যাদের বাবা-মা আছে তাদের খেদমত করবেন
🌼আসসালামু আলাইকুম 🌼
👉মহান আল্লাহর নিকট শুকরিয়া আদায় করছি। যিনি আমাকে আপনাকে সুস্থ রেখেছেন। এই জন্য মহান আল্লাহর নিকট অন্তর থেকে শুকরিয়া আদায় করছি৷ (আলহামদুলিল্লাহ)
👉 হাজার হাজার দরুদপাঠ পাঠ করি আমাদের সকলের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রতি।
যাকে সৃষ্টি না করলে এই দুনিয়া সৃষ্টি হতো না।
🌼 আর মহান আল্লাহর নিকট অন্তর থেকে দোয়া করি। মহান আল্লাহ যেন আমাদের সকলকে আল্লাহর হুকুম মেনে চলতে পারি, আল্লাহ যেন আমাদের সেই তৌফিক দেন।
🌼🌼🌼🌼 কৃতজ্ঞতা প্রকাশ🌼🌼🌼🌼
🌿 কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি, আমার প্রিয় মা বাবা-মা এর প্রতি। যারা আমাকে দুনিয়া দেখার সুযোগ করে দিয়েছেন।
🌿🌿 কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি আমাদের সকলের প্রিয় অভিভাবক আমাদের সকলের প্রিয় মেন্টর Iqbal Bahar Zahid স্যার এর প্রতি। যিনি আমাদের জন্য এমন একটি প্রতিষ্ঠান তৈরি করে দিয়েছেন যেটা সারা দেশে এমন ফাউন্ডেশন আর নেই। অসংখ্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি প্রিয় স্যার এর প্রতি। স্যার এর কথা বলে শেষ করা যাবে না।
👉দোয়া করি মহান আল্লাহর নিকট, আল্লাহ যেন প্রিয় স্যার কে নেক হায়াত দান করেন এবং সবসময় সুস্থ রাখেন।
🌱🌱🌱জীবনের গল্প 🌱🌱🌱
👉আসলে আপনাদের সাথে কিছু কথা সেয়ার করতে আসছি। আমি প্রথমে পরিচয় টা তুলে ধরার চেষ্টা করছি।
🌼পরিচয়ঃ আমার নাম মুহাম্মদ মনজুরুল।
ফেনী জেলার, ফুলগাজী উপজেলার, ২নং মুন্সীর হাট ইউনিয়নের, ফকিরের খিল গ্রামে, জন্ম গ্রহণ করি, ১৯৯৭ সালের ১০ শে নভেম্বর।
👉পিতাঃ রুহুল আমিন।
👉মাতাঃ নাছিমা আক্তার।
👉 তিন ভাই, বোন নেই।
🌿🌿 এডুকেশন যোগ্যতা 🌿🌿
👉এস এস সি।
👉 এইচএসসি
👉 অনার্স (চলমান)
👉 ফাজিল (চলমান)
বিঃদ্রঃ সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন, যেন পড়াশোনা শেষ করতে পারি।
🌿🌿🌿 আমি এমন একজন মানুষ, যার জীবনে কেউ থাকেনা। দুই ভাইয়ের পর আমি জন্ম নিয়েছিলাম খুব সুন্দর ছিলো শিশু কাল টা। মায়ের আদর, বাবার স্নেহ, তাদের ভালোবাসা ঘিরে ছিলো আমাকে। বয়স যখন ৩-৪ বছর হয় তখনই হারিয়ে ফেলছি আমার "মা" কে। তার ১ বছর পর হারিয়েছি প্রিয় বাবা কে ।
🌼🌼 বাবা-মা কে হারানোঃ
👉জীবন কি? বুজতাম না বুজতেও শিখিনি এমন সময় আমার "মা" আমাকে ছেড়ে চলে যায় আল্লাহর ডাকে সাড়া দিয়ে। আসলে মা কি? তখনও বুঝিনি বুঝতেও শিখিনী তখন, তবে হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছি মা কত যে আপন কত যে প্রয়োজনীয় অমূল্য সম্পদ।
