প্রবাসী জীবন " আমার জীবনের গল্প।
" প্রবাসী জীবন " আমার জীবনের গল্প।
" মানুষের জন্য কাজ করলে জীবিকার জন্য কাজের অভাব হয় না "
" বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম "
আস্সালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহু।
সকল প্রশংসা মহান রাব্বুল আলামিনের, যিনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন এবং সুস্থ রেখেছেন পাশাপাশি দরূদ ও সালাম আমার প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর প্রতি, যাহার উম্মত হওয়ার জন্য আল্লাহর নবী পর্যন্ত দোয়া করেছেন।
শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি আমার বাবা-মাকে, যাদের কারণে এই পৃথিবীর আলো বাতাস দেখতেছি ও যাদের রক্ত মাংসের গড়া আজকের এই আমি,তাদের ঋণ কখনো শোধ হবার নয়।
কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি আমাদের সকলের প্রিয় মেন্টর, ভালো মানুষ গড়ার কারিগর অসংখ্য পথহারা বেকার তরুণের স্বপ্নদ্রষ্টা ও পথের দিশারী, জনাব Iqbal Bahar Zahid স্যারের প্রতি, যার অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে আমরা পেয়েছি এই ভালোবাসার প্ল্যাটফর্ম নিজের বলার মত একটি গল্প ফাউন্ডেশন। আপনাদের দীর্ঘায়ু ও সুস্বাস্থ্য কামনা করছি।
✈️ ২০১৩ সালে প্রথম ওমানে আসি একটা ইতালিয়ান কোম্পানিতে ফোরম্যান এর দায়িত্বে, কাজটা ছিল প্রচন্ড রোদের মধ্যে ফ্লাইওভার এবং রোড ডেভেলপমেন্ট রিওয়ারক এর কাজ।
🌡️এই রোদের মধ্যে না সকাল, না দুপুর, অনেক সময় পায়ে হেঁটে এক প্রজেক্ট থেকে আরেক প্রজেক্টে যাবতীয় সরঞ্জাম সরবরাহ এবং সহযোদ্ধাদের খোঁজখবর নেওয়ার পাশাপাশি রিপোর্ট সংগ্রহের জন্য যেতে হতো।
🧑💻 ও একটা কথা বলে রাখি যেহেতু পড়ালেখার পাশাপাশি বিভিন্ন স্ক্রিলসে পারদর্শী এবং এক্সপেরিয়েন্সের দিক দিয়ে দুবাইতে পূর্ব অভিজ্ঞতা ছিলো, তাই সিনিয়র ম্যানেজমেন্টের দায়িত্বশীলগণ ভালোবেসে তিনটা দায়িত্ব দিয়েছিলেন।
✍️*** প্রথমত: টাইম কিপার
✍️*** দ্বিতীয়ত: ওয়ার্ক প্রগ্রেস রিপোর্টার
✍️*** তৃতীয়ত: ক্যাম্প ম্যানেজমেন্টের।
💁 তিনটি দায়িত্বই ছিলো অত্যান্ত দক্ষতার ও একসাথে মেনেজ করাটাও কষ্টসাধ্য কর। কষ্ট হতো, তারপরও স্বাচ্ছন্দের সাথে কাজগুলো করতাম মন প্রাণ দিয়ে। এমনও সময় আছে দুপুরবেলায় বিশ্রাম তো দুরের কথা, খানাটাও ঠিকমতো খেতে পারতাম না।
☎️ হয়তো খেতে বসছি তৎক্ষণাৎ ফোন আসছে কোনো সাইটে কোনো একজন সহযোদ্ধা তার খাওয়া পায়নি অথবা কোন সহযোদ্ধার দুর্ঘটনা বসত হাত অথবা পা কেটে গেছে, তাকে ফার্স্ট এইড দিতে হবে অথবা প্রচন্ড রোদের তাড়নায় কেউ মাথা ঘুরে পড়ে গেছে, হাসপাতাল নিয়ে যাওয়ার জরুরি।
বিন্দুমাত্র দেরি করতাম না যেই কাজেই থাকি না কেন তৎক্ষণাৎ দৌড়ে গিয়ে সমস্যা সমাধানের অগ্রণী ভূমিকা পালন করার চেষ্টা করতাম, আলহামদুলিল্লাহ🤲। তারই প্রতিদান হিসেবে সম্মানস্বরূপ প্রভিশন পিরিয়ডে অর্থাৎ চাকুরিতে জয়েন্ট হওয়ার তিন মাসের মাথায় আমার সেলারি ইনক্রিজ হয়।(বেতন বাড়িয়ে দিয়েছিলেন) আলহামদুলিল্লাহ 🤲
💞 যেকোনো কাজ মন প্রাণ দিয়ে আন্তরিকতার সাথে করলে, এবং একমাত্র আল্লাহর উপর ভরসা রেখে নিষ্ঠার সাথে থাকলে তার প্রতিদান মহান রব্বুল আলামীন অবশ্যই দেন তার একটা জ্বলন্ত উদাহরণ আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করতে যাচ্ছি..
