এখন প্রতিদিন স্বপ্ন দেখি নিজেকে ছাড়িয়ে যাবার,
✍️গল্পটা আমার নিজের... 🙋♂️
🍁♡♡ ✺ ♡♡ ✺ ♡♡ ✺ ♡♡🍁
✍️আমি HM Abdullah GD নিজের সাথে শপথ করিতেছি যে
এই গল্পের কোথাও কাল্পনিক একটি শব্দ ও ব্যবহার করব না।🔰🔰
🕋পরম করুনাময় অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি🕋
🤝 আসসালামু আলাইকুম ওয়ারহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ 🤝
✍️প্রিয় ভাইয়া আপু ও বন্ধুগণ আপনার মূল্যবান কিছু সময় ব্যয় করে আমার মধ্যবিত্ত জীবনের এই বাস্তব গল্পটা পড়বেন। আমার ছোট্ট এই জীবনে হাসি কান্না, দুঃখ বেদনা, সফলতা ব্যর্থতা এবং দারিদ্রতা সবকিছু মিলিয়ে গ্রামীণ মানুষের যে সাধারণ জীবনযাপন তার প্রকৃত রূপ তুলে ধরার চেষ্টা করেছি, আশাকরি ভালো লাগবে।
🌿🌿🌿 _______ ধন্যবাদ _______ 🌿🌿🌿
✍ প্রশংসা...🔷🔷
=============
সকল প্রশংসা মহান আল্লাহ☝️ তায়ালার জন্য, যিনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন, এবং দরুদ ও সালাম পেশ করছি প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি যিনি হাশরের ময়দানে আমাদের কে হাউজে কাউসারের পানি পান করাবেন ।🔰🔰
পৃথিবীর সকল মা-বাবার প্রতি আমার শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা রইলো, জীবনের প্রথম শিক্ষক মা ও বাবা। 🔰🔰
✍️কৃতজ্ঞতা...🔷🔷
==============
কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি আমার সকল ওস্তাদ দের প্রতি যাদের শিক্ষার আলোয় আজ দু'কলম লিখতে শিখেছি।
সেই সাথে ★তারুণ্যের অহংকার সময়ের শ্রেষ্ঠ শিক্ষক লাখো তরুণ তরুণীর আশার প্রদীপ আমাদের হৃদয়ের স্পন্দন, শতাব্দীর জীবন্ত কিংবদন্তি প্রিয় মেন্টর জনাব ইকবাল বাহার জাহিদ স্যারের প্রতি রইলো আমার শ্রদ্ধা, ভালোবাসা ও আন্তরিক কৃতজ্ঞতা।
যার অক্লান্ত পরিশ্রমে আমরা পেয়েছি ভালো মানুষের পরিবার,
নিজের বলার মতো একটা গল্প ফাউন্ডেশন।🔰🔰
✍️শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা রইলো সম্মানিত কোর ভলেন্টিয়ার ও মডেরাটরদের প্রতি যাদের অক্লান্ত পরিশ্রমে গড়ে উঠেছে ভালোমানুষের এক সুবিশাল কল্পরাজ্য। 🔰🔰
✍️কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি...
এই প্ল্যাটফর্মের আমার প্রাণ প্রিয় সহপাঠী ভাই বোন ও বন্ধুদের প্রতি যারা আমাকে প্রতিনিয়ত উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছেন...🔰🔰
✍️যে কথা হয়নি বলা... 🔷🔷
======================
আমার জীবনের গল্প টি একটু ব্যতিক্রমী!
