সময় নিন,সময় দিন,সময় বদলাবে , সময় সব ঠিক করে দিবে।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
আসসালামু আলাইকুম
--------------"আমার জীবনের গল্প "--------------
____কেমন আছেন প্রিয় ফাউন্ডেশনের ভাই ও বোনেরা আশা করি আল্লাহর অশেষ রহমতে সবাই ভালো আছেন।আমিও আপনাদের সবার দোয়ায় আল্লাহর রহমতে বেশ ভালো আছি।
পরম করুণাময় আল্লাহপাকের নামে শুরু করছি।
🔷আমি সুলতান হোসেন
কৃষক সুলতান।
তাইবলে কি আমার জীবনের গল্প থাকবে না।
____শুরুতেই শ্রদ্ধার সাথে স্বরন করছি আমার পিতা মাতাকে যাদের উছিলায় এই পৃথিবীর আলো দেখেছি।
________তার পর কৃতজ্ঞতা স্বীকার করছি যার উছিলায় আমরা এমন একটা প্লাটফর্ম পেয়েছি। যিনি আমাদের সপ্নদ্রষ্টা লাখো তরুণদের আইকন, লক্ষ লক্ষ তরুন তরুণীর উদ্দোক্তা গড়ার কারিগর।বাংলাদেশ এর বেকারত্ব দুর করার জন্য যিনি অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন আমাদের সকলের প্রিয় মেন্টর জনাব ইকবাল বাহার জাহিদ স্যারের প্রতি।
🔷🔷আমি জন্ম গ্রহণ করেছিলাম বরিশালের বানারিপাড়ায় এক মধ্যবিত্ত পরিবারে। আমার বারা একজন খুদ্র ব্যবসায়ী। অত্যন্ত পরিশ্রমি ছিলেন।শান্ত প্রিয় নিরীহ সাদাসিধে মানুষ ছিলেন এলাকায় সবাই তাকে পছন্দ করত তার সততার জন্য। তার বেশি অর্থ ছিল না কিন্তু প্রচন্ড সৌখিন ছিল।আমিও গরবিত এমন একজন পিতার সন্তান হতে পেরে।আমার বাবার সখ ছিল রেডিও ঘড়ি ও আংটি সে রেড়িও সব সময় নতুন মডেল খুজত।চার পাচ টি আংটি তার হাতে সব সময় থাকত। ঘড়ির মডেল এ ও ছিল তার নজর।
সে কখন কার কাছে টাকা ধার চাইত না। শত প্রয়োজন হলেও,। সেখানে তার জেদ কাজ করত বলত চাইলে যদি না দেয়। প্রয়োজন হলে হাতের আংটি,ঘরি রেডিও বিক্রি করে দিত।এমন কি বাউন্ডারি র টিন পর্যন্ত বিক্রি করত৷ আবার দুই চার দিন পর কিনত।আজ তিনি আমাদের মাঝে নেই।আমাদের এতিম করে চলে গেছে পরো পারে, সবার কাছে আমার বাবার জন্য আমি দোয়া চাই সবাই আমার বাবার জন্য দোয়া করবেন।
🔷🔷আমার মাও ছিল অনেক ভালো মনের একজন মানুষ। আমরা ৫ ভাই ৫ বোন মাকে কখনো মন খারাপ করতে দেখিনি। কখনও তার কোন এক্সটা চাহিদা ছিল না। পাড়ার সবাই তার অপন জন ছিল সবাই আমার মাকে খুব ভালবাসতো।তার মৃত্যুতে পুরো গ্রাম কেদেছিল।আমার মায়ের জন্য ও সবার কাছে দোয়া চাচ্ছি সবাই আমার মায়ের জন্য দোয়া করবেন।
🔷🔷____আমার ছেলে বেলা।