🎀 যেহেতু আমার কাজ ছিল পাবলিক রিলেটেড, সেহেতু কাজের পরিপ্রেক্ষিতে প্রিয় সহযোদ্ধা ভাইদের বিশ্বাসের এবং ভালোবাসার প্রিয় একজন হয়েছিলাম সব সময়ই, আর এটা এমনিতেই হয় নাই, কোন কিছুই এমনি এমনি হয়ে যায় না, বিশেষ করে সম্পর্ক, আস্থার জায়গা কিংবা কমিউনিকেশন বানিয়ে নিতে হয় বা সততার সাথে বিশ্বস্ততা ও নির্ভরতার জায়গা করে নিতে হয়।
🤩 দায়িত্ববোধের জায়গা থেকে সব সময় চেষ্টা করতাম নিজেকে অর্পিত দায়িত্ব সঠিক ভাবে পালন করতে, পাশাপাশি প্রিয় সহযোদ্ধাদের সুখে দুঃখে হাসি কান্নায় সবসময় নিজেকে তাঁদেরই একজন মনে করতাম। লিডার শুধু কাজের জায়গায় ছিলাম না, খেলাধুলা ও আনুষাঙ্গিক বিষয়ে তাদের সাথেই অগ্রণী ভূমিকা পালন করে তাঁদেরই প্রিয় ভালবাসার একজন হয়েছিলাম।
✍️এবার আসি বিস্তারিত মূল পর্বে...✍️
🎀 এভাবেই কেটে যাচ্ছিল আমাদের প্রবাস জীবন, কিন্তু ওমানের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি খুব একটা ভালো যাচ্ছিল না তখন, তাই কোম্পানির পরপর তিনটা বিল স্থানীয় সরকার আটকিয়ে দেয়। কোম্পানির সাথে কন্টাক্ট অনুযায়ী একটা বিল সাবমিট করার পর আরেকটা বিল সাবমিট করার সাথে সাথে পুরনো বিলের এমাউন্ট তাদের একাউন্টে ট্রান্সফার করা হবে। কিন্তু দুঃখের বিষয় পর পর তিনটা বিল সাবমিট করার পরেও কোম্পানি কোন পেমেন্ট পায় নাই, এতে করে কোম্পানি পরিচালনার ক্ষেত্রে আর্থিক সমস্যার সৃষ্টি হয়, সেজন্য কোম্পানি অতিরিক্ত বেতন বা ওভারটাইম করিয়ে কাজ চালিয়ে নেওয়া সম্ভব হয়নি, মোটামুটি কোম্পানি নিজস্ব অর্থায়নে চার মাস পর্যন্ত শ্রমিকের বেতন চালিয়ে নিতে পেরেছে।
😥 দুঃখের সাথে বলতে হচ্ছে যে আমাদের প্রিয় মাতৃভূমির কিছু অসাধু চক্রের কারণে এই রেমিটেন্স যোদ্ধারা,যারা বিদেশে আসার জন্য চেষ্টা করেন, তাদেরকে অত্যন্ত উচ্চ মূল্য পরিশোধ করে প্রবাসে আসতে হয়...! যা কিনা আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ গুলোর তুলনায় চার পাঁচ গুণ অথবা কোনো কোনো ক্ষেত্রে সাত গুন বেশি হয়ে থাকে..! আর এই টাকাগুলো যোগান দিতে গিয়ে অনেকেই সুদের উপরে কিংবা অতিরিক্ত লাভের উপরে টাকা নিয়ে অথবা ঘরভিটাও বিক্রি করে দিতে হয়..! পরবর্তীতে তারই মাসুল আমাদের রেমিটেন্স যোদ্ধারা গুনে গুনে রক্ত ঘাম পানি একসাথে করে পরিশোধ করতে হয়।
