জীবন সংগ্রামে বেঁচে থাকার উপায়
✍️গল্পটা আমার নিজের... 🙋♂️
🍁♡♡ ✺ ♡♡ ✺ ♡♡ ✺ ♡♡🍁
✍️আমি মোঃ আশরাফুজ্জামান নিজের সাথে শপথ করিতেছি যে
এই গল্পের কোথাও কাল্পনিক একটি শব্দও ব্যবহার করব না।🔰🔰
🕋পরম করুনাময় মহান রাব্বুল আল-আমিনের নামে শুরু করছি🕋
🤝 আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ 🤝
✍️প্রিয় ভাইয়া, আপু ও বন্ধুগণ আপনাদের মূল্যবান কিছু সময় ব্যয় করে আমার জীবনের এই বাস্তব গল্পটা পড়বেন। আমার ছোট্ট এই জীবনে হাসি-কান্না, দুঃখ-বেদনা, সফলতা-ব্যর্থতা সবকিছু মিলিয়ে যে সাধারণ জীবনযাপন তার প্রকৃত রূপ তুলে ধরার চেষ্টা করেছি; আশা করছি, আপনারা ভালোবেসে পাশে থাকবেন।
🌿🌿🌿 _______ ধন্যবাদ _______ 🌿🌿🌿
✍ প্রশংসা...🔷🔷
=============
সকল প্রশংসা মহান আল্লাহ☝️ তায়ালার প্রতি, যিনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন এবং আমাকে এখানো সুস্থ ও ভালো রেখেছেন৷৷ আলহামদুল্লিহ৷৷ এবং দরুদ ও সালাম পেশ করছি প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি, যিনি মানবতার মুক্তির দূত হিসেবে এই পৃথিবীতে প্রেরিত হয়েছেন, যাকে সৃষ্টি না করলে এই পৃথিবী মহান রাব্বুল আলামিন সৃষ্টি করতেন না এবং আমাদেরকেও সৃষ্টি করতেন না ।🔰🔰
👉🤲শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি প্রিয় বাবা-মাকে। যাদের উছিলায় সুন্দর এই পৃথিবীতে এসেছি। বড় হয়েছি তাদের অকৃত্রিম স্নেহ ভালবাসায়। যাদের ঋণ কখনো কোনদিন শোধ হবার নয় ৷ পৃথিবীর সকল মা-বাবার প্রতি আমার শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা রইলো। 🔰🔰
✍️কৃতজ্ঞতা...🔷🔷
==============
কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি, আমার সকল শিক্ষকদের প্রতি যাদের প্রকৃত শিক্ষার আলোয় আজ দু'কলম লিখতে শিখেছি।
সেই সাথে ★তারুণ্যের অহংকার এ সময়ের শ্রেষ্ঠ শিক্ষক, লক্ষ্য তরুন-তরুনীর হৃদয়ের স্পন্দন, শতাব্দীর জীবন্ত কিংবদন্তি প্রিয় মেন্টর জনাব ইকবাল বাহার জাহিদ স্যারের প্রতি রইলো আমার অন্তরের অন্তরস্থল থেকে শ্রদ্ধা, ভালোবাসা ও আন্তরিক কৃতজ্ঞতা।
যার অক্লান্ত পরিশ্রমে আমরা পেয়েছি “নিজের বলার মতো একটা গল্প ফাউন্ডেশন”,পেয়েছি সমাজের ভালো মানুষের একটি পরিবার । এটা শুধুমাত্র একটি ফাউন্ডেশন বা একটি প্ল্যাটফর্ম নয়, এটা একটা টাচস্টোন এর মতো, যার সংস্পর্শে এলে স্বপ্ন ফিরে পায় তার পূর্ণ বাস্তবতা।
✍️শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা রইলো সম্মানিত কোর ভলেন্টিয়ার ও মডেরাটরদের প্রতি যাদের অক্লান্ত পরিশ্রমে গড়ে উঠেছে ভালো মানুষদের এক সুবিশাল অকল্পনীয় স্বর্গরাজ্য। 🔰🔰
✍️ভালোবাসা প্রকাশ করছি...
