স্যারের একটা মোটিভেশনাল বক্তব্য শুনি এবং তা আমাকে আকৃষ্ট করে
*আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমতুল্লাহ,,
(আমার জীবনের গল্প সংক্ষিপ্ত)
*শুরুতেই শুকরিয়া জানাই মহান আল্লাহ তায়ালার দরবারে। যিনি আমাকে ও আপনাকে সুস্বাস্থ্য দান করেছেন।
*কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি প্রিয় মেন্টর জনাব ইকবাল বাহার জাহিদ স্যার এবং নিজের বলার মত একটা গল্প ফাউন্ডেশন এর সকল দায়িত্বশীল আজীবন মেম্বার এর প্রতি।
*আমার লক্ষ্যঃ-
°সবার আগে জীবনে একজন ভালো মানুষ হওয়া°
ভালো মানুষ হইতে যা যা গুণ থাকা লাগে তা আয়ত্ত করা। নিজেকে মডিফাই করা। নিজে নিজে বলা আমি একজন ভালো মানুষ।
প্রত্যেকের জীবনে বলার মত একটা গল্প থাকে, কিন্তু প্রতিটা গল্প বলার মত না,,,,
তাই নিজেকে ভেঙে গড়ে মডিফাই করে নিজের গল্প বলার মত করে তৈরি করে নিতে হয়।
**আমার ছেলেবেলা:*
আমার জন্ম ১৯৯৭ সালের ৪ ই জানুয়ারি চট্রগ্রাম জেলার সীতাকুণ্ড উপজেলাধীন মছজিদ্দা গ্রামে।
একজন সৎ আদর্শবান দিন মজুর পিতার ঘরে আমার জন্ম। আমার পরিবারের দুই ভাই তিন বোনের মধ্যে আমি পরিবারের বড় সন্তান। তাই বুদ্ধি বয়স থেকেই অন্য দশ জনের বাচ্চার মত দুরন্তপনা শৈশব আমার কাটে নি। দিন মজুর পিতার ছা- পোষা পরিবারের ইনকামের রাস্তা নিজেকে বের করতে হয়। কিন্তু আব্বা আম্মার একটাই ইচ্ছা পড়ালেখা করে যেতে হবে। পরিবারের অভাব অনটনের মাঝেই নিজে পড়ালেখা করে যাই এবং অন্য ভাই বোনদের পড়ালেখা চালিয়ে যাওয়ার একপ্রকার আমার দায়িত্বে পড়ে।
তাই পরিবারের তাগিতে, পড়ালেখার খরচ যোগাতে রাস্তা খুজি টাকা ইনকাম করার। অবশেষে ক্লাস এইট নাইনে থাকাকালীন দুই একটা বাচ্চা পড়ানো শুরু করি। এবং তা মাস শেষে মোটামুটি নিজের পরিবারের হালকা পাতলা সাপোর্ট হয়। নিজের অবস্থান ধরে রাখতে খুব দক্ষতার সহিত টিউশানে মনোনিবেশ করি। আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমতে ২০১২ সালে বানিজ্য বিভাগ থেকে এস, এস, সি পরীক্ষায় পাশ করি।
এবং ২০১৪ সালে এইচ এস সি পরিক্ষায় সফলতার সাথে উত্তীর্ণ হয়। কখনো ভাবিনি পড়ালেখা চালিয়ে যাবো। কিন্তু নিজের ভিতর একটা ইচ্ছা ছিল যে কিছু একটা করতে হবে। পড়ালেখা যেভাবেই হোক পড়ালেখা চালিয়ে যেতে হবে।
ইন্টার পাশ করার পর মোটামুটি একটা পরিবার থেকে চাপ আসে যে এইবার চাকরি বাকরি কিছু একটা করি। কিন্তু চাকরি করে পড়াশুনা চালিয়ে যাওয়া চাট্টিখানি কথা না। তাই একটু নড়েচড়ে বসলাম ভাবতে লাগলাম কি করা যায়। মাথায় শুধু টাকা ইনকাম করার চিন্তা আসত। তাই একবন্ধুর পরামর্শে সাহস করে এলাকায় একটা কোচিং সেন্টার খুলে বসি। এটা শুধুমাত্র টাকা ইনকামের জন্য না। অনেকটা ভালোলাগা থেকেই, (পড়াইতে ভালো লাগত)।
এক বছরের মধ্যেই আল্লাহর অশেষ রহমতে নিজের আত্নবিশ্বাস আর কঠোর পরিশ্রমের বিনিময়ে কোচিং এ সফলতার মুখ দেখি। ছাত্র সংখ্যা বাড়তে থাকে দিন দিন।