🧑💻 আমাদের কোম্পানির প্রিয় রেমিটেন্স সহযোদ্ধাদের ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম হয়নি, অনেকেই ছিলেন যারা কিনা অধিক মুনাফা অথবা সুদের উপরে টাকা নিয়ে দালালকে দিতে হয়েছে প্রবাসে আসার জন্য।
পরবর্তীতে একটা সময় আসে সুদের টাকা এবং সংসার খরচের টাকা সময় মতো পরিশোধ করতে না পারায়, অনেকেই মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েন, এবং কোম্পানিকে ওভারটাইমসহ বেতন বাড়ানোর জন্য চাপ প্রয়োগ করার চেষ্টা করেন।
💁 বলে রাখা ভালো এখানে সবাই একই ক্যাটাগরির বেতনের ছিলেন না, একেক এজেন্সি থেকে একেক ভাবে এগ্রিমেন্ট করে দেওয়া হয়েছিলো, আর সেটা করার কারণেই এই সমস্যাটার সৃষ্টি সেখান থেকে শুরু হয়।
💵 একটা সময় ঋণ করে আসা টাকা পরিশোধ করার চাপ দিয়ে যাচ্ছে দেশ থেকে পাশাপাশি পরিবারের সংসার খরচ চালানোর জন্য পর্যাপ্ত অর্থ না পাঠাতে পেরে, চাপে পড়ে একটা পর্যায়ে শ্রমিকগণ আন্দোলন শুরু করে।
🏗️ এর মধ্য দিয়ে কোম্পানির ছয়টা বিল জমা হয়ে আছে স্থানীয় সরকারের যোগাযোগ উন্নয়ন প্রকল্প অধিদপ্তরে, কোনো রকমে একটা(প্রথম মাসের) প্রথম বিলটি পেয়ে এবং কোম্পানির কোষাগারে থাকা নিজস্ব অর্থ দিয়ে, কোম্পানির শ্রমিকদের বেতন এবং যাবতীয় খরচ চালানোর চেষ্টা চালিয়ে যায়।
কিন্তু যেহেতু কোম্পানির সাথে এগ্রিমেন্ট ছিলো একটা বিল জমা দেওয়ার পর, আরেকটা বিলের জন্য আবেদন করা হলে পূর্ববর্তী বিলের সম্পূর্ণ টাকা কোম্পানির একাউন্টে ট্রান্সফার করা হবে, তাই যখন কোম্পানি দেখলো তাদের পরপর ছয়টা বিল সাবমিট করার পরেও, ছয় মাসের মধ্যে কোনরকম আশামূলক রেসপন্স না পাওয়াতে, পরবর্তীতে ছয় মাস পর কোম্পানি সিদ্ধান্ত নেয় তারা এখানে আর কন্টিনিউ করবে না।
এরই মধ্যে আমাদের দুই মাসের বেতন পরিশোধ করতে কোম্পানি অক্ষম হয়..!
