এখন ভাবি আগে কেন স্যারের সেশন আর এই গ্রুপ এর সন্ধান পেলাম না
👉👉👉জীবনের গল্প👈👈👈
                       সুখ- দুঃখ হাসি কান্না 
                    প্রবাস মানেই কস্টের বন্যা
            তবুও, পরিবার ও দেশের চাকা ঘুরাই
         পাশাপাশি উদ্যোক্তা হবার স্বপ্নও সাজাই।
আর এটাই একজন পুরুষের জীবনচক্র ।তাই আজকে আমারই জীবনের কিছু খন্ড কালীন গল্প তুলে ধরবো এই পোস্টের মাধ্যমে।আশাকরি সকলেই শুরু থেকে শেষ অবধি সাথেই থাকবেন।
আসসালামু আলাইকুম সুপ্রীয় প্লাটফর্মের শ্রদ্ধেয় সদস্যবৃন্দ।আসা করি সবাই হাসি খুশি দুঃখ আনন্দ আশা ভরসা আর ভালোবাসা নিয়ে বেঁচে আছেন,ভাল আছেন।
আলহামদুলিল্লাহ আমিও ভাল আছি আপনাদের মত।  সাধারণ আট-দশটা মানুষের মতই সুখ- দুঃখ,হাসি - কান্না সব কিছু নিয়ে ই আমার গড়া এ জীবন।
তবুও জীবনের এই বর্ণময় যাত্রাতে সময়ের সাথে আমাদের অনুপ্রেরণা ও মোটিভেশনের  প্রয়োজন হয়।
প্রয়োজন হয় কিছু সাহস কিছু উৎসাহের। আর এই সব পেলাম এই প্রানের প্ল্যাটফর্মে। "#নিজের_বলার_মত_একটা_গল্প_ফাউন্ডেশন,উৎদ্যোক্তা তৈরির কেন্দ্র" এ
আর এই প্লাটফর্ম তৈরি করে দিয়েছেন আমারদের লাখো কোটি মানুষের ভালোবাসার প্রিয় মানুষ জনাব ইকবাল বাহার জাহিদ স্যার। অসংখ্য ধন্যবাদ প্রিয় স্যারকে তার এই ক্রিয়েটিভ অনবদ্য প্লাটফর্ম তৈরী করার জন্য।
প্রিয় সহ পাঠী ভাই ও বোনেরা। আশা নয় বিশ্বাস করি, আপনারা সকলেই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমিও ভালো আছি। আজ আমি আপনাদের মাঝে আমার জীবনের গল্প টা তুলে ধরছি আসা করি সবাই গল্পটা পড়বেন। এই প্লাটফর্মে আমি অনেক এর গল্প পড়েছি। তাই ভাবলাম আমার গল্প টা ও আপনাদের মাঝে শেয়ার করি।
প্রথমে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি লক্ষ লক্ষ তরুণ তরুণীর আইডল💐 আমাদের সবার প্রাণ প্রিয় মেন্টর "#জনাব_ইকবাল_বাহার_জাহিদ " স্যার কে। যার জন্য এতো সুন্দর জীবন বদলানোর মত একটি প্ল্যাটফর্ম পেয়েছি। স্যার যদি এই উদ্যোগ না নিতো। আজ লক্ষ লক্ষ উদ্যোক্তা তৈরী হত না।। অসংখ্য ধন্যবাদ প্রিয় স্যার কে আমাদের বিনা মূল্যে টানা 90 দিন 16 টি স্কিলস শিখিয়ে, নিজের বলার মত একটা গল্প তৈরি করতে শিক্ষা দিয়ে যাচ্ছেন। স্যারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।
আমার ছোটবেলাঃ
আমি দ্বীন ইসলাম পরিবারের সবার ছোট  সন্তান।
কেরানীগঞ্জ রুহিতপুর সোনাকান্দা আমার বাসা এখানেই জন্ম বাপ দাদার বাড়ি। মার মুখে শুনেছি আমাদের অনেক অভাব অনটন গিয়েছে। তবে আমি এগোলো বুজিনি আমি মাদ্রাসায় পড়তাম মাদ্রাসা ছিলো বাড়ির পাশে। মাদ্রাসা থেকে এসে খেলা-ধুলো করতাম নানীর বাসায়।এক এলাকায় হওয়ায় নানুর বাসায় থাকতাম খেলাধুলা করতাম। পরিবার কিভাবে চলে বুঝতাম না।
 
