পাশাপাশি একটা ব্রান্ডের ড্রেসের সো রুম করা।এখানে যেনো আমার মাধ্যমে কিছু লোকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পারি।
"বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম"
"আসসালামুআলাইকুম"
💠সর্বপ্রথম লাখো কোটি শুকরিয়া জ্ঞাপন করছি মহান আল্লাহ পাকের নিকট যিনি আমাকে এতো সুন্দর করে পৃথিবীতে সৃষ্টি করছেন এবং এখনো সুস্থ রেখেছেন।
💠অসংখ্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি আমাদের লাখো লাখো মানুষের প্রান প্রিয় মেন্টর ও শিক্ষক জনাব Iqbal Bahar Zahid স্যারের প্রতি।
যিনি এই শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ শিক্ষক, মোটিভেশনাল স্পিকার,হাজারো পথহারা বেকারদের পথের দিশারী। যার সুন্দর পরিকল্পনা ও অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমে আমরা এত সুন্দর একটা প্ল্যাটফর্ম পেয়েছি।
💠ছোট্ট পরিসর আমি আমার জীবনে গল্প তুলে ধরলাম:
আশাকরি আপনাদের নিজেদের মূল্যবান কিছুটা সময় ব্যয় করে কাছে বা দুরের যে যেখান থেকে আমার লেখাটি পড়ছেন সবাই আমার জীবনের গল্পটি পড়বেন এবং পড়ে আপনাদের মনের অনুভূতি শেয়ার করবেন।
💠আপনাদের সবার প্রতি রইল আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা, ভালোবাসা ও মোবারকবাদ।
নিজেকে অনেক বেশি ধন্য মনে করছি এই প্ল্যাটর্ফমের একজন কর্মী ও আজীবন সদস্য হিসেবে যুক্ত হতে পেরে।
💠শৈশবকাল: সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে আমার জন্ম।না বোঝার আগ পর্যন্ত আমার শৈশব কাল খুব মজায় কেটেছে।আমার বয়স যখন চার বছর তখন আমার মা মারা যান।আমার ছোট বোনের বয়স তখন দুই বছর আর ছোট ভাইয়ের বয়স তখন আট মাস।মাকে নিয়ে খুব একটা কিছু মনে নেই, শুধু মনে আছে মা এ্যম্বুলেন্সে ওঠার আগে আমার কপালে একটা চুমু দিয়েছিলো।এতোটুকু বুঝে ছিলাম মা খুব অসুস্থ। আমি মা না আসা পর্যন্ত সময়টুকু একা একা এদিক ওদিক কাটিয়েছি আর কেউ যেনো না দেখে তাই চুপ চুপ করে আল্লাহর কাছে হাত তুলেছি আর বলেছি,"আল্লাহ তুমি আমার মা কে সুস্থ করে দাও।"আল্লাহ কেনো আমার মাকে ফিরিয়ে দেয়নি এই অভিযোগ করি প্রতিমুহূর্তে। এই কথাটা লিখতে গিয়ে মায়ের কথা মনে পড়ে কান্না চলে আসলো।