👉ভাগ্য এতোই যে খারাপ হবে বুঝতে পারিনি। মায়ের একবছর পরপরই বাবা ও চলে যায় আমাকে ছেড়ে আল্লাহর ডাকে সাড়া দিয়ে।
🌿🌿একলা জীবনঃ
🌸বাবা-মা কে হারানোর মতো কষ্ট হয়তো দুনিয়ায় অন্য কিছু নেই। খুব অনিশ্চিত এবং অগোছালো জীবন কি করবো কার কাছে যাবো কিছুই জানিনা আর ওই বুঝ টাও তখন ছিলো না আমার।
👉আমার এমন কপাল, শুনেন এরপর আমাকে আমার সেজো আন্টি আমাকে নিয়ে যায় আমার তো তখনও তেমন বুঝতে পারতাম না। ভাগ্য খারাপ একবছরের মাথায় আমার আন্টিও আল্লাহর ডাকে সাড়া দিয়ে চলে যান।
🌿🌿কষ্ট টা তখনও বুজেতে পারিনি আমি, তবে আস্তে আস্তে বুঝতে পারি আসলে মা কি জিনিস বাবা কি জিনিস। বাবা-মা যদি না থাকে একজন সন্তান কতটা অবহেলিত হয় যার বাবা-মা নেই সেই জানে কষ্ট টা।
🌿🌿 এরপরে নিয়ে গেলো আমার বড় আন্টি। এরমাঝে স্কুলে ও ভর্তি হয়েছিলাম।
🌼🌼🌼ছাত্র জীবনঃ
👉আমি প্রথমত চতুর্থ শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা করেছি। এরপর আমি মাদ্রাসায় ভর্তি হয়েছি, পড়াশোনা করতেছি কুরআন নিয়ে।
আমার বাবা-মা এর দোয়া ছিলো হয়তো আমার প্রতি। আল্লাহর রহমতে আমি হাফেজ হয়েছি।
কুরআন মুখস্থ করার সৌভাগ্য হয়েছে আমার।
এর মাঝেও আসলে অনেক কথা, বিভিন্ন মাদ্রাসায় পড়েছি খাওয়া দাওয়া মাদ্রাসার পক্ষ থেকে দিয়েছে। আপনারা তো জানেন মাদ্রাসার ছেলেরা পড়াশোনা করতে চায় না। অনেক দিকে পালিয়ে যায়। আমিও গিয়েছি পড়াশোনা করবো না কাজ করবো আরও অনেক কিছু ।
তাও তিন চার দিন মাদ্রাসার বাহিরে থাকলে মন বুঝতো না, মনে হতো আমি মাদ্রাসায় চলে যাবো আমার তো কেউ নেই আমি পড়াশোনা করতে হবে।
চলে যেতাম নিজ থেকে মাদ্রাসায়। হাফেজি শেষ করেছি। ( আলহামদুলিল্লাহ?
🌿🌿 তারপর নিজ থেকে অষ্টম শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছি মাদ্রাসায়। তখন একটা ঘরে লজিং মাস্টার হিসেবে থাকছি একবছর। যাতে পড়াশোনা ও ভালো হয়। পাশাপাশি টিউশন করে পড়ার খরচ বহন করতাম। অষ্টম শ্রেণির J.D.C পরিক্ষা দিয়েছি ((৪.৯৬)) মার্ক নিয়ে উত্তীর্ণ হয়েছি। (আলহামদুলিল্লাহ)
🌿 বিঃদ্রঃ পরিক্ষা শেষে সব তো বন্ধ ছিলো তাই বড় ভাইয়ের বাসায় গিয়েছিলাম বেড়াতে। ১৫ দিনের জন্য। এই ১৫ দিনে যে অবহেলিত হয়েছি বুঝাতে পারবো না।
😢তখন শীতকাল ছিলো আমাকে রাতে একটা পাতলা কাঁথা দেওয়া হতো আমার বড় ভাইয়ের স্ত্রী।