এই প্ল্যাটফর্মের আমার প্রাণ প্রিয় সকল ভাই বোন ও বন্ধুদের প্রতি, যারা আমাকে প্রতিনিয়ত আমার স্বপ্ন পূরণে উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছেন...🔰🔰
✍️যে কথা হয়নি বলা... 🔷🔷
====================
জীবনের অনেক কথাই বলা হয়নি কারণ শোনার মত মানুষ, স্থান ও সময় না থাকার কারণে । আমাদের এই প্লাটফর্ম যদি না থাকতো, আমার এই গল্পটা হয়তো কোনদিন বলাই হতোনা। !!! 🔰🔰
✍️গল্পের শুরুটা এখানেই🔷🔷
=====================
বাবা-মায়ের তিন সন্তানের মধ্যে আমি প্রথম। আমার পরে আমার বোন ও একটা ছোট ভাই। আমার মা ছিল আমার নানার বাড়ির পরিবারের বড় সন্তান। সে হিসাবে নানার বাড়িতে পরিবারের বড় মেয়ের প্রথম সন্তান হলাম আমি । আমি ছিলাম আমার নানা নানি সহ সকলের চোখের মনি। সাথে সাথে আমার বাবা-মায়ের প্রথম সন্তান হওয়াতে আমার আদর-যত্নের কোন কমতি ছিল না।ছোটবেলা থেকেই আমি খুবই জেদী প্রকৃতির এবং ডানপিটে স্বভাবের ছেলে।🔰🔰
✍️আমার জন্ম ও বেড়ে ওঠা 🔷🔷
=======================
1981 সালে আমার জন্ম। আমি যৌথ পরিবারে বড় হয়নি, সে কারণে সম্পর্কের বিষয়গুলো আমি খুব একটা ভালো বুঝতাম না । একটু দূরের সম্পর্কের কেউ হলে সে যে আমার কি হয় এটা আমি বরাবরই গুলিয়ে ফেলতাম এবং এখনো ফেলি। আমার মা-বাবা ও দুই ভাই-বোন কে নিয়ে মূলত আমার বেড়ে ওঠা। অনেক ছোটবেলায় আমার দাদা আমাকে ছেড়ে পরপারে চলে গেছে । সে কারণে দাদার ভালোবাসা কেমন হয় সেটা আর আমার দেখা হয়ে ওঠেনি। আমার নানা নানির ভালোবাসা পেয়েছি অফুরন্ত। আমি ছিলাম তাদের চোখের মনি। দাদির ভালোবাসাও পেয়েছি কিন্তু সে ভালোবাসাটা ছিলো অনেকটা শাসনের।🔰🔰
✍️আমার বাবা✍️
=============
আমার বাবা ছিল একজন পরোপকারী, সৎ এবং নিষ্ঠাবান মানুষ। তিনি পরিবারের কারও কোনো অন্যায় আবদার কখনো রাখেননি। নীতি এবং সততার ব্যাপারে তিনি ছিলেন বরাবরই অনড়। আমার বাবা ছিলেন একজন ব্যবসায়ী। তিনি তার ক্ষুদ্র ব্যবসার মধ্য দিয়ে আমাদেরকে অনেক কষ্টে লালন পালন করে গেছেন। আমি আমার বাবার কাছে সব কথায় বলতে পারতাম যদিও তিনি ছিলেন অনেক রাগী মানুষ। যখন আমার অনেক খারাপ সময় গেছে সেসময় আমার বাবা আমার পাশে ছিলেন একজন বন্ধুর মত। তিনি সবসময় আমার পাশে থেকে আমাকে সাহস যুগিয়েছেন। 2020 সালে করোনাই আক্রান্ত হয়ে আমার হাতের উপর আমার চোখের সামনে আমার বাবা আমাকে ছেড়ে চলে যায় পরপারে । সে সময়কার প্রতিটা মুহূর্ত যেন আমার চোখের সামনে সবসময় ভেসে বেড়ায়। কি বিভীষিকাময় দিন ছিল করোনার সেই দিনগুলো ! বাবা তার তিন ছেলে মেয়েকে পরম আদর যত্ন ভালবাসা দিয়ে বড় করেছেন।
বাবার কথা বলে শেষ করা যাবে না।
