মাশরুম যেন থাকে সবার পাতে
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম
🔰🔰 আমার জীবনের গল্প 🔰🔰
আসসালামু আলাইকুম🤝
কেমন আছেন সবাই আশা করি ভালো আছেন।
মহান রবের প্রতি শুকরিয়া জ্ঞাপন করছি। যিনি আমাকে সুস্থ রেখেছেন।🤲 আলহামদুলিল্লাহ
শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা ও কৃতজ্ঞতা রইলো আমার প্রাণপ্রিয় মা-বাবার প্রতি যাদের কারণে এই মায়াময় পৃথিবীতে আমি আসতে পেরেছি। আল্লাহর কাছে দোয়া করি আমার মা-বাবা যেন সব সময় সুস্থ থাকে। এবং আমি যেন তাদের নেক চাওয়া গুলো পালন করতে পারি।
শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি ভালোবাসার প্রিয় মানুষ, ভালো মানুষ গড়ার কারিগর, যে মানুষগুলো নিজের জীবনের ইতি টানতে চেয়েছিল সে মানুষগুলোর জীবন পরিবর্তন করে দেওয়া পরম শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিত্ব, লক্ষ লক্ষ বেকার তরুণ-তরুণীদের আইডল, বাংলাদেশের তথা বিশ্বে বিভিন্ন দেশে যার অনুপ্রেরণামূলক কথা শুনে জীবনের গতি এবং মোড় পরিবর্তন হয়ে যায় তিনি আর কেউ নন আমার /আপনার শ্রদ্ধেয় স্যার জনাব❤️ ইকবাল বাহার জাহিদ স্যার। আল্লাহর কাছে দোয়া করি প্রিয় স্যারের জন্য আল্লাহ যেন ওনাকে সুস্থ রাখেন এবং নেক হায়াত দান করেন।
আপনাদের সামনে আমি আমার জীবনের ছোট্ট একটি গল্প বলবো , আশা করি আপনারা ভালোবেসে আমার পাশে থাকবেন।😊
🤱আমার জন্ম ও বেড়ে ওঠা: আমার জন্ম ১৮/১২/১৯৯৪ সালে আমের রাজধানীখ্যাত চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার চককীর্তি ইউনিয়নে। সেখানে আমার বেড়ে ওঠা ও ছেলেবেলা।আমরা দুই ভাই এক বোন সবার মধ্যে আমি বড়। ছোটবেলায় আমার শরীর-স্বাস্থ্য অনেক বেশি ছিল সে কারণে সবাই আমাকে বেশি ভালবাসতো এবং আদর করতো।
🔰🔰শিক্ষাজীবনঃ
আমার শিক্ষা জীবনটা ছিল একটু ব্যতিক্রমধর্মী ছোটবেলা থেকেই পড়ালেখার প্রতি সেরকম মনোযোগ ছিলনা , বন্ধুদের সাথে স্কুল ফাঁকি দিয়ে কত যে ক্লাস মিস করেছি সেটা বলে প্রকাশ করা যাবে না। যখন 2011 সালে এসএসসি পরীক্ষা দেই তখন আমার রেজাল্ট আসে A- । এরপর কলেজে ভর্তি হয় তখন বুঝতে পারি যে আসলেই লেখাপড়ার প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে এবং আল্লাহর রহমতে ইন্টারমিডিয়েটে একটা ভালো রেজাল্ট করি। এরপর অনার্সে ভর্তি হওয়ার জন্য এডমিশন দেই এবং চান্স পেয়ে যায় সরকারি কলেজে নিজের পছন্দের সাবজেক্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে। সেখানে অনার্স শেষ করি আলহামদুলিল্লাহ ফার্স্টক্লাস পায়। এবং মাস্টার্সে আল্লাহর রহমতে ফাস্ট ক্লাস পেয়ে 2021 সালে শিক্ষা জীবন শেষ করি।
☑️☑️ পারিবারিক জীবন যু*দ্ধঃ
