দেশের মানুষের কিছুটা হলেও সপ্ন পূরণ করতে পারি
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম
আসসলামু ওয়ালাইকুম ।আশা করছি সবাই আল্লাহর রহমতে ভালো আছেন।
✍️✍️আজকে আমি আমার জীবন গল্পের আগে যার গল্প শুরু হয়েছিল ,আমার বাবার জীবন গল্প আপনাদের সাথে শেয়ার করবো।
🤲🤲শুরুতেই লাখো কোটি শুকরিয়া জ্ঞাপন করছি মহান আল্লাহর কাছে যিনি আমাকে এই সুন্দর ধরনীতে সৃষ্টি করেছেন,আলহামদুলিল্লাহ এখনো সুস্থ অবস্থায় রেখেছেন।
🤲🤲লাখো লাখো দুরদ পেশ করছি মানবতার মুক্তির দিশারী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম এর প্রতি।
♥️♥️কৃতজ্ঞতা জানাই লাখো মানুষের স্বপ্নদ্রষ্টা , উদ্যোক্তা তৈরির সাথে সাথে ভালো মানুষ গড়ার কারিগর শ্রদ্ধেয় প্রিয় মেন্টর জনাব ইকবল বাহার জাহিদ স্যারকে, যার অক্লান্ত পরিশ্রমে,ভালোবাসায় তিলে_তিলে আজকের নিজের বলার মত গল্প ফাউন্ডেশন দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিশ্বের ৫০টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে।আমার মত লাখো লাখো মানুষ স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছে।
✍️✍️ 🌸🌸 আমার বাবার জীবন গল্প🌸🌸✍️✍️
বাবার জন্ম ও পরিচয়:
আমার বাবার নাম,মুহাম্মদ জামাল ।লোহাগাড়া থানার পদুয়া ইউনিয়নের এক নিম্ন মধ্যবিত্ত মুসলিম পরিবারে ১৯৬২সালে বাবার জন্ম।আমার বাবার পৃথিবীতে আগমন ছিল আমার দাদা_দাদীর আকাশের চাঁদ পাওয়ার মতন।বাবার জন্মের আগে তাদের ছয় সন্তান মারা গেছে বিভিন্ন রোগে।🥲🥲আমার বড় আব্বুকে দত্তক নেওয়ার পর আমার বাবার জন্ম।বড় আব্বুকে দাদা_দাদী নিজের সন্তানের চেয়ে বেশী ভালোবেসে গেছেন যেটি আমি কখনো দেখিনি কারও কাছে।
বাবার শৈশবকাল এবং শিক্ষাজীবন:
বাবার শৈশব কাল খুব একটা মধুর ছিলনা।দাদীর মুখে শুনেছি বাবা অনেক কষ্ট করে নিজের শ্রম দিয়ে মানুষ হয়েছেন আমার দাদী সহ পাড়ার সবাই গর্ব করে আমার বাবাকে নিয়ে,কারণ বাবা অনেক কষ্ট করে পড়াশুনা করতেন যা ওই গ্রামে বিরল গঠনা ছিল।
আমার দাদারা সবাই জমিতে চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন।আমার বাবার পড়ার আগ্রহ ছিল অনেক।তাইতো বাবা নাকি বিভিন্ন মওসুমি ফল বিক্রি করে পড়াশুনার খরচ চালাতেন এমনকি প্রতি শুক্রবারে পাহাড়ে যেতেন গাছ কাটতে ওই গাছ বাজারে বিক্রি করে প্রাইভেট প্লাস পড়াশুনার যাবতীয় খরচ বহন করতেন।এইভাবে বাবা ১৯৭৮সালেস ব্যাবসা বিভাগ থেকে পদুয়া এ সি এম উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এস এস সি পাশ করলেন।পরীক্ষার সময় নাকি দাদী লুকিয়ে থাকতেন বাবাকে কিছু ভালোমন্দ খাও আতে পারতোনা,অনেক সময় না খেয়ে থাকতে হতো তাই।দাদীকে আল্লাহ বেহেশত নসিব করুক।আমার দাদী সবসময় আমাদেরকে এই কথা গুলো বলতো। পরিবারের হাল ধরতে গিয়ে বাবার স্বপ্ন স্বপ্নই রয়ে যায়।আর পড়াশুনা চালিয়ে যেতে পারেননি।
