আজ আমি বিশাল এই পরিবারে বুক উঁচিয়ে চলছি
🌿মিল্লাহির রাহমানির রাহিম🌿
🌿 আসসালামু আলাইকুম🌿
🕋সর্বপ্রথম আমি শুকরিয়া আদায় করছি মহান সৃষ্টিকর্তার প্রতি, যিনি আমাদেরকে এই সুন্দর পৃথিবীতে সকল প্রকার বিপদ আপদ থেকে রক্ষা করে এখনো পর্যন্ত সুস্থ এবং নিরাপদ রেখেছেন আলহামদুলিল্লাহ !
💞শ্রদ্ধাও ভালোবাসার সাথে স্মরণ করতে চাই, আমার মমতাময়ী আম্মু ও আব্বুর প্রতি, যাদের দোয়ায় আমি এখনো সুস্থ আছি।আর সেই সাথে তাদের মন খুলে বলতে চাই আব্বু আম্মু আমি তোমাদের অনেক বেশি ভালোবাসি যত টা বলতে পারছি তার চেয়ে ও অনেক বেশি ভালোবাসি।তাদের জন্য আমি সুন্দর পৃথিবীতে আলোর মুখ দেখেছি এবং মহান সৃষ্টিকর্তার সৌন্দর্যকে উপভোগ করতে পারছি আলহামদুলিল্লাহ।
💞সেই সাথে শ্রদ্ধার নিয়ে স্মরণ করছি আমাদের সকলেরই প্রিয় মেন্টর ও শিক্ষক এবং তরুণ প্রজন্মের আইডল-আইকন, লক্ষ লক্ষ তরুণ উদ্যোক্তা তৈরির কারিগর যিনি স্বপ্ন হারা মানুষদের স্বপ্ন দেখান সবার প্রিয় মুখ মাননীয় Ikbal Bahar Zahid স্যার,, যার সুন্দর স্বপ্ন ও পরিকল্পনার মাধ্যমে আমরা মনমুগ্ধকর একটা প্ল্যাটফর্ম উপহার হিসেবে পেয়েছি।
#জীবেনর_গল্প
💞আমার শৈরব💞
ছেলেবেলার দিনগুলিতে আমাদের সবচেয়ে অপছন্দ যে বিষয়টি হয়, নিঃসন্দেহে তা হল সবকিছুতে মা বাবার শাসন। এটা করবে না, এখানে যাবে না, সেটা খাবে না, ওখানে হাত দেবেনা- এই প্রকার শাসন বাক্যগুলি ছেলেবেলায় মা বাবার কাছ থেকে শোনেনি এমন মানুষ পাওয়া দুষ্কর। ছেলেবেলার দিনগুলিতে মনে হয় কখন বড় হব, আর রেহাই পাব মা-বাবার এই সকল শাসন বাক্য থেকে।
কিন্তু বড় হবার পর বুঝতে পারি, প্রকৃতপক্ষে এই সকল শাসন বাক্য ছিল আমাদের প্রতি মা-বাবার অগাধ ভালবাসার অস্ফুট প্রকাশ। তখন মনে হয় কেন আর সেই আগের মতো করে মা-বাবা আমাদের শাসন করে না! কেন আর বিধি-নিষেধ আরোপ করে না আমাদের দৈনন্দিন জীবনচর্যার বিশৃঙ্খলায়!
🧑🤝🧑আমার পাড়ার বন্ধুরা🧑🤝🧑
আমার কাছে ছেলেবেলায় আমার সকল বন্ধুদের মধ্যে সবচেয়ে প্রিয় ছিল আমার পাড়ার বন্ধুরা। বিদ্যালয়ের দিনে বিকেল বেলায়, আর ছুটির দিনে সকাল বিকেল দুবেলাই আমি আমার পাড়ার বন্ধুদের সাথে খেলতে যেতাম। মাঠে-ঘাটে কিংবা পাড়ার রাস্তায় আমাদের সেই খেলার মধ্যে না ছিল কোন লিঙ্গ বৈষম্য, না ছিল কোন ভেদাভেদ।
😭হতাশার মূহুর্ত গুলি😭
মেট্রিক পাস করার আগে থেকেই ছোট খাট টিউশন করতাম সংসারে অর্থের যোগান দিতে। মাঝে মাঝে সারামাস টিউশনি করেও শ্রমের মূল্য মিলত না। আজ না কাল, কাল না পরশু করে শেষ পর্যন্ত টাকা গুলো পেতামনা।
