কেউ কারোটা খাচ্ছে না, যে যার রিজকের ভাগই খাচ্ছেন।
💘💘💘বিসমিল্লাহির রাহমানীর রাহিম 💘💘💘
♥️♥️♥️আমার জীবনের গল্প ♥️♥️♥️
এক দুঃখিনীর গল্প সবাই পড়বেন আমাকে সাহস দিয়ে উৎসাহিত করবেন আমি একজন গৃহিণী থেকেও উদ্যোক্তা হতে চায়। ♦️
♥️আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ ওয়া বারকাতুহু। আমি শুরু করছি মহান আল্লাহ রব্বুল আলামীনের প্রশংসার সাথে নিজের বলার মত একটা গল্প ফাউন্ডেশনের। প্রিয় মেন্টর প্রিয় শিক্ষক আমার সম্মানিত Ipbal Bahar Zahid স্যারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। এবং ফাউন্ডেশন এর সকল ভালোবাসার ভাই-বোনদের সবাইকে অনেক দোয়া ও ভালবাসা সবার প্রতি। আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমি ও ভালো আছি। আপনারা যে যেখানে আছেন ভালো থাকুন ও সুস্থ থাকুন এই আশা ব্যক্ত করছি।
♥️♥️♥️আমার পরিচিতি ♥️♥️♥️
চট্টগ্রাম জেলার বাঁশখালী থানায় আমার জন্ম। আমরা ৪ভাই বোন, ২বোন ২ভাই আমি সবারই বড় আমার আব্বা একজন মুক্তিযুদ্ধা।আমার আব্বা চট্টগ্রাম মুক্তিযুদ্ধা ক্লাবের ক্যাশিয়ার ছিলেন, আমার আম্মা একজন গৃহিণী, আমার আব্বা কোন সময় আমাদেরকে অভাব অনঠন বুজতে দেয়নি কখনো। আমার আব্বা মারা যাবার পর এখন বুজতে শিখেছি সবকিছু। আমার ছোট ভাই সব সময়,আমাদের পাশে আছেন সেই বলে আমাদের আব্বা নাই তো কি হয়েছে আমি তো আছি, আব্বার সব দায়িত্ব আমি পালন করব, আল্লাহর রহমতে আমার ভাই বোন ও আমার মা আমার পাশে দাড়িয়েছেন। আমার আব্বা ২০১৩সালে মারা যায়, মারা যাবার সময় ৫/৬লাখ টাকার মত দেনা ছিল আব্বা একটা ব্যবসা করতেন ওখানে লর্স হওয়ার কারনে চিন্তা করতে করতে হঠাৎ স্টোক করে মারা যায়, ২০১৩সালে মার্চ ২৭তারিখ আমরা যখন গ্রামের বাড়ি থেকে আব্বার যানাযার কাজ শেষ করে চিটাগং এর বাসায় আসলাম তখন মানুষে বলে তোমার আব্বার থেকে টাকা পাব,আব্বা আমাদেরকে বলে গিয়েছিল মানুষে টাকা পাবে, আমার ছোট ভাই শামিম তখন সবাইকে বলেছে আমার আব্বার ঋণ সব টাকা আমি শোধ করব, আব্বার টাকা পরিশোধ করার পর বাসা ছেড়ে দিয়ে আমার আম্মা,বোন গ্রামের বাড়িতে চলে আসেন। চিটাগং ১ভাই ব্যাচেলর বাসায় উঠে, ব্যবসা করত সিটি করপোরেশনে সুমন গ্রামের বাড়িতে থাকত বেকার ছিল।
♦️♦️♦️আমার বিবাহিত জীবন ♦️♦️♦️
আমার বিয়ে হয় ২০১১সালে আমার এক মেয়ে হয় ২০১২সালে। ২০১৩সালে আমার আব্বা মারা যায়। ২০১৩ সালের শেষের দিকে আমার স্বামীর পরিবার এবং স্বামীর সাথে সমস্যার কারণে ডির্ভোস হয় একটা মেয়ে নিয়ে আমি শশুর বাড়ি থেকে বাপের বাড়ি চলে আসি।তখন আত্মীয় স্বজনরা বলে বাপ নাই মেয়ে নিয়ে শ্বশুর বাড়ি থেকে চলে আসছে ভাইদের গাড়ের উপর। আত্মীয় স্বজনরা আরও অনেক কথা বলতো ডির্ভোস হলে মেয়েদের যা শুনতে হয় আর কি। তখন আমার ভাই আবার চিটাগং এ বাসা নে আমি ভাইদের সাথে ছিলাম।আমার আব্বা মারা যাবার পর আমার ভাই আমার ছোট বোনকে বিয়ে দেন। আব্বা মারা যাবার পর আমার ছোট ভাই মা ও ভাই, বোন, আমার মেয়ে তার ভাগীনিকে আগলিয়ে রেখেছেন, আমি আমার ছোট ভাইয়ের প্রতি চির কৃতজ্ঞ। কোনদিন আমার ছোট ভাইয়ের ঋন শোধ করতে পারবনা, আমাকে একটা কুচিং সেন্টারে ভর্তি করে দে সেলাই শিখতে, আমার ভাই,