ছোটবেলা থেকে লেখাপড়া শেষ হওয়া অবধি পর্যন্ত আমার বাবা-মা কোনদিন আমাকে কোন কাজ করে নেই নাই। আমাদের পারিবারিক দিক দিয়ে ব্যবসায়ী পরিবার। আমার বাবা চাচা থেকে শুরু করে সবাই এক একজন ব্যবসায়ী। সে ক্ষেত্রে জন্মসূত্রেই ব্যবসায় পরিবারে জন্মগ্রহণ করায় ছোটবেলা থেকে ব্যবসার প্রতি একটা টান থেকে যায়। যখনই ইন্টারমিডিয়েট পাশ করলাম তারপর থেকে কিছু একটা করতে হবে এই রকম চিন্তা মাথার মধ্যে চলে আসে কিন্তু কি করবো সেটা ভাবতে ভাবতে ইন্টারমিডিয়েট শেষ হয়ে যায়। এবং আমার বাবা যেহেতু একজন ব্যবসায়ী উনি একজন ভালো আম আড়ৎদার হিসাবে আমাদের এলাকায় পরিচিত। আমার বাবা প্রায় সময় আমাকে উনারা আড়ৎতে আসার জন্য বলতেন কিন্তু আমার সেভাবে যাওয়া হতো না। এরই প্রেক্ষিতে আমার বাবার বিজনেস এক সময় মুখ থুব*ড়ে পড়ে। 2015 সালে সৈয়দপুরে তিনজন আমাদের আম ব্যাপারী 16 লক্ষ টাকা আত্ম*সাৎ করে এরই প্রেক্ষিতে সেখানে গিয়ে আমার বাবা তাদের কাছ থেকে টাকা চাইতে গেলে উল্টো তারা আমার বাবাকে আটক করে এবং গোপন এক জায়গায় লুকায়িত রাখে। আমি ভীষণভাবে ভেঙ্গে পড়লাম এবং আমার পরিবার। আল্লাহর অশেষ রহমতে আমার বাবা সেখান থেকে তিন দিন পর গভীর রাতে সেখান থেকে সরে শহরাঞ্চলে চলে আসে এবং গাড়ি ধরে আমাদের চাঁপাইনবাবগঞ্জ এসে পৌঁছায়। এরই প্রেক্ষিতে আমাদের পরিবার বিশাল একটা ক্ষ*তির সম্মুখীন হয় যা বলে প্রকাশ করার মত নয়। আমার বাবা আমার সামনে কান্না করত আমি সহ্য করতে পারতাম না। একসময় আমার বাবা স্ট্রো*ক করে। এবং উনাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করি। আমার মনে হতো আমি যেহেতু আমার বাবার বড় সন্তান আমি আমার বাবার সাথে বিজনেস করলে মনে হয় এই রকম ক্ষতির সম্মুখীন হতে হতো না।
এর পরিক্রমায় পরের বছর আবার আমের সিজন শুরু হলো এবং ব্যবসায়িক অনেক জটিলতা সৃষ্টি হল যেহেতু আমাদের ব্যাপারী অনেক টাকা আত্মসাৎ করে নিয়েছে সে ক্ষেত্রে অনেক ক্ষতির সম্মুখীন হলাম আমরা। এরপর 2017 সালে আমার বাবার ব্যবসায়ী পার্টনার হঠাৎ করে বলে একসাথে বিজনেস করবে না এবং সে আলাদা হয়ে যাবে । আমার বাবা অনেক হতাশা এবং টেনসনে পড়ে যায়
যে বিজনেস দীর্ঘদিন যাবত করছে সেখানে হঠাৎ করে পরিবর্তন আমার বাবা মেনে নিতে পারছিলনা।
আমার বাবার পার্টনার আমাদের আম আড়ৎতের যিনি মহরি ছিল এক কথায় তিনি হিসাব নিকাশের কাজ করতেন তাকে নিয়ে চলে যায়। আমার বাবা আরো গভীরভাবে ভেঙে পড়ে ।
জীবনে প্রথম বাবার কষ্টের ব্যবসায়িক হাল ধরা শুরু : 💪💪
আমার বাবার ব্যবসায়ী পার্টনার যখন আলাদা হয়ে গেল তার পরের সিজনে আম আড়ৎতের জন্য মহরিল অনেক খুঁজেছি কিন্তু কাউকে পাই নাই। (এজন্য আল্লাহ যা করে ভালোর জন্যই করে এ কথাটি আসলেই অনেক বাস্তব,) আমার বাবাকে আমি বললাম যে আমি এবার আড়ৎতের মহরিল হবো। আমার বাবা বলল এটা হিসাব নিকাশের কাজ তুমি পারবা না। কিন্তু আল্লাহর নামে শুরু করলাম। এবং যখন মাঝেমধ্যে সমস্যা পড়তাম তখন আমার এক মামা কে ডাকতাম বুঝিয়ে নেবার জন্য। আল্লাহর অশেষ রহমতে আমের সিজন শেষ করলাম। এবং পরিবারের যে অর্থনৈতিক ঘাটতি সেটা অনেকটাই পূরণ হলো।
