অনেকের কাছে চেয়ে চেয়ে আমি খেয়েছি..
🕋 আসসালামু আলাইকুম সবাইকে!
🕋বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম🕋
আজকে আমি হাজির হয়েছি নিজের জীবনের গল্প বলতে। আমার বিশ্বাস সবাই আমার গল্পটা পড়ে যাবেন।
,,,,,,, 💝💝 #গল্প!,💝💝💝💝
চলুন শুরু করা যাক। 👇👇👇
🥀কেমন আছেন সবাই ? আশা করি আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমতে ভালো আছেন।
🍂আলহামদুলিল্লাহ আমিও ভালো আছি। এমন একটি পরিবারের সাথে আছি যেন প্রতিটি মুহুর্ত ভালো থাকতেই হয়।
,,🕋 প্রথমে শুকরিয়া আদায় করে নিচ্ছি মহান আল্লাহ তালার প্রতি, যিনি আমায় এখনো বাচিঁয়ে রেখেছেন, সেই মনিবের দরবারে শুকরিয়া, আলহামদুলিল্লাহ। আলহামদুলিল্লাহ। 🕋
,,💝💝 এর পর চির কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি প্রিয় মেন্টর, প্রিয় শিক্ষক জনাব #ইকবাল_বাহার_জাহিদ স্যার এর প্রতি। যার অক্লান্ত পরিশ্রমে পেয়েছি এতো সুন্দর ফাউন্ডেশন, এতো এতো ভালো মানুষ। সেই স্যার এর প্রতি চির কৃতজ্ঞতা। 💝💝 আমি স্যার এর জন্য অনেক অনেক দোয়া করি।
👉 কখনও ভাবিনি জীবনের গল্প লিখবো। ভালোবাসার ফাউন্ডেশন আমাকে লিখার সুযোগ করে দিয়েছে।
🎀 বিনীত অনুরোধ রইল আমার জীবনে গল্পটি পড়ার জন্য।
💝💝আমার জীবনের গল্প💝💝
1️⃣যৌথ পরিবারের সাথে কাটানো শৈশব-
📌 পরিবারের বড় ছেলে তাই আদর ভালোবাসা কমতি ছিল না। আমরা দুই ভাই এক বোন আমি বড় ছেলে হওয়ায় আদর একটু বেশি পেয়েছি। আমার বাবা-চাচা ছিলেন ৫ ভাই। আমার বাবা ছিলেন বড়। ৩ ফুফুদের আমার প্রতি কেয়ার মনে রাখার মত ছিল। দাদা-দাদি আমাকে ভীষন আদর ভালাবাসা দিয়েছে। আমার মায়ের ভালোবাসা ছিল আমার দুনিয়ার জান্নাত।
2️⃣স্কুল জীবন -
📌যৌথ পরিবারের আমি- সবার কেয়ার আমার দিকে একটু বেশিই ছিল। তাই পড়াশোনায় আমি খুব ভালোই ছিলাম। স্কুল জীবনে রাত জেগে পড়াশোনা। আবার ভোর রাতে উঠে পড়াশোনা করেছি। পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করতে হবে আমি সবসময় ভাবতাম। পরিবারের সবার আদর ভালোবাসা পেলেও বাবাকে কাছে পাইনি। বাবা সৌদি আরব থাকতেন মনে আছে আমার স্কুল জীবনে একবার ৬ মাসের জন্য দেশে এসেছিল। তখন হয়তো ক্লাস সিক্স সেভেন পড়তাম। এস,এস,সি পাশ করে ভর্তি হই গাজীপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট কম্পিউটার ইন্জিনিয়ারিং সাবজেক্ট নিয়ে। শুরু হলো জীবনের নতুন অধ্যায়---😥😥😥
3️⃣কঠিন বাস্তবতা-
📌বাবা সৌদি আরব থাকতেন। ২০০৪-০৫ সালের কথা হঠাৎ বাবা আমাদের সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। সবাই বলতো তিনি আর দেশে আসবেনা। এমনও মনে হতো তিনি কি বেচে আছে😥😥??