আমি মহিলা সমিতি অধিদপ্তরের অধিনে পুতির হাতের কাজ শিখি ২০১৬সালে আমার ছোট বোনের বিয়ে হয় ২০১৬ সালে আমার ছোট ভাই সুমন তখন বেকার ছিল, সংসারের যা দখল গেছে আমার ছোট ভাই শামিমের উপর দিয়েই গেছে।আমার মা, ভাই সিদ্ধান্ত নিছে আমাকে আবার বিয়ে দিবে। আমি ওদেরকে বলি আমি বিয়ে আর করবনা গার্মেন্টসে চাকরি করে খাব আমার মেয়েকে নিয়ে তখন আমার মা ভাই বলে মেয়ের দায়িত্ব আমরা নিব,আম্মা আমাকে বলে তুর বাপ নাই। তুর ভাইয়েরা এখন ও বিয়ে করে নাই।তাদের বউ আনার আগে তুকে আমি বিয়ে দিয়ে সুখি দেখতে চাই,আমার মায়ের কথা ফেলতে পারি নাই।২০১৮সালে আমার বিয়ে হয়, ২০১৯ সালে আমার ছেলে হয় আমার মেয়ে আমার মায়ের কাছে থাকে। আমার মেয়েকে বাপ, মার আদর দিয়ে বড় করতেছেন তার নানু, মামারা আমার মেয়ে এখন ক্লাস ফাইভে পড়ে সবাই দোয়া করবেন আমার মেয়ের জন্য আমি আমার মেয়ের ভবিষ্যতে কথা চিন্তা করে উদ্যোক্তা হতে চাই।আমি যেন একজন উদ্যোক্তা হতে পারি সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন।
♥️আমি এক হতভাগি ♥️
♥️আমার মতো হতভাগা মেয়েরা মানসিকভাবে শক্তিশালী মেয়েগুলো অন্য দশটা মেয়ের থেকে আলাদা হয়।
এরা কথায় কথায় কাঁদতে পারে নাহ, ন্যাকামো করে কারো মন ভোলাতে পারেনা, কাউকে খুশি করার জন্য অভিনয়টাও ঠিকঠাক করতে পারে নাহ।
এই মেয়েগুলো কষ্টগুলো বুকের ভেতর জমা করে রাখে। সবার থেকে লুকিয়ে রাখে কষ্টগুলো; তারা কষ্টের পাহাড় নিয়ে হাসি মুখে ঘুরে ফিরে,যেন কিছুই হয়নি। তাদের হাসি মুখ দেখে সবাই মনে করে এদের বুঝি কষ্টই হয় না, অনুভূতিশূন্য।
♥️♥️♥️আমার মতো হতভাগী ♥️♥️♥️
আমার মতো এই মেয়েরা হেরে যায় না কখনো, সময় পরিবর্তনের সাথে সাথে তারাও নিজেদের পরিবর্তন আনে। যে কোনো পরিস্থিতিতে তারা উঠে দাঁড়ায়।
জীবনে যত বাধাই আসুক না কেনো, যত ঝড় উঠুক না কেন, তারা কারো ওপর নির্ভরশীল হয় না। আজ নিজেরাই যুদ্ধে নেমে পড়েছি, জয়ী না হওয়া পর্যন্ত যুদ্ধ করতেই থাকব।আমার স্বপ্ন আমি একদিন আমি সফল উদ্যোক্তা হব। আমার অধীনে অনেক ভাই-বোন কাজ করবে এটাই আমার স্বপ্ন কষ্টগুলো হাসি মুখে সহ্য করে যায় দিনের পর দিন।
যখন কাউকে ভালোবাসে, নিজের সবটুকু দিয়ে তাদের ভালোবাসে, তাদের জন্য অসম্ভবকে সম্ভব করা। সমাজ সংসারের কোনো বাধাই তাদের পায়ে বেড়ি পড়াতে পারে না।