কিছু কথা কখনও কারো সাথে শেয়ার করতে পারিনি, আজ জীবনের গল্প লিখতে গিয়ে নতুন করে উপভোগ করলাম ফেলে আসা দিনগুলোর কথা, স্মৃতির পাতায় না বলা কিছু অভিমান ছিল, ছিল কিছু অভিযোগ, ছিল আকাশছোঁয়া স্বপ্ন, ছিল অব্যক্ত কিছু কষ্ট!!! 🔰🔰
✍️গল্পের শুরুটা এখানেই🔷🔷
======================
বাবা-মায়ের তিন মেয়ে ও চার ছেলের মধ্যে আমি পঞ্চম আর ভাইদের মধ্যে তৃতীয়। ছোটবেলা থেকেই খুব ডানপিটে ও মেধাবী আর দেখতেও নাকি অনেক কিউট ছিলাম, এই কথাগুলো বড় হয়ে বড়দের কাছ থেকে জানতে পারি।
তবে আজ জীবনের গল্প লিখতে বসে অত্যন্ত দুঃখের সাথে লিখতে হচ্ছে ৪ভাই ৩বোন এর সংখ্যা টি আজ আর নেই! গত ০৮/১২/২০২১ তারিখে সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বেডে মর্মান্তিকভাবে মৃত্যু বরণ করে আমার প্রানপ্রিয় কলিজার টুকরো একমাত্র ছোটবোন।😭😭
আল্লাহপাক তাকে জান্নাতবাসী করুন, আমীন।🤲🤲🔰🔰
✍️আমার জন্ম ও বেড়ে ওঠা 🔷🔷
=========================
১৯৮৫ সালের ৫ই মার্চ এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে আমার জন্ম। বাবা ছিলেন একজন আদর্শ মাদ্রাসা শিক্ষক + গ্রামের মসজিদের ইমাম আর মা গৃহিণী। পরিবারের সাতজন সন্তানের লেখাপড়ার দায়িত্বভার একমাত্র উপার্জনক্ষম বাবার উপরেই ছিল সেই সুবাদে ছোটবেলায় দারিদ্রতাকে খুব কাছ থেকেই দেখেছি, দেখেছি কিভাবে একজন মা নিজে না খেয়ে খাওয়ার অভিনয় করে সন্তানদের মুখে খাবার তুলে দিতেন, আল্লাহপাক আমার মাকে হায়াতে তাইয়্যেবাহ দান করুন এবং বাবাকে ভালো রাখুন জান্নাতের সুপ্রতিষ্ঠিত স্থানে🤲🤲
আমার বাবা ছিলেন একটা টাইম মেশিন 🕔! 🔰🔰
✍️অর্থাৎ সময় দেখে আমরা বলতে পারতাম কখন কোথায় কোন কাজে নিয়োজিত আছেন "বাবা" একদম সাদাসিধে জীবন যাপন করতেন বাবা, গ্রামের শিশু থেকে বৃদ্ধ পর্যন্ত সবার কাছে বাবা ছিলেন একজন আদর্শ ও সম্মানীত ব্যক্তি, সেই সুফল এখনো ভোগ করছি আমরা, গ্রামের প্রতিটি মানুষের কাছে আমাদের পরিবারের ঐতিহ্য অনন্য উচ্চতায়, সবসময়। কারণ বাবার আদর্শ বুকে ধারণ করে আমরাও সেই ভাবে চলার চেষ্টা করি।🔰🔰
✍️আমার দুরন্ত কৈশোর...🏃♂️⛹️♂️🔷🔷
===========================
শিশির ভেজা কুয়াশার ঝাপসা আলোয় নূরানী কায়দা বুকে মক্তবে যাওয়ার মাধ্যমেই সকালটা শুরু হতো, তারপর শুরু হতো বন্ধু দের আড্ডা, কখনো স্কুল পালানো, কখনোবা স্কুল থেকে ফেরার পথে শাপলা, শালুক 🦜শালিক, 🦩বক, প্রজাপতির🧚 পিছনে দৌড়ানো আর মার্বেল খেলায় ছিল আমার অসাধারণ দক্ষতা, টোক্কা মেরে কতো মার্বেল ভেঙেছি এই কোমল হাতে 💪
দুরন্ত বিকেলে সুপারম্যান 🦸 হয়ে আমগাছ জামগাছ খেজুর গাছ, পাখির ছানা, আর গ্রামের আঁকাবাঁকা মেঠো পথে, ধানসিড়িঁর আইলে কখনোবা নদীর ধারে ঝিনুক কুড়ানোর মধ্য দিয়ে দিনশেষে সূর্যমামাকে💥 বিদায় জানিয়ে ঘরে ফিরতাম ভদ্র ছেলের মত। 🙆♂️🙆♂️
সেই দুরন্ত বেলার বন্ধুরা আজও বাস করে হৃদয় মন্দিরে... এখন সবার সংসার হয়েছে সবাই সবার মত করে ব্যস্ত, অনেকদিন পর এখনও যদি ফোন করে কাউকে হ্যালো বলি সাথে সাথে চিনতে পারে এটাই নিঃস্বার্থ ভালোবাসা।🔰🔰
✍️ক্লাসে যেমন ছিলাম সবার সেরা আড্ডাতেও তাই, বন্ধুদের প্রাণবন্ত আড্ডা কিংবা উচ্ছ্বাসের মধ্যমণি হয়ে যেতাম আমি খুব সহজে, কখনো আবার বন্ধুদের হাতে মার খেয়ে এসে বাড়িতে নালিশ করলে শুরু হতো দ্বিতীয় ধোলাই! পুকুরে সাঁতার🏊♂️ কাটতে না পারলে সেই দিনটা যেন অপূর্ণই থেকে যেত। বড়শিতে মাছ ধরা ছিল এক ধরনের নেশা। 🔰🔰
✍️আমার লেখাপড়া... ✍️📚🔷🔷
=========================
আমার পড়ালেখার অধ্যায় শুরুতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রথম ক্লাসেই প্রথম স্থান, দ্বিতীয় ক্লাসেও সেইম তৃতীয় ক্লাস থেকে মাদ্রাসা জীবন শুরু, যথারীতি মাদ্রাসাতেও শুরুতেই প্রথম স্থান✌️ পাশাপাশি আমার উপরের ক্লাসের কবিতা, আরবি শেয়ার, আজান এইসব মুখস্থ করে বাড়িতে গলা ছেড়ে গেয়ে যেতাম আপন সুরে...