😖 এমতাবস্থায় কোম্পানির শ্রমিকগণ আন্দোলন শুরু করে দেয় (আগেই বলেছিলাম ঋণের চাপের কারণে সহযোদ্ধা ভাইয়েরা এমন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে), একটা পর্যায়ে কোম্পানি নিজে সিদ্ধান্তে আসে যে, কোম্পানি ফাইনালি কাজগুলো অন্য কোম্পানির কাছে বিক্রি করে বা অন্য কোম্পানিকে হ্যান্ড ওভার করে দিয়ে এখান থেকে বিদায় নিয়ে যাবে।
🥺 তখন কোম্পানির শ্রমিকদের মধ্যে দুটো দলে বিভক্ত হয়ে যায়(জুনিয়র এবং সিনিয়রদের মধ্যে), একটা দল নতুন কোম্পানির সাথে কাজ করার পক্ষে আরেকটা দল বর্তমান কোম্পানি না থাকলে কাজ না করার পক্ষে কিংবা দেশে চলে যাওয়ার পক্ষে।
এমতাবস্থায় আমি ছিলাম মাঝামাঝি অবস্থায় সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগতেছিলাম আর ভাবতেছিলাম আসলে পরিস্থিতি কোন দিকে এগোচ্ছে।
শ্রমিকদের যৌক্তিক দাবি ও আন্দোলন এবং স্থানীয় সরকারের আর্থিক অবনতি সহ, সর্বাধিক বিবেচনা করে কোম্পানি তাদের সম্পাদনকৃত কাজগুলো এবং যাবতীয় মালামাল সহ প্রজেক্টগুলো বিক্রি করে দেয় অন্য একটা কোম্পানিকে এবং পুর্ব কোম্পানি শ্রমিকদের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয় যে তারা শ্রমিকদেরকে মোটামুটি নাম মাত্র হিসেবে দিয়ে দেশে পাঠিয়ে দেবে। শ্রমিকরা যখন জানতে পারে ব্যাপারটা তখন তারা নিজেদের মধ্যে পরামর্শক্রমে এ ব্যাপারে স্থানীয় লেবার কাউন্সিল অফিসে কমপ্লেইন করে পরবর্তীতে লেবার কাউন্সিল তাদের পাশে দাঁড়ায়, এবং এ বলে তাদেরকে আশ্বাস দেয় সম্পূর্ণ হিসাব তাদেরকে বুঝিয়ে দেওয়া হবে এবং নতুন কোম্পানির সাথে চুক্তি করে আমাদেরকে কাজে অব্যাহত রাখার জন্য অনুরোধ করা হবে।
বলে রাখি যে.... যখন কোম্পানি সিদ্ধান্ত নিয়ে নেয় আমার প্রিয় সহযোদ্ধা শ্রমিকদের দেশে পাঠিয়ে দেবে, ঠিক তখনই ওই শ্রমিকদের সার্বিক অবস্থার দিক বিবেচনা করে আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, এই মুহূর্তে তাদের পাশে দাঁড়ানোর মত কেউ নেই, আমি একজনের সহযোগিতা বা পাশে দাঁড়ানোর মধ্য দিয়ে যদি এই সহযোদ্ধাদের রিজিক এখানে থাকে তাহলে তাদের সাথে আমি একজনেরও থাকবো ইনশাআল্লাহ, আর যদি তারা না থাকতে পারে তাহলে আমিও তাদের সাথে চলে যাবো আল্লাহর ইচ্ছাতেই। তখন আমিই প্লানিং করে তাদেরকে স্থানীয় শ্রম মন্ত্রণালয়ের অধীনে লেবার কাউন্সিল অফিসে পাঠাই, এবং পরোক্ষভাবে তাদেরকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করে দেই। যদিও এই কাজটি আমাকে অনেক সতর্কতার সাথে করতে হয়েছে। রেফারেন্সে আছে আমার এসিস্ট্যান্ট এবং আরও অনেক সহযোদ্ধা ভাইয়েরা যারা ব্যাপারটি অবগত ছিলেন।