❤️পৃথিবীর সব দোয়া ভালবাসা তার জন্য। আল্লাহ জেনো তাকে ভাল রাখে।❤️
✍️আমার মা ✍️
=============
আমার মা অতি সাধারন সাদামাটা নরম মন এর মানুষ। আমাদের তিন ভাই-বোনকে মানুষ করা, সংসার সামলানো এই তার পৃথিবী। ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা শেষে আল্লাহর অশেষ রহমতে তিনি বর্তমানে সুস্থ আছেন ।
আমার মায়ের জন্য সবার কাছে দোয়ার দরখাস্ত রইল।🤲🤲🤲🤲🤲
✍️আমার লেখাপড়া... ✍️📚🔷🔷
=======================
আমার পড়ালেখার অধ্যায় শুরুতে কিন্ডার গার্ডেন স্কুল। এরপর ক্লাস থ্রি থেকে এসএসসি পর্যন্ত জেলা স্কুলে। 3 থেকে 7 পর্যন্ত ক্লাসে আমার রোল নাম্বার 4 থেকে 10 এর মধ্যে থাকতো । এইট থেকে এসএসসি পর্যন্ত রোল নাম্বার তেরোর উপরে যায়নি। বরাবরই মাঝারি গোছের ছাত্র ছিলাম আমি । এসএসসি পাস করে ভর্তি হয়েছিলাম ক্যান্টনমেন্ট কলেজে। এইচএসসি শেষ করার পরে, স্বপ্ন ছিল ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হব। ভাগ্যের নির্মম পরিহাস সে সময় ভর্তি পরীক্ষার সর্বনিম্ন স্কোর অন্যান্য সময়ের থেকে বেশি হল। স্বপ্নপূরণে বড় একটা ধাক্কা খেলাম। ইউনিভার্সিটিতে পড়ার স্বপ্নটা স্বপ্নই থেকে গেল। প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতে পড়া এটা আমার পরিবারের কেউই পছন্দ করত না। তারপর, মধ্যবিত্ত পরিবারের কাছে প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতে ছেলেমেয়েদের পড়ানোটা খুবই কষ্টসাধ্য একটা ব্যাপার। যাহোক ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি থেকে ইংরেজিতে অনার্স এবং মাস্টার্স কমপ্লিট করলাম।
✍️ ভলেন্টিয়ার হিসাবে কাজ🔷🔷
=======================
আমি যখন অনার্সে পড়ি, আমি রোটারি ইন্টারন্যাশনাল এ রোটারেক্ট হিসাবে সদস্যপদ গ্রহণ করি । সেখান থেকেই আমি মুলত ভলেন্টিয়ার হিসেবে কাজ করতে শিখেছি। আমি সবসময় আমার সেই মুহুর্তগুলো মিস করি। নিজ জেলা সহ, বাংলাদেশের বিভিন্ন ক্লাব ভিজিট করা, ক্লাব মেম্বারদের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন, অ্যাসেম্বলিতে অংশগ্রহণ ছাড়াও আরো অনেক সব আয়োজন- সব মিলিয়ে একটা আলাদা ধরনের অনুভূতি।
✍️ আমি ও আমার কর্মজীবন🔷🔷
=======================
আমার কর্মজীবন শুরু হয় সেলস এন্ড মার্কেটিং পেশার মধ্য দিয়ে। অনার্স পাশ করার পর আমি ঢাকাতে চলে যায়। সেখান থেকে একটি স্বনামধন্য কোম্পানির ব্যাটারি ইউনিটে সেলস এন্ড মার্কেটিং ডিপার্টমেন্টে জয়েন করি। আমার পোস্টিং হয় বরিশাল ডিভিশনে। আমাদের ইউনিটে আমি বরিশাল ডিভিশনের ইনচার্জ হিসেবে কাজ করতে থাকি। এর পাশাপাশি আমি আমার মাস্টার্সের পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছিলাম। আমার যখন মাস্টার্সের পরীক্ষা কাছাকাছি তখন আমি কোম্পানির নিকট ছুটি চাইলে তারা তা দিতে অপারগতা জানায়। অগত্যা চাকরি ছেড়ে দিয়ে আমি আবার বাড়িতে চলে আসি এবং পরীক্ষার জন্য মনোনিবেশ করি। আমার মাস্টার্স পরীক্ষা শেষ হবার পর আমি আবার ঢাকায় চলে যায়। বসে না থেকে একটা প্রতিষ্ঠান যেনতেন একটা পদে জয়েন করি।