ছেলেবেলার আমি ছিলাম দুরন্ত লেখাপড়ার চেয়ে খেলাধুলা ও বাদরামি টা বেশি করতাম। স্কুল ফাকি দিতাম ধরা পরে অনেক মাইর খেতাম। স্কুলের চেয়ে খেলাধুলা পছন্দ করতাম বেশি স্কুল ফাকি দিয়েছি মাসের পর মাস।বাবা মা অনেক চেষ্টা করছে আমি যাতে ঠিক মতো পড়াশুনা করি বকাও শুনেছি অনেক।এক দিন সপ্তম শ্রেনিতে পড়ার সময় হেড মাস্টার স্যর আমার বাবার কাছে আসে। বলে তোমার ছেলে অনেক দিন স্কুলে জায় না। বাবা আমাকে খবর দিলে বাসা থেকে পালাই। নানা বাড়িতে চলে যাই।সাত দিন পর বাবা নানা বাড়িতে গিয়ে আমাকে নিয়ে আসে এবং ঘরে আটকে রাখে এবং প্রচন্ড মারধর করে। তার পর পুরে এক দিন কোন খাবার দেয় নাই। মায়ের উছিলায় পরের দিন খাবার পাই। এর পর থেকে নিয়মিত স্কুল যাই। আমি স্কুলে খেলা ধুলা র প্রতি নজর বেশি দেই। ফলে প্রতিযোগিতায় ৪/৫ টি পুরস্কার আমার জন্য নিরধারিত ছিল। আমি ছিলাম খেলাধুলা চেম্পিয়ান।
অস্টম শ্রেনি পর্যন্ত পিছনের বেঞ্চের ছাত্র ছিলাম। তার পর একটু একটু করে ভালোর দিকে যাচ্ছিলাম। তাও রোল ৭ এর উপর উঠে নাই কোনদিন।পরাশুনা যা তা শুরু করি অস্টম শ্রেনী থেকে। পরে মেট্রিক পাশ করি ভালো রেজাল্ট ও করি। তারপর পলিটেকনিক থেকে ডিপ্লোমা করি।ছেলে বেলা থেকে সখ ছিল কৃষি উদ্দোক্তা হবো।ছোট বেলা থেকেই কোথাও কোন গাছের চারা পেলে এনে লাগানো।হাস মুরগীর বাচ্চা এনে লালোন পালন এগুলো দিয়ে কৃষি তে হাত খরি।
আমার উদ্দোক্তা জীবন শুরু।
🔷🔷___আমাদের পরিবার ছিলো অনেক বড় আমরা ছিলাম দশ ভাই বোন। আমি ছিলাম পরিবারের বড় ছেলে। সেই সুবাদের আমার দায়িত্বও ছিলো অনেক বেশি। আমার মা প্রায় সময়ই অসুস্থ হত।তাই পরিবারের অনেক কাজ আমাকেই করতে হয়,ভাই বোনদের দেখা শোনা করতে হতো।তাই পারিবারিক প্রয়েজনে ডিপ্লোমা করার পর আমার বিবাহ করতে হয়। স্ত্রী পারভিন বয়স ছিল পনের বছর। নবম শ্রেণির ছাত্রী। সেই থেকে আর লেখা পরা এগেতে পারি নি।একটা সময় পরিবারের দায়িত্ব কাদে চলে আসলো।অনেক খোজা খোজির পরে একটা বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি নেই। কিন্তু মন বসাতে পারি নি। ৩ মাস পর ছেরে আর একটা চাকরি নেই কিন্তু ওখানেও মন টিকলো না। আমি ছিলাম স্বাধীনচেতা কারো অধিনে কাজ করবো সেটা কখনোই মানতে পারিনি।এনিয়ে পরিবারে সবার সাথে অসান্তি মনে মালিন্য।পরিবারিক অশান্তি একটা সময় বাড়ি ছাড়া হলাম এক কাপরে বাড়ি থেকে বের হয়ে আসি। স্ত্রী সহ শুরু হল উদ্যোগতা জীবন ২০০০ টাকা পুজি নিয়ে।