এটি বাবা এবং উস্তাদ দের চোখে পড়লে ওস্তাদের পরামর্শ অনুযায়ী আমাকে ফেফজ খানায় ভর্তি করিয়ে দেওয়া হয়, চলে যেতে হলো হোস্টেলে!
সেই ছোট্টবেলায় ঘর ছেড়েছি, হেফজখানা আর জেলখানার মধ্যে পার্থক্য শুধু মুক্তির সময় নির্ধারণীতে।🔰🔰
✍️যে যত তাড়াতাড়ি হাফেজ হবে সে তত তাড়াতাড়ি মুক্তি পাবে, একদিকে পড়ার চাপ অন্যদিকে খাবারের কষ্ট! বাবা একজন শিক্ষক তাই বিশেষ সুবিধায় মাদ্রাসা থেকে ফ্রিতে খাবার পাই দুইটাইম, ডালের পানি আলুর ভর্তা মাঝেমধ্যে আল্লাহর ওয়াস্তে আশা ছাগলের মাংস দিয়ে চলে যেতো দুপুর আর রাতের খাবার। সকালের নাস্তা সবার ব্যাক্তিগত খরচে যে যার মতো করে করতো। আমি কখনো চেয়ে থাকতাম কখনো রাতের রেখে দেয়া পান্তাভাত চাক মিঠা (গুড়) দিয়ে চালিয়ে দিতাম। অনেক কষ্ট করে হেফজ শেষ করলাম একই মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল আমাকে ফ্রিতে কিতাব বিভাগ মোতাফাররেকা (শর্ট কোর্স) বিভাগে পড়ার সুযোগ করে দিলেন।
এতোদিনে বড় ভাই ও মেঝো ভাই লেখাপড়া শেষ করে শিক্ষকতার মহান পেশায় নিজেদের নিয়োজিত করলেন। এইদিকে কঠোর পরিশ্রমের ফলে বাবা কম বয়সে বার্ধক্যজনিত অনেক রোগে আক্রান্ত হয়ে বিছানায় পড়ে গেলেন।🔰🔰
✍️সংসারের দায়িত্ব পড়ল বড় ভাইদের উপর, এই দিকে আস্তে আস্তে আমার লেখাপড়ার প্রতি অনিহা সৃষ্টি হতে লাগলো, ভাবতে লাগলাম লেখাপড়া করে কি হবে? যদি বাবার চিকিৎসার টাকা যোগাড় করতে না পারি? যদি না পারি পরিবারের দারিদ্রমোচন করতে? সমাজে চলতে হলে শুধু মান-সম্মান দিয়ে হয় না, লাগে টাকা! অনেক অনেক টাকা!!!🔰🔰
✍️এ-ই ভাবনা আমাকে প্রায়ই অসুস্থ করে তুলছিল একটা সময় সিদ্ধান্ত নিয়ে নিলাম বাবা ভাইদের মতো নয় একটু ব্যাতিক্রম কিছু হতে হবে আমাকে, সেই ভেবে SSC সমমানের শর্ট কোর্স শেষ করে, মাদ্রাসা থেকে পালিয়ে গেলাম দূরের এক শহরে সেখানে নিজের পড়ালেখা চালিয়ে যাওয়া এবং নিজেকে টিকিয়ে রাখার জন্য একটা অবলম্বন খুজছিলাম, চাকুরী কিংবা লজিং।🔰🔰
✍️অচেনা শহরের মানুষগুলো এইভাবে মানুষকে বিশ্বাস করে না, কোথাও ঠাঁই হলো না আমার! অবশেষে ফিরে এসে বাড়িতে আশ্রয় নিলাম কিন্ত আগে থেকেই বাড়িতে আমার জন্য রেড এলার্ট⛔ জারি হয়ে আছে, আমি যেন কোনো অবস্থাতেই বাড়িতে স্থান না পাই।