✍️ আমার প্রবাস জীবন🔷🔷
====================
আমি যখন ঢাকাতে থাকি, হঠাৎ করে পত্রিকাতে একদিন একটা বিজ্ঞাপন দেখে আমি ও আমার একজন কাছের বন্ধু দুজনে মিলে সেখানে ইন্টারভিউ দিতে যায়। অনেক মানুষের ভিড়ে আল্লাহর অশেষ রহমতে সেখানে আমি কোয়ালিফাই করি। এ সংবাদটা আমি এক সপ্তাহ পরে জানতে পারি। অনেক বড় একটা ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানিতে এইচআরডি-তে আমার জব হয়ে যায়। মনের মধ্যে অনেক স্বপ্ন ছিল যে, বড় একটা প্রতিষ্ঠানে আমি জব করব। ভাবলাম, আমার স্বপ্ন বুঝি পুরণ হতে চলেছে। আমি চলে গেলাম সৌদি আরব। সৌদি আরবের মদিনা ব্রাঞ্চ অফিসে আমার পোস্টিং হয়। দিন ভালই যাচ্ছিল, হঠাৎ একদিন জানতে পারলাম বাংলাদেশীদের মধ্যে কিছু লোক সৌদি আরবে বড় ধরনের অকারেন্স করেছে এবং ওই ঘটনার পর থেকে আমাদের হাই অফিশিয়ালরা আমাকে একটু অন্যভাবে দেখছিল। কারণ আমি ছিলাম পুরো সৌদি ব্রাঞ্চ অফিসের এইচআর ডিভিশনে একমাত্র বাংলাদেশী। যা ভাবছিলাম, তাই হল। হঠাৎ একদিন ঈদের আগের দিন রাত্রে, আমাকে জানানো হল আমাকে অন্য ডিপার্টমেন্টে চয়েজ দিতে অথবা অন্য কোন কান্ট্রিতে ট্রান্সফার নিয়ে চলে যেতে। যেহেতু বয়স তখন কম ছিল, আমার বসের এই কথায় মাথাটা হঠাৎই গরম হয়ে গেছিলো । আমি অপশন দিয়েছিলাম আমি দেশে ফিরে যাব। তখন কোম্পানি আমাকে দেশে পাঠাবার সবরকম ব্যবস্থা করে দিয়েছিল।
✍️ প্রবাস থেকে ফিরে আবার ঘুরে দাঁড়ানো🔷🔷
================================
তখন ছিল অন ইলেভেনের সময়। দেশের চাকরির বাজার ছিল বিশ্রী রকমের খারাপ। ব্যবসা বাণিজ্যে চলছিল মন্দাভাব। যেহেতু আমার বাবা একজন ব্যবসায়ী ছিলেন, ব্যবসার অবস্থাটা কেমন যাচ্ছে, এটা আমি কমবেশি বুঝতে পারছিলাম। আমি বাড়িতে বসে থাকলাম না, আবার চলে গেলাম ঢাকায়। জেলা স্কুলের এক বড় ভাইয়ের কাছে যেয়ে তার ফ্লাটে উঠলাম । তিনি ছিলেন একটা টেক্সটাইলের জিএম । তিনি তার অফিসে ছোট একটা কাজের ব্যবস্থা করে দিলেন । অনেক কষ্টে দিনগুলো যাচ্ছিল । আমি হিসাব করে দেখলাম এই চাকরি করতে গেলে আমার দিনের অধিকাংশ সময় চলে যাচ্ছে । আমি চাকরির পড়াশোনায় কোন ভাবে মনোযোগ দিতে পারছি না। অগত্যা এই চাকরিটা আমি ছেড়ে দিয়ে একটা টিউশনি খুঁজে নিয়েছিলাম । টিউশনের পাশাপাশি আমি আমার পড়াশোনা এবং চাকরি খোঁজার কাজ চালিয়ে যেতে থাকলাম। অবশেষে দেশের স্বনামধন্য একটি এনজিওতে ভালো একটা পদে কাজ পেয়ে যায়। দেখতে দেখতে সেখানে সাত সাতটি বছর কাটিয়ে দিই। এই এনজিওতে থাকতে-থাকতে একটা সময় “ইংলিশ ইন একশন” নামক একটি ইন্টারন্যাশনাল এনজিওর অধীনে ইংলিশ টিচার্স ফ্যাসিলিটেটর হিসাবে দায়িত্ব পায় । ইংলিশ ইন একশন এর টিম আমাকে আমাদের প্রতিষ্ঠান মধ্য থেকে তাদের প্রতিষ্ঠানের হয়ে কাজ করবার জন্য বেছে নেয়। আমি যতদিন সেখানে কাজ করেছি অনেক এনজয় করেছি। হঠাৎ একদিন আমাদের প্রতিষ্ঠান থেকে আমাকে রংপুর থেকে চট্টগ্রাম ট্রান্সফার করা হয়। প্রতিষ্ঠানের এরকম ডিসিশন আমাকে খুবই মর্মাহত করে। আমি চাকুরীতে রিজাইন দেই।
✍️ ব্যবসা শুরু করার প্রেক্ষাপট🔷🔷
=========================
আমি যখন চাকুরীতে ছিলাম, আমার কাজ শেষে আমি প্রতিদিন ফ্রিল্যান্সিং শেখার জন্য রাত আটটা থেকে দশটা পর্যন্ত একটি প্রতিষ্ঠানে কাজ করতাম । ফ্রিল্যান্সিং - এটা আমার কাছে খুবই পছন্দের একটা পেশা। সারা দিন শেষে আমি যখন সেখানে কাজ করতাম, আমি একটুও ক্লান্তি বোধ করতাম না। আমি যখন সিদ্ধান্ত নেই আমি আর জব করব না , তখন ওই প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার যিনি ছিলেন তার কাছে বিষয়টা জানাই। তার সঙ্গে আমার ঘনিষ্ঠতা ছিল অনেক কিন্তু সেদিন তিনি আমাকে ভালো কোনো ডিসিশন দিতে পারেন নাই। সে সময় অনলাইনে আমার নিজস্ব একটা প্রজেক্ট রানিং। আমেরিকান ক্লায়েন্ট । এই প্রজেক্ট এর উপর ভিত্তি করেই আরেকজন ফ্রিল্যান্সার তার সাথে করে আমরা একটা প্রতিষ্ঠান দাঁড় করায় রংপুরে। আমরা আরেকটা ছয় মাসের প্রজেক্ট কে ঘিরে দুজনে মিলে কাজ করতে থাকি। কিন্তু, তার ডেডিকেশন এবং ফিনান্স মানেজমেন্ট ততটা আশানুরূপ হচ্ছিল না। যা হবার তাই হল, প্রজেক্ট ফল করল। আমরা আর একসঙ্গে থাকতে পারলাম না। এর একমাস আগে আমি আমার ফ্যামিলিকে বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছিলাম। ভাবছিলাম প্রজেক্টটা দাঁড়িয়ে গেলে ওদেরকে নিয়ে আসব। কিন্তু না, বিধি বাঁধ সাধলো। আমিই ব্যাগ এন্ড ব্যাগেজ নিয়ে বাড়িতে চলে আসলাম।
বাড়ির সকলে আমাকে দেখে খুশি হওয়ার বদলে খুব হতাশ হলো। আত্মীয়-স্বজন বন্ধুবান্ধব সকলে বিষয়টিকে খারাপ দৃষ্টিতে নিল। চাকরি থেকে রিজাইন দেওয়ার ফলে সেখান থেকে কিছু টাকা পায় যেটা আমাকে ওই সময়তে শক্ত থাকতে ভীষণভাবে সহায়ক ভূমিকা পালন করেছিল । আমি ভাবলাম ফ্রিল্যান্সিংটা বাড়িতেই চালু করব। ছয়টা মাস দিন রাত লেগে থাকলাম। এটুকু বুঝলাম মাথায় প্রেসার নিয়ে আর যা হোক ফ্রিল্যান্সিং হবে না। আর আমি যেহেতু কনটেন্ট রাইটার হিসেবে কাজ করতাম, ঠান্ডা মাথাটা সেখানে খুবই জরুরি। আমি