তারপর সম্পূর্ণ বিজনেজ এর উপর নির্ভর।
🌼🌼 বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম 🌼🌼
🌼🌼 আসসালামুয়ালাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাই ওবা রাকাতু 🌼🌼
🌼🌼আমার জীবনের গল্প 🌼🌼
🌼🍂 সর্ব প্রথম শুকরিয়া আদায় করছি সেই মহান রবের প্রতি যিনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন এবং আশরাফুল মাখলুকাত হিসাবে পৃথিবীতে প্রেরণ করেছেন।
🌼🍂 সালাম ও দরুদ প্রেরন করছি প্রিয় নবী হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) এর প্রতি । যাকে সৃষ্টি না করলে মহান আল্লাহ তাআলা কোন কিছুই সৃষ্টি করতেন না।
🌼🍂 শুকরিয়া আদায় করছি আমার মা- বাবার প্রতি, যারা আমাকে জন্ম দিয়ে পৃথিবীর আলো দেখিয়েছেন এবং অনেক কষ্ট ও ত্যাগ স্বীকার করে আমাকে লালন - পালন করছেন । অামার মা অামাকে ছেড়ে গেছেন ১৭ বছর অাগে বাবা চলে গেছেন ২ বছর অাগে। সবাই অামার বাবা মায়ের জন্য দোয়া করবেন।
🌼🍂 কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি প্রিয় মেন্টর ইকবাল বাহার জাহিদ স্যারের প্রতি যার নিরলস প্রচেষ্টার ফসল আজকের এ নিজের বলার মতো একটা গল্প ফাউন্ডেশন - উদ্যোক্তা তৈরির কেন্দ্র নিস্বার্থ ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন লাখো লাখো তরুণ তরুণীর ভাগ্য পরিবর্তনের ।
🌼🌼 আমার পরিচয় 🌼🌼
🌼🍂 আমার জন্ম ১৯৮৭ সালে।ঢাকাতে স্থানীয় এখানেই জন্ম।গ্রামের বাড়ি চাঁদপুর। ঢাকাতেই থাকি।বাবার নিজের বাড়ি ঢাকা মিরপুরে। আমরা তিন ভাইয়ের মধ্যে আমি সবার বড় । বাবা ও মা দুজন ই মারা গেছেন। অামি বিবাহিতা। দুই মেয়ের জননী।
🌼🌼 আমার শিক্ষা জীবন ও জীবন যুদ্ধ 🌼🌼
🌼🍂 আমি ঢাকার মিরপুরে জন্ম বেড়ে উঠি এখানে। মিরপুরে একটা স্কুলে অামার শিক্ষা জীবন শুরু। সাড়ে ৩ বছর বয়সে মা ক্লাস ওয়ানে ভর্তি করে দেন। এবং বাসায় খুব ভালো পড়াশুনা করাতেন তাই ক্লাসে সব সময় ভালো রেজাল্ট ও করি। ওই বয়সে ক্লাস ওয়ান টা বর্তমানে কেউ চিন্তা ও করতে পারে না। যাই হোক সেই স্কুল থেকে প্রাইমারী শেষ করি তৃতীয় স্থান অর্জন করি।
তারপর একটা ছোট স্কুলে বাবা ৬ ষ্ট শ্রেনীতে ভর্তি করেন।এবং এখানে ও অাল্লাহর রহমতে সব ক্লাসে ভালো ফলাফল করি। সব সময় দ্বিতীয় তৃতীয় স্থান পেতাম। দেখতে দেখতে এস এস সি পরীক্ষা চলে অাসলো কিন্তু এস এস সি ফাইনাল পরীক্ষার দিন পরীক্ষার হলে অামার অনেক জ্বর অাসে। পরীক্ষা দিয়ে বাসায় অাসার পর স্কুলের অনেক শিক্ষক দেখতে অাসে। ডাক্তার দেখানো হলে ডাক্তার বলে হাম হয়েছে।