আর এই কারণেই তারা পরবর্তীতে হাসিমুখেই লেবার কাউন্সিল অফিস থেকে রুমে ফিরতে পারছে। আলহামদুলিল্লাহ 🤲
🌿 একটা সময় যখন নতুন কোম্পানি কাজগুলো বুঝে নেয়, তখন কোম্পানির CEO স্বয়ং উপস্থিত থেকে একটা মিটিং ডেকে সকল সহযোদ্ধারকে সামনে উপস্থিত করে তাদের মতামত এবং চাহিদা সমূহ উপস্থাপন করার জন্য বলেন, তারা শ্রমিকদের যৌক্তিক চাহিদা ও সম্পন্ন কথাগুলো শুনে পরবর্তীতে আশ্বাস দেয় যে.. আপনারা যদি আপনাদের কর্মস্থলে ফিরে যান এবং যদি আপনাদের পুনরায় সেই স্পিড নিয়ে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দেন তাহলে আমি আপনাদের সবার জন্য একই বেতনের নতুন এগ্রিমেন্ট করব এবং আপনাদের যৌক্তিক যে চাহিদা গুলো আছে সবগুলো পূরণ করার চেষ্টা করবো, তখন তাদের মধ্যে কথোপকথনের ট্রান্সলেশন বা হিসাবে বিশ্লেষণ বা মধ্যস্থতা চুক্তি করিয়ে দেওয়ার জন্য আমাকে রাখা হয়, সেখানে আমার থেকে সিনিয়র এবং আমার মত অনেক সিনিয়র থাকা সত্ত্বেও উক্ত কোম্পানির সিনিয়র ম্যানেজমেন্ট এর দায়িত্বশীল এবং আমার প্রিয় সহযোদ্ধা শ্রমিকদের সম্মতিক্রমে আমাকে মধ্যস্থতা করিয়ে দেওয়ার জন্য রাখা হয়।
🌿 সর্বশেষে সব দুঃখ কষ্ট এবং অভিমান ভুলে আমার প্রিয় রেমিটেন্স দ্বারা নিজের দেশের এবং পরিবারের স্বার্থে আবার আনন্দের সাথে কাজ করা শুরু করে, কিন্তু যারা কিনা পুরোনো কোম্পানির আমারই প্রিয় সহযোদ্ধা ফোরম্যান কিংবা অপারেটরের দায়িত্বে ছিলেন, তারা তাদের পূর্বসিদ্ধান্তে অটল থাকে এবং নতুন কোম্পানির সাথে কাজ না করে বাড়ি চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত মনে পোষণ করে।
📝 যেমন চিন্তা তেমন কাজ.. নতুন কোম্পানি তিনদিন বিষয়টি অবজারভেশনে রাখে, এবং তিনদিন পরে তারা এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয় যে, যারা কাজ করতে ইচ্ছুক নয় তাদেরকে দেশে পাঠিয়ে দেবেন, ঠিক তার পরের দিনই সবাইকে অফিসে ডাকা হয় এবং সবাইকে স্বইচ্ছায় চাকরি থেকে অব্যাহতি নেওয়া হচ্ছে এমন পেপারে সাইন নিয়ে তাদের হিসাব বুঝিয়ে দিয়ে দুইদিন পরে ফ্লাইটের টিকেট কনফার্ম করেন।