আমার অপরাধ বাবার অবাধ্য হয়ে মাদ্রাসা থেকে পলায়ন।
পড়ে গেলাম মহা বিপদে শহর আমায় গ্রহণ করলোনা, করলোনা নিজের পরিবারও।🔰🔰
✍️কিছুদিন লুকিয়ে দিনের আলোতে অবলম্বন খুঁজি আর গভীর রাতে পেছনের দরজা দিয়ে মায়ের বিশ্বস্ত হাতের আশ্রয়ে নিরাপদ রাত কাটাই তবে নিঃশব্দে ফজরের আযানের সাথেসাথে বাড়ি ছাড়তে হতো।
এইভাবে কিছুদিন অতিবাহিত হওয়ার পর পেয়ে গেলাম একটা টিউশন তাদের চার সন্তান কে সকালে কোরান পড়ানো রাতে বাংলা অংক ইংরেজি। বিনিময়ে তাদের বাড়িতে থাকা খানা ও পকেট খরচ বদাবদ সামান্য মায়না, আমি তো মহা খুশি সাদরে গ্রহণ করলাম এবং হয়ে গেলাম একজন লজিং মাস্টার।🔰🔰
✍️পাশাপাশি একটা আলিয়া মাদ্রাসায় ভর্তি হয়ে গেলাম এই খবর বাড়িতে শোনায় পর তো প্রায় তেজ্য করা হলো আমায়, কারণ সরকারি আর কাওমী মাদ্রাসার দুরত্ব তখন চরমে ছিলো।
যাইহোক আমি আমার মতো এগিয়ে যেতে লাগলাম আরো দুই একটা টিউশন পেয়ে গেলাম। পাশাপাশি নিজের ইনকামের টাকায় নিজেও প্রাইভেট পড়তে লাগলাম। এলাকায় হাফেজ হিসেবে আমার সুনাম চারদিকে ছড়িয়ে পড়লো অনেক জনপ্রিয় হয়ে উঠলাম সেই এলাকায়।🔰🔰
✍️আমার ভালোবাসা...🔷🔷
=====================
লজিং বাড়ির এক মিষ্টি মেয়ের প্রেমে পড়ে গেলাম
তার অপরূপ দৃষ্টি আমার সহজ সরল মনটাকে গায়েল করে নিল, মনে হলো আকাশের কোনো ডানা কাটা পরি পথ হারিয়ে জমিনে বিচরণ করছে আর আমার হাত ধরে সেই হারানো পথ খুঁজে পেতে চাইছে জনম জনমের তরে...🔰🔰
✍️এক অদ্ভুত ভালোলাগা!
জীবনে এই প্রথম কোন মেয়ের প্রেমে পড়লাম! তাকে ছাড়া আমার ভাবনার আকশে সূর্য হাসেনা রাতের আকশে জ্যোৎস্না উঠেনা।
একদিন সাহস করে বলে দিলাম আমি তোমাকে ভালোবাসি
না এইভাবে বাংলা সিনেমার হিরোর মত বলতে পারিনি, চিঠির💌 মাধ্যমে প্রেম নিবেদন তাও এক পত্রবাহক এর মাধ্যমে।
উত্তর আসার আগ পর্যন্ত আমি আর তার সামনে যেতে পারিনি লজ্জায়।🤦♂️ সেই কয়েকটা দিন মনে হচ্ছিল আমি শেষ! যদি উত্তর (না) হয় তবে লজ্জায় এলাকা ছাড়তে হবে এটাই একমাত্র পথ!🔰🔰
✍️৩৩দিন পর উত্তর আসলো এইভাবে হুবহু 👇
★"তোমাকে ধন্যবাদ প্রিয়...