পারিবারিক অবস্থাঃ
একসময় বাবা অনেককষ্ট করে আমাদের ভাই বোনদের মানুষ করেছেন খাবার দাবার চলা ফেরা অনেক কষ্ট হত।
আমরা 3 ভাই 3 বোন।   আমি সব ভাই বোনের ছোট হওয়াতে বুজতেই পারছেন সবার ভালো আদর পেয়েছি আমি কোন অভাব দেখিনি পরিবারে। কারণ আমি ছোট থাকতেই ভাইয়ারা বিদেশ চলে যায়। আমি জানতাম আমার ভাইয়া রা বিদেশ আমার কিসের অভাব,তেমন কিছু নিয়ে ভাবতাম না।
কিন্তু এক সময় সব ধীরে ধীরে শেষ হয়ে যায়। ভাইয়ারা যখন বিয়ে করে বাচ্চা কাচ্চা হয়ে ফ্যামিলি বড় হয়ে যায়। তখন আর সেই আদর ভালোবাসা থাকেনা। আমাদের ফ্যামিলিতেও একটা ঝড়ের মতো এসে আমার সেই আদর ভালোবাসা সব কেড়ে নেয়। জীবনে নেমে আসে এক কালো ঝড় হাওয়া। যার জন্য আমি একদম প্রস্তুত ছিলাম না।
আর যখন আমি এটা বুঝতে পারি আমার লেখা পড়া করা আর হলোনা। বাবার ইচ্ছে ছিল ভালো একজন আলেম বানাবে তাই মাদ্রাসায় পড়ালেখা করাতো। 
কিন্তু পারিবারিক কিছু সমস্যা হয়। বাবা চলতো ভাইয়াদের টাকায়। আবার আমাকে পড়ার খরচ দিবে কিভাবে আর আমার লজ্জা বেশি থাকায় আমি ও চাইতাম না। তাই পড়া লেখা ছেড়ে দেই  ক্লাস 7 পর্যন্ত পড়ে। নতুন জীবনের জন্য নিজেকে তৈরি করতে থাকি।
কর্মজীবনের সূচনাঃ
এরপর আর কি করবো বেকার ত আর থাকা যায় না। ভাবলাম জীবনে কিছু করে হলেও "মা বাবা" কে সুখে রাখতে হবে আমার। কারণ তারাই আমার পুরো পৃথিবী। আমি আমার মা বাবা কে অনেক ভালোবাসি। পরে আমি কাজ শিখতে চলে গেলাম ফার্নিচার এর দোকানে  বিনা বেতনে কাজ করলাম বছর খানেক এর মত।
তার পর কিছু টাকা বেতন ধরা হলো। কাজ করতে করতে চলে গেলো ৪ টা বছর। তখন আমার বয়স ১৭। আমি ১৩ বছর বয়স থেকে  স্ট্রাগল শুরু করি।
বিদেশযাত্রা ও জীবনের পরিবর্তনঃ
তার পর ভাবলাম এবাবে তো আমার স্বপ্ন পূরণ হতে অনেক সময় লেগে যাবে। আমি আমার মা বাবা কে তাদের মন মত সুখী করতে পারবো না। তখন মাকে বললাম বিদেশ যাবো। মা যেভাবেই হোক ধার  করে টাকা মেনেজ করে দেয়। আমি ১৭বছর বয়সে অনেক টাকার ঋণ এর বোঝা মাথায় নিই  মা বাবা কে একটু সুখে রাখতে।
পরে ভিসা নিয়ে বিদেশ এ যাই। কিন্তু বিদেশের জীবন ও যে অনেক সুখের তাও কিন্তু না। আমাকে অনেক কষ্ট করতে হয়েছে। আমি যখন সৌদি যাই তখন মে মাসের ২০ তারিখ ২০০৮সাল। আমার বয়স তখন ১৭ এতো অল্প বয়সে বিদেশ পারি জমাই। শুধু বাবা মা কে একটু সুখে রাখবো বলে।
এতো গরম সহ্য হয় না 48 ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপ মাত্রা। এর মধ্যে আমার মেজো ভাই আমাকে একটা কোম্পানি তে কাজে লাগিয়ে দেয়। কাজ ছিল বিল্ডিং এর বাহিরে ইস্কাফুলডিং এর উপর দাঁড়িয়ে সিমেন্ট এর তৈরি ডিজাইন গুলো দেয়ালে ড্রিল দিয়ে লাগানো। ওই দিকে রোদ্রে কলিজা ফেটে যায়। না পারি সইতে না পারি কইতে মনের কষ্ট বুকে চেপে কাজ করতে থাকি। কারণ অনেক টাকা ঋণ করে দিসে আমার মা। যদি তারিখ মত টাকা না দিতে পারি। কথা বরখেলাপ হয়। সবারে তারিখ মত টাকা দিতে হবে। কারণ আমার জীবনে কখনো কারো সাথে দুই নাম্বার ই করি নাই কারো ক্ষতির চিন্তা করি নাই।