🤲 ভাগ্যক্রমে মহান আল্লাহ তায়ালার ইচ্ছায় সেই বেলায় আমিই একমাত্র ব্যক্তি আলহামদুলিল্লাহ 🤲 সেই সিলেকশনে বেঁচে যাই যে কিনা প্রিয় রেমিটেন্স যোদ্ধা শ্রমিকদের চেয়ে বেশি বেতনের বা সিনিয়র কর্মকর্তাদের মধ্যকার একজন ছিলাম।(স্মরণ আছে কিনা..! আগেই বলেছিলাম যে পুরো কোম্পানিতে দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে গেছে জুনিয়র এবং সিনিয়র শ্রমিকদের মধ্যে, সেখান থেকে পরবর্তী শেষ মুহূর্তে জুনিয়র শ্রমিকদেরকে এবং আমাকে শুধুমাত্র নতুন কোম্পানি কাজে বহাল রাখে, বাকি অন্য সহযোদ্ধাদের দেশে পাঠিয়ে দেয়)।
🤲 আলহামদুলিল্লাহ পরবর্তীতে আমি আমার প্রিয় রেমিটেন্স সহযোদ্ধাদের নিয়ে দুই বছর ঐ কোম্পানিতে আমাদের কন্ট্রাক্ট শেষ করি 🎀 এবং দুই বছর পরে ২০১৫ সালে আমার নতুন একটা অফার আসে বর্তমানে যে কোম্পানিতে জব করতেছি এই কোম্পানি থেকে। শেষে আমি আমার পুরোনো কোম্পানি থেকে অব্যাহতি নিয়ে পরবর্তীতে এই কোম্পানিতে নিজের ক্যারিয়ারকে উন্নত করার লক্ষ্যে জয়েন্ট করি। আলহামদুলিল্লাহ 🤲 সকলের দোয়া ও ভালোবাসায় এখন লুলু গ্রুপেরই প্রতিষ্ঠান লুলু এক্সচেঞ্জের শাখা প্রধানের দায়িত্বে কর্মরত আছি।
🥰 সারমর্ম:- অন্যের জন্য বা মানুষের জন্য কাজ করলে জীবিকার জন্য কাজের অভাব হয় না, পাশাপাশি খাস নিয়তে সততার সাথে কারো উপকার করলে বা এগিয়ে আসলে তার প্রতিদান মহান রাব্বুল আলামীন আপনাকে আমাকে আখেরাতের পাশাপাশি দুনিয়াতেও দেবেন তার জ্বলন্ত উদাহরণ আমার লেখাতে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছি।
👋 তাদের থেকে বিদায় নিয়ে আজকে সাত বছর অতিবাহিত হয়েছে, এখনো প্রিয় সহযোদ্ধা ভাইয়েরা যোগাযোগ করে থাকেন এবং হাসিমুখে জিজ্ঞাসা করেন স্যার কেমন আছেন..? মন থেকে দোয়া করেন💞🤩 এর চেয়ে আনন্দের আর কি হতে পারে তা হয়তো আমি আপনাদের ভাষায় বুঝাতে পারবো না, আমি সবসময়ই দোয়া করি আমার প্রিয় রেমিটেন্স সহযোদ্ধা ভাইয়েরা যেখানেই থাকেন, খুশি থাকেন। এবং মহান আল্লাহ তায়ালা আপনাদের সবাইকে সুস্থতার সাথে নেক হায়াত দান করুন আমীন 🤲। ভালোবাসা অবিরাম 💞
🎀 ধন্যবাদ 🌷 আমার লেখাটা মনোযোগ দিয়ে পড়ার জন্য মহান আল্লাহ তায়ালা আপনাদের সবাইকে সুস্থতার সাথে নেক হায়াত দান করুন আমীন 🤲
📌স্ট্যাটাস অফ দ্যা ডে -৮৪২
তারিখ ০১-০৮-২০২২ইং
রফিকুল ইসলাম { রফিক }
👉 ব্যাচ নং ১৮ 🏅
👉 রেজিষ্ট্রেশন নং ৯৫৫৮৫ 💚
💚 জেলাঃ- লক্ষীপুর
💞 থানাঃ- চন্দ্রগন্জ
🧑💻 বর্তমানে আছি ওমান, মাস্কাট, লুলু এক্সচেঞ্জে, ব্রাঞ্চ ম্যানেজারের দায়িত্বে।