আমার উদ্যোগ আমার পরিবারের সবার মুখে হাসি ফুটিয়ে
#আমার_জীবনের_গল্প
🍀বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম🍀
নিজের বলার মতো গল্প ফাউন্ডেশনের সম্মানিত দ্বায়িত্বশীল ভাই বোনেরা এবং আজীবন সদস্যবৃন্দ 🌸আসসালামু আলাইকুম
আশা করছি আল্লাহর রহমতে সবাই ভালো আছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।
💐শুরুতেই শুকরিয়া আদায় করছি সুমহান আল্লাহর তায়লার যার দয়ায় আমি সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব মানুষ রূপে জন্মগ্রহণ করেছি। যার রহমতে পৃথিবীর আলোতে নিঃশ্বাস নিয়ে বেচে আছি এবং সুস্থ আছি।
💐তারপর কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি সেই স্নেহমহী মা,বাবার যাদের জন্য আমি পৃথিবীতে জন্ম নিতে পেরেছি এবং যাদের স্নেহ আদর পেয়ে বড় হয়ে ওঠেছি।
💐এরপর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি আমাদের সকলের প্রাণ প্রিয় মেন্টর, ভালো মানুষ গড়ার কারিগর, এ যুগের শ্রেষ্ঠ আবিষ্কার, জীবন্ত কিংবদন্তি জনাব Iqbal Bahar Zahid স্যারের প্রতি যার অনুপ্রেরণা লক্ষ লক্ষ তরুন তরুনী নতুন করে বাচার স্বপ্ন দেখছে এবং স্বপনকে বাস্তবে রূপান্তরিত করছে তারই দিকনির্দেশনায়। যার মহৎ অবদানে আমরা পেয়েছি ভালোবাসা ঘেরা বিশাল এই পরিবার এবং লক্ষ লক্ষ ভাইবোনকে।
🍁🍁আজকে আমি আমার জীবনের গল্প শেয়ার করতে চাই ভালোবাসার এই পরিবারে।
🍁🍁জীবনের গল্পের শুরু ঠিক কোথা থেকে তা আমার জানা নেই তবে নিজের জীবনের বাস্তবতা তুলে ধরার জন্য ছোট্ট বেলা থেকেই শুরু করছি
🍀আমার জন্ম ও শৈশব🍀
আমি ১৯৯৩ সালের ১৩ ই ডিসেম্বর গাজীপুর জেলার চান্দনা গ্রামের একটি দরিদ্র পরিবারে জন্মগ্রহণ করি।
আমার বাবার নামঃ মোঃ ইয়াজউদ্দীন
মায়ের নামঃ নূরজাহান বেগম
বংশানুক্রমে আমার পরিবার গাজীপুরের স্থায়ী বাসিন্দা। আমি মা বাবার বড় মেয়ে। বাবা মায়ের পরম স্নেহে আমার শৈশব অতিবাহিত হয়েছে। আমার ছোট দুইটা ভাই আছে। জ্ঞান হবার পর থেকেই পরিবারের অভাব অনটন গুলো নিজের চোখে দেখেছি। কখনো নিজের পছন্দ মতো কিছু চাইলে মা বাবা সেটা দিতে পারতোনা। অনেক কষ্ট হতো কিন্তু মা সবসময়ই একটা কথা বলতো... "লেখা পড়া করে নিজের পায়ে দাড়াতও একদিন নিজের ইচ্ছে গুলো নিজেই পূরন করতে পারবে"।
মায়ের এই কথা গুলো কেমন যেনো মনে গেথে রাখতাম সবসময়ই।
🍀মা ও বাবা🍀
আমার মা সবসময়ই একজন পরিশ্রমী ও মমতাময়ী মা। শত কষ্টের মধ্যেও মা সবসময়ই আমাদের তিন ভাই বোনের মুখে হাসি ফুটিয়ে রাখতে চেয়েছেন। আর আমার বাবা ছিলো একজন অলস বদমেজাজি মানুষ। তার সবচেয়ে বড় দোষ ছিলো মদ ও জুয়ার নেশা😔
