প্রতিটা লাইন ধরে নিজেকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি।
💞💞💞💞জীবনের গল্প💞💞💞💞
গল্পটি পড়ার অনুরোধ রইলো❣️
🌿 বিসমিল্লাহির রহমানির রাহিম
🌷আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ
🌺 পরম করুনাময় অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি।
🌷সকল প্রশংসা সৃষ্টিকর্তা মহান রাব্বুল আলামিনের উপর যিনি আমাদের কে ৬৮ হাজার মাখলুকতের মধ্যে শ্রেষ্ঠ করে দুনিয়াতে পাঠিয়েছেন এবং যার অশেষ রহমতে করোনা মহামারির ভিতরে আমাদেরকে দয়া মায়া করে বাচিয়ে রেখেছেন ও সুস্থ রেখেছেন।
💞💞 " আলহামদুলিল্লাহ "💞💞
💙হাজারো দরুদ সালাম প্রেরণ করছি মানবতার মুক্তির দূত হযরত মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রতি।
❣️আমি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি আমার জন্মদাতা মা বাবার প্রতি যাঁরা অক্লান্ত পরিশ্রম করে আমাকে লালনপালন করে বড় করেছেন। ❣️
💞আমি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি আমাদের সবার প্রিয় মেন্টর, প্রিয় শিক্ষক, তরুণ প্রজন্মের আইডল,পথ হারা বেকারদের পথের দিশারি Iqbal Bahar Zahid স্যারের প্রতি যার অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে আমরা পেয়েছি এত সুন্দর একটি প্লাটফর্ম । যার জন্ম না হলে আমরা এই প্লাটফর্ম হতো না। আমাদের সবার অভিভাবক প্রিয় মেন্টর ইকবাল বাহার জাহিদ স্যার এর প্রতি কৃতজ্ঞতার শেষ নেই যতই বলি শেষ হবেনা। যার অনুপ্রেরনায় অনুপ্রাণিত হয়ে লাখো তরুণ তরুণী কিছু একটা করার ইচ্ছে নিয়ে "নিজের বলার মতো একটি গল্প " তৈরি করছে 💞💞
আমার জন্ম নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারে আমার বাবা ছিলেন একজন দিন মজুর এবং আমার মা ছিলেন গৃহিণী। আমরা দুই ভাই মা বাবা সহ চারজনের পরিবার। আমার বাবা আমাদের সহরেই একটি ধান, চাল, ডালের আড়ৎ এ কাজ করতেন পাশাপাশি আন্যের জমি ইজারা নিয়ে কৃষিকাজ করতেন।
আমার বাবা ছিলেন পরিবারের বড় সন্তান তাই তাকে অনেক ছোট বেলা থেকেই কাজ করতে হয়েছে। আমার বাবা মা দুজন ই খুব ভালোমানুষ ছিলেন । আমার মা বাবা আমাদের দুই ভাইকে নিয়ে আনেক কষ্ট করতেন। আমাদের পারিবারিক জমি জমা তেমন ছিলোনা।
আমার ছেলে বেলা খুবই ভালো কেটেছিলো। আমার মা বাবা আমাদের কে অনেক শাসন করতেন ভালোবাসতেন। ভালো মানুষ হওয়ার তাগিদ দিয়েছেন এবং আমাদের দ্বারা কখনো কারো কোনো ক্ষতি যেন না হয়। আলহামদুলিল্লাহ ভালোই কাটছিলো ছেলে বেলা। আমার আশেপাশের মানুষ আমাদেরকে আনেক ভালোবাসতেন কারন আমরা খুবই নম্র ভদ্র ছিলাম।
আমার শিক্ষাজীবন
আমার প্রাইমারীর দুই বছর কেটেছে গ্রামের স্কুলে তখন আমার রোল ছিলো ( ১ )।দ্বিতীয় শ্রেণীতে শহরের একটি প্রাইমারী স্কুলে ভর্তিহই স্কুলটি ছিলো আমার বাড়ি থেকে তিন কিলোমিটার দূরে পায়ে হেঁটে স্কুলে যেতাম। প্রতিদিন সকাল আট টায় স্কুলে যেতাম বিকেল চার টা্য় বাড়ি আসতাম। দুপুরের জন্য খাবার নিয়ে যেতাম টিফিনের টাকা সবসময় পেতাম না। তবে ভালোই কাটতে ছিলো আমাদের জীবন "আলহামদুলিল্লাহ "।