📌আমার দুঃখি মা💝 আমরা তিন ভাই বোন এখন কোথায় যাবো? কে আমাদের দেখবে😥?? চাচারা এখন তাদের ফ্যামিলি নিয়ে ব্যস্ত। দাদা-দাদী, ফুফুরা সবাই স্তব্ধ 😰। সবার পরামর্শে, আমাকে নিয়ে গেলে আমার এক চাচা তিনি গাজীপুরে ফ্যামিলি নিয়ে থাকতেন। আমার একটা বোন ওকে নিয়ে গেলে আরেক চাচা তিনি সাভারে থাকতেন। আমার দুঃখী মা😥 আর ছোট ভাই গ্রামে থাকতেন। মা সংসারের সব কাজ করত সবার মন রক্ষা করে চলতে হতো। কারন উপায় যে নাই😥😥😥.....। ছোট ভাই বয়স কত আর ১৬-১৭ হবে তখন। দাদার সাথে জমিতে কাজ করা, দাদার গরু পালন দেখাশোনা করতো। আমরা অসহায়, দুর্বল সবার কথা ব্যবহার এমননি ছিল। কারন, তখন বাবা নেই আমাদের পাশে😭😭।
📌.....সবার মন রক্ষা করে চলতে হতো। ভিতরে অনেক কথা বলতে চাইলে বলতে পারতাম না....। দুঃখী মা😥 তিন ভাই বোন চোখের পানি দিয়ে দুঃখ-কষ্ট পুষতাম। বছরে দুই ঈদে আমাদের দেখা হতো একসাথে😭😭😭।
📌আমি চাচার পরিবারে সাথে গাজীপুর থাকতাম। চাচার দুই মেয়েকে পড়াশোনা-স্কুলে নিয়ে যেতাম আবার নিয়ে আসতাম। আর চাচার সংসারের বাজার করা, সব কাজ করা। মুখ বুঝে সব সয্য করে😥 মন না চাইলেও করতে হতো😥। একটাই জিদ বা স্বপ্ন ছিল আমাকে ৪ বছরের ডিপ্লোমা ইন কম্পিউটার ইন্জিনিয়ারিং শেষ করতেই হবে। এজন্য যা করা প্রয়োজন আমি করতাম। কলেজে যেতে আমাকে ১০ টাকা দেওয়া হতো। যে দিন ক্ষুদার যন্তনায় ২ টাকা দিয়ে ১ টা সিঙ্গারা খেতাম সেদিন ৬ কি.মি হেটে কলেজ থেকে বাসায় আসতে হতো😥। আমার কিছু বন্ধু ছিলো আমাকে আর্থিকভাবে অনেক সহযোগিতা করেছে। তদের প্রতি ভালোবাসা অফুরন্ত💝। শত প্রতিকুলতার মাঝে আমি ডিপ্লোমা কমপ্লিট করলাম। তারপর চলে এলাম গ্রামে........
4️⃣জীবন যুদ্ধে হার নামানা আমি-
📌সবার থেকে ঋন করে ছোট ভাইকে পাঠিয়ে দিলাম দুবাইতে। নিখোঁজ বাবা ৫ বছর পর শুন্য হাতে ফিরে এলো দেশে🤨। আমি গ্রামে এসে শুরু করলাম টিউশনি। আমাদের গ্রাম পাশের গ্রাম সব মিলিয়ে ৩২ জন স্টুডেন্ট ছিল আমার। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ৬ ব্যাচ করে দীর্ঘ ৩ বৎসর টিউশনি করি। বি,এস,সি ইন্জিনিয়ারিং এ ভর্তি হয়েছিলাম টাকার অভাবে আর continue.. করতে পারিনি😥।
বাবা দেশে এলেও আর্থিক ভাবে আমাদের পাশে দাড়াতে পারেনি। আমার টিউশনির টাকা দিয়ে সংসার চলতো। আর ছোট ভাই দুবাই থেকে যে টাকা পাঠাতো তা দিয়ে আদরের ছোট বোনকে বিয়ের খরচ, থাকার মত একটা ভালো ঘর ছিলনা আমাদের😥। দাদার পুরনো ঘরটা মেরামত করে কোন মতো স্থান হলো। আর্থিক ভাবে এমন অভাব ছিল একবেলা খেলে আরেক বেলা ভাতের জন্য চোখের পানি ঝরতো😥😥...।
5️⃣কর্ম জীবনে আমার-