সেই সাথে নিজের আত্নবিশ্বাস ও।
অবশেষে ২০১৫-১৬ সেশনে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে একটা প্রফেশনাল ইনস্টিটিউট থেকে চার বছর মেয়াদী প্রফেশনাল বি বি এ তে ভর্তি হয় এবং সেই সাথে কোচিং এর সুনাম নিজ এলাকা থেকে অন্য এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে।২০১৭ সালের দিকে বিভিন্ন ক্লাস মিলে (ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ পর্যন্ত) ১০০+ স্টুডেন্ট হয়। এবং তখন থেকে এখনো অবধি কোচিং নিয়েই আছি। বর্তমানে কোচিং টির দুটি শাখা আমি নিজেই পরিচালনা করছি। এবং সেই সাথে নিজের পড়াশুনা BBA major in Accounting সম্পন্ন হলো ২০২০ সালে।
২০১৭-১৮ সালে এ দু বছরের মধ্যে নিজের ছোট দুই বোনকে বিয়ে দেই। তাদের পড়াশুনা এস এস সি পর্যন্ত করাই। বিশাল একটা ফ্যামিলি ক্রাইসিস এর মধ্যে পড়ি। ২০১৯ সালের দিকে করোণার ধাক্কা আমার কোচিং ও বন্ধ রাখতে হয়। বিশাল ডিপ্রেশনে ছিলাম তখন। ছোটখাটো ব্যাবসা করার সিদ্ধান্ত নিলাম, তাতে সফল হলাম না। মূলধনের স্বল্পতার কারণে।
কেন এবং কিভাবে নিজের বলার মত গল্পে যুক্ত হলামঃ
***
ছোটকাল থেকেই স্বপ্ন ছিল নিজের একটা প্রতিষ্ঠান থাকবে। তাই ইউটিউবে বিভিন্ন রকম উদ্যোক্তা দের গল্পগুলো দেখতাম। সে সুবাদে একদিন হঠাৎ ইকবাল বাহার জাহিদ স্যারের একটা মোটিভেশনাল বক্তব্য শুনি এবং তা আমাকে আকৃষ্ট করে। উনি নিজের বলার একটা ফাউন্ডেশন এর কথা সেখানে উল্লেখ করে। তা দেখে আমি ফেসবুকে গল্পের গ্রুপের এড হই এবং উনার পোস্টগুলা দেখি, সেখানে ৯০ দিনের বিনামূল্যে ট্রেনিংয়ের ব্যাপারটা আমার নজর কাড়ে।
সেই সাথে রেজিষ্ট্রেশন করি শওকত ভাই আমাকে হেল্প করে। ঘটনাটি ২০১৯ সালের ২২ ই অক্টোবরের।
উনার ক্লাসগুলো আর ভিডিও গুলো দেখে অনুপ্রাণিত হই এবং নিজের এলাকায় ঈদকে সামনে রেখে একটা ডিপার্টমেন্টাল স্টোর দোকান দিই। আলহামদুলিল্লাহ দোকানের বেশিরভাগই কেনাকাটা গ্রুপের উদ্যোক্তাদের কাছ থেকে করেছি। কাপড় চোপড় এবং জুতা নিয়ে বেশ সাড়া পাই। আলহামদুলিল্লাহ এখনো পর্যন্ত খুব ভালোভাবেই দোকান চনলমান আছে। ভবিষ্যতে আরো বেশ প্রোডাক্ট এড করার কথা ভাবছি।
কি কি শিখলামঃ
* নিজে আত্নবিশ্বাসী হওয়া
* একজন ভালো হিসেবে বেচে থাকার দৃঢ় প্রতিজ্ঞা
* লেগে থাকলেই যে যে কোন কিছু করা সম্ভব।
* সময়কে কাজে লাগানো
* শক্তিশালী নেটওয়ার্কিং
* সদয় আচরণ
* ভলান্টিয়ারিং
* সততা ও কমিটমেন্ট
* কাস্টমার স্যাটিসফাইং
আরো অনেক কিছু যা বলে শেষ করা যাবে না।
আর তাছাড়া ১৬ টি অনলাইন বেসিক স্কিল।
প্রত্যেকের দোয়া ও ভালোবাসার বন্ধনে প্রিয় গ্রুপের মাধ্যমে এগিয়ে যেতে চাই দূর বহুদূর।
ভূলত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।
📌স্ট্যাটাস অফ দ্যা ডে ৮২৯
তারিখ ৩০-০৬-২০২২ইং
মোঃ আব্দুর রহমান
অষ্টম ব্যাচ
রেজিষ্ট্রেশন ঃ ১২৯৯২
উপজেলা ঃ সীতাকুণ্ড
জেলাঃ চট্টগ্রাম
আজীবন সদস্য নিজের বলার মত একটা গল্প ফাউন্ডেশন!