🍀ছাত্র জীবন🍀
আল্লাহর অশেষ রহমতে লেখাপড়ার প্রতি আমার ভীষণ ভালোলাগা কাজ করতো ছোট থেকেই। মাত্র ৬ বছর বয়সে কোরআন খতম করেছিলাম। আমার বয়স যখন ৪ বছর তখন একটা মাদ্রাসার শিশু শ্রেনীতে ভর্তি করিয়ে দিয়েছিলো আমার জ্যাঠাতো ভাইরা। মাদ্রাসা টি কিছুদিন পর বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সেখানে আর পড়া হয়নি। ৫ বছর বয়সে প্রাইমারি স্কুলের ক্লাস ওয়ানে ভর্তি করিয়ে দেন আমার মেঝো জ্যাঠা। লেখাপড়ার পাশাপাশি ছবি আঁকায় বেশ পারদর্শী ছিলাম বলে সকল শিক্ষকদের প্রিয় ছাত্রী ছিলাম আমি। স্কুলের স্যার মেডামরা আমাকে দিয়ে ছবি আকিয়ে নিতো বিভিন্ন প্রয়োজনে এবং এর জন্য আমাকে তারা টাকাও দিতো। প্রাইমারি স্কুল পাশ করলাম বেশ ভালো রেজাল্ট নিয়ে। এরপর হাই স্কুলেও ভর্তি হলাম। লেখা পড়া ভালোই চলছিলো কিন্তু প্রাইভেট পড়ার খরচ বাবা বহন করতে পারছিলো না। তাই ক্লাস নাইন থেকেই টিউশনি করা শুরু করি এবং নিজের টুকিটাকি খরচ গুলো চালাতে থাকি। আমার মা আমাদের ভাই বোনদের লেখাপড়া জন্য রাতের পর রাত জেগে বিভিন্ন হাতের কাজের জিনিস তৈরি করে সেল করছে। আমাদের জন্য কতোই না কষ্ট করছে। অপরদিকে আমার বাবা আমাদের লেখা পড়ার বিষয়ে ছিলো উদাসীন। আমাদের ভবিষ্যত নিয়েও তার কোনো চিন্তাভাবনা ছিলো না। চরম অলস একজন মানুষ। মদ ও জুয়ার নেশায় জায়গা জমি সব শেষ করে অবশেষে ঘরের জিনিসপত্র বিক্রি করা শুরু করেছিলো। আমার S.S.C ফর্ম ফিলাপের জন্য মা অল্প অল্প করে টাকা জোগার করে রেখেছিলো। ফর্ম ফিলাপের আগের রাতে বাবা ওই টাকা গুলো নিয়ে নেয় মার থেকে। সে বলে সকালে ফেরত দিয়ে দেবে কিন্তু জুয়া খেলায় হেরে গিয়ে সে আর টাকা দিতে পারেনা। ওদিকে ওইদিনই ছিলো ফর্ম ফিলাপের লাস্ট ডেট। বাবা বাড়িতেই আসেনা আর ফোনটাও অফ করে রাখছিলো। টাকা না পেয়ে আমি সারাদিন কান্নাকাটি করি। আমিতো এই ভেবেই অস্থির হয়ে ওঠছিলাম যে আমার একটা বছর নষ্ট হয়ে যাবে। আমার কান্না দেখে আমার মা অস্থির হয়ে টাকার জন্য এদিক ওদিকে ছোটাছুটি শুরু করে। আমার পাড়ার এক ফুপ্পি যিনি একজন স্কুল শিক্ষিকা ছিলেন উনি কিছু টাকা দিয়ে সহযোগিতা করেন কিন্তু বাকী টাকা কোথায় পাবো 😭
সারাদিন না খেয়ে একটানা কান্নাকাটি করার পর আমি প্রায় আধমরা হয়ে গেছিলাম। হঠাৎ মনে পড়লো আমাদের পাড়ার এক বড় ভাই আমার স্কুলের গভর্নিং বোর্ডে আছেন। তাৎক্ষণাৎ ওই ভাইয়ার কাছে ছুটে যাই এবং তাকে সব খুলে বলি। ভাইয়া আমার মাথায় হাত রেখে বলে পাগলি এতো কান্নাকাটি করলি সারাদিনে একবারও কী আমার কথা মনে পরে নাই। আমি আছি কী জন্যে। বড় ভাই খুব ভালো মনের একজন