আমার পরম সৌভাগ্য যে তোমার মতো একজনের কাছথেকে ভালোবাসার প্রথম আবেদন পেলাম, যে কথা বলার জন্য আমার মনটা ব্যাকুল হয়ে উঠছিল সেই কথা টা আমাকে বলতে হলোনা। তবে আমার বিশ্বাস হচ্ছেনা চিঠিতে বলা কথাটা কি আসলেই সত্য? যদি সত্য হয়ে থাকে একবার মুখ থেকে শোনার জন্য আজ পুকুর পাড়ে বিকেল চারটায় অপেক্ষা করবো"★🔰🔰
💞💞💞💞💞💞💞💞💞💞💞💞💞💞💞💞💞💞💞💞
✍️চিঠি পড়ে পত্রবাহক কে কতক্ষণ বুকের সাথে জড়িয়ে ধরে রেখেছিলাম জানিনা, অধীর আগ্রহে বিকেল চারটার অপেক্ষায় থাকলাম, মনে হচ্ছিল সেই দিনটি পৃথিবীর সবচেয়ে লম্বা...দিন।
অবশেষে এলো সেই কাঙ্ক্ষিত সময়, যথাসময়ে পৌঁছে গেলাম তবে মুখে সেই কথাটি উচ্চারণ করতে পারলাম না, কিন্ত আমার উপস্থিতিই যথেষ্ট ছিল এটির সত্যতা প্রমাণের জন্য। তারপর তো নিজেকে জীবন্ত শাহজাহান🤴 মনে হতে লাগলো।🔰🔰
✍️প্রেমের টানে দুজনার লেখার পড়ার তখন সাড়ে ১১টা🔷🔷
🤎💖≈≈≈≈≈≈ ≈≈≈≈≈≈ ≈≈≈≈≈≈ ≈≈≈≈≈≈ ≈≈≈≈≈≈💖🤎
দেখতে দেখতে তার এসএসসি পরীক্ষা শুরু হলো
শেষ হলো এবং ডাব্বা মারলো🔰🔰
✍️শুরু হলো বিরহের গল্প🔷🔷
======================
গ্রামের মেয়েরা এসএসসি ফেল করলে তখন শাস্তি হিসেবে বিয়ে দিয়ে দিতেন গার্জিয়ানরা, তার উপর বাবা নেই, ভাইদের খুব তাড়া!?
তার ব্যাপারেও সেই সীদ্ধান্ত! পাত্র দেখা শুরু...
আর আমি আপাদমস্তক একজন ও অপ্রতিষ্ঠিত স্টুডেন্ট। কিন্ত তাকে হারাবার চিন্তাই করতে পারছিনা, অবশেষে তার কাছথেকে ৬মাসের সময় চেয়ে লেখাপড়া গুটিয়ে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার ব্যর্থ চেষ্টায় মগ্ন।🔰🔰
✍️সবার অজান্তে পাড়ি দিলাম আবার শহরে এইবার আর ফিরে আসতে হলোনা, অন্তত নিজেকে টিকিয়ে রাখতে একটা গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিতে চাকুরী নিলাম, সেই এক অমানবিক পরিশ্রম, ভোর থেকে শুরু করে সন্ধ্যা পর্যন্ত কখনো গভীর রাত পর্যন্ত কাজ করতে হতো, সেখান থেকে বের হয়ে বাসায় না গিয়ে ঘুরে বেড়াতাম শহরের অলিতে গলিতে কোথাও যদি একটা ভালো কাজের ব্যবস্থা হয়ে যায়।
কিন্ত চেষ্টা করতে করতে যখন ক্লান্ত প্রায় তখন নিজেকে বোঝালাম ভাই রে তুই কোন বাংলা সিনেমার হিরো নয় যে রাতারাতি প্রতিষ্ঠিত হয়ে যাবি, কিংবা ৪০ লক্ষ টাকার লটারি জিতে বড়লোক হয়ে যাবি 🤭🔰🔰
✍️কিন্ত তাই বলে থেমে যাওয়ার পাত্র নই আমি, যেকোনো মূল্যে তাকে পেতেই হবে এই বাসনা থেকে এক বড় ভাইয়ের পরামর্শ অনুযায়ী মেনুয়াল গ্রাফিক্স আর্টিষ্ট এর কাজ শিখে একটা দোকান দিলাম, সেখনে একটা ফোন ও রাখালাম, ২০০৩ সাল তখনো প্রচুর কল বিক্রি হতো, ভালোভাবেই কাটছিলো দিন।🔰🔰