💠শিক্ষাজীবন ঃ বিয়ের পর লেখা পড়ায় আর মন বসেনা তারপরও আমি এস এস সি তে সতেরো মার্কস এর জন্য ফার্স্ট ডিভিশন হয়নি।এইচ এস সি তে দ্বিতীয় বিভাগ পাই।এর পর বাচ্চা পেটে নিয়ে শ্বশুর বাড়ি চলে যাই এবং অনার্সে ভর্তি হই।সংসার জীবনের চড়াই উতরাই পার করে অনার্স কম্পলিট করি।এর পর আবার দেশের বাইরে চলে যাই।নানা কারনে আমাকে আবার বাংলাদেশে চলে আসতে হলো এবং আমার রঙ্গীন জীবনের সমাপ্তি ঘটলো।জীবনের কঠিন তম দিন গুলো দেখতে থাকলাম।তখন থেকেই ভাবতে শুরু করলাম আমার কিছু একটা করা দরকার।এরই মধ্যে এবার ছেলের মা হয়ে গেলাম।যাই হোক এভাবে মাস্টার্স ডিগ্রি টাও শেষ করলাম।শেষ ডিগ্রিটাতে আমার অনেক ভালো রেজাল্ট হয়েছিলো আমি মাস্টার্স ফার্স্ট ক্লাস সেকেন্ড হয়েগেলাম।এই ভালো রেজাল্টের পিছনে আমার একটা জেদ কাজ করেছিলো, আমাকে কিছু করতেই হবে।
💠সংসার ও চাকরি জীবনঃ বিধাতার নির্মম পরিহাসে তাকে নানা রকম ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে সব কিছু বাদ দিয়ে একেবারে দেশে চলে আসতে হলো। শুরু হয়ে গেলো আমার জীবনের কঠিনতম অধ্যায় যা কল্পনাও করতে পারিনি।তার সাথে কোন কিছু নিয়েই আর বনিবনা হচ্ছিলনা। কোন কিছু চাইতে গেলেই অসংখ্য তালবাহানা একেবারে অসহ্য হয়ে যেতে থাকলাম।সরকারি চাকরির বয়স ততদিনে চলে গেছে এই কারণে বেসরকারি হাইস্কুলে ঢোকার জন্য নিবন্ধন পরিক্ষা দিলাম এম সি কিউ এবং রিটেন পর্যন্ত টিকে যাওয়ার পর নিয়ম হয়ে গেলো আসন সংখ্যা অনুযায়ী ভাইভাতে পাশ দেওয়া হবে। সে কারণে আমার সাব্জেক্টে কোন আসন খালি না থাকায় আমি বাতিল হয়ে গেলাম। এ নিয়ে অবশ্য অনেক আন্দোলন হয়েছিলো কিন্তু কোন কাজ হয়নি।
এর পর বাড়ির পাশেই কিন্ডারগার্টেন, হাইস্কুল এন্ড কলেজে ঢুকে গেলাম।সেখানে চার বছর শিক্ষকতা পেশায় নিয়োজিত ছিলাম।
এর পর তার কারণে এবং ছেলে মেয়েদের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে পারি জমাই রাজশাহী। ছেলে মেয়ে দুইটা অত্যন্ত মেধাবী হওয়ায় ভালো স্কুলে পড়ার সুবাদে অনেক গুলো বছর কাটালাম সেখানে।এর পর আবার শুরু হয়ে গেলো নানা রকম মানুষিক নির্যাতন একটা পর্যায়ে সে চলে গেলো গ্রামে সংসার দেখাশোনা করার জন্য। আর আমি চলে আসলাম ঢাকায় ছেলে মেয়েদের পড়াশোনার জন্য।চলার পথে এতো এতো বাধার সম্মুখীন হয়ে ও আজ জবাব দিহি করতে হয় আমি জীবনে কিছুই করতে পারিনি।আজ বুঝি সময় কখনো অযুহাত শোনেনা প্রতিটি মানুষকে জীবনে প্রতিষ্ঠিত হওয়া একান্ত দরকার। এই বয়সে এসে আমি আইডেন্টিটি সংকটে ভুগি।আমার একটা আইডেন্টিটি দরকার। এখন পরতে পরতে অনুভব করি আমার সম্মান জনক স্বাধীনতা। মূলত এই জেদ থেকেই আমার উদ্যোক্তা জীবন বেছে নেওয়া।
💠 নিজের বলার মতো একটা গল্প ফাউন্ডেশনে যুক্ত হওয়া ঃ--