আমরা দুর্বলকে সাহস যোগায় সামনে এগিয়ে যাওয়ার। আমরা অহংকারী হয় না, কিন্তু নিজের উপর বিশ্বাস থাকে অটুট।
কিন্তু আমাদের ও কষ্ট হয়। প্রচন্ড, তীব্র কষ্ট। আমরা মেয়েরা খুবই একা হয়; কাছের বন্ধু বলতে আমাদের কেউ থাকে নাহ। ভলোবাসার মানুষদের কখনো কাছে পায় নাহ।
বেশিরভাগ মানুষই আমাদের ভুল বোঝে; সময়ের প্রয়োজনে ব্যবহার করে। আর এই বলে ছেড়ে চলে যায়, 'ও অনেক স্ট্রং, ও পারবে নিজেকে সামলে নিতে।'
কিন্তু আমার মতো মেয়েগুলো প্রতি রাতে কাঁদে, নির্ঘুম রাত কাটায়, অন্য দশটা মেয়ে থেকে বেশি যন্ত্রণায় কাতর হয়। মেয়েরা চায় তাদের কেউ যত্ন করুক,কেউ আগলে রাখুক।কেউ তার দায়িত্বটা নিক...খুব করে চায়।
দিনশেষে মেয়েগুলো একলা থাকে সকল মানুষের ভিড়ে, তখন কান্নাভেজা চোখে ঘুমিয়ে যায়। সকাল হলে আবার নতুন করে ঠিকই উঠে দাঁড়ায়।
আমাদের উঠে দাঁড়ানোতেই সমাজের মানুষগুলো যত ভয় পায়।
আমাদের মতো মেয়েগুলোর মনটা যে বুঝতে পারে তাদের মত সৌভাগ্যবান মানুষ কমই হয়। কারণ, এসব মেয়েরা শুধু মানুষকে দিতে জানে বিনিময়ে কিছু চায় নাহ। যাকে সে ভালোবাসে সে যেমনই হোক না কেন তাকে কখনো ভুলে যেতে পারেনা। প্রতারণা, ছলনা করতে জানে নাহ।
কারো অধিকার নষ্ট করে নিজের জীবন সাজাতে জানে নাহ; বরং বারবার তাদের ভালোবেসে সেবা করে যায়, যারা তাকে ভেঙে চূর্ণ করেছে প্রতিনিয়ত।
ডিভোর্সি মেয়েরা মানসিকভাবে শক্তিশালী হয়।মেয়েরা জীবনের পদে পদে ভেঙে চূর্ণ-বিচূর্ণ হয় কিন্তু প্রতিবারই উঠে দাঁড়ায় আর জয়ী না হওয়া পর্যন্ত যুদ্ধ করতেই থাকে।
প্রকৃতপক্ষে আমারাই অগ্নিকন্যা!
♥️♥️♥️রিজিকের মালিক আল্লাহ ♥️♥️♥️
♥️আল রাজ্জাকু♥️
রিজকের সর্বনিম্ন স্তর হচ্ছেঃ টাকা, পয়সা, অর্থ এবং সম্পদ।
রিজক এর সর্বোচ্চ স্তর হচ্ছেঃ শারীরিক এবং মানসিক সুস্থতা।
রিজকের সর্বোত্তম স্তর হচ্ছেঃ পুণ্যবান স্ত্রী এবং পরিশুদ্ধ নেক সন্তান এবং
রিজকের পরিপূর্ণ স্তর হচ্ছেঃ মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি।
রিজক খুব গভীর একটি বিষয়, যদি আমরা তা বুঝতে পারি।
আমি পুরো জীবনে কত টাকা আয় করবো সেটা লিখিত, কে আমার জীবনসঙ্গী হবে সেটা লিখিত, কবে কোথায় মারা যাবো সেটাও লিখিত এবং কতটা খাবার ও পানীয় গ্রহণ করবো তাও লিখিত বা নির্দিষ্ট।
আশ্চর্যের ব্যাপার হচ্ছে, আমি কতগুলো দানা বা ভাত দুনিয়াতে খেয়ে তারপর মারা যাবো সেটা লিখিত। একটি দানাও কম হবেনা এবং একটি বেশিও না।
ধরুন এটা লিখিত যে আমি সারাজীবনে এক কোটি টাকা আয় করবো, এই সিদ্ধান্ত আল্লাহ্ তা'আলা নিয়েছেন।
কিন্তু, আমি হালাল উপায়ে আয় করবো না হারাম উপায়ে আয় করবো, সেই সিদ্ধান্ত একান্তই আমার।
যদি ধৈর্য ধারণ করি, আল্লাহ্ তা'আলার কাছে চাই, তাহলে হালাল উপায়ে ওই এক কোটি টাকা আয় করেই আমি মারা যাবো। আর হারাম উপায়ে হলেও ওই এক কোটিই... নাথিং মোর, নাথিং লেস!