____পিতা ব্যবসায়ী ছিলো সেই সুবাদে পরিচিত কিছু মহাজন এর সহায়তায় বেডিং আইটেম এর দেকান শুরু করি। এক বছর কঠোর পরিশ্রম করি আল্লাহর রহমতে ভালো অবস্থান এ চলে চাই। দুই বছর ভালেই পজিশন ছিল। আমার ব্যবসা ভালো দেখে কিছু কুচক্রী মহল ও ব্যবসাইরা চক্রান্ত দোকান ঘর মালিকে সাথে নিয়ে। দোকান ভারা দিবে না বলে আমাকে ঘর ছারতে বলে।তখন কিছু পুজি ছিল ৪০০০০ হাজার। তাই নিয়ে চট্টগ্রামে চলে যাই। ওখানে এক বছর ব্যবসাা করে আবার বানারীপাড়া ফিরে আসা৷ আবার ব্যবসা শুরু করি। এবং ৫ বছরে শাড়ির দোকান সহ ৩ টি প্রতিস্ঠান, এর মালিক হই। পুজি ৫ লক্ষ টাকা ছারিয়ে যায়। এভাবে দশ বছরের ২০ লক্ষ ছারিরে যায়।
🔷🔷___শুরু করি ঠিকাদারি ব্যবসা।
সবার লাভ হত আমার হতো না। কারণ আমি তো চুরি বিরোধী।আবার চুরি না করলেও ঘুষ দিতে হয়।
প্রথম শ্রনি এলজিইডি ঠিকাদার, রোড ডিভিসন বি লাইসেন্স,। পরিনাম পাঁচবছর এ লোকশান ১০০০০০০/ দশ লক্ষ। বাদ দিয়ে কৃষি ফার্ম শুরু। ২০০৪ সালে
আমার পরিবারের কেউ কৃষিক ছিল না কিন্তু আমার সখ ছিলো নিতান্ত সখে আমি হলাম কৃষক।
কৃষি ফার্ম শুরু করি ২০০৪ সালে পোল্ট্রি ফার্ম এর মাধ্যমে। কিন্ত সিন্ডিকেটের মূখে পরে ১০ লক্ষ টাকা লোকসান দেই। ২০০৭ সালে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যলয় খেকে ফল চাষ এর প্রশিক্ষন নেই F. T.I. P প্রকল্প । ডঃ আঃ রহিম স্যর এর আন্ডারে। এর পর প্ররশিক্ষন নেই ডঃ এম মন্জুর স্যর রাজশাহী ইউনিভার সিটির আন্ডারে। বাউ কুল আপেল কুল চাষ শুরু করি সাথে আম মালটা আমরা সফেদা। স্ট্রবেরি চাষ এবং সারা দেশে কৃষক হিসেবে পরিচিতি পাই। বিশ টি টিভি প্রতিবেদন প্রচারিত হয় এবং অসংখ্য পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রচারিত হয় হয়ে গেলাম জাতীয় কৃষক।
মাছ চাষ শুরু করি ২০১২ সালে ২০১৭ এর শেষ এসে বায়োফ্লক সিস্টেম এ যুক্ত হই এবং সারা দেশ ও পরিচিতি পাই। Barisal biofloc নেটে সার্চ দিলে অসংখ্য ভিডিও পাবেন। আমি বাংলাদেশের একমাত্র ফ্রী ট্রেনার ছিলাম শুরু থেকে। সরকারি ও বেসরকারী অসংখ্য প্রশিক্ষণ পরিচালনা করি।।
আমরা মাছ মুরগী হাস এর খাবার খরচ কমাতে বাংলাদেশ এ ব্লাক সোলজার ফ্লাই নিয়ে আসি। এরং সারা দেশে অভাবনীয় সারা পাচ্ছি। এটা বাংলাদেশের কৃষি তে বিপ্লব নিয়ে আসবে বলে আশাবাদি।
❤️❤️নিজে বলার মত ফাউন্ডেশনে যুক্ত হওয়া