📌টিউশনি করে আর্থিক ভাবে খুব কষ্ট হচ্ছিল। তাই, আর একটু ভালো থাকার জন্য চলে গেলাম ঢাকা। প্রিয় বন্ধু জুয়েলের সুবাদে, কাজ শুরু করলাম উওরায় রাজলক্ষ্মী কমপ্লেক্স মোবাইল মার্কেটে। এখানে বিভিন্ন কোম্পানিতে কাজ করলাম দীর্ঘ ৩ বৎসর। মোটামুটি ভালোই চলছিল দিনগুলি😍। চাকুরী করতাম এর মধ্যে ২০১৫ সালে বিবাহিত জীবন শুরু করি।
6️⃣প্রবাস জীবনের পাড়ি-
📌বিয়ে করার কিছুদিন পড়ে চাকুরীটা ছেড়ে দেই। অর্থনৈতিক মুক্তির আশায় স্বপ্ন দেখি প্রবাস জীবনের। বেকার থাকার ১ বৎসর অপেক্ষার পর মালয়েশিয়া যাওয়া কনফার্ম হয়। এদিকে আমার স্ত্রী হসপিটালে আমাদের আদরের সন্তান আরাফ জন্ম নেয়। ২০১৬ সালে ১৫ই আগষ্ট জন্ম নেয় আমার সন্তান। আমি হসপিটালে ফোন আসে আমাকে ২২ই আগষ্ট মালয়েশিয়া চলে যেতে হবে।
একদিকে আমার স্ত্রী সন্তান হসপিটালে আরেক দিকে আমাকে মালয়েশিয়া যেতে হবে😧কঠিন বাস্তবতা, আমি একা..😧। ৩ লক্ষ টাকা মেনেজ করতে হবে মালয়েশিয়া যেতে হলে। মায়ের স্বর্ন স্ত্রী স্বর্ন বন্ধক রেখে আর কিছু টাকা ঋন নিয়ে টাকা ব্যবস্তা করি😨😨। ২১ তারিখে স্ত্রী সন্তানকে হসপিটাল থেকে বাড়ীতে রেখে ২২ তারিখ সকালে মালয়েশিয়া উদ্দেশে রওনা দেই...😥😥। মায়ের কান্না স্ত্রী কান্না আমি এখনো ভুলতে পারিনা😭😭।
📌৬ বৎসর হয়ে গেলো এখনো দেশে যেতে পারিনি😭। আমার ৮ দিনের রেখে আসা ছেলাটা বুকে জরিয়ে আদর করতে পারিনা...😭😭😭। এই বিষয়টা আমাকে ভীষণ যন্ত্রণা দেয়..😥😥। আমি আমার মায়ের হাসি মুখটা দেখতে চাই..😥আমার সন্তানকে বুকে জরিয়ে আদর করতে চাই.........😥😥। প্লিজ হেল্প🙏🙏🙏।
7️⃣প্রবাস জীবনের সাথে যুদ্ধ --
📌 আমি ৩ লক্ষ টাকা ঋন করে প্রবাসে আসি। ঋনের চাপ মাথায় নিয়ে কাজ করেছি। আমি ফেরদৌস ভাতের বাটি হাতে নিয়ে কাজে যেতে হবে কখন কল্পনাও করিনি..😧। বেশি বেতনে আশায় কয়েকটা কাজ পরিবর্তন করি। এমন কাজ করেছি সকাল ৭ টা থেকে রাত ১১ টা পর্যন্ত ১৬ ঘন্টা কাজ করতে হয়েছে। দীর্ঘ ৩ বছরে সব ঋন শেষ করে কিছু টাকা সঞ্চয় করি।
8️⃣বাস্তবতা বড়ই কঠিন---
📌কিছুদিন পর আমার এক কাছের মানুষ আমাকে প্রস্তাব তার দোকানে কাজ করার জন্য। আমিও কষ্টের কাজ ছেড়ে দিয়ে চলে আসি....। ১ বৎসর ভালোই চলছিল তার দোকানে। তারপর আমাকে প্রস্থাব দেয় আমার কাছে টাকা থাকলে সে দোকান আমাকে দিয়ে দিবে। আমি সব কিছু না বুঝে আমার জমানো টাকা আর কিছু টাকা ঋন করে ৮ লক্ষ টাকা দোকানে ইনভেস্ট করি...।
📌৬ মাস পরে শুরু হয় করোনা পেন্ডামিক। দোকান চালাতে আমার অসম্ভব হয়ে পরে। দোকান বন্ধ হয়ে যায়...😭। আমি দিশেহারা কি করবো...😭। আমার নামে দোকান লিখে দেওয়ায় কথা ছিল- তাও দেইনি...😧😧। তার নামে দোকান সে বিক্রি করে দিয়ে সব টাকা সে নিয়ে যায়। আমাকে টাকা না দিয়ে জোরপূর্বক দোকান থেকে বের করে দেয়....😥😥।
