অনেক নিন্দুকের কথাতে কান না দিতে সহায়তা করেছেন এই নিজের বলার মতো একটা গল্প ফাউন্ডেশন।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
আসসালামু আলাইকুম,ওয়ারাহমাতুল্লাহ।
🌺🌺🌺আমার জীবনের গল্প 🌺🌺🌺
সমস্ত প্রশংসা একমাত্র আমাদের সৃষ্টিকর্তা মহান রাব্বুল আলামীনের প্রতি।
দুরুদ ও সালাম বর্শিত হোক আমাদের প্রিয় ও সর্ব শ্রেষ্ঠ নবী হযরত মুহাম্মদ( সাঃ) এর ওপর।
কৃতজ্ঞতা জানাই আমার মা, বাবার প্রতি।
অন্তরের অন্তস্থল থেকে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা প্রকাশ করছি, আমাদের সবার প্রিয় মেন্টর, ভালো মানুষ গড়ার কারিগর লক্ষ লক্ষ তরুন তরুণীর আইডল জনাব, ইকবাল বাহার জাহিদ স্যার এর প্রতি।
যার প্রচেষ্টায় আমরা, 'নিজের বলার মতো একটা গল্প ফাউন্ডেশন "এর মতো একটি পরিবার পেয়েছি।
যেখানে প্রতি দিন তৈরি হচ্ছে নতুন নতুন উদ্যোক্তা,ভালো মানুষ, দক্ষ ও সাহসী একটি সুশীল উদ্যোক্তা সমাজ। যার অনুপ্রেরণায় আজ আমরা খুব সহজেই নিজের পাশাপাশি অন্যদের অনুপ্রেরণা, উৎসাহ উদ্যোক্তা হওয়ার জীবন কাহিনী,আনন্দ -বিনোদন লিপিবদ্ধ করার সাহস পেয়েছি। পেয়েছি লক্ষ লক্ষ ভাই ও আপুদের দোয়া, উৎসাহ,অনুপ্রেরণা ও ভালোবাসা।
সবাই কেমন আছেন???
আলহামদুলিল্লাহ আমি ভালো আছি।
মানুষ যখন বাস্তব জীবনের যাএা শুরু করে তখন থেকেই বাস্তবতা সম্পর্কে আস্তে আস্তে বুঝতে শুরু করে।
আজ আমি আমার এই ছোট্ট বাস্তব জীবনের কিছু কথা বলবো।
🙏সবাইকে আমার গল্পটা পড়ার অনুরোধ করছি। 🙏
প্রতিটা মানুষের জীবনটাই একটা গল্প। প্রতিটা মানুষের জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত জীবনটা একটা গল্পের অধ্যায়।
গল্পের মাঝে থাকে হাসি, কান্না,সুখ, দুঃখ, আনন্দ,বেদনা।সব কিছু নিয়েই মানুষের বাস্তব জীবনের গল্প।
কারোর জন্ম হয় অতি আদরের ধনী পরিবারে সোনার চামচ মুখে নিয়ে, আবার কারো জন্ম হয় অনাদরে রাস্তার ধারে কষ্টের মাঝে।দুটোই জীবন।
আমি নাদিয়া আক্তার। আমরা তিন বোন,১ভাই ছিলাম।বড় বোন, আমি যখন ক্লাস থ্রিতে পড়ি তখন মারা যায়। আমি সবার ছোট।আমার বড় ভাই।
🌺জন্ম স্থান🇧🇩
আমার জন্ম বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলার কলশকাঠী গ্রামে।
ছাত্র জীবনের কিছু কথা ✍️
