আমিও একজন সফল উদ্যোক্তা হতে চাই।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম আসসালামু আলাইকুম
সকল প্রশংসা সেই মহান আল্লাহর কাছে যিনি আমাদের কে এত সুন্দর একটি জীবন দান করেছেন এবং পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ জীব হিসেবে কবুল করেছেন। হাজার দরুদ পাঠ করি দোজাহানের বাদশা মুসলিমের নয়নের মনি আমাদের প্রিয় নবী হযরত মোহাম্মদ (সাঃ)এর নামে।
সেই সাথে হাজারো কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি,
আমাদের মা বাবার কাছে যারা আমাদের কে অনেক কষ্ট করে ছোট কালে লালন-পালন করে বড় করছেন।
সেইসাথে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি আমাদের শিক্ষক আমাদের প্রিয় মেন্টর উদ্যোক্তা তৈরির কারিগর জনাব Iqbal Bahar Zahid স্যারের প্রতি। যিনি এত সুন্দর একটি প্লাটফর্ম তৈরী করে দিয়েছেন,উদ্যোক্তাদের জন্যে।এবং লক্ষ লক্ষ তরুন তরুনী যেখানে এসে উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন দেখছে আমার মতো।এবং অনেকে সফল উদ্যোক্তা হয়েছে এখান থেকে শিক্ষা নিয়ে।
আর এই প্লাটফর্ম আছে বলেই আজ আমি সুযোগ পেয়েছি প্রিয় ভাই বোন দের সাথে নিজের জীবনের গল্প শেয়ার করার।
আমার জীবনের ছোট গল্পঃ আমি মোঃ জুয়েল ৪ ভাই ১ বোন আমি সবার বড় ।আমার জন্ম ১৩/৮/১৯৯২ইং সালে। রংপুর জেলার গংঙ্গাচড়া থানার তালেব মিয়ার টাড়ী গ্রামে। আমার বয়স তখন প্রায় ১৩ বছর এর মত তার আগে আমাদের ফ্যামিলি খুব ভালো চলতো। আমার বাবার একটা চাকুরী ছিলো।
খুব সুখের সংসার ছিলো। হঠাৎ করে আমার বাবার চাকুরী টা চলে যায়। তখন বাবার অনেক ঋন ছিলো প্রায় ১০ লক্ষ টাকার মত। টাকার জন্য আমাদের ঘরের জিনিস পত্র মানুষ কে দিয়ে দেই। তার পর কী করব আমাদের দিন খুব কষ্টে কাটতে
শুরু হয় আমার জীবন যুদ্ধঃ আমি পড়াশুনা ছেড়ে চলে গেলাম একটা বিড়ির কারখানা তে, প্রতিদিন কাজ করে ১০ থেকে ১৫ টাকা কাজ করা যায়। তখন কষ্টে কষ্টে প্রায় অনেক দিন কাজ করলাম।
তার পর ইচ্ছা জাগলো আমি ঢাকায় যাবো চাকুরী করব, মা-বাবার কাছে টাকা পাঠায়ে দিবো।
তার কিছু দিন পর আমার খালার কাছে চলে আসলাম ঢাকা নারায়ণগঞ্জ। এখানে আসার পর ১ টা কাটুন কোম্পানি তে জয়েন করলাম। ডিউটি শুরু হয় সকাল ৯ টা থেকে।ছুটি হয় বিকেল ৬টায় তার পর বাসায় এসে যে কষ্ট দিলো খালা, জীবনে কখনো রান্না কি জিনিস জানতাম না আমাকে দিতো রান্না করতে। আমি ভাত রান্না করতাম পানি বেশি হয়ে যেত, খালা কাজ থেকে এসে কি যে বকাবকি করত। কস্ট সয্য করতে না পেরে মা বাবাকে আস্তে বললাম।
