বাঞ্জাল করার সুবর্ন সুযোগটা কাজে লাগাই। শুরু হয় পরিক্ষা। প্রশ্ন পত্র হাতে পেয়ে হল থেকে বেড়িয়ে পরি প্রায় ১০/১৫ জন ভাই বোন। চলে যাই উপজেলা স্কুল কমিটির চেয়ারম্যান জনাব জালাল স্যারের কাছে। খুব স্টেট ফরোয়ার্ড মানুষ ছিলেন। অভিযোগ পত্র আমলে নিলেন এবং পরের দিন আমাকে বাদী করে মামলা রুজু করেন। জানতে পেরে আসামি লিডারদের মাথা খারাপ। কেউ ছোড়া দেখায়, কেউ গুলি করতে চায়, আরো কতো কি। কোন কিছুই তোয়াক্কা না করে বাকি পরিক্ষায় অংশগ্রহণ করি। এক দিন পরে স্কুলে চলে আসেন কয়েকজন স্বনামধন্য ইনভেস্টিগেশন অফিসার। প্রথমেই আমাকে খুজে জবানবন্দি রেকর্ড করেন। একে একে অনেকের। সবার অভিযোগ একই। শুনেছি বিশাল অংকের টাকা জরিমানা সহ বড় পালিসমেন্ট পান অভিযুক্ত আসামীরা সাথে একজন শিক্ষক। যার যন্ত্রনায় অন্যান্য প্রিয় স্যারেরা অতিষ্ঠ থাকতেন। পরবর্তীতে সবাই পরামর্শ দেন এই স্কুল ত্যাগ করে অন্য স্কুলে ভর্তি হতে কারন অভিযুক্ত অই শিক্ষক শিক্ষা বোর্ডের দ্বায়িত্বে থাকতেন। আমিও তাই সিদ্ধান্ত নেই।
এর মধ্যে যে স্বনামধন্য স্কুলের স্যারের কাছে কেচ করেছিলাম অই স্কুল থেকে অফার আসে। খুব আনন্দের সাথে গ্রহণ করি এবং নিজেকে ধন্য মনে করি। দেখা করি প্রধান শিক্ষকের সাথে। সেখানে আর এক বিপত্তি। পুর্বে আমার নাম ছিলো রেজবী কামাল, কিন্ত স্যার আমাকে রেজবী নাম দিতে রাজি হলেন না। এবং নাম রাখলেন তার ছেলের নামের সাথে নাম মিলিয়ে মোঃ কামরুজ্জামান (কামাল)। না করতে পারলাম না। আর্শিবাদ হিসাবে গ্রহন করলাম নামটি।
🌹১৯৯৪ সালের এস এস সি টেস্ট পরিক্ষায় কোন এক কারনে এক পেপার দিতে পারিনি। স্কুল কমিটির এক দন্দের কারনে এই সালে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করলেন। ফরম ফিলাপ করতে পারলাম না।ধর্জ হারাইনি।আবার ফর্ম ফিলাপের জন্য অফার আসে সেই পুর্বের স্কুল থেকে। ১৯৯৪ সাল ৪ মে পরিক্ষা। ২ তারিখ আমায় এডমিড দেয়া হলো না। অই শিক্ষক ১৯৯১ সালের কথা মনে রেখে শিক্ষা বোর্ডে আমাকে মৃত্যু ঘোষনা করে এডমিট ক্যান্সেল করে আসেন। রুজু করি আবার মামলা। দুর্ভাগ্য অই দিন পরিক্ষার ব্যাস্ততায় মাহামান্য ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট করলেন না। জানাজানি হলে পুরো স্কুল কমিটি, অই শিক্ষক হাজির হন মিমাংসার জন্য উকিল সেরেস্তায়। থানা, সাংবাদিক সহ সবার উপস্তিতির মাঝে জরিমানা ধার্জ করেন। কেচ তুলে আনি আমি।একটি বছর আমায় খুব কস্ট দিয়েছে। হতাসা নিয়ে আবার অনেক ইতিহাস পার করে ১৯৯৫ সালে আগের স্কুলের প্রিয় স্যারদের সহোযোগিতায় কোন টেস্ট পরিক্ষা ছড়াই ফর্ম ফিলাফ করি এবং সেকেন্ড ডিভিশন পাই।
🌹১৯৯৬ সালে ভর্তি হই বরিশাল সরকারি সৈয়দ হাতেম আলী কলেজে। ৯৭ সালের পরিক্ষা। সরকারি মহিলা কলেজ, বরিশাল। খুব ভালোই চলছিলো। খুব আশাবাদী ছিলাম। দুর্ভাগ্য ইংরেজি প্রথম সাবজেক্ট পরিক্ষা।শুরুতেই ম্যাজিস্ট্রেট স্যার টয়লেটের সামনে পুলিশ প্রিজন ভ্যান সহ হাজির। যে নিচে নামে সেই চেকে ধরা পরে প্রিজন ভ্যানে যায়। হঠাৎ পাশের সিটের এক বন্ধু জিন্স প্যান্টের পিচের পকেটে ব্লেড রেখে বই কাটার জন্য নিচে গেলে মেজেস্ট্রেট স্যার পকেটে হাত ডুকিয়ে দিলে গুরুতর ভাবে কেটে যায় হাত। শুরু হয় আমাদের হলে হই হুল্লো। বাকি এক ঘন্টা কলম ধরতে পারলাম না কেউ। অনেকের ভাগ্য কালো আধার নেমে আসে। পরে ১৯৯৮ সালে এইচ,এস,সি শেষ করে কর্মজীবনে পদার্পণ।
