যেন জীবন যুদ্ধে জয়ী হতে পারি এবং সমাজ,পরিবার ও দেশের জন্য কিছু একটা করতে পারি।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম
💘আমার জীবনের গল্প💘
🕋 প্রথমে শুরু করছি মহান সৃষ্টিকর্তা পরম করুণাময় আল্লাহর নামে যার অপার কৃপায় এই পৃথিবীতে এসেছি। সকল প্রশংসা মহান রাব্বুল আলামীনের জন্য। লাখো কোটি দুরুদ ও শান্তি বর্ষিত হোক প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ) এর প্রতি ।
♥️কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি আমার মা ও বাবার প্রতি, যারা আমাকে জন্ম দিয়েছেন, লালন পালন করেছেন এবং শিক্ষিত করে পৃথিবীর বুকে বড় করে তুলেছেন।
💘💘সেই সাথে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি এই শতাব্দীর অন্যতম সেরা মানুষ, লাখো তরুণ তরুণীর আইডল প্রিয় মেন্টর, প্রিয় শিক্ষক জনাব ঈকবাল বাহার যাহিদ স্যারের প্রতি, যার অক্লান্ত পরিশ্রমে গড়ে উঠেছে "নিজের বলার মতো একটা গল্প" ফাউন্ডেশনের মতো একটা সুবিশাল প্লাটফর্ম ।
আসসালামুয়ালাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহী ওয়া বারকাতুহু
🌷 আজ একটা গল্প শোনাব। আশা করি সময় করে সবাই ধৈর্য্য ধরে শুনবেন ও পড়বেন।
🌷 এটা ঠিক গল্প নয় আমার জীবনের সত্য ঘটনা অবলম্বনে।
🙋♂️ছেলেবেলাঃ
একটি কট্টরপন্থী ইসলামিক পরিবারে ১৯৮০ সালে আমার জন্ম। আমরা তিন ভাই, দুই বোন। ভাইদের মধ্যে আমি ছোট। বাবার কড়া শাসনে ছোট বেলা থেকেই মানুষ হতে থাকি। আমার পরিবারের সকলেই বাবার ভয় তটস্থ থাকতাম। তাই পরিবারের সকল সদস্যকে নিয়ম মেনে সকল কাজ ও চলাফেরা করতে হত। বিকালে আসরের পরে খেলতে যেতে পারতাম। মাগরিব হলে জোরে চিল্লায়ে পড়তে হত।
📙 শিক্ষা জীবনঃ
শতদল পৌর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আমার শিক্ষা জীবন শুরু। চতুর্থ শ্রেণী উঠলে বাবা আমাকে কওমি মাদ্রাসায় ভর্তি করে দেয়। চার বছর পরে আমি আবার স্কুলে ভর্তি হই এবং প্রাথমিক শেষ করি। ১৯৯৯ সালে যশোর পুলিশ লাইন মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে স্টার মার্ক সহ এসএসসি পাস করি। ২০০১সালে ক্যান্টনমেন্ট কলেজ যশোর থেকে বিজ্ঞান বিভাগে এইচএসসি পাস করি। ২০০৭ সালে এম এম কলেজ যশোর থেকে উদ্ভিদবিজ্ঞানে অনার্স ও মাস্টার্স কমপ্লিট করি। ২০০৯ সালে বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় হতে বিএড সম্পন্ন করি।
😢 অভাবের দিন গুলোঃ
জীবনে বেশ কয়েকবার অভাবের সম্মুখীন হতে হয়েছে। প্রথম অভাবের সম্মুখীন হয় ইন্টার ফেল করার পরে। বাবা সকল প্রকার লেখাপড়ার খরচ বন্ধ করে দেয়। বহু কষ্টের পরে প্রাইভেট টিউশনি করে ভারসিটিতে ভর্তি হই। এরপর একটি কোচিং সেন্টার খুলি।সেখান থেকে আয় করা অর্থ দিয়ে অনার্স ও মাস্টার্স কমপ্লিট করি। দ্বিতীয় বার অভাবের সম্মুখীন হয় আমার বড় মেয়ে হওয়ার ৩০ দিনের মাথায়। এদিন আমাকে পরিবার থেকে আলাদা হতে হয়। খালি হাতে শুরু হয় নতুন জীবন যুদ্ধ। আমরা দুজনে মিলে অনেক সংগ্রাম করে সে ধাক্কায় উত্তীর্ণ হই। তৃতীয় বার অভাবে পড়ি কোভিট চলাকালীন সময়ে। কোভিট এর আগে ২০২০ সালে জমি কিনতে গিয়ে বেশ টাকা ব্যায় করি। এর পরেই মার্চমাসে শুরু হয় কোভিট পরবর্তী সময়।