ফেজবুকে ও ইউটিউব এ কাজ করার সুবাদে হটাৎ একদিন ইকবাল বাহার জাহিদ স্যর এর ভিডিও সামনে চলে আসে। এক এক করে কয়েকটা ভিডিও দেখলাম দেখার পরে অবাক হয়ে গেলাম মনে হলো জীবনে অনেক ভুলে ছিলাম। মনে হলে একজন সফল ক্ষণজন্মা মানুষের সন্ধান পেলাম আগে পেলে হয়তো আমি আরো ভালো কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারতাম।বুড়ো বয়সে এসে স্যারের দেখা পেয়ে আবারও স্বপ্ন দেখা শুরু করছি মনে হয়ে আমাকে দিয়ে আরোও অনেক কিছু হবে।
কৃষি নিয়ে হতাশ ছিলাম কোন গাইড ছিল না। পিতা মারা জাওয়ার পর অভিভাবক ছিল না। উনার অনুপ্রেরণা মুলক সেশন গুলো পরতে থাকি ভিডিও গুলো দেখতে থাকি।
আর ভাবতে থাকি আগে ওনাকে পেলে আমার কৃষি তে কুটি টাকা হারাতাম না।
দশম ব্যাচ থেকে থেকে যুক্ত হই গ্রুপে আমি বয়স্কো মানুষ আমাকেও যে রেজিষ্ট্রেশন করতে হবে তা বুজতে পারিনি। এক দিন এক ভাই বল্লো যারা রেজিষ্ট্রেশন করে তারাই কেবল একমাত্র এই ফাউন্ডেশনের সদস্য। তাই আমিও ১২ তম ব্যাচে রেজিষ্ট্রেশন করি তার সহযোগিতায়।যোগ দিলাম বরিশাল জেলা উদ্দোক্তা সম্মেলনে।সবার কথা শুনে এবং স্যারের বক্তব্য শুনে জীবন বদলে গেলো। সেই থেকে যুক্ত আছি এই ভালবাসার ও ভালো লাগার ফাউন্ডেশনে।
🔷এই প্লাটফর্ম থেকে পেয়েছি ৬ লক্ষ ভাই বেন।
৬৪ জেলা ও ৫৫ কান্ট্রি তে ব্রান্ডি করার সুজোগ।
এগ্রো ফোরাম ভলান্টিয়ার ও ভিবিন্ন জেলায় কৃষি বিষয়ক নলেজ শেয়ারিং করার সুযোগ ও সন্মান।
🔷প্রিয় স্যার আপনার কাছ থেকে আরও শিখেছি___
১।সপ্ন দেখুন , সাহস করুন, লেগে থাকুন সাফল্য আসবেই।
২।জীবনে বলার মত একটি গল্প থাকা দরকার।
৩।জীবন এ ৫/৭ বছর ৯টা ৫ টা ভূলে জেতে হবে।
৪।সফলতা হলো ৪ স, সু শিক্ষা, সু সাস্থ,সুখ, সম্পদ।
৫।জীবনে সফল হতে পজেটিভিটি থাকতে হবে।
৬।সবচেয়ে বড় বিনিয়োগ হচ্ছে সততা এবং কমিটমেন্ট।
৭।সময় নিন,সময় দিন,সময় বদলাবে , সময় সব ঠিক করে দিবে।
৮।সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসতে পারে কোন বিসনেস আইডিয়া।
৯।বিস্টি সবার জন্য পরে কিন্তু ভিজে কেউ কেউ।
১০।মানুষের জন্য কাজ করলে জীবিকার জন্য কাজের অভাব হয় না।
🔷সালাম প্রিয় স্যারকে
🔷সালাম ৬ লক্ষ ভাই বেন কে
এখানে প্রশিক্ষণ নিয়ে উদ্যোগ তা ও ভালো মানুষ হতে চাই দোয়া করবেন সবাই আমার জন্য।
🔷এবছর বাংলাদেশ মাছ চষি সংগঠন থেকে আমি সেরা মৎস্য খামারী বাংলাদেশের পুরস্কার পেলাম।
🔷আপনাদের প্রতি অনেক কৃতজ্ঞতা স্বীকার করছি।
কস্টকরে আমার আগোছালো লেখা গুলো পরলেন
সময় নষ্ট করে তাই কৃতজ্ঞ সবার প্রতি।
📌স্ট্যাটাস অফ দ্যা ডে ৮৭৯
তারিখ ০১-১০-২০২২ইং_
💢 সুলতান হোসেন
💢ব্যাচ ১২
💢রেজিষ্ট্রেশন নং ৩৯৭৭১
💢জেলা - বরিশাল
💢থানা- বানরিপাড়া
💢বর্তমান অবস্থান - বানরিপাড়া।