এস.এস.সি পাশ করার পর ৩ মাসের ছুটিতে আমার পরিবার আমাকে কম্পিউটার শিখানোর দায়িত্ব দিল এক পরিচিত মামাকে ৫ হাজার টাকার বিনিময়ে। মামা যতটুকু জানতেন যথা সম্ভব শিখিয়েছেন। আমার বরাবরই কম্পিউটারের কাজের প্রতি আগ্রহ ছিল তাই শিখতে বেশি সময় লাগেনি। এইচ.এসসি পড়ার সময়ে এক দূর সম্পর্কের জেঠতুতো ভাইয়ের সাথে কাধ মিলিয়ে কম্পিউটারের দোকান দিব সিদ্ধান্ত নিলাম। ঐ সময়টাতেও আমি চাকরি করতাম বিভিন্ন কম্পিউটার কম্পোজ, ডিজাইন এবং রিপেয়ারের দোকানে। নিজের খরচ বাদে ছোট ভাইয়ের পড়ালেখাসহ বেশ কিছু খরচের যোগান দিতে পারতাম।
জেঠাতুত ভাইটা আমার বন্ধু এবং আত্মা ছিল। খুবই ভালবাসতাম, হয়ত এখনো ভালবাসি। জীবনের শুরুতে আমি প্রচন্ড রকম বদরাগী ছিলাম। সেই ভাই/বন্ধুটি আমাকে শুধরে নিয়েছে, বাঁচিয়েছে বিভিন্ন বিপদ থেকে। আমাদের দুই জনের স্বপ্ন ছিল একটা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করব, যেখানে সব রকমের কম্পিউটারের কাজ হবে। আমরা বড় হব প্রতিষ্ঠান বড় হবে, ঐ প্রতিষ্ঠান থেকে আস্তে আস্তে ভবিষ্যতের দিকে এগুবো।
আমি তাকে আত্মা বলার কারণ, নিজের চাইতে তার উপর বিশ্বাস এবং ভালবাসা। ভুল করেও তার প্রতি কখনো বিদ্রুপের সুযোগ মন থেকে হয়নি। বন্ধুটি যাই বলত এক কথায় মেনে নিতাম, এটা জোর ছিলনা, ভালবাসা এমন ছিল যে তার কথাগুলোই আমার কর্মে পরিনত হয়েছিল। জীবনে বাঁচতে গেলে এই রকম কিছু বন্ধুর দরকার পড়ে, আমার ক্ষেত্রে সেই ছিল বিশেষ ব্যাক্তি। আমাদের পাড়ায়, মহল্লায় সবাই আমাদের মানিক জোড় ডাকতো। একজনের উপর বিপদ এলে অন্যজন নিজের সবটুকু নিয়ে ঝাপিয়ে পড়ার নজির হাজারটা ছিল। কখনো কোন কাজে আমি তাকে না বলিনি।
আমার বড় দূর্বলতা ভালবাসায়, ভালবাসার জন্য আমি সব কিছু করতে পারি। সেই দূর্বলতাটাই একদিন আমার শক্তি হয়ে নিজের জীবনকে বাস্তবতায় তেজস্বি আলোতে রুপান্তরিত করে। আমাদের স্বপ্ন যাত্রা শুধু। আমরা দুজনই পরিবারকে রাজী করিয়ে একটি কম্পিউটার দোকান দিই। ধার করি প্রায় ২ লাখ টাকা, বিভিন্ন সমবায় সমিতি, পরিবার পরিজন থেকে। আমার ঐ বন্ধুর বড় ভাইয়ের একটা দোকানছিল, সেটাকে সাব লিজে আমরা নিজেদের ব্যবসা শুরু করি।
আমরা দু’জনই ব্যবসার কাজ এবং সময় ভাগ করে নিই। সপ্তাহে ৩ দিন সকালে আমি কলেজ যেতাম, ৩ দিন সে কলেজ যেত। বিকেলের বেশির ভাগ সময় ঐ দোকানটাতেই কাটাতাম। মাঝে মাঝে সারা রাত কাজ করতাম, বাসায়ও ফিরতামনা। খুব যখন ঘুম পেত একটা চাটি বিছিয়ে নিচে শুয়ে পড়তাম। ব্যবসাটা একটু ফুলে ফেপে উঠে আমাদের পরিশ্রমে। ব্যবসায় লাভও দেখছিলাম হিসাব অনুযায়ী। আমার এইচ,এসসি পরীক্ষা শেষ হল। জন্ডিজ ধরা পড়ায় আমার মা আমাকে আমার মেঝ খালার বাসায় পাঠাল মিথ্যা বলে, যেন সেখানে কিছুদিন বিশ্রাম নিতে পারি। আমার মেঝ খালার কে আমি প্রচন্ড ভয় পেতাম, ভালবাসতাম, তাই খালার বাড়ি গিয়ে বুঝতে পারলাম মা চালাকি করে এই কান্ড ঘটিয়েছে, মেনে নিয়ে ১৫ দিন খালার বাড়িতে কাটিয়ে বাড়ি ফেরি।