একেতো খালি হাত তারপরে আবার কোভিটে স্কুল বন্দ। সব মিলিয়ে এক সাগর দুঃখের নদী পার করতে হয় আমার পরিবারকে। এ সময় আমার ছোট মেয়ের জন্ম হয়।
🎖️চাকুরী জীবনঃ
২০০৭ সালে যশোর শহরের বারান্দীপাড়ায় প্রতিষ্ঠিত করি বর্ণমাল এডাস স্কুল। এটি এখনো বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। মাত্র ৩৫০টাকা সন্মানিতে কাজ শুরু করি উক্ত প্রতিষ্ঠানে। আজ আমি সেই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছি।
🌷 আমার স্বপ্নঃ
আমার স্বপ্ন ছিলো লেখাপড়া শেষ করে চাকরি করা, কিন্তু কি ভাবে শিক্ষাকতা পেশায় জড়িয়ে পড়ি তা মনে নেই। তবে সমাজে প্রচুর সম্মান পাওয়া যায় এ পেশায় কাজ করে।
🙍♂️👰 সংসার ও চাকরি জীবনঃ
২০১০ সালের ৫ মে শুরু হয় আমার সংসার জীবন। ২০১১ সালের অক্টোবর মাসে আমার বড় মেয়ে জন্ম নেয়। আমরা দুজনেই শিক্ষক হিসেবে বর্ণমালা এডাস স্কুলে কর্মরত আছি। ফলে আলাদা হবার পরে সাথে করেই স্কুলে নিয়ে যেতে হত যার কারণে অনেক কষ্ট করে নিজেদের চলতে হত। এভাবে কেটে যায় আরও দশটি বছর। ২০২০ সালের অক্টোবর মাসে আমার ছোট মেয়ের জন্ম হয়। ফলে কোভিট পরিস্থিতিতে নতুন করে সংগ্রামের পথ পাড়ি দিতে হয়।
🏆 উদ্যোক্তা জীবনঃ
২০০৭ সালে বর্ণমালা স্কুল প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে প্রথম উদ্যোক্তা জীবন শুরু হয়। এর পরে ২০২১ সালের অক্টোবর মাসে কৃষিকে ভালোবেসে নতুন ভাবে শুরু করি ফল চাষ। এখন আমার নিজেস্ব বাগানে আম,কুল, পেয়ারা,মাল্টা,কমলা,সৌদি খেজুর, পাকাকলা,কাগজীলেবু সহ প্রভৃতি ফল শোভা পাচ্ছে।
২০২২ সালের এপ্রিল মাসে শুরু করি অনলাইন বিজনেস।
🥦 এ গ্রুপের সাথে যুক্ত হই ১৮ তম ব্যাচের ৮ম শেসন হতে। এ গ্রুপ থেকে আমি প্রতি নিয়ত শিখছি নতুন নতুন ব্যবসার টেকনিক। পেয়েছি সাহস, ভালোবাসা। আপনাদের সহযোগিতা পেলে আরও এগুতে চাই।
💘 আমার বাবার কঠোরতা আমাকে ভালোমানুষ তৈরি হতে শিখিয়েছে। জীবনের এ পর্যায়ে এসে মনে হয় বাবার শাসন আমাদের অপরাধ থেকে দুরে রেখেছে। আমি আমার বাবাকে নিয়ে গর্ববোধ করি। তাদের পাশে কমবেশি দাড়াই। এই ফান্ডেশন তাদেরকে শ্রদ্ধা ও সম্মান করা শিখিয়েছে। তাই আমি ফাউন্ডেশনের কাছে চির কৃতজ্ঞ।
🥭 অনেক্ষন ধরে আমার জীবনের কথা গুলি পড়ার জন্য আপনাদের অনেক অনেক ধন্যবাদ। আপনারা দোয়া করবেন আমি যেন জীবন যুদ্ধে জয়ী হতে পারি এবং সমাজ,পরিবার ও দেশের জন্য কিছু একটা করতে পারি।
🍇আমার জীবনের চলার পথে আপনাদের সাহায্য, সহযোগিতা, ভালোবাসা, দোয়া প্রয়োজন। আশা করছি আপনারা ভালোবেসে পাশে থাকবেন সব সময়। সবশেষে আপনাদের সুখী ও সুন্দর জীবন কামনা করি।
সুন্দর হোক আপনাদের আগামীর পথ চলা। এই কামনায়..........
📌স্ট্যাটাস অফ দ্যা ডে ৮৩৭
তারিখ ২১-০৭-২০২২ইং
বিলাল উদ্দীন আহাম্মদ
ব্যাচ নং-১৮
রেজিনং- ৯৬৭৩০
জেলাঃ যশোর
বর্তমান অবস্থানঃ যশোর সদর