আমার আব্বাকে বললাম একটা ফটোকপি এন্ড কম্পিউটার কম্পজ এর দোকান দিব। আমার বাবা আমার কথায় বন্ধুর মতোই সাই দিয়েছিল। যদিও তিনি কখনোই চাননি, তার ছেলে ব্যবসা করবে। কিন্তু নিয়তির লিখন কেউ খন্ডাতে পারে না। এক পরিচিত আঙ্কেল এর মাধ্যমে আমি একটা কম্পিউটার কম্পোজ এর দোকানে কম্পোজ এর কাজ করতে শুরু করলাম । উদ্দেশ্য একটাই ওখানকার কাজ ও ব্যবসা সম্পর্কে একটা সম্যক ধারণা নেয়া এবং সাথে সাথে একটা দোকান পাওয়ার ব্যবস্থা করা। আটটা মাস সেখানে আমি কাজ করেছি। অনেকটা পরিচিত হয়ে গিয়েছিলাম সেখানে আমার কাজের জন্য। কিন্তু দোকানটা আর পাওয়া হয়নি। দোকান পাওয়ার কোন সম্ভাবনা না দেখে আমি আমার বাবাকে বিষয়টা জানাই। তারই পরামর্শে আমার বাবার দোকানে নতুনভাবে একটা ব্যবসা শুরু করি । নতুন ব্যবসা, নতুন করে অনেক অনেক কিছু শেখা, জানা-বোঝা -দিনগুলো আমার জন্য ছিলো অনেক কঠিন, অনেক চ্যালেঞ্জিং। তবু, আমি বসে থাকিনি প্রতিনিয়ত চেষ্টা করে গেছি এবং এখনো করে যাচ্ছি। ব্যবসাটা যখন একটু একটু করে সামনের দিকে এগিয়ে চলছে, চলে আসলো করোনাকালীন সময়। যে বাবা আমাকে ছায়ার মতো আগলে রেখেছিল, আমি যেন কোনো অবস্থাতে পিছলে পড়ে না যায়, সেই বাবাই 2020 সালে করোনায় আক্রান্ত হয়ে পুরো পরিবারের ভার আমার উপরে ছেড়ে দিয়ে পরপারে পাড়ি জমায়। জীবন যুদ্ধে আমি হয়ে পড়ি একা, বড়ই একা। ভিতরে ভিতরে আমি একাকীত্ব বোধ করলেও বাইরে কখনো তা কাউকে বুঝতে দিইনি। বর্তমানে আমি আমার ব্যাবসায়িক জীবনের 6 বছরে পদার্পন করেছি। পরিবারের সকলকে নিয়ে আল্লাহর অশেষ রহমতে ভালো আছি।
✍️ আমার বৈবাহিক জীবন🔷🔷
======================
আমি আমার স্ত্রীকে আমার পাশে পেয়েছি একজন বান্ধবী হিসাবে । আমার কোন কাজে সে কখনো বাদ সাধেনি। সব সময় সে আমাকে অনুপ্রেরণা দিয়ে গেছে। নিজে কষ্টে থাকলেও কখনো কোনো অবস্থাতে আমাকে তা বুঝতে দেয়নি। আমি আমার স্ত্রীকে অর্ধাঙ্গিনী হিসেবেই পেয়েছি। আমার এক ছেলে এবং এক মেয়ে।
✍️আমার কাজ🔷🔷
==============
আমার প্রতিষ্ঠানের নিজের কাজের বাইরে এখনো নতুন করে কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করিনি । তবে আমার ইচ্ছা আমি কাঠের ঘানিতে ভাঙানো খাঁটি সরিষার তেল এবং কোল্ড প্রেসড এক্সট্রা ভার্জিন কোকোনাট অয়েল নিয়ে কাজ করব। আমাদের প্ল্যাটফর্মের সকল ভাই-বোন বন্ধুরা আমাকে এই কাজে সহযোগিতা করবেন, সেটাই সকলের কাছে কামনা করি।
✍️আমার স্বপ্ন🔷🔷
=============
চাকরি করবো না, চাকরি দেবো। আমার এমন একটা প্রতিষ্ঠান থাকবে যেখানে অনেক মানুষের কর্মসংস্থান হবে। ইনশাআল্লাহ।
❤️❤️❤️❤️আমার জীবনের সেরা পাওয়া❤️❤️❤️❤️
