এই প্লাটফর্ম আমাকে কাজ করার এতটা ধৈর্য, পরিশ্রমী হওয়ার শিক্ষা দিয়েছে
আসসালামু আলাইকুম সবাইকে।
আজ আমাদের প্রিয় প্ল্যাটফর্মটির 100K অর্থাৎ ১০০,০০০ জন রেজিস্ট্রার্ড মেম্বার পূর্ণ হলো। প্রান ঢালা অভিনন্দন তোমায় প্রিয় প্ল্যাটফর্ম।
আরো অভিনন্দন জানাচ্ছি প্রিয় মেন্টর, লাখো তরুণ-তরুণীদের আইডল, শতাব্দীর সেরা কিংবদন্তী জনাব ইকবাল বাহার জাহিদ স্যারকে। যিনি লাখো উদ্যোক্তাদের উদ্যোক্তা, পরামর্শদাতা। যার ছায়াতলে প্রতিনিয়ত জন্ম নিচ্ছে শত শত উদ্যোক্তা। স্যালুট জানাই আপনাকে প্রিয় মেন্টর এত সুন্দর একটা প্ল্যাটফর্ম আমাদের দিয়েছেন।
২০১৮ সালের ১ জানুয়ারী ৬৪ টি জেলার ১৬৪ জন তরুনদের নিয়ে যাত্রা শুরু হয় আমাদের " নিজের বলার মত একটা গল্প" ফাউন্ডেশনের। বর্তমানে এখানে যুক্ত আছেন ৩ লক্ষাধিক তরুন- তরুনী। বাংলাদেশের ৬৪ জেলার ৫ লক্ষাধিক তরুন- তরুীদের বিশাল নেটওয়ার্ক তৈরি করেছে আমাদের প্ল্যাটফর্ম, যার মধ্যে রয়েছে ১ লক্ষাধিক নারী।
এই প্ল্যাটফর্ম টি কেবল আমাদের দেশেই সীমাবদ্ধ নয়। বাংলাদেশের সীমানা পেরিয়ে বিশ্বের ৫৪ টি রাষ্ট্রের অবস্থানরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা ও যুক্ত আছেন প্রিয় প্ল্যাটফর্মে। এত অল্প সময়ে এত সুন্দর, একতাবদ্ধ, শৃঙ্খলিত একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা চারটি কথা নয়। এই কঠিন কাজটি সাধন করেছেন আমাদের প্রিয় মেন্টর।
বর্তমানে আমাদের ফাউন্ডশনের উদ্যোক্তা আছেন ৬০,০০০ এর অধিক। যার মধ্যে নারী উদ্যোক্তার সংখ্যা ৫০০০ এর বেশি।
৯০ দিন ধরে টানা সেশন ক্লাস, পার্টনার পাবার সুযোগ, ব্যাবসা শেখা, ব্যাবসা করা, কেনাবেচার সুযোগ, ভলান্টিয়ারিং, সামাজিক কাজ এবং ভালো মানুষিচর্চা সব একসাথে একই প্ল্যাটফর্মে এরকম সুযোগ আমাদের দেশে কোথাও নেই।
যে কোন তরুন-তরুনী এখানে পেয়ে যাবে একজন উদ্যোক্তা হওয়ার সকল আদ্যোপান্ত। কারন এ প্ল্যাটফর্ম একজন উদ্যোক্তাকে দিয়ে থাকে ১৬ টি স্কিল ডেভলাপমেন্ট যা একেবারে বিনামুল্যে। যা একজন তরুন কিংবা তরুনীর উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য অত্যন্ত জরুরি। #নিজের_বলার_মতো_একটা_গল্প_ফাউন্ডেশন কে তাই তো বলা হয়ে থাকে উদ্যোক্তা তৈরির কারখানা।