মানুষ নিজ দ্বায়িত্বে আমার ফর্ম ফিলাপ করে দিয়েছিলেন। সবচেয়ে কষ্টের বিষয় ছিলো আমার যখন S.S.C পরীক্ষা চলছিলো আমার বাবা আমাকে এক দিস্তা খাতাও কিনে দিতে পারেনি। কেলেন্ডারের উল্টা পৃষ্ঠায় অংক করে পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। S.S C পাশ করলাম ২০০৯ সালে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে 4.88 জি পিয়ে পেয়ে। কলেজে ভর্তির সময়ও বাবা আবার মায়ের জমানো টাকা নিয়ে নেয় এবং আমার কান্নাকাটি শুরু হয়। তারপর এক বান্ধবী আমাকে হেল্প করে টাকা ধার দিয়ে। তার কাছ থেকে টাকা ধার নিয়ে কলেজে ভর্তি হই। পরবর্তী মা সেই টাকাটা পরিশোধ করে দেয়। ইন্টারমিডিয়েটে পড়াশোনারত অবস্থায় ৪ টা টিউশনি করতাম। সেই টাকায় আমি নিজে প্রাইভেট পড়তাম আর মা ও কিছু টাকা দিতো।কলেজ লাইফে মাত্র ১০ টাকা দিতো আমাকে প্রতিদিন তাও মাঝেমধ্যে দিতোও না। গাজীপুর চৌরাস্তা থেকে টঙ্গী কলেজ গেইট ১০ টাকা বাস ভাড়া লাগতো যাওয়া আসায়। সকাল সাড়ে ছয় টার বের হয়ে ফিরতাম বিকাল ৪ টায়। সারাদিন না খেয়ে থাকতাম।কখনো যদি আসার সময় অনাবিল বা সালসাবিল বাস পেতাম তাহলে ওই দিনের ৫ টাকা বাস ভাড়া বেচে যেতো তা দিয়ে পরবর্তী দিন ঝালমুড়ি খেতে পারতাম। এভাবেই কলেজ লাইভ শেষ হলো ২০১১ সালে। বিজ্ঞান বিভাগ থেকে 4.80 জিপিয়ে পেয়ে উত্তীর্ন হলাম।
পাবলিক ভার্সিটিতে ভর্তির জন UCC কোচিং করা শুরু করলো সব বান্ধবীরা। আমিও মা কে বললাম। UCC তে গিয়ে মা আমাকে ভর্তি করালো ভর্তির টাকাটা ৩ মাসের কিস্তিতে দিলো। এরপর কয়েকটা ভার্সিটিতে ভর্তি পরীক্ষা দিলাম। আল্লাহর অশেষ রহমতে ঢাকা ভার্সিটির (চ) ইউনিটে চান্স পেলাম কারণ খুব ভালো ছবি আঁকতে পারতাম আমি। একই সাথে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়েও ৩ হাজার ওয়েটিং লিস্টে ছিলাম৷ সবাই বলছিলো এখানেও চান্স হবে। কিন্তু ভাগ্য এখানেও আমাকে সায় দিলো না। বাবা সরাসরি না করে দিলো হোস্টেলে থেকে পড়তে দিবেনা। তার ভাষ্য মতে হোস্টেলের মেয়েরা পাজি হয়ে যায়😩।
আমার কোচিং ও ভর্তি পরীক্ষার ফর্ম ফিলাপ সেই সাথে পরীক্ষার সময় যাতায়াত খরচ সহ মায়ের কষ্টের কতোগুলো টাকা জলে গেলো😭
অনেক বুঝাইছি বাবাকে কিন্তু রাজি করাতে পারিনাই৷ অবশেষে ভাওয়াল কলেজের গণিত ডিপার্টমেন্টে ভর্তি হলাম। ওই সময় আমার নিজের লেখাপড়ার সমস্ত খরচ নিজেই চালাতাম টিউশনি করে। পাশাপাশি মাকেও সংসার খরচের জন্য কিছু কিছু টাকা দিতাম। বাবা আমাকে লেখাপড়া করাতে চাচ্ছিলেন না। বিয়ে দেয়ার জন্য ওঠে পড়ে লাগলেন। আমি রাজি না হওয়ায় আমার সমস্ত বই খাতা কাদায় ছুড়ে ফেলে দিলেন। ভয়ে কাদা থেকে বই গুলো তোলার সাহসও পাইনি। বাবা বাড়ি থেকে যাওয়ার পর বই গুলো তুলে শুকিয়ে কাঁদা পরিষ্কার করে ঘরে নিয়ে আসি।