কর্ম ও বৈবাহিক জীবন:
পড়াশুনা ছেড়ে বাবা একটি ছোট মুদির দোকান দেয় বাড়ির পাশেই।পরবর্তীতে অনেক কষ্টে শহরে রিয়াজউদ্দিন বাজারে দোকান নেয় তখন থেকে একটু ভালো অবস্থায় এসে বাবা।১৯৮৮সালে আমার মায়ের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন বাবা।১৯৯০সালে আমার বড় ভাই এর জন্ম হয়।এরপর আমার বাবার শুরু হয় আর এক সংগ্রামের জীবন।
বাবার সংগ্রাম ময় দিনগুলি:*
বড় ভাইয়ের জন্মের পর প্রবাসে চলে যায় আমার দাদার হাজার বারণ সত্ত্বেও।বাবার ইচ্ছে ছিল বাবার স্বপ্নটা আমাদের মধ্যে দিয়ে পূরণ করতে তায় প্রবাস জীবন বেছে নেয়।প্রবাস জীবনের দিনগুলি কত কষ্টের ছিল টা বলে বুঝানো যাবেনা ।অচেনা জায়গায় খুদায় ,অনাহারে ঐখানে দিন কাটায় বাবার সাথে যাওয়া বন্ধু সে কষ্টে হার মেনে দেশে চলে আসলেও হার মানেনি বাবা।লেগে ছিল অনেক সংগ্রাম করে দীর্ঘ ৩বসর পর ভালো একটি অবস্থায় আসে।ভালো একটি অবস্থায় আসলে বাবা দাদা দাদীর জন্য হজ্জ ভিসা রেডী করে।রেডী করলেও দাদার আর হজ্জ করা হয়নি।এই পৃথিবী থেকে বিদায় নেন দাদা।😥😥সে শোক না ভুলতে ১৫দিনের মাথায় হারিয়ে পেলে বাবার প্রাণের প্রিয় বড় সন্তানকে পুকুরে ডুবে আমার বড় ভাই মারা যায়😭😭প্রবাসে থেকে বাবার সে শোক সহ্য করতে কতটা কষ্ট হয়েছিল বাবা জানে।তাইতো দীর্ঘ ৫বসর পর দেশে ফিরে ঘরে আসেনি চলে গিয়েছিল কবরস্থানে যেখান থেকে বাবাকে অজ্ঞান অবস্থায় বাড়িতে আনা হয়।
ঘুরে দাঁড়ানোর দিনগুলি:
১৯৯৫ সালের আগস্টে আমার জন্ম হওয়ার পর আমরা ফ্যামিলি সহ দাদীকে নিয়ে সৌদি আরবে চলে যায়।✈️✈️বাবা ঐখানে দোকান দেয়।আমরা একটি অবস্থায় চলতে থাকি।দেশেও বাবা দোকান পাঠ কিনে।সৌদি আরবে থাকা অবস্থায় আমার এক ভাই ও বোন জন্ম নেয়।ওরা হওয়ার পর আমরা আবার দেশে চলে আসি ৪বসর পর।এরপর বাবার বিজনেস বড় হতে থাকে।আমরাও পড়াশুনা শুরু করি। আমাদের ভালো প্রতিষ্ঠানে পড়াশুনার জন্য বাবা শহরে চকবাজারে জায়গা কিনে ঘর করে।আলহামদুলিল্লাহ আমরা ভাই বোন ৫জন।বাবা ছিলেন আমাদের ফ্যামিলি এবং নানার বাড়ির সবার অভিবাবক বাবাকে ছাড়া কোনো কাজ করতেন না তারা।বাবা দেশে আসলে বিভিন্ন বিয়ের বা বড় কোনো অনুষ্ঠান করতেন।ওনি একা দাড়িয়ে সব সম্পন্ন করতেন।আমাদেরকে সবসময় বলতেন যেখানে যাবে সবকিছু যাতে সততার সাথে একনিষ্ঠ ভাবে করি।সে শিক্ষাটা এখনও ধরে রাখার চেষ্টা করি।