৫/৬ দিন, ১০৪ / ১০৫ ডিগ্রী জ্বর তার মধ্যে পরীক্ষা দিলাম।
🌼🍂 পরীক্ষা অনেক খারাপ হলো। এরপর ফলাফল তেমন ভালো হলো না তবে যা হয়েছে অালহামদু লিল্লাহ। এর পর কলেজে পড়া অবস্থায় বাবা মায়ের পছন্দে বিয়ে দিলো। বিয়ের পর পড়ানোর কথা থাকলেও স্বামীর পরিবার থেকে পড়ালো না। পড়া বন্ধ হয়ে গেলো। তারপর বিবাহিত জীবনে অনেক ঘাত প্রতিঘাত পার করলাম এক সময় মনে হলো অামাকে নিজে কিছু করতে হবে তখন অাবার পড়াশুনা শুরু করলাম। দীর্ঘ ৫ বছরপর অাবার শুরু করলাম লেখাপড়া কিন্তু পরিবারের কেউ রাজি হলো না টাকা দেওয়া তো দূর।
🌼🍂 বাবা ও রাজি হলো না বলে লেখাপড়া করে কি করবি।স্বামী ও না করে দিলো। তাদের কথা যা কপালে জুটবে খাবা না জুটলে না খেয়ে থাকবা। এদিকে স্বামী ও ঠিক মতো কোনো কাজ করে না। বিয়ের পর পর বড় মেয়ের জন্ম হয় । মেয়েটার জন্য দূধ কেনা নিয়ে ও স্বামীর সাথে রাগারাগি হয়ে যায়। এমন অশান্তির জীবন মেনে নিতে পারছিলাম না। ৫ বছর পর এক বান্ধবীর কাছ থেকে টাকা ধার নিয়ে ভর্তি হলাম।সাথে ছোট একটা জব এ জয়েন করি। ২০০২ এ এস এস সি। ২০০৯ এ অামি এইচ এস সি দিলাম এবং অালহামদু লিল্লাহ এতো বছর বিরতি জব সংসার সন্তান নিয়ে পরীক্ষা দিয়ে ও অনেক ভালো রেজাল্ট করলাম। সব শিক্ষক কলেজে এতো প্রশংসা করলো। এতো দোয়া করলো।অার সবাই বললেন তুমি লেখাপড়া বন্ধ কইরো না।
🌼🍂 এদিকে জয়েন করলাম ব্র্যাক মাইক্রোফাইনেন্স এ সহকারী ম্যানেজার হিসাবে। ডিগ্রি তে ভর্তি হলাম।।
ডিগ্রি পাশ করার পর প্রমোশন হয়ে ব্রাঞ্চ ম্যানেজার হলাম। তখন ছোট মেয়ে গর্ভে। মেয়ের জন্মের পর মাস্টার্স এ ভর্তি হলাম। মাস্টার্স এর ১ বছর যাওয়ার পর মনে হলো মাইক্রোফাইনেন্স এ অনেক দিন জব করেছি। এবার অন্য কিছু করি। বিডি জবস এ প্রতিদিন এপ্লাই করতে করতে এক সময় জব হয়ে গেলো বনানী তে এক গ্রুপ অব কোম্পানি তে বিজনেজ ডেভেলপমেন্ট এর সিনিয়র ম্যানেজার হিসাবে। এর মধ্যে মাস্টার্স এর রেজাল্ট ও দিলো।
বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ডিগ্রি অর্জন৷ অনেক কেঁদে ছিলাম সেদিন কারন অামার রেজাল্ট এর সুখবর কাকে দিবো কেউ শুনার অাগ্রহে নেই। কেউ না। না বাবা বাড়ির কেউ না স্বামীর বাড়ির কেউ।