✅আমার যুক্ত হওয়াঃ
খুব স্বল্প পুঁজি নিয়ে কোনভাবে এগিয়ে চলছিলো আমার বিজনেস। কখনো হতাশা, কখনো অন্যের সমালোচনা, পারিবারিক প্রতিবন্ধকতার ভেতর দিয়ে এগিয়ে চলছিলাম বিজনেসটা নিয়ে। কখনো কখনো এমন মনে হতো আমি মনে হয় পারবোনা টিকে থাকতে। ফেসবুকের কল্যানে হঠাৎ কথা হলো আমার স্কুল বন্ধুর সাথে, তার মাধ্যমে এ প্ল্যাটফর্ম সম্পর্কে জানতে পারলাম। জনাব ইকবার বাহার জাহিদ স্যার সম্পর্কে জানতে পারলাম। ইউটিউবে স্যারের ভিডিও সেশন গুলো দেখলাম। রেজিস্ট্রেশন করে ফেললাম ১৭ তম ব্যাচে।
✅ফাউন্ডেশন থেকে আমার প্রাপ্তিঃ
ফাউন্ডেশন থেকে আমার প্রাপ্তি আমি বর্ণনা করে বুঝাতে পারবোনা। কারন এখান থেকে আমি প্রতিনিয়ত পেয়েই যাচ্ছি। প্রথমেই আমি যেটা পেয়েছি সেটা হলো একজন ভালো, মানবিক মানুষ হওয়ার তাগিদ। পেয়েছি প্রতিদিনের মুল্যবান সেশন চর্চা যার ফলে বেড়েছে আমার নিজস্ব পরিচিতি, আমার উদ্যোগের পরিচিতি এবং প্রতিনিয়ত সুযোগ পাচ্ছি আমার পন্যের ব্র্যান্ডিং করার চমৎকার সুযোগ। পেয়েছি অতন্দ্র গাজীপুর জেলার প্রিয় ভাইবোনের পরিবার সহ অন্যান্য জেলার ভাইবোনদের সাথে পরিচয়ের বিশাল সুযোগ। এখানে যুক্ত না হলে এ সুযোগ গুলো আমি মিস করতাম। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যেটা পেয়েছি সেটা হলো (৬০০,০০০) ছয় লক্ষাধিক ক্রেতা বিক্রেতার সমন্বয়ে গঠিত বিশাল মার্কেটপ্লেস।
✅আমার উদ্যোক্তা হওয়ার গল্পঃ
বর্তমানে আমার মূল পেশা টেইলরিং। এটার পেছনের গল্প অনেক লম্বা। তবুও ছোট করে বলি। আমি এইচ এস সির পর বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ থেকে ইকোনমিক্স এ এম এস এস করেছি। পারিবারিক প্রতিবন্ধকতার কারনে চাকরি করা হয়ে ওঠেনি। আমার দ্বারা জীবনে কিছু হবেনা এটাই মেনে নিয়েছিলাম। এবং নিজের ভেতরে ধুকরে ধুকরে মরেছি নিজের কর্মহীনতাকে নিয়ে। নিজের ভেতরে অনুভব করেছি নিজের বেকারত্ব কে। যার ফলে নিজের অত্যন্ত জরুরি জিনিসের চাহিদা পরিবারকে জানাতে লজ্জাবোধ করতাম।
একবার আমার বোনের বিয়েতে পাওয়া একটা জামা দর্জির ঘরে পরেছিলো প্রায় ৬ মাস। শুধু মাত্র সামান্য কিছু টাকার জন্য আনতে পারিনি। কারো কাছে চাইতেও পারিনি। মনে মনে ভাবতাম অন্তত সেলাই কাজটাও যদি পারতাম!!