সুন্দর মনের কিছু মানুষ যাদেরকে চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস করা যায়।
=>আমার মা-বাবা অসাধারণ মানুষিকতার মানুষ।
=>আমার স্ত্রী, আমার অর্ধাঙ্গিনী ৷
=>আল্লাহর অপূর্ব নেয়ামত হিসাবে আমার এক ছেলে এবং এক মেয়ে৷
=>ভাল মানুষের মিলনমেলার সাথে যুক্ত হতে পেরেছি।
আলহামদুলিল্লাহ ।
✍️যেভাবে এই ফাউন্ডেশনে এলাম🔷🔷
===========================
ইউটিউবে স্ক্রোলিং করতে করতে একদিন ব্যবসা সংক্রান্ত একটা ভিডিও দেখি। তখনও আমি আমাদের প্রিয় মেন্টরকে চিনিনা। ভিডিওটা আমার খুব ভালো লেগেছিল এবং কাজের প্রতি আমাকে আরো মনোযোগী করে তুলে। তখন, এই ধরনের আরো ভিডিও পাওয়ার জন্য আমি ইউটিউবে সার্চ করতে থাকলাম। একটা পর্যায়ে আমি আমাদের এই প্ল্যাটফর্মের নব্বইটি সেশনের ভিডিও পাওয়ার লিংকটা খুঁজে পেলাম। সেখান থেকেই আমি এই প্ল্যাটফর্মের যুক্ত হবার ধারণাগুলো পায় । প্রথমে আমি এই গ্রুপে জয়েন করি এবং সেখান থেকে আমি একটা লিংক পাই রেজিস্ট্রেশন করবার জন্য । আর দেরি না করে 19 তম ব্যাচে আমি আমার নাম রেজিস্ট্রেশন করে ফেলি। এই ফাউন্ডেশন থেকে আমি আমার নতুন জীবন শুরু করেছি৷ স্যারের প্রতি দিনের সেশন অনুযায়ী আমার জীবনকে আমি সামনে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি ৷ এই ফাউন্ডেশন যুক্ত না হলে হয়তো কোনদিনই বুঝতেই পারতাম না যে, কিভাবে ভালো মানুষ হওয়া যায় ৷ স্যারকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই এত সুন্দর একটা ফাউন্ডেশন আমাদেরকে উপহার দেয়ার জন্য৷
🌹নিজের বলার মতো একটা গল্প ফাউন্ডেশন থেকে যা শিখেছি:
==========================================
👉ভালো মানুষির চর্চা করা।
👉মানুষের সাথে সুসম্পর্ক গড়ে তোলা।
👉জীবন সংগ্রামে বেঁচে থাকার উপায়।
👉সময়ের সঠিক মূল্যায়ন করা।
👉অসৎ কাজ বা ব্যবসা থেকে নিজেকে বিরত রাখা ।
👉ধৈর্য ধারণ করার পদ্ধতি।
👉কমিটমেন্ট রাখা এবং কাওকে না ঠকানো।
👉মা বাবাকে ভালোবাসা ও আদর, সেবা-যত্ন করা।
👉অসহায় মানুষের পাশে থাকা।
👉সফল না হওয়া পর্যন্ত লেগে থাকা।
👉নিজেকে ভালোবাসতে শিখা।
✍️সবশেষে🔷🔷
============
🌿সকলের জন্য অনেক অনেক দোয়া ও ভালোবাসা এবং শুভকামনা রইল৷ সবাই আমার ও আমার পরিবারের জন্য দোয়া করবেন৷
প্রিয় ভাই ও বোনেরা এতক্ষন যারা কষ্ট করে আমার জীবনের গল্প পড়েছেন সবাইকে আমার অন্তরের অন্তর স্থল থেকে অনেক অনেক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি। আশা করি, সকলেই একটা লাইক ও একটা কমেন্ট করে আমার পাশে থাকবেন । ধন্যবাদ সকলকে ভালোবেসে সাথে থাকবার জন্য।
📌স্ট্যাটাস অফ দ্যা ডে ৮৬৮
তারিখ ১০-০৯-২০২২ইং
শুভেচ্ছান্তে,
আমি মোঃ আশরাফুজ্জামান
ব্যাচঃ19
রেজিঃ102481
জেলাঃযশোর