খালার বাড়ি থেকে ফিরে ব্যবসায় বসলাম, দেখলাম ইনকামের খাতা মাইনেজ। হতেই পারে, ব্যবসায় লাভ-ক্ষতি থাকতেই পারে। মেনে নিলাম, আবার কাজে মনোযোগ দিলাম। হঠাৎ ক’দিন পর বন্ধুটি বলল তাদের দোকানটা আমরা করতে পারবো না; কারণ তার বড়ভাই চায়না যেন আমরা যৌথ ভাবে ব্যবসাটা করি। ততোদিনে ব্যবসাটা বেশ সুনাম তৈরী করেছে। আমার বন্ধুর অংশে থাকা সমস্ত ঋণ সে পরিশোধ করলেও আমার অংশের ৭২ হাজার টাকার ঋণ শোধ তখনো বাকী। যখন সে আমায় দোকানটি থেকে সুন্দর করে বুঝিয়ে বের করে দিচ্ছিল, খুব কান্না করেছি। ২টা কারণ ছিল, বন্ধুত্বটা সে ইচ্ছে করেই নষ্ট করল শুধু মাত্র সামান্য কিছু টাকার জন্য। ব্যবসাটা আমার সন্তানের মত করে লালন পালন করে বড় করেছিলাম।
ব্যবসা থেকে লাথি খেয়ে বের হতেই মা জানিয়ে দিল বাসায় জায়গা হবেনা। টাকাগুলো ধার করে দেওয়া হয়েছিল, তাই শোধ দিতে না পারলে ঋন আদায় করার জন্য লোকজন বাসায় এসে হানা দিতে পারে। মা-বাবার দোষ ছিলনা। তারা আমায় হাজার বার নিষেধ করেছিল যৌথভাবে বন্ধুটির সাথে যেন কিছু না করি। কারণ দোকানটা তাদের ছিল, বুদ্ধির দিক দিয়ে ওরা আমার চেয়ে বড় এবং সরস।
এইস.এস.সির রেজাল্ট দিল। আমি কলেজে ক্লাসের ভাল ছাত্রই ছিলাম। অন্তত প্রথম বিভাগ আমি পাব নিজের মধ্যে এর ব্যতিক্রম কোন সংশয় ছিলনা। এতগুলো খারাপ খবরের মধ্যে পরীক্ষার রেজাল্ট আমার জীবনের আশার আলো জ্বালিয়েছে।
🚶♂️নতুন পথ চলা শুরু🚶♂️
চেষ্টা করে যাচ্ছি শূন্য হাতে সংখ্যা দেওয়ার। যার উদাহরণ নিজের ওজনের চেয়ে বাড়ি চিন্তা ভাবনা, সবসময় আমাকে তাড়িয়ে বেড়ায়।
কিছু করছি, কিছু ভাবছি, এভাবেই চলার জন্য চলছি অবিচল।
এতো কিছুর মাঝে অপূর্ণতা অনুভব করেছি প্রতি নিশ্বাসে।
কাজের সময় নষ্ট করেছি অকাজে অনলাইনে অপ্রয়োজনে।
আর সেখানেই নিজেকে
এগিয়ে যাওয়ার উৎস
নিজেকে আবিস্কার করার মন্ত্র খুঁজে পেয়েছি।
💞নিজে বলার মত একটা গল্প ফাউন্ডেশন 💞
আমার জন্য আশীর্বাদ হয়ে আসছে।
আমি আগে নিজেকে সবসময় গুছিয়ে রাখতে চাইতাম মানুষের মাঝে, নিজেকে প্রকাশ করতে পারতাম না একধরনের লজ্জাবোধ আমাকে,
মানুষের সাথে মিশতে বাধা দিতো।
>অথচ আজ আমি বিশাল এই পরিবারে বুক উঁচিয়ে চলছি
>বিভিন্নভাবে নিজেকে উপস্থাপন করছি।
>এখন আর লজ্জাবোধ আমাকে দমিয়ে রাখতে পারেনা।
>নিজেকে অনেক সাহসী মনে হচ্ছে (যা আগে ছিলো না)
>মা বাবাকে আগের চেয়ে অনেক বেশি মনে পড়ে এবং ভালোবাসি আগে অকারনে রাগ দেখাতাম যা এখন পারিনা।
>আত্মবিশ্বাস বেড়েছে নিজের মধ্যে।
সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি আমার লিখা টা ধৈর্য ধরে পড়ার জন্য।
সবাই ভালোবাসে পাশে থাকবেন
আপনাদের সপোর্ট আমার কাজের প্রতি অনুপ্রেরণা জোগায়....
📌স্ট্যাটাস অফ দ্যা ডে ৮৬৭
তারিখ ০৭-০৯-২০২২ইং
নামঃ Imon Ahmed
জেলাঃ Narayanganj
ব্যাচঃ18
রেজিঃ 98826