এই বিষয়টা আমাকে খুব কষ্ট দিত, আর বার বার মনে করিয়ে দিত আমার অক্ষমতাকে।
অনেক বাধা নিষেধ পেরিয়ে শুরু করি টিউশনি। হঠাৎ এজদিন আমার ছেলে স্কুল থেকে একটা লিফলেট এনে আমায় দিল যেখানে লেখা ছিলো "সেলাই প্রশিক্ষণ কর্মশালা"। তিন মাসে আমি সেলাইয়ের বেসিক সব আয়ত্ব করলাম। এবং ৫ বছরে আমি সেলাইয়ে মোটামোটি দক্ষ হলাম। তবে এই পাঁচ বছরের ভেতরে অতিক্রম করেছি অসহনীয় প্রতিবন্ধকতা। জীবনের বাস্তবতা আমাকে শিক্ষা দিয়েছে একজন নারীর অার্থিক স্বাবলম্বিতা কতটা গুরুত্বপূর্ণ।
✅বর্তমানে আমার উদ্যোগঃ
আমার মূল পেশা যেহেতু টেইলরিং, সেহেতু অনলাইনে ও অফলাইনে আমি টেইলরিং সেবা দিয়ে থাকি। আমি তৈরি করে থাকি মেয়েদের কাস্টমাইজ করা সব ধরনের ডিজাইনার পোষাক, বেবিদের পার্টিড্রেস।
তাছাড়া আমার যে প্রডাক্ট টি সবচেয়ে বেশি বর্তমানে রানিং আছে ছেলেদের হ্যান্ড পেইন্টের পাঞ্জাবি। যেটা বাংলাদেশে বিভিন্ন জেলায় পরিচিতি পেয়েছে। তৈরি করে থাকি কাস্টমাইজড করা হ্যান্ডপেইন্টের শাড়ি, বেবি ড্রেস, কুর্তি। বিক্রি করে থাকি পাইকারি ও খুচরা।
✅আমি নিজের বলার মত একটা গল্প ফাউন্ডেশনের আজীবন গর্বিত সদস্য। আমি সর্বদা কাজ করে যেতে চাই ফাউন্ডেশনের কল্যানে। প্রতিদিন সেশন চর্চা ক্লাসে যুক্ত হয়ে যে শিক্ষা অর্জন করেছি সেটা নিজের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে কাজে লাগানোই হলো আমার জীবনের মুল লক্ষ্য। "চাকরি করবোনা চাকরি দিবো" এই স্লোগানকে বাস্তব জীবনে প্রতিফলন ঘটাবো। এই লক্ষে কাজ ও করে যাচ্ছি। বর্তমানে আমার উদ্যোগের দ্বারা ২ জন নারীর কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছে।
আমি আজ কৃতজ্ঞ এই প্লাটফর্ম আমাকে কাজ করার এতটা ধৈর্য, পরিশ্রমী হওয়ার শিক্ষা দিয়েছে। নিজেকে নতুন ভাবে আবিষ্কার করার সুযোগ করে দিয়েছে।
🌹100K রেজিস্ট্রার মেম্বার উৎযাপন উপলক্ষে ধন্যবাদ জানাচ্ছি এফাউন্ডেশনের সকল দ্বায়িত্বশীল কোর ভলেন্টিয়ার, মডারেটর, জেলাও উপজেলা এম্বাসেডর, কান্ট্রি এম্বাসেডর, ক্যাম্পাস এম্বাসেডরদের প্রতি। যাদের অক্লান্ত পরিশ্রম ও দ্বায়িত্বশীলতার জন্য আজ আমদের ফাউন্ডেশন দেশ দেশান্তরে পরিচিতি পেয়েছে।
আসুন সকলে মিলে আরো তরুন- তরুনদের অবগত করি ফাউন্ডেশন সম্পর্কে। যেমনটা আমি করে থাকি, যেখানেই যাই সেখানেই সুযেগ পেলে তুলে ধরার চেষ্টা করি আমার প্রিয় প্ল্যাটফর্মকে। এভাবেই একদিন বিশ্বের দরবারে পোক্ত জায়গা করে নিবে আমাদের সবার প্রিয় " নিজের বলার মতো একটা গল্প" ফাউন্ডেশন।
📌 স্ট্যাটাস অফ দ্যা ডে ৮১৬
তারিখ ০৮-০৬-২০২২
ফারজানা ইসলাম জেনী
ওনার অফ 3'S Tailor Shop
ব্যাচ নং 1️⃣7️⃣
রেজিষ্ট্রেশন নং 8️⃣7️⃣2️⃣7️⃣3️⃣
নিজ জেলাঃ গাজীপুর
উপজেলাঃ কাপাসিয়া
আমার বিজনেস পেজ লিংকঃ https://www.facebook.com/3S-Tailor-Shop-1009205354452091/
আশা করছি সবাই লাইক, কমেন্টস করে পাশে থাকবেন সবসময়।