তার পর মা-বাবা চলে আসলো নারায়ণগঞ্জ আলহামদুলিল্লাহ।
মা বাবা আর ভাই বোন কে নিয়ে বাসা ভাড়া নিলাম।
তার পরের ঘটনা 👇
ঢাকা নারায়ণগঞ্জ চাকুরী,
আমি প্রথম যখন ঢাকায় আসি ২০০৬ এর দিকে আসার পর আমি প্রথম কাজে জয়েন করি একটা কাটুন তৈরির কোম্পানিতে বেতন ছিলো ১২০০ টাকা ডিউটি ৮ঘন্টা। তার পর কাজ করতে করতে ভাবলাম এ কাজ দিয়ে কি হবে এ কাজের তো তেমন ডিমান্ড নেই।
তখন মিথ্যা কথা বললাম, আমি পড়াশুনা ছেড়ে দেশ থেকে পালিয়ে ঢাকায় আসছি এখন আমার মা-বাবা আমাকে নিতে আসছে। তখন তারা বললো ঠিক আছে তুমি ১ তারিখ থেকে কাজে আর এসো না ১৫ তারিখ তোমার বেতন নিয়ে যেও।
তার পর আমি ১তারিখ একটা গার্মেন্টস এ চাকুরী নিলাম। ১০০০ টাকা বেতন সুইং হেলপার ডিউটি ১২ ঘন্টা।অনেক চেস্টা ছিলো আমি অপারেটর হব, কিন্তু সুপারভাইজার এর ব্যবহার অনেক খারাপ মেশিনে বসতে দেয় না। মেশিনে বসলে খারাপ ব্যবহার করে তার পরেও কি করব কাজ শিখার অনেক ইচ্ছা ছিলো। লাঞ্চ এর সময় চালু করে খেয়ে বাসা থেকে আগে অফিসে যেতাম কাজ শিখার জন্য কিন্তু সময় এর আগে বিদ্যুৎ এর লাইন দিতো না মেকানিক।
কিছু দিন এ ভাবে কাটিয়ে গেলো হঠাৎ করে কোম্পানি না কি কমপ্লেক্সে হবে তাই আমার বয়স কম তারা আমাকে ছাটাই করে দিল।
এখন কি করব কিছু দিন বসে থাকলাম। তার পর বাবার পরিচিত একটা প্রিন্টিং ফেক্টরীতে জয়েন করলাম। সেখানে কিছু দিন কাজ করলাম নতুন জামা কাপড় নষ্ট হয়ে যায় রং লেগে। তাই কাজ ছেড়ে দিয়ে আবার ফিরে গেলাম
নতুন আর একটি গার্মেন্টস কোম্পানিতে। সেখানে গিয়ে সুইং হেলপার হিসেবে জয়েন করলাম ১বছর এর মত। হেলপারি করলাম কাজ ভালো দেখে পি এম স্যার আমাকে অপারেটর এর পদ দিল।বেতন ধরল ২৭০০ টাকা আমি অনেক খুশি তার পরেও মন খারাপ সবার বেতন ৪০০০ হাজার আমার বেতন এত কম।
কিছু দিন কাজ করলাম হাত চালু করার জন্য হাত চালু করার পর চাকুরী ছেড়ে অন্য একটা ভালো গার্মেন্টস কোম্পানিতে জয়েন করলাম সিনিয়র অপারেটর হিসাবে, বেতন ধরল ৪৫০০ টাকা আমি অনেক খুশি।
৫ বছর এক টানা কাজ করলাম কাজ করতে করতে একজনের সাথে ভালো পরিচয় হল তার ভাই বিদেশ থাকে আমিও খুশি হলাম কারন আমার আশা বিদেশ যাওয়ার জন্য পাসপোর্ট করলাম বিদেশ যাওয়ার জন্য টাকা জমা দিলাম। কিছু দালাল মিথ্যা কথা বলছে যে তোমার ভিসা আসছে তাই চাকরি টা ছেড়ে দিলাম পরে বিদেশ ও যেতে পারলাম না।😥
এখন কি করি সবাই জানে বিদেশ যাবো লজ্জায় আর সেখানে কাজে গেলাম না।