আমি যেই ফলটি আজকে টেকনাফ বসে খাচ্ছি, সেটা হয়ত ইতালি কিংবা থাইল্যান্ড থেকে ইমপোর্ট করা। ওই গাছে যখন মুকুল ধরেছে তখনই নির্ধারিত হয়েছে যে, সেটি আমার কাছে পৌঁছাবে। এর মধ্যে কত পাখি ওই ফলের উপর বসেছে, কত মানুষ এই ফলটি পাড়তে গেছে, দোকানে অনেকে এই ফলটি নেড়েচেড়ে রেখে গেছে, পছন্দ হয় নি বা কিনেনি। এই সব ঘটনার কারণ একটাই, ফলটি আমার তাক্বদীরে লিখিত। যতক্ষণ না আমি কিনতে যাচ্ছি, ততক্ষণ সেটা ওখানেই থাকবে।
এর মধ্যে আমি মারা যেতে পারতাম, অন্য কোথাও চলে যেতে পারতাম, কিন্তু না! রিজকে যেহেতু লিখিত আমি এই ফলটি না খেয়ে মারা যাবো না।
♦️ রিজক জিনিসটা এতোটাই শক্তিশালী! ♦️
কিংবা যেই আত্মীয় কিংবা বন্ধু-বান্ধব আমার বাসায় আসছে, সে আসলে আমার খাবার খাচ্ছে না। এটা তারই রিজক, শুধুমাত্র আল্লাহ্ তা'ইলা আমার মাধ্যমে তার কাছে পৌঁছে দিচ্ছেন। হতে পারে এর মধ্যে আমাদের জন্য মঙ্গল রয়েছে। আলহামদুলিল্লাহ!
কেউ কারোটা খাচ্ছে না, যে যার রিজকের ভাগই খাচ্ছেন।
আমরা হালাল না হারাম উপায়ে খাচ্ছি, সেটা নির্ভর করছ, আমি আল্লাহ্ তা'আলার উপর কতটুকু তাওয়াক্কুলের উপর আছি, কতটুকু ভরসা করে আছি। তার উপর।কেননা,
আল্লাহ তা'আলা বলেছেনঃ
وما من دابة فى الارض الا على الله رزقها
-------"দুনিয়ায় বিচরণকারী এমন কোনো প্রাণী নেই,যার রিজকের দায়ীত্ব (আমি)আল্লাহর উপর নেই।
যদি থাকে রিজিকে আপনা আপনি আসিবে
শুধু সৎ ভাবে চেষ্টা করতে চাই।এখন আমার স্বামী নিয়ে আমি ভালো আছি সুস্থ আছি। আমার এই ফ্যামিলিতে একটা ছেলে।আমি উদ্যোক্তা জীবন নিয়ে কাজ করার জন্য চেষ্টা করছি। মেয়েদের বিভিন্ন রকমের থ্রি পিস এবং হাতের নকশী কাঁথা হাতের পুতির বিভিন্ন প্রোডাক্ট নিয়ে কাজ করছি। ইনশাআল্লাহ আমার জন্য সবাই দোয়া করবেন ভালোবেসে পাশে থাকবেন আপনাদের উৎসাহ পেলে এগিয়ে যাব ইনশাআল্লাহ।
📌স্ট্যাটাস অফ দ্যা ডে ৮১২
তারিখ ০৩-০৬-২০২২
সৈয়দা নাসরিন সোলতানা
ব্যচ নাম্বার ১৭
রেজিস্ট্রেশন নাম্বার ৮৩৭৭৫
থানা বাঁশখালী
জেলাঃ চট্টগ্রাম
আমি একজন গর্বিত নিজের বলার মত গল্পের সদস্য প্রমোশন টিম