তবুও বাসায় এসে সবাই কে বললাম সাথে মিষ্টি অানলাম। বাবা বললো ওহ পাশ করছোস ভালো।
মুখ টা কালো হয়ে ছিলো সে দিন যে কি কষ্ট পেয়েছি তা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব না।
স্বামী কে বলার পর ও অনেক খারাপ অাচরন করে বললো এখন কি ম্যাডাম বলতে হবে? এমন কত পাশ রিকশা চালায়।
🌼🍂 যাই হোক তাও শান্তি অর্জন টা অামার। অামি যে এই পড়ালেখার জন্য কত কষ্ট করছি তা কেবল অামি জানি। সারাদিন অফিস করে বাসায় এসে সংসারের কাজ করতাম। কোনো কাজের লোক ও ছিলো না। তারপর রাত ১২ টার পর পড়তে বসতাম। তখন হাসবেন্ড টিভি দেখবে। সে এটা খাবে সেটা খাবে কত ফরমায়েশ। শুধু কেবল অামার পড়াতে বিঘ্ন ঘটানোর জন্য। অার কলেজে তো ক্লাস করতে পারতাম না তারপর ও কত অপবাদ কত বাজে কথা সহ্য করেছি।
🌼🍂 যে মেয়ের বাবা বাড়ির ও স্বামী সবাই তার বিপক্ষে সেই মেয়েকে কত কথা কতটা যন্ত্রণা কত কষ্ট সহ্য করে পড়ালেখা করা জবাব করা কি পরিমান কষ্টকর। তার এক একটা দিন কেমন যে যায় তা কেবল সে জানে।
এরপর বি এড করলাম। এম এড করা হয়নি করোনার জন্য।
🌼🌼 আমার উদ্যোগক্তা হবার গল্প 🌼🌼
🌼🍂 গ্রুপ অব কোম্পানি তে জব করা অবস্থায় মনে হলো এতো বছর জব করেছি। যেহেতু প্রাইভেট জব তাই এই জবের তো কোনো ফিউচার নেই। সরকারি জব হলে না হয় জব শেষে পেনশন পাবো। নিজে কিছু করার ইচ্ছে জাগলো।এক বন্ধুর পরামর্শে ২০১৮ সালে অামার উদ্যোগ Montaka-মুনতাকা শুরু করি। তখন অন লাইনে বিজনেজ এতো রমরমা ছিলো না। একটা ডিপিএস ছিলো তা ভেঙে ৪৫ হাজার টাকা দিয়ে শুরু করলাম। পেজ এর কাজ শিখলাম। বিভিন্ন ওয়ার্কশপ এ জয়েন করলাম ট্রেনিং জয়েন হলাম। অাস্তে অাস্তে ডিজিটাল মার্কেটিং, এফ কমার্স সম্পর্কে শিখলাম, অন বিজনেজ সম্পর্কে জানলাম, পার্সনাল ব্র্যান্ডিং সম্পর্কে জানলাম। অাস্তে অাস্তে নিজের বিজনেজ এর প্রোডাক্ট ভ্যারাইটি করলাম। এর মধ্যে করোনাতে অফিস ৫ মাস বাসায় বসে জব করালো। কিন্তু সেলারী দিলো না।কোম্পানির অার্থিক অবস্থা খারাপ তাই। ৫ মাস পর জব ছেড়ে দিলাম। তারপর সম্পূর্ণ বিজনেজ এর উপর নির্ভর।
🌼🌼 ফাউন্ডেশনের সাথে যে ভাবে যুক্ত হলাম 🌼🌼