একদিন ফেসবুকিং করতে গিয়ে জাহিদ স্যারের একটা ভিডিও চোখে পড়লে অমনি থমকে দাড়ালাম আর ভিডিওটা দেখে এর পর অন্য ভিডিও গুলো খুজে বের করে দেখতে থাকলাম এবং ভাবতে থাকলাম স্যারের দিকনির্দেশনা গুলো ফলো করলে আমি হতাশা থেকে বের হয়ে আসতে পারবো। স্যার কে আমার মুক্তির দূত মনে হতে থাকে।
এর পর ঘাটাঘাটি করতে করতে আমিনুল ভাই নামক এই ফাউন্ডেশনের এক প্রবাসী ভাইয়ের সাথে ম্যাসেঞ্জারে পরিচয় হয়। এবং উনিই আমাকে এই গ্রুপের বিষয়ে সব অবগত করলেন এবং রেজিষ্ট্রেশন এর ব্যবস্থা করে দিলেন।
💠উদ্যোক্তা হয়ে ওঠার গল্প ঃ--- আমি শিক্ষাক্ষেত্রে অনার্স-মাস্টার্স ধারি হলেও চাকরির বাজারে আমার ভাগ্য সুপ্রসন্ন ছিলো না। বার বার ব্যার্থ হয়েছি আর মনোবল হারিয়েছি।
যাইহোক, এর পর স্যারের সেশন গুলো নব্বই দিনে প্রশিক্ষণ নিতে নিতেই নিজেকে উদ্যোক্তা হিসেবে তৈরি করে ফেললাম এবং এখনো আমি শিখছিই।
প্রথমে আমি নিজের বাগানের বিভিন্ন রকম ফল দিয়ে ঘরে নানা রকম আচার তৈরি করে নিজেকে উদ্যোক্তা হিসেবে আত্নপ্রকাশ করলাম।আমার এই ঘরোয়া আচার সব আত্নীয় স্বজনের মধ্যে এতো জনপ্রিয় হয়েগেলো যে আমাকে নাম দিয়ে ফেল্লো 'আচারের রাণী '।এর পর থেকেই আমার পরিচিত গন্ডি বেড়েই যাচ্ছে।
এভাবেই চলতে চলতে এই ফাউন্ডেশনের এক আপুর কাছে ফুড পান্ডার বিজনেস নিয়ে জানলাম এবং তার হাত ধরেই ফুডপান্ডায় তাদের হোম সেফ হিসেবে জয়েন করলাম।এখান থেকেই আমি বিভিন্ন মাধ্যমে খাবারের অর্ডার পেয়ে যাচ্ছি।স্বপ্ন দেখছি এভাবে একদিন লেগে থাকলে আমার সফলতা আসবেই ইনশাআল্লাহ।
💠ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ঃ-- আমি ভবিষ্যতে ফুড সেক্টরে পরিপূর্ণ ভাবে দক্ষ হয়ে একটা রেস্টুরেন্ট করা এবং পাশাপাশি একটা ব্রান্ডের ড্রেসের সো রুম করা।এখানে যেনো আমার মাধ্যমে কিছু লোকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পারি।
💠পরিশেষে আপনাদের সকলকে অনেক অনেক শ্রদ্ধা, ভালোবাসা, কৃঅজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানাচ্ছি আপনারা এতোক্ষণ পর্যন্ত ধৈর্য ধরে আমার লেখাটা মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য।
📌স্ট্যাটাস অফ দ্যা ডে ৮২৪
তারিখ ২৭-০৬-২০২২ইং
**পারভীন আকতার মুন্নী
** ব্যাচঃ-১৩ তম
**রেজিষ্ট্রেশন নং ঃ-৫৩৩০৬
**নিজ জেলা ঃ- গাইবান্ধা
**বর্তমান অবস্থান -- আজিমপুর
**আছি লালবাগ জোন এর সাথে।
**জেলা ঃ--ঢাকা।
**কাজ করছিঃ--সকল প্রকার হোম মেড আচার ও লাঞ্চ আইটেম নিয়ে।