শুরু টা করি অন্যের বুদ্ধি পরামর্শের উপর ভিত্তি করে এটাই ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল
🌹আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ ওবারাকাতুহ🌹
পরম করুনাময় আল্লাহর নামে আরম্ভ করছি,
মহান সৃষ্টি কর্তার প্রতি লাখো কোটি শুকরিয়া আদায় করছি, যিনি আমাকে সুন্দর এই পৃথিবীতে প্রেরন করেছন ও মুসলিম পরিবারে জন্ম দিয়েছেন। আলহামদুলিল্লাহ্।
🌹আমার জীবনের গল্প🌹
গল্পের শুরুটা কোথা থেকে করবো আমি বুঝতে পারছি না, তবে আমার জানা মতে জীবন গল্পের শুরু আছে কিন্তু শেষ নাই। মানুষের জন্মের পর পরই জীবন গল্প শুরু হয় আর শেষ হয় মানুষের মৃত্যুর পর।
আমি খুলনা জেলার সন্তান। এক সম্ভ্রন্ত মুসলিম পরিবারে আমার জন্ম ও বেড়ে ওঠা।
আমি মোঃ আরিফুজ্জামান, পিতা মৃত মোঃ শফিউদ্দিন আহমেদ, মাতা মিসেস হালিমা খানম, আমরা পাঁচ ভাই দুই বোন, আমি ভাইদের মধ্যে সবার ছোট এই হলো আমার ছোট্ট পরিচয়।
শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি আমার প্রিয় মা- বাবাকে। বাবা মা আমাকে অনেক ভালোবাসে ও যত্ম করে বড় করেছেন।আল্লাহ যেনো আমার বাবা কে জান্নাতুল ফেরদৌস দান করেন। আমার বাবা ১৯৯৮ সালের দোসরা জানুয়ারি দোসরা রমজান রোজ শুক্রবার আমাদেরকে ছেড়ে চলে যান। বাবা ছিলেন আমার সবচেয়ে কাছের বন্ধু। বাবা হারা সন্তানদের যে কষ্ট যে বেদনা সেই শুধুমাত্র জানে যার বাবা জীবিত নেই। আমার মা আমাকে অনেক ভালবাসে এবং দোয়া করেন যেন আমি একজন ভালো মানুষ হয়ে দুনিয়া থেকে যেতে পারি। আমি আমার মায়ের সুস্থতা কামনা করি এবং নেক হায়াত আল্লাহর কাছে চাই, আল্লাহ যেন আমার মায়ের নেক হায়াত দান করেন।আমিন।
শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করছি ,আমার মতো লাখো তরুণ তরুণীর আইকন প্রিয় শিক্ষক, উদ্যক্তা তৈরির কারিগর, জনাব Iqbal Bahar Zahid স্যারকে। যার অনুপ্রেরণায় আমি এত সুন্দর একটা পরিবার ও নিজের জীবনের গল্প লেখার সাহস পেলাম , প্রিয় মেন্টর প্রিয় শিক্ষক আন্তরিক কৃতজ্ঞতা আপনার প্রতি।
🌹আমার জীবনে ঘটে যাওয়া ঘটনা 🌹
আমার জীবনে ঘটে যাওয়া কিছু মর্মস্পর্শী সুখ-দুঃখের গল্প।
একটি মানুষের জন্মের পর থেকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত অনেক কিছু ঘটে যায় তার জীবনে। সব কিছু বলা বা লিখা হয়তো সম্ভব নয়।
আমি চেষ্টা করবো কিছুটা অংশ সবার সাথে শেয়ার করতে। সবাইকে অনুরোধ করছি একটু পড়বেন।
আমার জন্ম একটা মধ্যবিত্ত পরিবার। আমি ছোটবেলা থেকেই আমার মা-বাবার আদর যত্নে বড় হয়েছি। পড়াশোনার পাশাপাশি টিউশনি করাতাম কিন্তু কোন টাকা নিতাম না শুধু আমার পড়াশোনাটা চর্চা করার জন্যই টিউশনি করাতাম।