মমতা ভালোবাসা ও আদর যত্ন দিয়ে বড় করছেন,,
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
আসসালামু আলাইকুম,
🌷শুরু করছি মহান আল্লাহ নামে যিনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন এবং সৃষ্টির শ্রেষ্ট-জীব হিসাবে পৃথিবীতে প্রেরণ করে এখন পর্যন্ত সুস্থ ও নিরাপদে রেখেছেন, আলহামদুলিল্লাহ,,
🌷দরুদ ও সালাম পেশ করছি মানবতার মুক্তির দুত বিশ্বনবী হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) এর প্রতি যিনি হাশরের ময়দানে আমাদের হাওজে কায়সারের পানি পান করাবেন,
🌷কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি আমার পরম শ্রদ্রেয় ও সম্মানিত মা বাবা প্রতি,যাদের উচিলায় আল্লাহ তায়ালা আমাকে এই সুন্দর পৃথিবীতে এনছেন,তারা পরম মমতা ভালোবাসা ও আদর যত্ন দিয়ে বড় করছেন,, আল্লাহ তুমি তাদের শান্তিতে রাখো, তাদের প্রতি রহমত দান কর
🌷আমি অন্তরের অন্তস্তল থেকে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি আমাদের সকলের প্রিয় মেন্টর, সময়ের সাহসী শিক্ষক,শতাব্দীর জীবন্ত কিংবদন্তি, লাখো লাখো তরুণ তরুণীর আইডল,জনাব ইকবাল বাহার জাহিদ স্যারের প্রতি,যার অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমে আমরা পেয়েছি নিজের বলার মত একটা গল্প ফাউন্ডেশন, পেয়েছি লাখো ভালো মানুষে একটি পরিবার,তিনি এই প্লাটফর্ম উপহার দিয়ে থেমে যাননি, প্রতিনিয়ত আমাদের সাথে আছেন যেন আমরা ছিটকে না পড়ি বা ক্ষতিগ্রস্ত না হই,আল্লাহ স্যারের দীর্ঘ হায়াত দান করুক, সুস্থ ও নিরাপদে রাখুক,,
🌷আমার জীবনের গল্প 🌷
♥️ আজকে আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করবো আমার জীবনে ঘটে যাওয়া হাসি-কান্না এবং সুখ-দুঃখের কিছু স্মৃতির দিনগুলোর কথা,
আসা করবো সবাই ধৈর্য সহকারে আমার জীবন গল্প টা পড়বেন,এটা সত্যি গল্প নয় আমার জীবনের স্মৃতিবিজড়ীত কিছু কথামালা,
♥️♥️-----------আমার ছেলেবেলাঃ
একটি সম্ভান্ত্র মুসলিম পরিবারে ১৯৮২ সালে ০২ ফেব্রুয়ারি আমার জম্ম,ফেনী সোনাগাজী উপজেলায়,, বাবা ছিলেন একজন রেমিট্যান্স যোদ্ধা মা ছিলেন গৃহীনি,আমি মোঃ রফিকুল ইসলাম সহ ছোট এক ভাই ও বড় তিন বোন নিয়ে বসবাস,বাবার কড়া শাসনে ছোট বেলা থেকেই মানুষ হতে থাকি,মা ছিলেন অতি নরম মনের মাটির মানুষ,,
♥️♥️---------শিক্ষা জীবনঃ