🌹কর্মজীবনঃ
১৯৯৮ সালের মাঝামাঝি ঢাকায় হাটু জল। আব্বুর এক বন্দুর পরামর্শ অনুযায়ী ভর্তি রেখে গার্মেন্টস এ জব নেই স্টোরে। দেখা হয় কয়েকজন ভালো মানুষের সাথে। মন মেনে যায়। অনেক ইতিহাস পার হয়ে ৬ বছরে পর পর ৫ বার প্রমোশন নিয়ে পদ পাই প্রডাকশন সুপারভাইজার এ। বেতন ও ভালো। সুন্দর ভবিষ্যতের সুবাতাস পাই। ইচ্ছে ছিলোনা বিদেশে আসার।
🌹বিদেশ গমন।
মামারা বিদেশ করতেন। কোন কারনে মায়ের ও আশা বাদলো তার ছেলেকেও বিদেশে পাঠাবেন। কিন্ত মায়ের কছম "বিদেশ না আসলে তার আত্তায় শান্তি পাবে না" কোন দিকে তাকানোর সময় ছিলোনা আমার তখন। রাজি হলাম। অনেক কিছু ত্যাগ করতে হবে আমাকে তাও যানি। কিছু করার ছিলো না আমাকে। কিছু পেতে হলে কিছু ত্যাগ করতে হবে এটাই স্বভাবিক। সব কিছু মেনে নিয়ে ৩০/১০/২০০৫ চলে আসি সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবুধাবি সিটিতে। ৫৭০ দেরহাম বেতনে অফিস বয়ের কাজ। তিন বছর শেষে অনেক দীর্ঘ ইতিহাস পার করে একজন ভালো আরবীর সহায়তায় মিনিস্ট্রি অফ ইসলামিক এফেয়ারস এ একই পোস্টে জব পাই। ড্রাইভিং লাইসেন্স নিলাম। অনেক সদ ইচ্ছে নিয়ে ইউটুব ও বিভিন্ন অনলাইন পোর্টাল এর মাধ্যমে একে একে রব্ধ করি এরাবিক রিডিং, ইলেকট্রিক, প্লাম্বার এবং সাউন্ড সিস্টেম এর কাজ । বর্তমানে ৬ বছর থেকে একটি থানার ৭০ টি মসজিদের দেখাশুনার দ্বায়িত্বে নিয়োজিত আছি। দীর্ঘ দিন যাবত সারা বিশ্বের মুদ্রাস্ফীতি, পেট্রোল ধষ, করোনাভাইরাস মহামারীর কারনে কিছু সরকারি বিধি নিষেধ এর কারনে আজও প্রমোশন পাইনি। স্যারের শিক্ষা অনুযায়ী লেগে আছি। দিন রাত পরিশ্রম করে যাচ্ছি একটু সচ্ছলতার আশায়। আশাবাদী আল্লাহর দয়ায় একদিন কাংখিত লক্ষে পৌছে যেতে পারবো।
🌹ফাউন্ডেশনে আশা:
এক পরন্ত বিকেলের অবসরে ইউটিউবে রোক্সানা রুপি আপুর একটা ইংরেজি কোর্সের ভিডিও দেখতে ছিলাম। নেক্সট ভিডিওটি দেখি প্রিয়া স্যারের সাথে সাক্ষাতকার ভিডিও। কেমন ই যানি ভিডিওর শিরোনাম শুনে খুব ভালো লাগলো। ধীরে ধীরে আদ্যোপান্ত খুজতে শুরু করি, লিংক পেয়ে যাই, যুক্ত হয়ে যাই। খুব ভালো লাগছে, অনেক কিছু শিখতে পেরেছি এখনো শিখছি।।
🌹আমার জন্য সবাই দোয়া করবেন। আশাকরি সব সময় ভালোবাসা দিয়ে আপনাদের পাশে রাখবেন। আমার বাবা মা সহ পরিবারের সবার জন্য দোয়া করবেন। সবার সু-স্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করছি।
অনেক ব্যাস্ততার মাঝে আমার এই ছোট জীবন গল্পটি লেখা। যদি ভাষা শৈলীতে কোন ভুল ত্রুটি হয়ে থাকে অনুগ্রহ করে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
📌স্ট্যাটাস অফ দ্যা ডে ৮০৭
তারিখ ২৮-০৫-২০২২
🌿মোঃ কামরুজ্জামান কামাল
🌿সদস্য, #নিজের_বলার_মতো_একটা_গল্প_ফাইন্ডশন
🌿সদস্য, এগ্রো ফোরাম
🌿 ব্যাচ নং: ১৭,
🌿রেজি.নং: ৮৭৪২৮
🌿জেলা- বরগুনা,
🌿ব্লাড-গ্রুপ (B+)
🌿 বর্তমান অবস্থান-- 🇦🇪আবুধাবি, ইউ এ ই
🌿 Kamrul82@gmail.com
🌿ফেইসবুক ঃ https://www.facebook.com/kamrul8348
🌿পেকইজ লিংকঃ https://www.facebook.com/modhupolly.bd/