আমি ছোট কাল থেকেই ছিলাম সৎ। কখনো কারোটা দেখে মনে লোভ হতোনা। মিথ্যা বলতাম না। আমার মা আমাকে যথেষ্ঠ শিক্ষা দিয়ে বড় করেছেন।
বিদেশ গিয়ে কাজ করে আস্তে আস্তে সবার পাওনা টাকা পরিশোধ করি এবং মা বাবার দায়ীত্ব নেই। আলহামদুলিল্লাহ ( ২০০৮) এ সৌদি যাই আর এখন বিদেশ করি। আলহামদুলিল্লাহ আমার বাবার যথেষ্ট খেদমত করার তৌফিক  আল্লাহ আমাকে দিয়েছেন। ৩ বার অপারেশন করিয়েছি। আমি আমার জীবনে সব উপার্জন আমার মা বাবার জন্য লাগিয়েছি কিন্তু এখন   বাবা নেই। সবাই আমার বাবার জন্য দোয়া করবেন আল্লাহ জেনো জান্নাত নসিব করেন আমিন।
এখন আমার মা আমার জান্নাত আমার সাথে আছে  তবে মাকে যথেষ্ট পরিমান সেবা যত্ন করার চেষ্টা করছি।
এখন বাবা নেই বুঝতে পারছি বাবার অভাব কি জিনিস আর জীবনে ফিরে পাবোনা বাবার আদর। তবে আমার বাবা আমাকে আমার স্ত্রীকে অনেক দোয়া করে গেছেন।
আলহামদুলিল্লাহ সবার দোয়ায় আমি মাকে সৌদি নিয়ে ওমরা হজ্ব করিয়ে এনেছি। যারা এই পোস্ট পড়ছেন আপনাদের প্রতি রইল একটা দাবি আপনারা আপনাদের মা বাবাকে যত্ন করবেন। এর মত অমূল্য সম্পদ আর পাবেননা এক বার হারাইলে। আমার বাবা যখন অসুস্থ আমার হাতে টাকা ছিলোনা সব টাকা বাবার জন্য হসপিটালে খরচ করেছি। একদিন বাবা ফোনে বললো বাবা তুই দেশে আয় আমি তোকে একটু দেখবো।😢😢 তখন আর চোখের পানি ধরে রাখতে পারিনি। হাতে টাকা নেই বাবা বলে দেশে আসতে।
আল্লাহ একটা ব্যবস্থা করে দিলো দেশে আসলাম আসার 2 দিন পর বাবা বলে বাবা তোমাকে দেশে এনেছি আমার ফরজ কাজ শেষ করতে,আমি তোমায় বিয়ে করিয়ে দিয়ে যেতে চাই দুনিয়া থেকে আমার দায়িত্ব পুরো করে যেতে চাই। এই দিকে আমার হাত খালি টাকা নেই। বললাম বাবাকে। আমার বাবা অনেক পরহেজগার লোক ছিল 5 ওয়াক্ত নামাজ জামায়াত এ আদায় করতো সবসময়। তখন বাবা একটা কথা বললো যে তুই আল্লাহর নামে রাজি হ। সব সমস্যার সমাধান আল্লাহ করে দিবে টাকাটাও আল্লাহ ব্যবস্থা করে দিবে।
তখন বিয়ে করলাম এক সপ্তাহের মধ্যে অনেক টাকা আবার ও ঋণ হয়ে গেসি। তার পর বাবার ঘরে বউ এনে অনেক দোয়া করে যান। আমার বিয়ের 24 দিন পর বাবা মারা যান । তার পর আবার শুরু করি অনেক কষ্টের দিন কাটানো । আবার ও অনেক বড়ো একটা ঝড় আসে। তবে মনকে অনেক শক্ত করে আবার শুরু করি নতুন করে। অনেক পরিশ্রমের পর এখন বিয়ে 7 বছর আলহামদুলিল্লাহ। মা, আর স্ত্রী কে নিয়ে অনেক সুখে আমার দিন কাটে। যা আমাদের প্রিয় মেন্টর জনাব ইকবাল বাহার জাহিদ স্যার সবসময় বলে দুঃখের পর সুখ আসে।
