অক্লান্ত পরিশ্রম ও নিরলস প্রচেষ্টার ফসল আজকের এই প্লার্টফর্ম
☘ বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
☘আসসালামুয়ালাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাই
☘আমার জীবনের গল্প ☘
☘সর্ব প্রথম শুকরিয়া আদায় করছি সেই মহান রবের প্রতি যিনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন এবং আশরাফুল মাখলুকাত হিসাবে পৃথিবীতে প্রেরণ করেছেন
☘সালাম ও দরুদ প্রেরন করছি প্রিয় নবী হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) এর প্রতি ।
যাকে সৃষ্টি না করলে মহান আল্লাহ তাআলা কোন কিছুই সৃষ্টি করতেন না
☘শুকরিয়া আদায় করছি আমার মা- বাবার প্রতি, যারা আমাকে জন্ম দিয়ে পৃথিবীর আলো দেখিয়েছেন এবং অনেক কষ্ট ও ত্যাগ স্বীকার করে আমাকে লালন - পালন করছেন ।
☘কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি প্রিয় মেন্টর ইকবাল বাহার জাহিদ স্যারের প্রতি যার নিরলস প্রচেষ্টার ফসল আজকের এই @ নিজের বলার মতো একটা গল্প @ ফাউন্ডেশন । যিনি নিস্বার্থ ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন লাখো লাখো তরুণ তরুণীর ভাগ্য পরিবর্তনের ।
☘আমার পরিচয়☘
আমার জন্ম 30 শে ডিসেম্বর 1982 সালে নোয়াখালী জেলার বতর্মানে সূবর্ণচর উপজেলার, আট নং মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের, চর তোবার আলী গ্রামে । আমরা তিন ভাইয়ের মধ্যে আমি সবার বড় । বাবা মারা গেছেন আর আমার মা গৃহিণী ।
☘আমার শিক্ষা জীবন☘
আমি আমার উপজেলার চারটি প্রাইমারি স্কুল এবং একটি উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়ার মাঝে 1997 সালের দিক চট্টগ্রামের হালিশহর চলে যায় পি এইছ আমিন একাডেমীতে ভর্তি হয়ে SSC পাস করি এবং ডাক্তার ফজলুল হাজেরা ডিগ্রী কলেজ থেকে HSC পাস করে ডিগ্রীতে ভর্তি হই কিন্তু পারিবারিক দায়িত্ব নিতে গিয়ে আর পড়াশোনা হয়নি ।
☘আমার জীবন যুদ্ধ ☘
আমার বাবা জাহাজের ইন্জিনিয়ার ছিল সেই সুবাদে পরিবার সহ হালিশহর, চট্টগ্রামের থাকতাম, হালিশহরে থাকা অবস্থায় 2003 সালে, আমি আর আমার এক ফুফাতো ভাই মিলে বিস্কুটে এজেন্ট নিয়ে মাকের্টিং শুরু করি ( মুলধন ছিল 20,000×2=40,000 ) টাকা এভাবে কিছু মাস যাবার পর ব্যবসা আরো বাড়াতে হবে বলে আমার বাবার থেকে আশি হাজার টাকা নিলাম, আবার পন্য সেল শুরু করি কিন্তু কিভাবে পন্য সেল করতে হয় আমার কোন আইডিয়া তেমন ছিল না, তবুও আমি ভ্যানগাড়ি ও ড্রাইভার নিয়ে মার্কেটে যেতাম পন্য সেল করার জন্য , কিন্তু আমার ফুফাতো ভাই তখন তীর কোম্পানিতে জব করতো। তার বাসা ছিল হালিশহরে আর আমাদের প্রতিষ্ঠানও ছিল হালিশহরে কিন্তু সে আমাকে কোন হেল্প করতো না এবং সময়ও দিত না কিন্তু মাস শেষে লাভ নিত পরবর্তীকালে ফুফাতো ভাইয়ের সাথে আমাদের দূরত্ব সৃষ্টি হয় এবং তার বিভিন্ন চল চাতুরিতে ব্যবসা পুরাটাই লস হয় এবং এই দিকে বাবার চাকরী শেষ আমার ছোট ভাই ( রিপন) পড়াশোনা করার জন্য হালিশহরে রয়ে গেছে। 