📌আমার চারিদিক অন্ধকার ,কেউ নেই আমার পাশে। আমি বেচে থাকবো নাকি আত্মহত্যা করবো কিছুই বুঝতে পারছি না...😭😭😭। স্বরন হলো আল্লাহর কথা, যে "আল্লাহ সকল ক্ষমতার মালিক"। "আল্লাহ যা করেন বান্দার ভালোর জন্য করেন"। তাই সময় দিতে লাগলাম ৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়া, রাত জেগে কেদে কেদে আল্লাহ কে ডাকা...😥😥।
📌এর মধ্যে যাদের আমি আপন আর কাছের মানুষ মনে করতাম তারা সবাই দুরে সরে গেছে.... 😭😭। আপন মানুষগুলো ভুল বুঝতে শুরু করলো আর দুরে সরে গেলো...😥। এখন আমি আর আমার আল্লাহ ছাড়া কেউ নেই আমার পাশে....এক আল্লাহ💝🤲🤲🤲। যতই রাত জেগে আল্লাহ কে ডাকি ততই আমি সব ভুলে শান্তি খুজে পাই।
📌করোনা সবকিছু বন্ধ কোন কাজ ছিল না আমার..😧। অনেকের কাছে চেয়ে চেয়ে আমি খেয়েছি..😭😭
আল্লাহর উপর দৃঢ় ভরসা ছিল...🤲🤲। দীর্ঘ ৮ মাস পর একটা কাজ পাই। কাজ করি আর ৫ ওয়াক্ত নামাজ পরি, তাহাজ্জুদ নামাজ পরে আল্লাহ কে ডাকতাম। বলতাম আল্লাহ আমাকে ভালো কিছু, সঠিক কিছুর সন্ধান দেও....🤲🤲। টাকা হারিয়েছি,তার বদলতে আল্লাহ পেয়েছি.🥰। আমার জীবনে অনেক বড় পাওয়া।
9️⃣জীবনের প্রাপ্তি--
📌কিছুদিন মধ্যে পেয়ে গেলাম "নিজের বলার মতো একটা গল্প ফাউন্ডেশনের " খুজ। ফেসবুকে স্যারে একটা ভিডিও দেখলাম- স্যার বলছেন, প্রবাসীরা হচ্ছে বাংলাদেশের অক্সিজেন। প্রচন্ড ভালো লাগলো কথাটা -দীর্ঘ একটা নিশ্বাস নিলাম- যেন ভিতরের সব কষ্ট-যন্তনা আর অস্থিরতা বের হয়ে আসলো। আমি বুঝতে পারলাম- আল্লাহ রহমত স্বরূপ আমার জন্য কিছু পাঠিয়েছে....🥰 🤲🤲।
📌সেইদিনই রেজিষ্ট্রেশন করলাম, আমাদের জেলা মেসেঞ্জার গ্রুপে যুক্ত হলাম। মনে আছে আমার, ২ দিনে স্যারের ৩০টি ভিডিও সেশন দেখে ফেললাম। আর প্রতিদিন রাতে সেশন চর্চা ক্লাস যুক্ত থাকলাম। দেখলাম, এখানে, কিছু ভালো মানুষ বিশ্বস্ত মানুষ.... 💝💝💝।
📌যতই দেখছি আর ফাউন্ডেশনে সময় দিচ্ছি ততই সব ভুলে ভালো লাগছে আমার। সেই ভালো লাগা থেকে ভালোবাসা....নতুন এক স্বপ্ন আকাঁ 💝💝💝।
📌একটাই প্রতিজ্ঞা, লেগে থাকবো সফলতা আসবেই।
ভালো থাকবেন সবাই। দোয়া রইল অফুরন্ত.. 💝💝।
📌ভুল এুটি হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। আপনাদের ভালোবাসায় বেচে থাকতে চাই✔️।
,,, সবার প্রতি চির কৃতজ্ঞতা, যারা এতো টা সময় নিয়ে আমার গল্পটা পড়লেন। আমার বিশ্বাস সবাই আমার পাশে থাকবেন৷ আমি এগিয়ে যেতে চাই অনেক দূর। সবাইকে আমার পাশে চাই৷ 🤲🤲 সবাই দোয়া করবেন আমার জন্য।
📌স্ট্যাটাস অফ দ্যা ডে ৮১৬
তারিখ ০৮-০৬-২০২২ইং
🌷ফেরদৌস আহমেদ
🏵️আজীবন সদস্য নিজের বলার মতো একটা গল্প
🌵ব্যাচ নাম্বার ১৭,
🌳রেজিস্ট্রেশন নং ৮৬৬৭৭
🌻উপজেলা সিরাজদিখান
🌴জেলা মুন্সিগঞ্জ
🌱বর্তমান মালয়েশিয়া
🌺 একজন ভালো মানুষ এবং সফল উদ্দোক্তা হতে চাই।