😢সে খাবার খেয়ে ভাতে পানি দিয়ে দিতো আমি না খেয়ে সারা রাত কাটাতাম।
😢সকালে যদিও ভাত দিতো পেঁয়াজ কেটে গুঁড়া মরিচ দিয়ে মেখে দিতো। যাই হোক অনেক বলা যায় বাকিটা আপনারা বুঝে নেন।
লাস্ট পর্যন্ত আমি নবম শ্রেণিতে ভর্তি হওয়ার জন্য কিছু টাকা জমিয়েছিলাম। সে এগুলা দেখে বলে আমি ওদের টাকা চুরি করচি। অপবাদ গুলো সহ্য করতে না পেরে বেরিয়ে গেছি। এরপর মসজিদে চাকরি নিলাম। এরপর নবম শ্রেণিতে ভর্তি
👉 তারপর বিজ্ঞান বিভাগ (science group) নিয়ে নবম শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছি মাদ্রাসায়।
আলহামদুলিল্লাহ চেষ্টা করছি পড়াশোনা ও ভালো ছিলো।
👉👉পড়াশোনার পাশাপাশি নবম শ্রেণির শেষ এর দিকে একটা মসজিদে নামাজ পড়ানোর দায়িত্ব নিয়ে খেদমত করা শুরু করি। পড়াশোনা ও চলতেছে ভালো। মসজিদ এবং টিউশন করে পড়াশোনার খরচ বহন করছি বিজ্ঞান বিভাগ এর খরচ একটু বেশি ছিলো। আর থাকা খাওয়া তো মসজিদে করতাম। তার পর এসএসসি পরীক্ষায় (জিপিএ ৪.৮৯) নিয়ে উত্তীর্ণ হয়েছি। ( আলহামদুলিল্লাহ)
🌼 বিজ্ঞান বিভাগে যেহেতু খরচ বেশি। আমার তো খরচ বহন করার কেউ ছিলো না। ইচ্ছে থাকা শর্তেও বিজ্ঞান বিভাগে পড়তে পারিনি তাই বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জেনারেল এ ভর্তি হয়ে যাই মাদ্রাসায় আলিম ১ম বর্ষে। এরপর আলিম ১ম ও ২য় বর্ষে এইচএসসি পরীক্ষায় (জিপিএ ৪.৫৩) নিয়ে উত্তীর্ণ হয়েছি। আলহামদুলিল্লাহ
🌼 তার পর অনার্সে ভর্তি হয়েছি ফেনী সরকারি কলেজে। ( সমাজকর্ম বিভাগে)
ফাজিল বা ডিগ্রিতে ভর্তি হয়েছি মাদ্রাসায়। মুন্সীর হাট ইসলামিয়া ফাজিল ডিগ্রি মাদ্রাসায়।
এখনও পড়াশোনায় রয়েছি। সবাই দোয়া করবেন আমার জন্য।
🌿🌿🌿আরও কিছু কথা 🌿🌿🌿
পড়াশোনা করতে করতে কিছু টাকা জমাই। জমানো টাকা দিয়ে ৩,৫০,০০০ টাকা দিয়ে একখণ্ড জমি ক্রয় করি। এরপর ১,৫০,০০০ টাকার বাড়িতে কাজ করছি। মাটি কাটা, সাইডে বাউন্ডারি করা ইত্যাদি।
কিছু ইট নিয়ে ব্যবসা করেছি পাশাপাশি। সারাদিন টিউশনি করিয়েছি।
🌿এরপর স্যার এর অনুপ্রেরণা নিয়ে চাকরি ছেড়ে দিয়ে একটা খামার দিয়েছি।২,০০০০০ টাকা দিয়ে শুরু করেছি। এখন আমার ২ টা খামার রয়েছে।
🌿🌿 বিঃদ্রঃ খামার দেওয়ার পর আবারও নিজের আত্মীয় স্বজনরা অবহেলা করতে লাগলো।
আমার একটা আত্মীয়ের ঘরে থাকতাম।
আমিও খরচ বহন করতাম কিছু। তাও আমাকে অনেক আঘাত দিয়েছে তাঁরা।
😢আমাকে ডিরেক্ট ঘর থেকে বের হয়ে যেতে বলা হয়েছে।
আমি না বের হলে আমার সকল জিনিসপত্র বাহিরে ফেলে দিবে বলছে। এসব শুয়ে বের হয়ে গেলাম এবং দিশেহারা অবস্থায় গুরতে থাকি।