🌼🍂 ফাউন্ডেশন এর সাথে যুক্ত অাছি ১১তম ব্যাচ থেকে।রেজিষ্ট্রেশন করে রেখেছিলাম।কিন্তু এরপর অামার ফেসবুক অাইডি ডিজেবল হয়ে যায়। কয়েকমাস সব কিছু বন্ধ ছিলো। তারপর নতুন অাইডি খুলি।কিন্তু ফাউন্ডেশন এ এক্টিভ ছিলাম না। একদিন অামাকে Mostak Ahmad Mridha ভাইয়া নক করলেন ফাউন্ডেশন এ রেজিষ্ট্রেশন করতে।অামি ভাইয়াকে বললাম অামি তো রেজিষ্ট্রেশন করেছি।তিনি অামার ইমেইল নিয়ে রেজিষ্ট্রেশন নাম্বার বের করে দিলেন। তারপর নিয়মিত গ্রুপে সবার পোস্ট পরতাম। এক্টিভিটি দেখতাম।।মিরপুর জোন এর সেশন এ অংশ নিতাম। নিয়মিত সেশন ক্লাস করা শুরু করলাম ডিসেম্বর এ অফ লাইন মিটঅাপ এ গেলাম সবার সাথে পরিচিতি হলো। এর মধ্যে Ismat Hasan ভাইয়া অামাকে প্রোমোট পোস্ট করলেন। ফাউন্ডেশন এর প্রতি ভালোবাসা বৃদ্ধি পেলো সবার সাথে কথা বলে অান্তরিকতা বৃদ্ধি পেলো। হঠাৎ একদিন Hamida Rahman অাপু বললেন থানা এম্বাসেডর হিসেবে অামার নাম পাঠাতে চান। কয়েকদিন পর হঠাৎ Jasmine Akther Jui অাপু বললেন অামি কাফরুল থানা এম্বাসেডর হিসেবে সিলেক্ট হয়েছি। জনাব ইকবাল বাহার জাহিদ স্যার অামাদের নিজে এতো টা সম্মান দিয়েছেন। অালহামদু লিল্লাহ।
তারপর ফাউন্ডেশন এর মেগা মিটঅাপে অংশ নিলাম ভলেন্টিয়ার হিসাবে কাজ করলাম। সব সময় ফাউন্ডেশন এর সাথে থাকতে চাই।
🌼🍀 এই প্লাটফর্মে যুক্ত হতে পেরে নিজেকে অনেক ভাগ্যবান মনে করছি। প্রতিদিন নতুন নতুন অনেক কিছু শিখতে পারছি । অসংখ্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি আমাদের প্রিয় মেন্টর ইকবাল বাহার জাহিদ স্যারের প্রতি যার অক্লান্ত পরিশ্রম ও নিরলস প্রচেষ্টার ফসল আজকের এই প্লার্টফর্ম নিজের বলার মতো একটা গল্প ফাউন্ডেশন ।
🍂🍀 পরিশেষে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি তাদের প্রতি যারা এতোক্ষন ধৈর্য্য সহকারে আমার জীবনের গল্প পড়েছেন । সকলের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘয়ু কামনা করছি ।
📌স্ট্যাটাস অফ দ্যা ডে ৮৩৮
তারিখ ২৩-০৭-২০২২ইং
🍂 নাম : Rotna Akter
🍂ব্যাচ : ১১
🍂 ব্যাচ :১৯৫৫৭
🍂 থানা :এম্বাসেডর।
🍂 কাফরুল থানা।
🍂 ঢাকার মিরপুর থেকে কাজ করছি।
🚩 পণ্য নিয়ে কাজ : 🚩
🌸 কুর্তি
🌸 টপস
🌸 ওয়ান পিজ কামিজ
🌸 টাইচ
🌸 সুতি ভেজিটেবল ডাই থ্রিপিজ
🌸 সুতি ভেজিটেবল ডাই শাড়ি
🌸 হাতে বুনা জামদানী শাড়ি
🌸 হিজাব
🌸 ম্যাক্সি।
🌸 কসমেটিকস (ইউকে থেকে সরাসরি অানা)
🚩🌸🚩 ওনার অব Montaka - মুনতাকা 🌸🚩🌸
🦋কেবল অনলাইন ভিত্তিক 🦋