এরই পরিক্রমায় 2019 সালে আবারও নিজেই মহরিল এবং আড়ৎদারী করলাম। এবং আস্তে আস্তে বুঝতে পারলাম আমি এর আগে যদি আমার বাবার বিজনেসের হাল ধরতাম তাহলে হয়তো যে দুর্দিন গুলো এসেছে সেগুলো আসতো না। আল্লাহর অশেষ রহমতে আজ অবধি পর্যন্ত আমার বাবার সাথে আমের আড়ৎদারী বিজনেস করে চলেছি। আমাদের আড়ৎ থেকে দেশের 64 জেলায় আম সরবরাহ করা হয় সে ক্ষেত্রে আমাকে আমার বাবার সূত্রে হাজারো হাজারো মানুষ চেনে। এবং এখন পর্যন্ত আমি ও আমার বাবা আম আড়ৎদাড়ি বিজনেস চালিয়ে যাচ্ছি।
জীবনে কিছু একটা করতে হবে এরকম চিন্তাধারার বহিঃপ্রকাশ: 🏃♂️🏃♂️
নিজের বলার মত একটা গল্প ফাউন্ডেশন সেশন গুলো অনেক আগে থেকে দেখতাম। এরই ধারাবাহিকতায় ইকবাল বাহার জাহিদ স্যার এর U tv লাইভে ভিডিওগুলা দেখা শুরু করলাম এবং নিজেকে অনেকটা উপলব্ধি করতে শিখলাম আমি পারবো আমাকে পারতে হবে। এরইমধ্যে মাস্টার্স কমপ্লিট হয় যাচ্ছে কিন্তু কিছু একটা করতে হবে সব সময় মাথার মধ্যে ঘুরপাক খায় এবং তারই প্রেক্ষিতে আমি ছোট একটি বিজনেস শুরু করলাম সেটা হচ্ছে মাশরুম চাষ। এবং আলহামদুলিল্লাহ অল্প দিনের মধ্যে মাশরুম নিয়ে আমার যে স্বপ্ন শুরু করেছিলাম সেটা থেকে ভালো রেসপন্স আসা শুরু করে।
ফাউন্ডেশনে যুক্ত হবার পরের প্রতিক্রিয়া: 😍
ফাউন্ডেশনে 12 তম ব্যাচের যুক্ত হবার কথা ছিল আমার কিন্তু এই ফাউন্ডেশানের কিভাবে যুক্ত হতে হয় সেটা জানা ছিলনা সেকারণে 16 তম ব্যাচে এসে রেজিস্টেশন করি । এবং তারপর থেকেও অ্যাক্টিভ ছিলাম না বুঝতাম না কিভাবে এ ফাউন্ডেশানের নিয়ম-নীতি পালন করতে হয়। এবং আসলে এটা একটা ভালোবাসার প্ল্যাটফর্ম বিশাল একটি পরিবার। এরই মধ্যে একদিন অনলাইন সেশন চর্চা যুক্ত হয় এবং সেদিন থেকেই এই ভালোবাসা প্ল্যাটফর্মের প্রেমে পড়ে যায়। এবং এখনো মিস করি সেই আগের দিনগুলো এখন মনে হয় আজ থেকে দু'বছর আগে কেন আমি ফাউন্ডেশনে যুক্ত হয় নাই। তাহলে হয়তো আজকে আমার পজিশনটা অনেক দূরে থাকতো। এবং আলহামদুলিল্লাহ এখন লেগে আছি লেগে থাকব ইনশাআল্লাহ।
👨💼আমার সামনের দিনের লক্ষ্য: আমি প্রিয় স্যারের আদর্শ বুকে ধারণ করে দিনরাত ৯ টা ৫টা ভুলে গিয়ে ছুটে চলেছি অবিরত একজন সফল উদ্যোক্তা হবার নেশায় আল্লাহ ভরসা। সবাই দোয়া করবেন আমার জন্য। আমি যাতে "একজন সফল মাশরুম চাষী" হতে পারি। এবং মাশরুম যে একটি সুপার ফুড তা মানুষের মধ্যে ব্যাপক সচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে মানুষের খাদ্য তালিকায়" মাশরুম যেন থাকে সবার পাতে"এই স্লোগান নিশ্চিত করব ইনশাল্লাহ।
🔰অসংখ্য কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ। এতক্ষণ ধরে কষ্ট করে আমার পোস্টটি পড়ার জন্য ।
📌স্ট্যাটাস অফ দ্যা ডে ৮৬৬
তারিখ ৬-০৯-২০২২ইং
মোঃ তোহিদুল ইসলাম তোহিদ
ব্যাচ নাম্বার ১৬
রেজিস্ট্রেশন নাম্বার ৮১৫৯৪
ফোন :০১৭৩৮২০৬৮৭৩
জেলা: আমের রাজধানীখ্যাত চাঁপাইনবাবগঞ্জ