2005 সালের দিকে মা,বাবা, আমি আর আমার ছোট ভাই (মামুন) কে নিয়ে গ্রামের বাড়িতে চলে আসলাম । আমরা দাদার বাড়িতে না গিয়ে আমরা নানার বাড়ির পাশে মসজিদ থেকে একটু দূরে বাবার জমা কৃত টাকা দিয়ে বাড়ি নির্মাণ করে সব টাকা শেষ। তখন পরিবারের ইনকাম বলতে ছোট ভাই রিপনের টিউশন করে নিজে চলতো আর পরিবারের জন্য এক হাজার টাকা পাঠাতো আর আমিও গ্রামের বাড়িতে যায় বেকার কি করবো বুঝতেছিনা, বাবাকে বললাম আপনার এক ভাগিনা কাতার থাকে ওনার সাথে কথা বলেন, বাবা বললো ঠিক আছে আমি আলোচনা করে দেখি কি করা যায়, এভাবে তো আর বাড়িতে বসে থাকা যায় না। কি করা যায় চিন্তা করি, স্হানীয় বাজারে আমার মামার একটি ফার্মেসি ছিল ওখানে কাজে লেগে গেলাম। তবে কোন বেতন ছিল না শুধুমাত্র নিজের হাত খরচ বাবদ প্রতিদিন 20/50 টাকা আর ঘরের জন্য কিছু ঔষধ পেতাম,এর মধ্যে আবার কোরবানির ঈদ চলে আসছে কিন্তু কোরবান করার মতো সার্মথ্য আমাদের ছিল না, তখন আমার মেজ মামা (কলিম উল্যাহ) এগিয়ে আসলো আমাদের পরিবারের দিকে, মেজ মামা ঐ ঈদে কোরবানির একভাগের টাকা আর আমাদের সবাইকে কিছু জামা কাপড় কিনে দিলেন।
☘আমার ঘুরে দাড়ানোর গল্প☘
বিদেশ যাওয়ার জন্য 2006 সালের দিকে পাসপোর্ট করি, 2007 সালের শেষের দিকে হঠাৎ খবর আসলো কাতার থেকে আমার কাগজপত্র আসছে মেডিকেল করতে ঢাকা যেতে হবে ধার দেনা করে ঢাকাতে যায় মেডিকেল করি, কিছুদিন পর আমার ভিসা আসলো বিদেশ যাওয়ার জন্য কিন্তু টিকেট এর এতো টাকা কোথায় পাবো, অনেক চিন্তায় পড়ে গেল পরিবার, আমার যে ভাইয়া কাতার থেকে ভিসা পাঠাইছে ওনার থেকে টিকেটের জন্য 40,000 টাকা ধার নিয়ে 7 ই মার্চ 2008 সালে লেবার ভিসায় কাতার আসলাম। আমার জব ছিল কাতারের নদী বন্দর (দোহা পোর্ট ) এ, তখন বেতন ছিল 750 রিয়াল যা বাংলাদেশের টাকায় পনের হাজার টাকা । অল্প কিছু নিজে খরচ করে বাকী সব টাকা দেশে পরিবারের জন্য পাঠিয়ে দিতাম। মা - বাবার ঔষধের খরচ ও পরিবারের খরচ সব মিলিয়ে এক প্রকার হিমশিম খাচ্ছি । তার উপর ছোট ভাই পড়াশোনা করছে , তবে আরো কষ্ট হতো দুই ঈদের সময় , ঈদের জন্য অতিরিক্ত টাকা জমানো অনেক কঠিন হয়ে যেত, খায় না খায় টাকা জমিয়েছি, পরিবারের একটু হাসির জন্য । মাঝে মাঝে মনে হতো দুই ঈদের মাঝখানের ব্যবধানটা যদি ছয় মাসের হতো তাহলে টাকা জমাতে সহজ হতো । কোম্পানিতে হঠাৎ খবর ছড়িয়ে পড়লো লেবার থেকে ট্যালি ক্লার্ক নিবে আগামীকাল ইন্টারভিউ।
যথা সময়ে ইন্টারভিউ দিয়ে পাস করে লেবার থেকে 2009 সালের দিকে এক্টিং ট্যালি ক্লার্ক হিসাবে যোগ দিলাম ছয় মাসের ট্রেনিং শুরু হয়ে গেল। সেই ছয় মাস বলতে বলতে দেড় বছর হয়ে গেল, হঠাৎ অফিস থেকে খবর আসলো আমরা যারা এক্টিং ট্যালি ক্লার্কে এতোদিন কাজ করছি অফিসের কেউ জানে না,সবাইকে আবার লেবারে দিল শুরু হলো আবার লেবারে কাজ, 43 দিন কাজ করার পর পুনরায় আবার ট্যালি ক্লার্কে কাজ দিল, 2011 সালের দিকে প্রথম প্রমোশন আসলো বেতন 1,400 রিয়াল হলো,এর মধ্যে আরো ছয় বছর অনেক কষ্টে অতিবাহিত হলো,কিছু বছর শেষে কোম্পানি % ঘোষণা করতো 2017 সালে এসে আমার বেতন হল 2,052 রিয়াল, 2018 সালের জানুয়ারি মাসে অফিসিয়াল জবের জন্য ইন্টারভিউ দিলাম। ফেব্রুয়ারি মাস থেকে অফিসে জব শুরু হলো এক বছরের বেশি সময় ট্রেনিং শেষে 2019 সালের মে মাসে আরেকটি প্রমোশন আসলো আরেকটি কথা 2016 সালে দোহা পোর্ট বন্ধ হয়ে যায় এবং কাতারের নতুন পোর্ট 2016 সালে চালু হয় এখন আমি নতুন পোর্টে জব করি।