১৯৮৭ সালে আমাদের পাশের গ্রামে আড়কাইম সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তির মাধ্যমে আমার শিক্ষা জীবন শুরু হয়,আমার এক বছরের বড় বোন আর আমি একেই ক্লাসে ভর্তি হয়ে একসাথে আসা যাওয়া করি,কিন্তু একবছর পর আমাকে সেখান থেকে নিয়ে এসে বখতার মুন্সী মাদ্রাসায় আবার প্রথম শ্রেনীতে ভর্তি করে দেয়,ছাএ হিসাবে খুবেই ভালো ছিলাম,দুষ্টমীতে সবার আগে,ক্লাসে আমি সবার পরে গেলেও প্রথম টেবিলে আমার বসা ছাই,
সবধরনের খেলাধুলায় আগের কাতারে থাকতাম,খেলাধুলার জন্যে অনেক মার খেয়েছি, বাড়িতে সময়মত না ফেরার কারণে,১৯৯৯ সালে দাখিল পরিক্ষায় ১ম বিভাগে পাশ করে ফেনী আলিয়া মাদ্রাসায় ভর্তি হই,শহরে এসে অবাধ স্বাধীনতা পেয়ে পড়াশোনা দিকে মনোযোগ ধরে রাখতে পারছি না,
🌷🌷🌷------------
দুঃখ বেদনার দিনগুলোঃ
বাবা ছিলেন একজন প্রবাসী,তিনি ইরাকে থাকতেন,আমি তখন ছোট, আমার এখনো মনে আছে আমাদের গোয়াল-ভরা অনেক গোরু ছিলো,গোলা-ভরা ধান,অনেক বড় বড় গোলা ছিল কয়েকটা,,আশেপাশের অনেক লোক আমাদের কাজ করতো,
ইরাক এবং ইরানের যুদ্ধ সময় বাবা একবারে দেশে চলে আসে,আয়ের পথ বন্ধ, কিছুদিন যাওয়ার পর বাবার কেনা জমিগুলো এক এক বিক্রি শুরু করলো,এর মাঝে আমার বড় দুই বোনের বিয়ে হয়ে যায়, বাবার কেনা জায়গায় বিক্রি পর এবার দাদার জায়গা বিক্রি শুরু হল,তখন আমার মামা ও আত্মীয় স্বজনরা পরামর্শ দিলো এভাবে আর কত সবই শেষ করছেন,আপনি আবার বিদেশে যান,নতুন করে আবার বিদেশে যাবে সেই টাকা কোথায়, আমার জেঠা চট্টগ্রামে একটা মেইলে ভালো চাকরি করতো,সবাই বললো ওনি চাকরি ছেড়ে দিলে অনেক টাকা পাবেন সেই টাকা দিয়ে বিদেশে যেতে পারবেন(উল্লেখ্য আমার জেঠা বিয়ে করেন নাই)তখন অনেকেই জেঠাকে বুঝিয়ে চাকরি ছাড়তে বাধ্য করেন,সেই টাকা দিয়ে আবার ১৯৯৫ সালে মালয়েশিয়া যান,,প্রথম দু'এক বছর ভালো কাটছিলো,কিন্তু বেশি স্থায়ী হল না,হঠাৎ একদিন শুনতে পেলাম বাবার কোম্পানির কি সমস্যা হয়েছে, বাবা এখন মালয়েশিয়ার জেলে,, রীতিমত সংসারের চাকা চলা একেবারে বন্ধ হয়ে গেল,এক মাস দুই মাস নয় টানা নয় মাস জেলে ছিলেন, সেই দিনগুলো আমাদের অনেক অনেক কষ্টে গেল,কখনো বাঁশ বিক্রি কখনো পাতা বিক্রি কখনো নারিকেল বিক্রি করে সাপ্তাহিক শনিবার ও মঙ্গলবার বাজার করতো,নয় মাস পর জেল থেকে ছাড়া পাবার পর কিছুটা স্বাভাবিক হলো পরিবারের আর্থিক অবস্থা,, এর মাঝে ২০০১ সালে আমার আলিম পরিক্ষা শেষ হলো,তখন সবাই বললো বাবার শারীরিক অবস্থা ভালো না,আমাকে বিদেশে পাঠিয়ে দিতে,,
🌷🌷🌷🌷---------