ছাত্র জীবন মানেই অধ্যবসায়ের জীবন।ভাইয়ের অনেক আশা ছিলো আমাকে অনেক পড়াশুনা করাবে।ছাত্র জীবনের প্রথম ঝড় বড় বোনের মৃত্যু। ২য় ঝড় বাবার এস্ট্রোক। বাবা কাজ ছেড়ে দিলো।ভাই পড়া লেখা বাদ দিয়ে সংসারের হাল ধরে। ৫জনের সংসার ভাইয়ের একার রোজগার।খুব কষ্ট হইত ভাইয়ের কথা ভেবে।আমি যখন ক্লাস নাইনে পড়ি তখন বাড়িতে না বলেই টিউশনি করানো শুরু করি।যার ফলে ক্লাস টেনে বোর্ড পরিক্ষায় মোটা মুটি ভালো রেজাল্ট করি। ইন্টারে ভর্তি ফি অনেক থাকার কারনে মনটা খুব খারাপ হয়ে যায়। মনে হইছিলো আমার পড়া লেখার এটাই মনে হয় ইতি।বড় বোনের টিউশনির টাকা আর আমার টিউশনির টাকা দিয়ে ভর্তি হয়ে গেলাম।
২০১৮তে HSC শেষ করার পড় আর পড়া হলোনা।
কর্ম জীবনের সূচনা,,,,,
HSC শেষে চিন্তা করলাম যে বাবা অসুস্থ। ভাইয়ের একার পক্ষে সম্ভব না সংসার চালানোটা খুব কষ্ট হচ্ছে। আমাকে কিছু একটা করতে হবে। যেই ভাবনা সেই কাজ।মা,বাবা,ভাইয়ের সাথে কথা বল্লাম।তারা রাজি হলেন না।রাজি না থাকা সত্তেও চলে আসলাম বড় মামার ছেলের সাথে গাজীপুর। কথা ছিলো কোম্পানির চাকরি করব,কিন্ত হলো না। বসে থাকি নি ১দিন ও কাজ নিলাম পোশাক কাখানায়।
এভাবে চলতে থাকে।কয়েক মাস যাবার পর জীবনের দ্বিতীয় ধাপে পা দিলাম।বাবা,মায়ের অজান্তে। দীর্ঘ ৫বছর ৩মাস এর সম্পর্ক তার সাথে। পরিবার থেকে মেনে নিলো দুজনকে।চলতে থাকলো দুজনের কর্ম জীবন।আমি আমার বাবা,মায়ের খরচ দিতাম।১বছর দের মাস পরে কনসেভ করি।৩মাস সময়ে তা অজানা কারনে তা হারিয়ে ফেলি।কষ্টে পোষাক কারখানার চাকুরীটা ছেরে দিলাম।
আর সেখান থেকেই ভাবতাম যে কিছু একটা করতে হবে আমাকে। কি করবো? কি নিয়ে করবো? কিভাবে করবো? সেটা ভাবতে ভাবতেই অনেকগুলো দিন কাটিয়ে দিলাম।কোনো কিছু বুজতে পারিনি।
🌺🌺নিজের বলার মতো একটা গল্প ফাউন্ডেশন নিয়ে কিছু কথা ✍️
ইতিমধ্যেই আমার হাজব্যান্ড নিজের বলার মতো একটা গল্প ফাউন্ডেশনের একজন সদস্য হয়ে গেছে। তিনি সেশন চর্চা ক্লাসে যুক্ত হন এবং বিভিন্ন বিষয়ে সেশন নিয়ে বিভিন্ন আলাপ আলোচনা করেন আমি মুগ্ধ হয়ে শুনি।
একদিন স্যারের একটা ভিডিওতে
শুনলাম,,
স্বপ্ন দেখুন, সাহস করুন, লেগে থাকুন, সাফল্য আসবেই।
কথাটি আমাকে অনেক অনুপ্রেরনা ও সাহস যুগিয়েছে।
তারপর আমার হাজব্যান্ডের সহযোগিতায় আমি নিজেও রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করি।
আমরা যেসব পরিবার থেকে বড় হয়েছি সেখানে নারীদেরকে এগিয়ে যাওয়ার বদলে থামিয়ে দেওয়ার চিন্তাই বেশি করা হয়।
সেখানে রোজ নিয়ম করে শুনতে হয় মেয়েদের বাইরে যাওয়া বারন, এটা করা বারণ, ওটা করা বারণ, এটা করবে না, ওভাবে চলবে না, ওটা খাবে না, ওটা দেবে না ইত্যাদি।
আমার বেলায়ও তার ব্যতিক্রম কিছু হয়নি।
বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার মধ্যে নিজেকে একটু এগিয়ে নেওয়ার যাওয়ার জন্য হাজব্যান্ডের সহযোগিতায় শুধুমাত্র ৩০০ টাকার কিছু পুতি কিনে সখের বসে আমি কাজ শুরু করি।
আমার প্রথম সেল ছিল অফলাইন এ মাত্র ১২০ টাকা।
যেহেতু কি করব কি দিয়ে শুরু করলে ভালো হবে বুঝতে পারছিলাম না।
অল্প টাকায় শুরু করার চিন্তাভাবনা করলাম। পুতি দিয়ে বিভিন্ন শো পিস বানাতে শুরু করলাম।
ফাউন্ডেশনের বিভিন্ন পোস্ট, শেসন চর্চা ক্লাস এর বিভিন্ন ভাইয়া-আপুদের পরামর্শ আমার উদ্যোক্তা জীবনে অনেক বেশি ভূমিকা রেখেছে।
আমার সেই অফলাইনে ১২০ টাকা সেল থেকে এখন মাসে ৮থেকে ১০ হাজার টাকা সেল হয়,
আলহামদুলিল্লাহ।
ফাউন্ডেশন আমাকে একজন উদ্যোক্তা হতে সহায়তা করেছে।
এই ফাউন্ডেশন আমাকে চমৎকার কিছু মানুষের সাথে পরিচিত করে তুলেছে, নিজেকে ব্র্যান্ডিং করার সহায়তা প্রদান করেছে।
ফাউন্ডেশন আমাকে নিজের বলার মতো একটি গল্প তৈরি করার জন্য সহযোগিতা করে যাচ্ছে।
সবচেয়ে বড় কথা এই ফাউন্ডেশন আমাকে একজন ভালো মানুষ হওয়ার জন্য প্রতিদিন প্রতিনিয়ত শিক্ষা দিয়ে যাচ্ছে।
এই যে আমি অল্প পরিসরে আপনাদের সামনে কিছু লিখতে পারছি এটার সবটুকু অবদান এই ফাউন্ডেশনের।
আজকে আমার এই উদ্যোক্তা হওয়ার পিছনে আমার হাজবেন্ডের ভূমিকা অপরিসীম, তিনি আমাকে সাহায্য সহযোগিতা করেছেন এবং সাহস যুগিয়েছেন।
অনেক নিন্দুকের কথাতে কান না দিতে সহায়তা করেছেন এই নিজের বলার মতো একটা গল্প ফাউন্ডেশন।
আমি আপনাদের সকলের দোয়া শুভ কামনা,সহযোগীতা আশা করছি।আমি যেন নিজের বলার মতো একটা গল্প ফাউন্ডেশনের, আমাদের প্রিয় মেন্টরের আদর্শ বুকে ধারণ করে একজন ভালো মানুষ হিসেবে, একজন সফল উদ্যোক্তা হিসেবে সকলের সামনে বুক ফুলিয়ে পরিচয় প্রদান করতে পারি।
দেশ ও সমাজের মানুষের জন্য কিছু করতে পারি।
সবশেষে, মহান আল্লাহ তায়ালার প্রতি কৃতজ্ঞতা ও প্রিয় স্যারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে আমি আমার এলোমেলো ও অগোছালো কথাগুলো শেষ করছি,ভুলত্রুটি গুলো নিজ গুনে ক্ষমা করবেন।
নিজেকে পরিবর্তন করার জন্য এই স্লোগানটি যথেষ্ট।
স্বপ্ন দেখুন, সাহস করুন, শুরু করুন এবং লেগে থাকুন, সফলতা আসবেই।
লেখাটি পড়ার জন্য সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ।
📌স্ট্যাটাস অফ দ্যা ডে ৮২৬
তারিখ ২৯-০৬-২০২২ইং
নামঃ নাদিয়া আক্তার
ব্যাচ নং -১৬
রেজিষ্ট্রেশন -৭৭,৩৪৪
নিজ জেলা -বরিশাল
বর্তমান অবস্থান-বাঘের বাজার,গাজীপুর।