😥😥 আমার জীবনে ঝড় নেমে আসে ২০১১ সালে আমি পঞ্চম শ্রেনিতে থাকা কালে। আমার মা হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পরেন বরিশালে নিয়ে যাওয়া হয়।চিকিৎসাধীন অবস্থায় আমার মা ইন্তেকাল করেন। আমাদের কে এতিম করে দিয়ে ২০১১ সালের মার্চ মাসে না ফেরার দেশে চলে যান মা।
🤲আমার মায়ের জন্য সবাই দোয়া করবেন আল্লাহ পাক যেন আমার মাকে জান্নাতুল ফেরদৌসের নসিব করেন "আমিন আমিন ছুম্মা আমিন "।🤲
মা কে হারানোর শোক কাটিয়ে উঠে আবার স্বাভাবিক হই লেখাপড়া শুরু করি। পরে আমি লেখাপড়ায় একদম ফাঁকিবাজ হয়ে যাই। এক পর্যায়ে PSC Exam এর আগে লেখাপড়া বাদ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেই পরে এক পর্যায়ে নানির কাছে বলি আমি Exam দিবোনা নানি সবাই কে বলে দেয়। পরে বড় ভাইয়ের হাতে মার খেয়ে আবারো স্কুলে যাই। পরিক্ষা দেই হাইস্কুলে উঠি একটু মনোযোগ দিয়ে লেখাপড়া করি। আমি স্টুডেন্ট হিসেবে মোটামুটি ছিলাম JSC তে 4.83 পাই। ব্যবসা বিভাগে ভর্তি হই। তখন খুব কষ্ট করতাম নিজেদের গরু ছিলো স্কুল থেকে গিয়ে গাইয়ের ঘাস কাটতাম। বাবার সাথে কৃষিকাজে সহযোগিতা করতাম। দিন মজুরি কাজ করতাম, মাটি কাটতাম ধান কাটতাম । এভাবেই কাটতো শিক্ষা জীবন তবে আমার কাছে খুব ভালো লাগতো যখন দেখতাম আমার প্রাইভেটের এক মাসের বেতন আমি দিচ্ছি,স্কুলের বেতন কোনো এক মাসের টা আমি দিয়েছি। বাবাকে একটা লুঙ্গি কিনে দিয়েছি আমার কষ্টের টাকায়। কাজ গুলো করে মনে একটা প্রশান্তি পেতাম "আলহামদুলিল্লাহ"। এভাবেই চলছিলো SSC তে রেজাল্ট খারাব করি 3. 67 পাই ।
ইন্টারেও ব্যবসা শাখা বেছে নেই। SSC এর পরে পড়াশোনা ভালো লাগতে শুরু করলো তবে আর পড়াশোনা করা হয়ে ওঠেনি। কলেজে এক বছর যাওয়া হয়েছিলো। এক পর্যায়ে পরিবারের কথা চিন্তা করে প্রবাসে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেই।
🌴🌴🌴 প্রবাসী জীবন 🌴🌴🌴
পড়াশোনার এক পর্যায়ে দেখলাম যে খরজের পরিমানটা অনেক বেশি কলেজের বেতন প্রাইভেট সব মিলিয়ে আমার বাবার পক্ষে কষ্টকর। পড়াশোনা ছেড়ে দিয়ে একমাত্র আমার বাবার কথা ভেবে প্রবাসে আসি। এক কাকার মাধ্যমে সৌদি আরবের ভিসা নেই বলে ছিলেন কোম্পানির ড্রাইভার। ভিসা বাবদ তাকে ৪ লক্ষ টাকা দেই অন্যান্য খরচ মিলে ৪.৫০ লক্ষ টাকা দিয়ে ২০১৮ সালের ১০ জুলাই প্রবাসে আসি। পারিবারিক দেন ছিলো ১ লক্ষ টাকা সব মিলিয়ে ৫.৫০ লক্ষ টাকা দেন।
সৌদি এসে কাজ পাই খেজুরের বাগানে ১৫ দিন ভালোই কাটছিলো তার পড়ে খেজুর পাকা শুরু করলো আমার মালিক পাকা খেজুরের বিজনেস করতো তখন ১৮ জন লোক কাজ করতাম। দিনে খেজুর পারতাম রাতে প্যকেজিং এভাবে চলতে লাগলো সকাল ৬টা থেকে রাত১২টা টানা ১৮ ঘন্টা ডিউটি করতাম। এক মাস শেষ হলো বেতন পেলাম ৯০০ রিয়াল বলা হয়েছিলো ১৪০০ পেলাম ৯০০রিয়াল।
দ্বিতীর মাসে ডিউটি আরও বেশি সকাল ৬টা টু রাত ২টা ৩টা কোনো দিন ৪টা বাজতো এভাবে টানা ১৮ থেকে ২১ঘন্টা ২২ ঘন্টা ডিউটি করেছি।
আমরা মাছে ভাতে বাঙালি কিন্তুু এখানে দুপুরে খেতাম আলুভাত রাতে আটার রুটি সবজি সকালে রুটি সবজি।
