একটু দুঃখ লিখি
একটু দুঃখ লিখি😢
জেদী, একরোখা মেয়ের গল্প না সত্যি। সে অতিরিক্ত মাত্রায় জেদী ছিল বলেই তার একটা জায়গা হয়েছে।
সময় ২০১৭ সাল।
এই সাল টা তার জন্য খুব সংকটময় সাল ছিল। একে তো পড়াশোনা শেষ তারপর আবার সরকারি ব্যাংকের চাকরি ছেড়ে ব্যবসায়ীর খাতা নাম লিখিয়েছে।
মানে কি একটা অবস্থা। একে মেয়ে আবার নাকি ব্যবসায়ী। তাও আবার আইটি ব্যবসা।
বলছি কিন্তু আমার গল্প....
মানুষ জামা কাপড় বেচেই কুল পায় না সে আবার নাকি সফটওয়্যার বেচবে। শুধু কি বেচা নাকি এ আবার "সাইবার সিকিউরিটি"
সেই সময়ে সাইবার সিকিউরিটি মানুষ বুঝত না। মানুষ সিকিউরিটি শুনলেই বুঝত, দারোয়ানের চাকরি😄😄😄 কি একটা অবস্থা🤦♀️
যাই হউক, ২০১৭ তার জীবনের সবচেয়ে খারাপ আর দূর্যোগপূর্ণ সাল ছিল। তখন জমানো বলতে কিছুই ছিল না।
নিজের টাকায় জমানো না কামানো ১টা গলার চেইন, ১জোড়া কানের দুল আর ১টা আংটি। সব মিলে দেড় ভরি হবে হয়তো। আর ঘরে ছিল, ফ্রিজ, আলমারি, খাট, ২টা ল্যাপটপ ও ১টা পিসি।
আমি ব্যবসায়ে আসার পর আমাকে দামী ফ্ল্যাট ছেড়ে ধানমন্ডি ছেড়ে এসে থাকতে হইছে রামপুরা উলনে। মাত্র ৮ হাজার টাকার একটা ভাড়া বাসায়।
এমন সময় ছিল তখন আমার টানা ৮মাস আমার কোন কাজ ছিল না। আমি নতুন। আমার জায়গা নেই। সব বড় বড় মাথা ওয়ালা মানুষ। সেখানে আমি তুচ্ছ।
আবার তখন আমার এমন অবস্থা ও ছিল না যে আমি কোন ইউনিভার্সিটি বা অন্য কোন ফার্মে চাকুরী নেবো। তাহলে তো আমার ব্যবসায়ী হওয়ার স্বপ্ন মিথ্যে হয়ে যাবে।
যাই হউক, মাটি কামড়ে পরে ছিলাম। হাতে টাকা নেই। ঘরে খাওয়ার নেই। তবুও রামপুরা থেকে মাইটিভির পাশ দিয়ে হেটে হেটে গুলশান দিয়ে তেজগাঁও ফার্মগেট দিয়ে চলে যেতাম আগারগাঁও আইসিটি তে। মাঝেমধ্যে মাইটিভির সাংবাদিক হাসান জাকির ভাইয়া দেখলে গাড়িতে তুলে নিত।
পরের মাসের ঘর ভাড়া দিতে হবে। হাতে টাকা নেই৷ কিন্তু গলায় কানে হাতে গহনা আছে৷ সব বিক্রি করে দিলাম। একটা সময় আমার ঘরের ফ্রিজ পর্যন্ত বিক্রি করতে হইছে।
এমন কষ্টের দিন গুলা আমি কারো সাথে শেয়ার করি নাই। আজ হঠাৎ ই কেন যেন লিখতে মন চাইল।
তারপর একে একে ৮ মাস কাটতে লাগলো। হঠাৎ ই স্বপ্নের দেখা। আমার পাশে দাড়ালেন আইসিটির সাইবার সিকিউরিটি এর হেড পার্থ প্রতিম স্যার, তারেক এম বরকতুল্লাহ স্যার, নাসের ভাই, শান্তা আপু, শমী আপা সহ আরো অনেকে।
তখন বারবার মনে হচ্ছিল, আমার ৮মাসের পরিশ্রম স্বার্থক আলহামদুলিল্লাহ। আলহামদুলিল্লাহ।
তার পর পর ই ইউনিভার্সিটি তে ও পার্ট টাইম লেকচারার এর জব অফার পেয়ে গেলাম। জয়েন ও করে ফেললাম। আলহামদুলিল্লাহ এখনো আছি।
বি.দ্র. আমি কিন্তু হুট করেই ব্যবসায় আসিনি। আমিও একটা প্রাইভেট ফার্মে চাকরি করতাম যখন স্টুডেন্ট ছিলাম। আমার গভ. জব হওয়ার পর আমি চাকরি ছেড়ে দেই কিন্তু আমার ত্যাগ আর ধৈর্য দেখছিলেন আমার আগের ফার্মের এমডি। আলহামদুলিল্লাহ আমি আর স্যার এখন ব্যবসায়ীক পার্টনার।
সকল কথার মূল কথা হলো, আমি কন্যা। আমি নারী। আমি স্ত্রী। আমি মা। আমি পারলে আপনি কেন পারবেন না?? আমি যদি খেয়ে না খেয়ে কষ্ট করে একটা প্রতিষ্ঠান দাঁড় করিয়ে কয়জনের কর্মসংস্থান করে দিতে পারি তবে আপনি কেন না? আমি বাসা, নিজের অফিস সামলে যদি ইউনিভার্সিটিতে ও পড়াতে পারি তবে আপনি কেন না??
এখন একটা সময়। ১দিন ভাবছেন তো ১০ দিন পিছিয়ে যাচ্ছেন। কোন ভাবনা নয়। যা পারেন, যা মন চায় সব আজ থেকে এখন থেকে শুরু করে দেন।
সাপোর্ট নাই। ভুল কথা। আপনার সাপোর্ট আপনি নিজে। নিজে কে নিজে সাপোর্ট দেন। দেখবেন আপনি কোথায় থেকে কোতগায় চলে গিয়েছেন।
আমি ৮ মাসে সফলতা পাইনি। একটা কাজের সুযোগ পেয়েছিলাম মাত্র। আর সেই সুযোগ টা কে ই এখনো পর্যন্ত বয়ে চলছি। আমি ৮মাসে পেয়ে ছিলাম বলে আপনি যে ৮ মাসে পাবেন তা কিন্তু নয়৷ আপনি ৮ দিনেও পেতে পারেন আবার ৮০ দিনেও আবার ৮ বছরেও।
পুরাটা নির্ভর করবে আপনার কর্মদক্ষতার উপর। সো দেরি না করে আজ থেকে ই শুরু করে দিন।
📌স্ট্যাটাস অফ দ্যা ডে -৮২১
তারিখ ১৭-০৬-২০২২ইং
👱♀️👱♀️নাম: ইসরাত জাহান রেইনি।
কাজ করছি বাংলার ঐতিহ্য ঢাকাই জামদানী শাড়ি, জামদানী পাঞ্জাবি পিস ও জামদানী টুপিস নিয়ে।
জেলা: নরসিংদী
বর্তমান ঠিকানা: উত্তরা ১১নং সেক্টর
✅ব্যাচ: ১৭
✅রেজি: ৯৩১৫২
পেজ: পসার জামদানী
পেজ লিংক: https://www.facebook.com/posarjamdani/
কাস্টমাইজড অর্ডার নেয়া হয়। পাইকারি দামে ও দেয়া হয়।