✍️এইদিকে বাড়ির জন্য মনটা ছটফট করছিল, বাবা-মাকে দেখিনা কতদিন তাই এক বন্ধুর নাম্বারে ফোন দিলাম বাড়ির খবর জিগ্যেস করতেই সে হাউমাউ করে কেঁদে দিল জানতে পারলাম দুমাস আগে বাবা নামক বটবৃক্ষ টি পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে পাড়ি দিয়েছেন না ফেরার দেশে, এই কথা শোনার পর আমার পায়ের নিচ থেকে মাটি সরে যাচ্ছিল,😭😭😭 মাথার উপর আকাশটাও যেন প্রবল বেগে ঘুরছিল, মনে হচ্ছিল বাবা আমার সাথে বড্ড অভিমান করে কোথাও লুকিয়ে আছে, আবার ফিরে আসবে কিন্ত "বাবা" আর ফেরেন নি।
😰😰😰😰😰😰😰😰😰😰😰😰😰😰😰😰😰😰😰😰
✍️আমার জীবনের সবচেয়ে বড় কষ্ট বাবার জানাযায় আমি অংশগ্রহণ করতে পারিনি, পারিনি নিজের হাতে বাবাকে শেষ বিদায় জানাতে, পারিনি শোকাহত মায়ের পাশে বসে সান্তনা দিতে।
নিজেকে যখন পৃথিবীর সবচেয়ে অপরাধী মনে হচ্ছিল ঠিক তখনই খবর এলো ৮দি পর প্রিয়তমার বিয়ে।🔰🔰
✍️মাথার উপর আকাশ ভেঙে পড়ার অবস্থা 🙆♂️🙆♂️
অনেক চেষ্টা করেও আটকাতে পারলাম না, নিয়তির কাছে হার মেনে গেলাম। আমি পাগল প্রায়, মনে হচ্ছিল পৃথিবীতে বেঁচে থাকার সব অবলম্বন গুলো আমার চারপাশ থেকে সরে যাচ্ছে, অচিনপুরের কোন মরুভূমির মধ্যখানে আমি একা দাঁড়িয়ে,,, নিজের ছায়া ছাড়া আর কিছুই দেখতে পাচ্ছিলাম না।🔰🔰
✍️যার জন্য লেখাপড়া ছাড়লাম, যার কারণে বাবার শেষ সময়ে পাশে থাকতে পারলাম না, যার জন্য সেই ভোর থেকে রাত অবধি কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছি, তাকে ছাড়া আমার পৃথিবী !?
আমি ভাবতেই পারছিলাম না, সাধ্যের সবটুকু চেষ্টা করেও যখন ব্যর্থ হলাম।
তখন নিজের চোখে তার চলে যাওয়ার দৃশ্য দেখার চেয়ে মৃত্যুই ভালো এমন ও চিন্তা মাথায় ভর করেছিল, তবে আমার কিছু ভালো বন্ধুর ভালোবাসা ও এক নানার স্নেহের আশীর্বাদে নিজেকে কিছুটা স্বাভাবিক করলাম।🔰🔰
✍️ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা...🔷🔷
======================
এমন পরিস্থিতিতে যখন মানুষ নেশাগ্রস্ত অথবা কোন খারাপ কাজে লিপ্ত হয়ে যায় তখন আমি নিজের ভুল বুঝতে পেরে নতুন করে জীবনটাকে সাজানোর চেষ্টা করছিলাম কিন্ত ভালোবাসা এক অদ্ভুত ব্যাপার এটি হৃদয়কে ক্ষত-বিক্ষত করে দেয় কোনভাবেই স্বাভাবিক হতে পারছিলাম না, নিজেকে লেখাপড়া এবং ব্যবসায় ব্যস্ত রাখার চেষ্টা করছিলাম ঠিকই কিন্ত...
✍️যাইহোক ইতিমধ্যে ইনকাম টা শিখে গেলাম কিন্তু লেখাপড়া ভালো যাচ্ছিলনা।
২০০৪ সালে টেনেটুনে কোনরকম আলিম পাশ করলাম।
নিজেকে যখন পৃথিবীর সবচেয়ে অপরিকল্পিত ছন্নছাড়া এক অপদার্থ মনে হচ্ছিল ঠিক তখনই নিজেকে সুদালাম আল্লাহতালার হুকুমের উপর কারো হাত নাই, চলে যাওয়ার মিছিলে কোন একদিন আমিও হারিয়ে যাব অজানায়...!
অতএব যা কয়দিন বাঁচবো ভালোভাবে বাঁচার চেষ্টা করব। 🔰🔰
✍️বিবাহ...🔷🔷
============
যখন হতাশায় নিমজ্জিত আমার পৃথিবী! তখন এক কঠিন সিদ্ধান্তে উপনীত হলাম, নিজেকে শয়তানের হাতে একলা ছেড়ে দেওয়া যাবে না, চাই একজন উপযুক্ত জীবনসঙ্গী, যার হাতে হাত রেখে শুরু করব আগামী দিনের পথ চলা...