এমনও হয়েছে কোনো দিন সকালে রুটি ছিলো সবজি নাই আবার সবজি আছে রুটি নাই। এভাবে কাটালাম তিন মাস খুব কষ্ট হতো ভেবেছিলাম দেশে চলে যাব তখন বাবার কথা ভাবলাম আমি দেশে গেলে বাবাকে কাজ করতে হবে তাই ভেবে থেকে গেলাম। খেজুর শেষে কপিলের নিজের বাগানে গেলাম। সেখানে কিছু ছাগল ছিলো আমি আসার পরে আরও ভেড়া কিনলো। এখন ৪০০ ছাগল ভেড়া হলো মাঠে চড়াতাম ঘাসের চাষ করতাম। তখন ১০ ১২ ঘন্টা ডিউটি করতাম রাতে বাসায় গিয়ে রান্না করতাম। মরুভূমির মাঝে একা থাকতাম বিদ্যুৎ ছিলোনা কাছে কোনো দোকান ছিলোনা কপিল যা এনে দিতো তাই খেয়ে জীবন কাটতো ভাত, ডাল,আলু সবজি। মুরগির কথা বললে আনতো না বলতো ভুলে গেছি এভাবেই কাটতো জীবন। প্রতি বছর চার মাস কাটত খেজুরের কাজে সেই প্রথম বারের তিন মাসের মতো একই রুটিনে রুটি, আলুভাত ২০,২২ ঘন্টা ডিউটি। তিন বছর কেটেছে ওখানে মাঝে দেশে গিয়েছিলাম।
আলহামদুলিল্লাহ দেড় বছরের মাথায় বাবাকে মানুষের কাজ থেকে বিরতি দিতে পারছি।বাবা বাড়িতেই থাকেন নিজের কাজ করছেন। কিছুদিন হলো চলে এসেছি মালিকের কাছ থেকে আর পারছিনা ওখানে । বর্তমানে রিয়াদে আছি কাজ করছি আলহামদুলিল্লাহ । তা-ও তেমন ভালো অবস্থান নেই কিছু দিন ভালো কাজ ছিলো এখন কাজ তেমন হচ্ছে না বেতন বাকি পড়ে গেছে । আশা করছি এক বছর পড়ে দেশে যাবো নিজের মতো করে কিছু একটা করবো। নিজের বলার মতো একটি গল্প তৈরি করবো ইনশাআল্লাহ।
আমি দুটি উদ্যোগের স্বপ্ন দেখছি স্বপ্ন বাস্তবায়নের চেষ্টা করছি। আমার জন্য সবাই দোয়া করবেন আশা রাখি সবাই পাশে থাকবেন আমি যেন আমার স্বপ্নের উদ্যোগটি বাস্তবায়ন করতে পারি।
🌲🌱ফাউন্ডেশনে আসা🌱🌲
সৌদি প্রবাসী কামরুল হাসান রাসেল নামের এক ভাইয়ের উদ্যোগতার গল্প ঢাকা মিটআপ এর একটি ভিডিও দেখি। অনেকটা অনুপ্রেরণা পেলাম তার কথায় তখন অনেক খুঁজতে থাকি এক পর্যায়ে পেয়ে গেলাম "নিজের বলার মতো একটি গল্প ফাউন্ডেশন"
তখন রেজিষ্ট্রেশন টিম মেম্বার আবুল খায়ের ভাই আমাকে রেজিষ্ট্রেশন করে দেন।
মডারেটর মানসুরা রিনা আপুর মাধ্যমে বরগুনা জেলা ম্যাসেঞ্জারে যুক্ত হই। এখানে আমি অসংখ্য ভাইবোন পেয়েছি। আমি ধন্যবাদ জানাচ্ছি আবুল খায়ের ভাই ও মানসুরা রিনা আপুকে আমাকে এই গ্রুপে যুক্ত করে দেয়ার জন্য।
এখান থেকে আমি শিখতে পেরেছি কিভাবে নিজেকে ভালোবাসতে হয়, অসহায়ের পাশে দারাতে হয়, মানুষ কে ভালোবাসতে হয়। কীভাবে একজন সফল উদ্যোগতা হওয়া যায়
এই ফাউন্ডেশনে না আসলে বুঝতেই পারতাম না যে কীভাবে একজন ভালো মানুষ হওয়া যায়।
এই ফাউন্ডেশনে যুক্ত হয়ে প্রতি নিয়ত শিখছি জানছি।
স্যারের প্রতিটা সেশন, প্রতিটা লাইন ধরে নিজেকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি।
আমার লেখার ভিতর কোনো ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন এবং ভুল গুলো ধরিয়ে দিবেন।
সকলে উৎসাহ দিয়ে আমার পাশে থাকবেন।
সকলকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
📌স্ট্যাটাস অফ দ্যা ডে ৮৫২
তারিখ ১২-০৮-২০২২ইং
💞মোঃ জাহিদুল ইসলাম
💞ব্যাচ নং ১৭
💞রেজিষ্ট্রেশন নং ৮৪১২২
💞নিজ জেলাঃ বরগুনা
💞উপজেলাঃ আমতলী
🇸🇦বর্তমান অবস্থানঃ সৌদি আরব রিয়াদ একজন রেমিট্যান্স যোদ্ধা