🧡🧡বাবার স্বপ্ন আলহামদুলিল্লাহ আমরা পূরণ করতে চলেছি।আমরা ৫ভাই বোনের মধ্যে আমি বড় পড়াশুনা করছি চট্টগ্রাম কলেজে মাস্টার্স ,ইংরেজিঃ বিভাগ থেকে।
মেজো বোন পড়াশুনা করছে বিবিএ তে ফাইনাল ইয়ারে, কমার্স কলেজে।এরপরের ভাই পড়াশুনা করছে, চুয়েট এ ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে।এরপরের বোন মাধ্যমিক দিবে ,মহসিন কলেজে।সবার ছোটভাই এস এস সি দিবে চট্টগ্রাম সরকারি স্কুল থেকে বিজ্ঞান শাখা থেকে।
আমাদেরকে নিয়ে বাবার সপ্ন:
আমাদেরকে নিয়ে বাবার অনেক সপ্ন।বাবা চাই আমরা ভালো মানুষের মতো মানুষ হয়।খুব ছোটবেলা থেকে আমাদেরকে জীবনের বাস্তবতা গুলি শিখাইছে।কিভাবে হাজারো বাঁধা পেরিয়ে টিকে থাকতে হয়। আমি যখন ৯ম শ্রেণীতে পড়ি বাবা আমাকে ওনার বিজনেসের সবকিছু আমাকে দেখায় দিত কর কাছে কি পাওনা আছে সবকিছু আমাকে বলতো যাতে আমরা হালটা ধরতে পারি। আমার বাবার সপ্ন পূরণ হওয়ার জন্য বাবা প্রবাসে থাকা অবস্থায় ছোট ভাই বোনের পড়াশুনার দায়িত্ব নিয়ে তাদেরকে এই চট্টগ্রাম শহরে আমার মায়ের সাথে এক একটি সরকারি প্রতিষ্ঠানে অ্যাডমিশন করাতে পেরেছি আলহামদুলিল্লাহ।এখনো আমরা সবাই সপ্ন পূরণের উদ্দেশ্যে হাঁটছি।
♥️♥️প্রিয় স্যারকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাচ্ছি,অনেক প্রতিকূলতা হারিয়ে যাওয়া সে সপ্ন পূরণের লক্ষ্য টা স্যার এর নিজের বলার মত গল্প ফাউন্ডেশন এবং সেশনের মাধ্যেমে আবারও নতুন রূপ দিয়েছি।এই পথে আশা করছি সবাই আমার জন্য দুআ করবেন।স্যার এর শিক্ষা নিয়ে আমি ভালো একজন মানুষ ,সাথে দেশের মানুষের কিছুটা হলেও সপ্ন পূরণ করতে পারি কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে পারি।আমি সহ আমার আসে পাশের মানুষকে ভালো রাখতে পারি।
💞💞ধন্যবাদ জানায় যারা আমাকে ফাউন্ডেশনে যুক্ত হতে সাহায্য করেছেন, সবসময় আমার পাশে থেকেছেন সহযোগিতা করেছেন প্রিয় ভাই বোন সবাইকে।
এতক্ষণ ধৈর্য ধরে জীবন গল্পটি পড়ার জন্য সবার প্রতি অনেক কৃতজ্ঞতা এবং ভালোবাসা।লেখনীতে কোনো ভুলত্রুটি হলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।🙏🙏🙏
📌স্ট্যাটাস অফ দ্যা ডে ৮৬৪
তারিখ ০৩-০৯-২০২২ইং
তাসনিয়া সুলতানা সুমি।
জেলা:চট্টগ্রাম।
ব্যাচ:১৬
রেজিঃ:৭৫৮২৫
পেইজ @risu mart