প্রবাস জীবনঃ
২০০২ সালের মার্চ মাসে ০৩ তারিখে অনেক স্বপ্ন নিয়ে সৌদি আরব এসে পৌছলাম, শুরু হলো প্রবাস জীবন,,দুই মাস বসে থাকার পর ৭০০ রিয়ালে একটা চাকরি পেলাম,,শুরু হলো চাকরি জীবন, সাড়ে পাঁচ বছর পর প্রথম ছুটিতে যাই,ছুটিতে এসে ২০০৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে বিয়ের কাজটাও সেরে ফেললাম,শুরু হল নতুন আরেক জীবন,,, ছয় মাস দেশে থেকে আবার প্রবাসে ফিরে এলাম,বাবাকে দেশে পাঠিয়ে পুরো সংসারের ভার কাঁধে নিলাম,দুই বছর পর পর দেশে যেতাম,চলছে সংসার স্বাভাবিক ভাবে,,২০১২ সালে ছুটিতে দেশে আসলে ফেনী শহরে একটা জায়গা ক্রয় করি,তবে অধিকাংশ টাকা ব্যাংক লোন ও ধার করে নিয়ে ছিলাম,এভাবে চলছে জীবন,বাবার সেই পুরনো ঘরে এখনো আছি,
মায়ের স্বপ্ন তার ছেলে যেন সুন্দর একটা ঘর করে, মায়ের স্বপ্ন পুরুণ করতে নেমে পড়লাম, অনেক রাজমিস্ত্রী কন্টেকদার ও বন্ধুদের সাথে আলোচনা শুরু করলাম, এবং ঘরের ডিজাইন তৈরি করলাম,সবাই একেই কথা ৩০/৩৫ লাখ টাকা খরচ হবে এই ঘর করতে,,আমার তখন ৩০ হাজার টাকাও জমা ছিল না,ভেবে চিন্তে সিদ্ধান্ত নিলাম একসাথে এত টাকা জমা করা আমার পক্ষে কখনো সম্ভব না -- তাই প্লান করে স্বপ্নকে বাস্তবে পরিণত করতে হবে,
১ম কিছু টাকা জমিয়ে ৫৯০০ টাকা করে ফরওয়ার্ডে ৪০ হাজার ইট কিনে ফেলি
২য় কয়েক মাস পর ৩৯০ টাকা করে ৫০০ বস্তা সিমেন্ট কিনে রাখি
তৃতীয় বার প্রায় ছয় মাস পর ৪৮ টাকা কেজি করে ৫ টন রড কিনে ফেলি,সেই সাথে ছোট খাটো অনেক কিছু কিনে রাখি,,
এবার মায়ের স্বপ্ন পুরণ করতে আরো ছয় মাস পর কিছু টাকা জমা করে ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে বাড়িতে আসি,
অতি সুন্দর ও চমৎকার ভাবে ঘরের কাজ চলছে, আমার একবারও মনে হয়নি ঘর করতে অনেক টাকা লাগে,ছয় মাসে প্রায় ৭৫% কাজ শেষ করে ফিরে এলাম প্রবাসে,আর এটাই ছিল আমার প্রান প্রিয় মায়ের সাথে শেষ দেখা, পারিনি মাকে তার স্বপ্নের ঘরের শোয়াতে,, মা আমাকে অনেক অনেক বেশি ভালোবাসতো আর দিল-খুলে দোয়া করতো, আমার মা প্রচন্ড ধৈর্য্যশীল ও নরম মনের মানুষ ছিলেন,আমি দিন-রাত শুধু মায়ের জন্য বাচ্চাদের মত কেঁদেছি এই দুর প্রবাসে,আল্লাহ তুমি আমার প্রিয় মাকে জান্নাত দান কর,কবরে শান্তিতে রাখ,এর মাঝে ২০ বছর প্রবাস জীবন চলছে