কারণ আমার একটা উদ্দেশ্য ছিল আমি একজন বিসিএস অফিসার হব বা আর্মি অফিসার হব। দুটোর কোনটাই যখন হতে পারিনি। তখন চিন্তা করলাম যে আমি একটা চাকরি করব আর পাশাপাশি একজন উদ্যোক্তা হবো। আমার গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করার পর ২০০০ সালে আমি প্রথম একটা প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরি করি ছয় মাস করার পর সেটা ছেড়ে দিলাম আবার আর একটা প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরি করলাম। আমি চেষ্টা করতেছিলাম ভালো কিছু করার তখন আমি একটা মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে ইন্টারভিউ দেই এবং সিলেকশন হই তখন আমি মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে জয়েন্ট করি সাথে সাথে আমি এমবিএতে ভর্তি হই ও এমবিএটা কমপ্লিট করলাম । চাকরির পাশাপাশি ব্যবসা শুরু করার জন্য বেশ কিছু টাকা ইনভেস্ট করলাম অন্যের পরামর্শে। প্রতি মাসে লাভ পেতাম এমতাবস্থায় আমার ইনভেস্টমেন্টের এমাউন্ট হয়ে দাঁড়ায় একটা বড় পর্যায়ে। আমি ব্যাংক লোন নেই আর সেই টাকা ও ইনভেস্টমেন্টে দেই এভাবে বছরখানেক চলে। তারপর আমি সিদ্ধান্ত নেই যে আমি আর চাকরি করব না আমি এই ব্যবসাটাতেই সময় দিব এবং এখান থেকে বেশ ভালো কিছু হবে বলে আশা করছিলাম। হঠাৎ করে করোনার মৌসুমে ব্যবসাটা লস হয়ে যায় আর ম্যানেজমেন্টের অস্বচ্ছতার কারণে আমি ওখান থেকে চলে আসি, আসার সময় আমি একটা টাকাও পাইনি। যাদেরকে আমি এত বিশ্বাস করে এতগুলি টাকা দিয়েছি শেষ পর্যায়ে তারা আমাকে হিসাবটাও দেয়নি। তাদের সমন্ধে আমার ধারণাটা পুরোটাই পাল্টে যায়। আমি এমন একটা অবস্থায় পড়ে যাই যে যেটা বলে বোঝানো খুবই কঠিন ও কষ্টদায়ক। যেখানথেকে ঘুরে দাঁড়ানো একটা সুস্থ ও স্বাভাবিক মানুষের পক্ষে প্রায় অসম্ভব। আমিও এর ব্যতিক্রম নয়।আমি আল্লাহর কাছে সব সময় চাইতাম আল্লাহ তুমি আমাকে সাহায্য কর।মাঝে আমি অনেক অসুস্থ হয়ে পড়ি এবং মানসিকভাবে পুরাপুরি ভেঙে পরি।তখন আমার কাছে মনে হচ্ছিল যেন দুনিয়াটা খুব কঠিন একটা জায়গা। কিন্তু আমি সার্বক্ষণিক আল্লাহর সাহায্য চেয়েছি আর আমার মায়ের দোয়া পেয়েছি। আল্লাহপাক আমাকে অনেক কিছু শেখার তৌফিক দিয়েছেন।
🌹বৈবাহিক জীবন🌹
২০০৮ সালের ১৮ই জানুয়ারি আমার বিবাহ হয় ।তখন আমি মালটিন্যাশনাল কোম্পানিতে চাকরি করতাম। বিয়ের পর থেকেই আমি আমার ওয়াইফ কে বলতাম যে আমি চাকরি বেশিদিন করবো না। আমি ব্যবসা করব আমার ওয়াইফ কখনোই ব্যবসাতে রাজি ছিল না। সে বলত তুমি একটা ভালো কোম্পানিতে চাকরি করতেছো এবং এটাতেই তুমি একদিন ভালো একটা অবস্থায় চলে যেতে পারবে ইনশাআল্লাহ। তুমি এ ব্যবসায় ইনভেস্টমেন্ট করোনা কিন্তু আমি তার কোন কথাই শুনিনি। আমি এখানে ইনভেস্টমেন্ট করলাম চাকরিও ছাড়লাম আমার লাইফটা অনেকটা এলোমেলো হয়ে গেল। তখন আমার বড় মেয়েটা বয়স ৯ বছর আমার চাকরি ছাড়ার কথা শুনে প্রচন্ড কান্নাকাটি করলো, আর আমার ছোট মেয়ের বয়স দেড় বছর। আমার কলিজার টুকরা মেয়ে দুইটার জন্য আপনারা একটু বিশেষভাবে দোয়া করবেন। আমি তখন কারো কাছ থেকে কোন সাপোর্ট বা কোন আশা পাচ্ছিলাম তো নাই বরং শুনেছি অনেক কষ্টদায়ক কথা । কারণ আমার এই চাকরি ছাড়াটা মেনে নিতে পারেনি কেউই ।শুধু আমার মা আমার জন্য সার্বক্ষণিক দোয়া করতেন, আমার কাছে মনে হয় আমার মায়ের দোয়ার কারণে আমি এখন পর্যন্ত বেঁচে আছি, সুস্থ আছি। এদিকে আমার বড় মেয়ে ভিকারুন্নেসা স্কুলে পড়ে তার একটা খরচ বাসার একটা খরচ। সবকিছু নিয়ে আমি মানসিকভাবে খুব ভেঙ্গে পড়ি। তখন আমার এক আত্নীয়ের সাথে ডেনিম ফেব্রিক্স এ ব্যবসা শুরু করি। এখন পর্যন্ত এটাই করছি একটা সফল উদ্যোক্তা ও ভালো মানুষ হওয়ার জন্য মনে প্রাণে চেষ্টা করছি।