যেই ভাবনা সেই কাজ অনেকটা কাকতালীয়ভাবে এক বন্ধুর বিয়ের অনুষ্ঠানে পেয়ে গেলাম আমার জন্য বরাদ্দকৃত সেই হুরপরীটা কে
আমার অগোছালো জীবনটাকে তার হাতে সোপর্দ করলাম, নিজের জীবনের সব কষ্ট শেয়ার করলাম, নিজে যেমন খুব অল্প বয়সে বিয়ে করেছি তার ও বয়স অনেক কম ছিল তারপরও তার বুদ্ধিমত্তা এবং ধৈর্যশীলতা আমাকে রীতিমত মুগ্ধ করেছে এখনো করে যাচ্ছে... 🔰🔰
✍️বাবা হারা আমার পরিবারে তাকে তার প্রাপ্ত অধিকার আমি কখনোই দিতে পারিনি, ঘরে হয়নি থাকার যায়গা, বড়োসড়ো রান্নাঘরের একপাশে নিজের খরচে একটা রুম তৈরি করার অনুমতি পেলাম অবশেষে, এবং তাই করলাম কিন্ত নিজেকে খুব ছোট মনে হচ্ছিল তার কাছে, কারণ ঘরে থাকার মত খালি রুম থাকা সত্ত্বেও আমার ঠিকানা রান্না ঘরে, তাও পেয়েছিলাম অনেক কষ্টের বিনিময়ে, ভালোবাসা নয় অধিকারের দাবিতে।🔰🔰
✍️নিজেকে একটু গুছিয়ে মাত্র ৮০০টাকা মূল্যের একটা ভাড়াঘরে নিয়ে গেলাম তাকে, খুব ভালো চলছিল দিনগুলো।
আমার বিজনেস এবং বাসা পাশাপাশি হওয়াতে কিছুটা সুখে শান্তিতে বসবাস করতে লাগলাম। 🔰🔰
✍️তারপর সেই ব্যবসা যখন ডিজিটালাইজ হয়ে গেল আমি তখন স্রোতের সাথে নিজেকে আপডেট না করে স্রোতের বিপরীতে পেছনে হেটে নিজের পেশা পরিবর্তন করলাম, করে বসলাম
আরেকটি ভুল!!!🔰🔰
✍️আমার প্রথম চাকরি সেলস মার্কেটিং🔷🔷
================================
দেশের একটি স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান কোকোলা ফুডস লিমিটেড এর সেলস অফিসার হিসেবে শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধিঃ নিযুক্ত হলাম, সেই থেকে আর পেছনে তাকাতে হয়নি, সম্পূর্ণ নতুন একটা পেশায় নিজেকে কিভাবে জানি অল্পদিনে প্রথম সারিতে নিয়ে গেলাম, এবং কিছুদিন একই সাথে আরও একটি কোম্পানি কল্লোল গ্রুপ এর S.O হিসেবেও কাজ করলাম পরে, বউ এর টানে নিজ শহর চট্রগ্রামের মেরিডিয়ান ফুডস লিঃ এ স্থানান্তর হলাম এবং খুব ভালো কাজ করছিলাম।
মার্কেটিং থেকে আমি দুটি জিনিস শিখলাম,
১ নিজেকে স্মার্ট রাখা। (প্রজেটিভ)
২ হাসিমুখে মিথ্যা কথা বলা। (নেগেটিভ)
✍️আমার প্রবাস ✈️🇴🇲জীবন...🌏🔷🔷
=============================
প্রবাস থেকে বন্ধুর জরুরী টেলিফোন... 📱📲
তার পরিচিত ভালো একটা কোম্পানিতে একজন গ্রাফিক্স ডিজাইনার👨💻 লাগবে, সবকিছু শুনে মনের মত মনে হলো, তবে ততদিনে আমি সেই পেশা ছেড়েছি ৩বছর হয়ে গেছে।🔰🔰
✍️তারপরেও প্রচণ্ড আত্মবিশ্বাস থেকে তাকে হ্যাঁ বলে দিলাম। হাতে সময় মাত্র ২মাস পরের দিনই পাসপোর্ট বানাতে দিলাম এবং গ্রাফিক্স কোর্সে ভর্তি হয়ে গেলাম পাশাপাশি চাকুরী ও চলছে , সারাদিন কাজ করে সন্ধ্যার পর থেকে কাজ শিখতাম, হাতে সময়🧭 খুব কম তাই ওস্তাদ কে রিকুয়েষ্ট করে তার বাসাতেই থাকার ব্যবস্থা করলাম, রাত জেগে প্র্যাকটিস সকাল হলে অফিস এইভাবে ১মাস ১৮দিনে পাসপোর্ট হাতে পেলাম, মেডিকেল করলাম, ভিসা ও হয়ে গেল