আর ভালো লাগছে না,বাড়িতে বললে সবাই এককথায় বলে এখন বাড়িতে এসে কি করবে,বন্ধুদের সাথে শেয়ার করি,সবার একেই কথা দেশের অবস্থা ভালো না এখন আসিও না,আরো পাঁচ ছয় বছর থাক,,আমি বাড়িতে ও বন্ধুদের একটি কথা বলি প্রবাসীদের সমস্যা কখনো শেষ হবে না,আমি পাঁচ ছয় বছর পরে দেশে গেলেও আমাকে কিছু করতে হবে, এখন আমি শারীরিক ভাবে এবং মানসিক ভাবে সুস্থ আছি,পাঁচ বছর পর কেমন থাকবো জানি না,পাঁচ বছর পর যা করবো তা এখন থেকে শুরু করলে মন্দ কি,মোটামুটি সবাইকে কোন রকম বুঝাতে সক্ষম হলাম,
এখন কি করবো,কিছু বুঝতে পারছি না, আমার অনেক প্রতিবেশি এভাবে প্রবাস থেকে দেশে গিয়ে ব্যাবসা করতে গিয়ে সব শেষে করে আবার প্রবাসে এসেছে,,
এভাবে ভাবছি কিছুই ঠিক করতে পারছি না,
🌷🌷জীবনের সেরা প্রাপ্তিঃ
আমার জীবনের সেরা প্রাপ্তি হয়ে আমার জীবনকে স্বপ্নের দুয়ারে পৌঁছে দিয়েছে নিজের বলার মত একটা গল্প ফাউন্ডেশন
যেখানে শিখবো এবং নিজের স্বপ্নগুলো পুরণ করবো,এরকম প্লাটফর্ম আমি মনে আশা করেছিলাম যেখানে স্যারের মত একজন ভালো মানুষ পরিচালনা করবে আমাকে/ আপনাকে সঠিক দিক নির্দেশনা দিবে,
কাজে ফাঁকে ফাঁকে প্রতিদিন সেশন চর্চা ক্লাসে যুক্ত হতে লাগলাম, সাহস বাড়তে শুরু করলো,নিজের পরিবর্তন নিজ লক্ষ করছি, এখানে সবাই খুবেই আন্তরিক এবং গুরুত্বের সাথে ভালোবেশে কাজ করে যাচ্ছেন অবিরাম,
আমি ভালোবেসে আমার কাছের বন্ধু বান্ধব কে যুক্ত করছি এবং চলমান আছে,
আমি শিখছি এবং নিজের বলার মত একটা গল্প তৈরি করার চেষ্টা করছি,
স্যারসহ সকল সাহসী উদ্যোক্তাদের সম্মান জানাই যারা গ্রুপকে ভালোবেসে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে,
🌷🌷একটা মানসিক শান্তির নাম নিজের বলার মত একটা গল্প ফাউন্ডেশন, যেখানে আপনার হতাশা দুর করে আপনাকে আলোর পথ দেখাবে,
স্যারের প্রতিটি বাক্য অনুপ্রানিত করে যার মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ
সাহস করুণ শুরু করুন লেগে থাকুন সফলতা আসবেই,
পরিশেষে সবার জন্য দোয়া ও শুভকামনা রইল, আমার জন্য দোয়া করবেন, আদেশ, উপদেশ, পরামর্শ দিয়ে পাশে রাখবেন,,
📌স্ট্যাটাস অফ দ্যা ডে ৮৮৭
তারিখ ১৬-১০-২০২২ইং
ধন্যবান্তে
আমি মোঃ রফিকুল ইসলাম,
ব্যাচঃ১৯
রেজিস্ট্রেশন নাম্বার ১০৪১৭৭
যুক্ত আছি ব্লাড ম্যানেজমেন্ট ও
এগ্রো ফোরাম সদস্য,,
উপজেলা সোনাগাজী
জেলা ফেনী
বর্তমানে সৌদি প্রবাসী(রেমিট্যান্স যোদ্ধা) স্যার বলেন বাংলাদেশের oxygen, প্রবাসীদের কাছে স্যার আল্লাহর দেয়া নিয়ামত,,কৃতজ্ঞ আমরা সকল প্রবাসী,,পরিশেষে স্যারের অমর বাণী, সময় নিন সময় দিন, সময় সবকিছু বদলাবে,,,