আল্লাহ আমাকে এখন যথেষ্ট  দিয়েছেন। আমি সব সময় চেষ্টা করি সুবিধা বঞ্চিত মানুষের পাশে দাড়াতে আমার সাধ্য অনুযায়ী।  আল্লাহর কাছে শুকরিয়া।
এর মধ্যে ভাবলাম দেশে চলে যাবো তখন মাথায় একটা প্লান আসলো দেশে যাওয়ার আগে একটা বিজনেস শুরু করে গেলে ভালো হবে। যেই ভাবনা সেই কাজ। ১৩ জন মিলে উদ্যোগ নিলাম এলাকায় একটা সুপার শপ দিবো। দিলাম ও। ব্যবসা চলা কালীন আমি সৌদিতে আছি কর্মরত কাজে থাকা অবস্থায় ফেসবুকে দেখলাম ইকবাল বাহার জাহিদ স্যার এর একটা ভিডিও শুনলাম সব গুলো কথা এত ভালো লাগলো।
ইন্টারেস্টেড হয়ে স্যারের আরো ভিডিও খুঁজতে থাকি। পরে fb গুরুপ পাই, join হই। পরে একা একা রেজিস্টেশন করে ফেলি 17 তম ব্যাচ এ কারণ এতটাই আমার ভালো লেগে যায় এই গ্রুপ এর স্যারের সেশন। কিন্তু যখন স্যারের শিক্ষা বুকে ধারণ করে চলা শুরু করলাম। আর ওই দিকে ব্যবসা টা আর টিকিয়ে রাখা গেলোনা।
এক বছর চালানোর পর যেই কোনো কারণ বশত ধ্বংস হয়ে যায়,ভালো টাকা লস হয় সেখানে।  আমি এখন ভাবি  আগে কেন স্যারের সেশন  আর এই গ্রুপ  এর সন্ধান পেলাম না। যদি স্যারের এই শিক্ষা আমি আগে পেতাম হয়তো এত ক্ষতি হতে বেঁচে যেতাম জনাব ইকবাল বাহার জাহিদ স্যারের শিক্ষা বুকে ধারণ করে সুন্দর করে গুছিয়ে বিজনেস  শুরু করতাম।যা হইসে তা আর ফিরে আসবে না।  আমিও নাছোড় বান্দা, এত সহজে আমি হার মানতে রাজি নই কারণ
আমাদের প্রিয় স্যার সব সময় বলে
  💐স্বপ্ন দেখুন💐
        💐সাহস করুন💐
            💐শুরু করুন💐
                💐 লেগে থাকুন💐
                    💐সফলতা আসবেই💐
                    
তাই মনে আছে সাহস আর বল ।
  স্যার বরাবর বলে থাকে। যে জিতবে সে বার বার পরবে। আর যে পরে গিয়ে দাঁড়াতে পারবে সেই সাকসেস। 
এখন ভাবছি নতুন করে কিছু একটা করবো যেহেতু আমার কাপড় আইটেম আর কসমেটিকস আইটেম নিয়ে কাজ করতে ভালো লাগে তাই এবার একটা শপ নিবো। অনলাইন অফলাইন 2 টাই নিয়ে কাজ করবো ইনশা আল্লাহ।
তাই প্রিয় স্যারের শিক্ষা বুকে নিয়ে আরো ভালো কিছু করবো সেই আশায় এখনকার পথ চলা। 
আমার জন্য দোয়া করবেন সবাই। আমি যেন একজন ভালো মানুষ হয়ে সবসময় সৎ থেকে আরো অনেক মানুষের কর্ম সংস্থার ব্যবস্থা করে দিতে পারি। আল্লাহ যেন আমাকে সেই তৌফিক দান করেন। আমিন
সবাইকে ধন্যবাদ। আবার ও সালাম।
📌স্ট্যাটাস অফ দ্যা ডে ৮৭০
তারিখ ১৬-০৯-২০২২ইং
শুভেচ্ছান্তে💐👇👇👇👇
আমি: Din islam 
                             ব্যাচ: 17
                        রেজি: 87390
                 জেলা: ঢাকা.কেরানীগঞ্জ
               আমি একজন সৌদি প্রবাসী
         বর্তমান অবস্থান কেরানীগঞ্জ রুহিতপুর