২০১১ এর ২২ই নবেম্বর বউকে রান্নাঘরের সেই ছিমছাম রুমটাতে রেখেই উড়াল✈️ দিলাম স্বপ্নের শহর ওমানে...🔰🔰
✍️সম্পূর্ণ অপরিচিত একটি দেশ, আলাদা একটি ভাষা, নতুন জায়গা, নতুন পেশা সবমিলিয়ে এক কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি দাঁড়িয়েও নিজ যোগ্যতায় কোম্পানিতে নিজের একটি শক্ত অবস্থান তৈরি করে ফেললাম আল হামদুলিল্লাহ।
✍️এখনো পর্যন্ত সম্মানের সাথে, ভালো সম্মানিতে সততার সাথে নিরলস কাজ করে যাচ্ছি আপন গতিতে... সবার কাছে দোয়ার দরখাস্ত আমি যেন আমার দেশকে এইভাবে রিপ্রেজেন্ট করতে পারি এরাবিয়ান দের কাছে। এখন আমার সিদ্ধান্তে সবকিছু হয় আমার অফিসে।
ডিজাইনিং, ম্যানেজিং, ক্যাসিং সবই আমার নিয়ন্ত্রণে।🔰🔰
✍️আমার প্রাপ্তি...🔷🔷
=================
১) সেই রান্না ঘরের কোণে ছোট্ট রুম থেকে নিজের কেনা যায়গায় নিজ বাড়িতেই এখন বাস করেন আমার ভালোবাসা... 💞 আমার স্ত্রী 🌿
২) দেখতে দেখতে আমি এখন তিন সন্তানের👨👧👧 দায়িত্ববান বাবা👨💻🌿
৩) আমার পৃথিবী আমার "মা" আমার কাছে আমার বাড়িতেই,
এটি আমার অর্জিত সবচেয়ে বড় সম্পদ 💛🤍
৪) আমার নিজ হাতে গড়া স্বপ্নসিঁড়ি প্রবাসী কল্যাণ সমিতি ওমান।
এখন স্বপ্নের খুব কাছাকাছি দাঁড়িয়ে। 🌿
৫) আমার অনলাইন অন্ড অফলাইন বিজনেস Graphic World
যা এই ফাউন্ডেশনে লেগে থাকার সাহস ও স্যারের শিক্ষা থেকেই অর্জন।
৬) আমি এখন বুকে হাত দিয়ে বলতে পারি আমি একজন "ভালো মানুষ"
কারণ আমি নিজের বলার মত একটা গল্প ফাউন্ডেশন এর একজন আজীবন গর্বিত সদস্য।🔰🔰
✍️আমার আক্ষেপ...🔷🔷
===================
একটাই আক্ষেপ স্টুডেন্ট লাইফে কেন ইকবাল বাহার জাহিদ স্যার কে পেলাম না, যদি পেতাম আমার লাইফে করে আসা ভুলগুলো হয়তো করতাম না।
কেন পেলাম না এত সুন্দর একটি প্ল্যাটফর্ম যেখানে শতভাগ মানুষের চিন্তাধারা পজেটিভ। আমি আমার ভাষায় এ প্ল্যাটফর্মকে
★★★স্বপ্নপুরী★★★ বলবো।🔰🔰
✍️আমার স্বপ্ন...😴✊🔷🔷
====================
আমি একজন ভালো ও বিশ্বস্ত বিনয়ী মানুষ হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করতে চাই এবং একজন সফল উদ্যোক্তা না হওয়া পর্যন্ত লেগে থাকতে চাই।
কখনো ভাবিনি নিজেকে উদ্যোক্তা কিংবা বিজনেসম্যান হতে হবে, এখন প্রতিদিন স্বপ্ন দেখি নিজেকে ছাড়িয়ে যাবার, এবং একদিন নিশ্চয়ই সফল হবো।
🔰🔰---------------------ইনশা আল্লাহ--------------------🔰🔰
📌স্ট্যাটাস অফ দ্যা ডে -৮৫১
তারিখ ১১-০৮-২০২২ইং
🔴এইচ, এম, আব্দুল্লাহ🙋♂️🌿
🔴ব্যাচঃ ১৫ 🌿
🔴রেজিষ্ট্রেশনঃ ৭৪৩৬৯ 🌿
🔴জেলাঃ চট্রগ্রাম। 🌿
🔴বর্তমানঃ ওমান প্রবাসী 🌿
🔴পেশাঃ গ্রাফিক্স ডিজাইনার 🌿
🩸ব্লাড গ্রুপঃ AB+🌿
📳0096878098037🇴🇲-01765891113🇧🇩