🌿🌿আরও অনেক কথা ছিলো সব তো লিখে বুঝানো যায় না। সবাই দোয়া করবেন আল্লাহ যেন আমাকে আরও অনেক দুরে এগিয়ে নিয়ে যায়।
🌿 লাখ লাখ শুকরিয়া আদায় করছি প্রতিনিয়ত মহান আল্লাহর নিকট। যিনি আমার বাবা-মা না থাকা সত্বেও আমাকে এখনও সঠিক পথে ভালো পথে পরিচালিত করছেন।
🌿 আমিও পারতাম অন্য ৪/৫ জন এর মতো খারাপ পথে চলে যেতাম। তবে আল্লাহ আমাকে হাজারো অবহেলা দুঃখ কষ্টের মাঝে সঠিক পথে পরিচালিত করছেন। সেজন্য আল্লাহর নিকট শুকরিয়া আদায় করছি। আলহামদুলিল্লাহ
🌿 সাধারণত বাবা-মা না থাকলে ছেলে সন্তান খারাপ পথে চলে যায়। আমার উপর আমার বাবা-মা এর দোয়া ছিলো এবং আল্লাহর রহমত ছিলো তাই হয়তে এতটুকু আসতে পেরেছি।
🌿 সবাই আমার বাবা-মা এর জন্য দোয়া করবেন। আল্লাহ যেন তাদের জান্নাতবাসী করেন। আর আমার জন্য দোয়া করবেন আমি যেন ভালো মানুষ হতে পারি।
🌿🌿নিজের বলার মতো গল্প এখনও হয়নি। উদ্দোক্তা জীবন অন্য সময় বলবো ইনশাআল্লাহ।
🌺🌺কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি আমাদের নিজের বলার মতো গল্প ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা জনাব ইকবাল বাহার জাহিদ স্যার এর প্রতি। যিনি এতে সুন্দর একটা প্রতিষ্ঠান তৈরি করে দিয়েছেন আমাদের সকলের জন্য।
🌱🌱🌱সবার জন্য কিছু কথা🌱🌱🌱
আমি তো অনেক কষ্ট করে এতো টুকু এসেছি।তবে কখনও মনোবল হারাইনি। চেষ্টা করে গিয়েছি প্রতিনিয়ত পড়াশোনার পাশাপাশি।
🥀 আপনারাও পারবেন নিজের প্রতি দৃঢ় বিশ্বাস রেখে সামনে এগিয়ে যান অনেক অনেক ভালো কিছু করতে পারবেন।
🌹আর যাদের বাবা-মা আছে তাদের খেদমত করবেন, সেবা করবেন। তাদের কখনও কষ্ট দিবেন না। যার বাবা-মা নেই সেই জানে কষ্ট টা কেমন। বিশ্বাস করেন এমন কোনো রাত নেই বাবা-মা এর জন্য চোখের পানি ঝরে না। সবাই সবার বাবা-মা এর সেবা করবেন।
আর আমার বাবা-মা এর জন্য দোয়া করবেন সবাই।
🙏🙏🙏পরিশেষে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি 🙏🙏🙏
👉আপনাদের মূল্যবান সময় টা নষ্ট করার জন্য আসলে আমি দুঃখিত🙏🙏
❤️❤️আর সবাইকে অসংখ্য কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি এবং অসংখ্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি ধৈর্য্যসহকারে পড়ার জন্য।
🌿🌿আসসালামু আলাইকুম 🌿🌿
📌স্ট্যাটাস অফ দ্যা ডে ৮৫৪
তারিখ ১৭-০৮-২০২২ইং
👉মুহাম্মদ মনজুরুল ইসলাম
👉জেলা ফেনী
👉উপজেলা ফুলগাজী
👉ব্যাচ নং দশম
👉রেজিষ্ট্রেশন নং ১৭২২৩
👉পরশুরাম উপজেলা এম্বাসেডর