নতুন করে আবার একটা গার্মেন্টস এ চাকুরী নিলাম ৩ বছর এর মত চাকুরী করলাম। ফেসালিটি ভালো না তাই চাকুরী ছেড়ে দিলাম। এবার প্রডাকশন এ কাজ শুরু করে দিলাম মোটামুটি মাসে ৩০ হাজার এর মত বেতন পাই কাজ করতে করতে একদিন অসুস্থ হয়ে পরলাম। মৃত্যু থেকে বেচে ফিরে আসলাম। তার পর ৩ মাস বাসায় বসে বসে দিন পার করলাম কিন্তু আর কত দিন মা-বাবা ভাইয়ের জন্য বোঝা হয়ে গেলাম। তার পর কি আর করব চাকুরী তে আর গেলাম না একটা ছোট অটো নিয়ে চালানো শুরু করলাম। কিন্ত বাসায় অনেক চিন্তা করে আমার স্ত্রী কি না কি হয় আর মানুষ ব্যবহার অনেক খারাপ করে । একটুতেই আমার সাথে খারাপ ব্যবহার শুরু করে দেয় । তাই গাড়ি টা বিক্রি করে দেই।
তার পর আবার ফিরে আসলাম নতুন একটা গার্মেন্টস কোম্পানি তে। স্যাম্পল সেকশন এ জয়েন করলাম বেতন মোটামুটি ১৭০০০ এর মত আসে মাসে। তবে ডিউটি ৮ ঘন্টা ২ ঘন্টা ওভারটাইম আমি চিন্তা করলাম ৭ টার পর কি করা যায় আমাকে যে কোন কিছু করতে হবে, আমি
সেই সময় আমার বন্ধুর কাছ থেকে পুরনো একটা কম্পিউটার কিনে নেই আর ইউটিউব দেখে ফটোশপ এর কাজ শিখতে শুরু করি। দুঃখের বিষয় কম্পিউটার এর উপর আমার অভিজ্ঞতা ছিলো না তাই আমার বন্ধু আমাকে নষ্ট কম্পিউটার দিয়ে দিছে 😥
আমি তার পরেও হাল ছারিনি আমি নতুন করে আবার কম্পিউটার কিনে নেই আর কাজ শুরু করি এখন আমি মোটামুটি এক্সপার্ট কম্পিউটার এর উপর।
মাসে চাকুরী এর পাশাপাশি আউট ইনকাম আসে আলহামদুলিল্লাহ ।
⏬⏬⏬⏬⏬⏬⏬⏬⏬⏬
আমি নিজের বলার মত একটা গল্প ফাউন্ডেশনের সাথে পরিচিত হইতে পেরে নিজেকে অনেক ধন্য মনে করি। গ্রুপ এ জয়েন করায় কুয়েত প্রবাসী মাইনুদ্দিন মুন্সি ভাই।
আমি তার ডিজাইন এর কাজ করছি সে আমাকে বলে নিজের বলার মত একটা গল্প ফাউন্ডেশনের কথা, আমি নিজের বলার মত একটা গল্প ফাউন্ডেশন এ জয়েন করার পর বুঝতে পারলাম এটা অনেক বড় একটা প্রতিষ্ঠান যে খানে সবাই ভালো মনের মানুষ আমি।
স্যারের সেশন গুলো পড়ে আমি প্রতিদিন নতুন কিছু শিখি,আমিও একজন সফল উদ্যোক্তা হতে চাই।
❤️স্বপ্ন দেখুন সাহস করুন,শুরু করুন,লেগে থাকুন, সফলতা আসবেই❤️
স্যারের এই উক্তি টি আমাকে অনেক অনুপ্রাণিত করে,উৎসাহ বাড়িয়ে দেয়।
আমিও কিছু করতে চাই এই গ্রুপ এ থেকে। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন।
আমার লেখার মাঝে কোনো
ভুল হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন!
📌স্ট্যাটাস অফ দ্যা ডে ৮৬৮
তারিখ ১০-০৯-২০২২ইং
✅নাম মোঃ জুয়েল মিয়া
✅থানা নারায়ণগঞ্জ সদর
✅জেলা নারায়ণগঞ্জ
✅ব্যাচ নং ১৬
✅রেজিষ্ট্রেশন ৮১০১১
✅রক্তের গ্রুপ A+
✅পেশা গ্রাফিক্স ডিজাইনার
✅ভিডিও এডিটর