☘ফাউন্ডেশনের সাথে যে ভাবে যুক্ত হলাম
ফেসবুকের মাধ্যমে আশিক আমিন আশরাফ ভাইয়ের সাথে আমার পরিচয় হয়
এবং পরবর্তীতে খোঁজ খবর নিয়ে জানতে পারলাম আশিক আমার খালাতো ভাই হয় । একদিন আশিক ভাই আমাকে এই ফাউন্ডেশন সম্পর্কে কিছু কথা বললো আমি প্রথমে কিছুই বুঝি নাই , সে বললো আপনি আগে সেশন গুলো ভালো করে পড়ুন আর কিছু কিছু ভিডিও দেখেন। ভালো লাগলে রেজিষ্ট্রেশন করবেন, তখন আমি ফাউন্ডেশনের গ্রুপের সাথে যুক্ত হই এবং প্রিয় মেন্টর ইকবাল বাহার জাহিদ স্যারের কয়েকটি ভিডিও দেখলাম, আমি বিদেশে বসে মনের মধ্যে যে সব স্বপ্ন গুলো দেখতাম দেশে গেলে কি করবো বা কি করা যায় এবং স্বপ্ন গুলো কিভাবে বাস্তবায়ন করবো । মানুষের স্বপ্ন গুলো কিভাবে বাস্তবায়ন করা যায় সে সব বিষয় নিয়ে স্যার বক্তব্য দিচ্ছেন কিছু তরুণ তরুণীদের উদ্দেশ্য এবং স্যারের কথা গুলো আমার অনেক ভালো লাগছে । পরের দিনই আমি রেজিষ্ট্রেশন করলাম এবং পরের ধাপ গুলো যেমন পরিচিত পর্ব, নোয়াখালী জেলা মেসেনজার গ্রুপে এড হওয়া আবার কাতার মেসেনজার গ্রুপে এড হওয়া এ সব কিছুর জন্য যথেষ্ট সহযোগিতা করেছেন বিনতে আমিন আপু আর আশিক ভাই। অসংখ্য ধন্যবাদ জানায় বিনতে আমিন আপু ও আশিক ভাইকে , একদিন নোয়াখালী জেলার মিটআপের মাধ্যমে Md Mosharaf Hossen (বতর্মান Dhaka Dristric ambassador) ভাইয়ের সাথে পরিচয় হওয়, পরবর্তীতে ভাই আমাকে লালবাগ জোন মেসেনজার গ্রুপে এড করেন ও ফাউন্ডেশনের বিভিন্ন মিটআপের লিংক পাওয়া যায় এমন কয়েকটি মেসেনজার গ্রুপের সাথে এড করে দিয়েছেন এবং চট্টগ্রাম বিভাগ এর্গো ফোরামের সাথে যুক্ত করতে সহযোগিতা করছেন । ভাইয়া আমাকে বিভিন্ন বিষয়ে অনেক সহযোগিতা করেছেন এবং আমি ভাইয়ার দীর্ঘায়ু কামনা করি ।
☘এই প্লাটফর্মে যুক্ত হতে পেরে নিজেকে অনেক ভাগ্যবান মনে করছি। প্রতিদিন নতুন নতুন অনেক কিছু শিখতে পারছি । অসংখ্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি আমাদের প্রিয় মেন্টর ইকবাল বাহার জাহিদ স্যারের প্রতি যার অক্লান্ত পরিশ্রম ও নিরলস প্রচেষ্টার ফসল আজকের এই প্লার্টফর্ম নিজের বলার মতো একটা গল্প ফাউন্ডেশন ।
☘পরিশেষে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি তাদের প্রতি যারা এতোক্ষন ধৈর্য্য সহকারে আমার জীবনের গল্প পড়েছেন । সকলের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘয়ু কামনা করছি ।
📌স্ট্যাটাস অফ দ্যা ডে ৮৩৬
তারিখ ২১-০৭-২০২২ইং
☘মোঃ রাশেদুল হাসান
☘ব্যাচঃ 16
☘রেজিঃ 77685
☘আজীবন সদস্য
☘ এর্গো ফোরাম সদস্য
☘উপজেলাঃ সূবর্ণচর
☘জেলাঃ নোয়াখালী
☘বতর্মান অবস্থানঃ কাতার
আমার ফেসবুক লিংক
https://www.facebook.com/mohd.rashed.52