🌹স্যারের থেকে আমার অনুপ্রেরণা 🌹
আমি ইউটিউবে আমার প্রিয় স্যারের ভিডিও দেখি অনেক আগে থেকে । আর এই ভিডিও থেকে আমার ধারণাটা পাল্টাতে থাকে যে এখনো ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব। যদি কিনা কোন কিছুর সাথে লেগে থাকা যায় এই আত্মবিশ্বাসটা আমার প্রচন্ডভাবে বেড়ে যায়। তখন আমি সিদ্ধান্ত নেই নিজের বলার মতো একটা গল্প ফাউন্ডেশন কিভাবে আমি জয়েন করব।
তখন আমি তৌহিদ ভাইয়ের সহায়তায় আমার নিজ জেলা খুলনা টিমে জয়েন করতে চাই তখন উনি আমাকে খুলনা টিমের সঙ্গে যোগাযোগ করার ব্যবস্থা করে দেন। তখন আমি খুলনা টিমের ময়না আপুর সঙ্গে যোগাযোগ করে আমি রেজিস্ট্রেশন করি আমার প্রিয় গ্ৰুপে।
🌹আমার উদ্যক্তা জীবন 🌹
আমার অনেক আগে থেকেই ইচ্ছা ছিল নিজে কিছু করার কিন্তু শুরু টা করি অন্যের বুদ্ধি পরামর্শের উপর ভিত্তি করে এটাই ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল।আমার অনেক টাকা লস হয়েছে যা আমাকে সারাটাক্ষন কষ্ট আর যন্ত্রণা দেয়। এই বিজনেসে আমার ওয়াইফের ইচ্ছা ছিল না। এখন নিজের কাছে মনে হয় একটা ভুল আমার জীবনটাকে বলা যায় যে ধ্বংস করে দিয়েছে। তবে আমার বিশ্বাস আমি একদিন ঘুরে দাঁড়াবো ইনশাআল্লাহ। যতই সময় লাগুক না কেন আমি ইনশাল্লাহ লেগে থাকবো আমার জন্য দোয়া করবেন আমি আপনাদের কাছে দোয়া চাই। আর
আমি আমার পক্ষ থেকে জানাই অনেক অনেক ধন্যবাদ।
🌹 ফাউন্ডেশন এর পরিচয়🌹
নিজের বলার মতো একটা গল্প ফাউন্ডেশন শুধু মাত্র বাংলাদেশের জন্য নয় সারা পৃথিবী জন্য একটা ব্রান্ড। যেখানে টানা ৯০ দিনের উদ্যোক্তা বিষয়ক প্রশিক্ষণের পাশাপাশি কিভাবে একজন ভালো মানুষ হতে পারি সে বিষয় প্রতিনিয়ত দিক নিদর্শনা দিয়ে যাচ্ছেন প্রাণের প্রিয় মেন্টর জনাব Iqbal Bahar Zahid sir
এখানে নিজের পরিচয় ফুটিয়ে তোলা যায়। কথা বলার জড়তা কাটানো যায় ।নিজের পণ্যের ব্র্যান্ডিং ও ভালো মানুষই চর্চা হয়। তৈরি হচ্ছে দক্ষ লিডার।
কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি খুলনা জেলার সকল দায়িত্ব শীল দের প্রতি কোর ভলেন্টিয়ার ,মডারেটর ,জেলা এম্বাসেডর ,উপজেলা এম্বাসেডর ,কমিউনিটি ভলেন্টিয়ার আজীবন সদস্য ও সকলের প্রতি।
আপনাদের সকলের সহযোগিতা জন্য আমি আন্তরিকভাবে কৃতজ্ঞ। ফাউন্ডেশনের শপথ বুকে ধারন করে একজন সফল উদ্যোক্তা হিসেবে আমি ঘুরে দাড়াবো ইনশাআল্লাহ।
আমার গল্প ধৈর্য সহকারে পড়ার জন্য সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ।
প্রিয় স্যারের দেওয়া সেই অমীয় বাণী দিয়ে শেষ করতে চাই।
"স্বপ্ন দেখুন
সাহস করুন
শুরু করুন
লেগে থাকুন
সফলতা আসবেই"
ইনশাআল্লাহ।
📌স্ট্যাটাস অফ দ্যা ডে -৮৭২
তারিখ ১৮-০৯-২০২২ইং
ধন্যবাদান্তে
আমি :মোঃ আরিফুজ্জামান
ব্যাচ :১৯
রেজিস্ট্রেশন :১০৪৯৩৭
ব্লাড গ্রুপ:বি +
থানাঃ খালিশপুর
জেলা ঃ খুলনা।