🍀বৈবাহিক জীবন🍀
ইন্টারমিডিয়েটে পড়া অবস্থায় আমার হাই স্কুলের এক বান্ধবীর জ্যাঠাতো ভাইয়ের সাথে পরিচয় হয়। মানুষ টাকে কেমন যেনো মন থেকে ভরসা করতে পারতাম। কলেজের বান্ধবী রা বার বার মানা করতো ওর সাথে কথা বলতে বা যোগাযোগ রাখতে কিন্তু আমি তার সাথে যোগাযোগ না করে থাকতে পারতাম না৷ বাবা যখন বিয়ের জন্য খুব চাপ প্রয়োগ করছিলো তখন তাকে সবকিছু জানাই। সে তার পরিবারের কাছে আমাদের সম্পর্কের কথা জানায় আমিও আমার পরিবারকে জানাই৷ তার পরিবার থেকে আমাকে দেখতে আসে কিন্তু আমাদের পরিবারের গরীব অবস্থার জন্য তার পরিবার থেকে রাজি হয়না।
অপরদিকে আমার বাবাও একজন মধ্য বয়সী লোকের সাথে আমার বিয়ে ঠিক করে দেয়। আমার সকল স্বপ্ন আশা নিমেষেই যেনো অন্ধকারে ডুবে যাচ্ছিলো। কিন্তু সেই মানুষটি আমাকে অন্ধকারে হারিয়ে যেতে দেয়নি৷ পরিবারের মতামতের বিরুদ্ধে গিয়েই আমরা বিয়ে করি। বিয়ের পর সে আমাকে তার বড় বোনের বাড়িতে নিয়ে যায়। দুলাভাই ও আপা আমাদের অনেক সাপোর্ট করে। বিয়ের এক সপ্তাহের মধ্যে দুই পরিবারের মধ্যে মিমাংসা হয়ে যায় আর আমাকেও যথাযথ সম্মানে বাড়িতে তোলে। কিন্তু শ্বশুড় বাড়ির সবাইকে খুশি রাখতে লেখাপড়া টা ছেড়ে দিতে হয়েছিলো। আমার জন্য আমার হাসবেন্ডও লেখাপড়া ছেড়ে দেয়।বিয়ের পর আমার বাবাও পরিবর্তন হয়ে যায় সবকিছুর জন্য ক্ষমাও চায়। আমার হাসবেন্ড হার্ডওয়্যার এর বিজনেস শুরু করে অল্প সময়ে খুব ভালো উন্নতি হয় তার।বিয়ের এক বছর পর আমার কোল আলো করে আসে আমার বড় ছেলে। ছেলে হওয়ায় আমার শ্বশুর শ্বাশুড়ি অনেক খুশি হয় আর আমার আদরও দ্বিগুণ হয়ে যায়। সবকিছু খুব ভালো চলছিলো।
🍀মায়ের অসুস্থতা🍀
এরি মধ্যে আমার মা ভীষণ অসুস্থ হয়ে পরে। তার কিডনিতে পাথর হয় সাথে একটা কিডনি ডেমেজও হয়ে গেছে। আর একটা কিডনিতে ইনফেকশন। মায়ের ব্যায়বহুল চিকিৎসা করার জন্য বাবা বাড়িটা বিক্রি করে দেয় কিন্তু তাও কুলাতে পারেনা। পরিবারের অভাব অনটন দিন দিন বাড়তেই থাকে। আমার ছোট ছোট ভাই দুইটা লেখাপড়া বাদ দিয়ে পরিবারের হাল ধরে। মায়ের চিকিৎসা করাতে গিয়ে অনেক ঋনও হয় কিন্তু তারপরও মায়ের সম্পূর্ণ চিকিৎসা করা সম্ভব হয়না।আমার হাসবেন্ড তার সাধ্য মতো হেল্প করতো আমার বাবা মাকে। কিন্তু কিছুদিন পর আমার হাসবেন্ডের বিজনেসেও বড় ধরনের লসের সম্মুখীন হতে হয়। এর পর থেকে সে আর আমার পরিবারকে হেল্প করতে পারেনা।
🍀আমার উদ্যোক্তা জীবনে পদার্পন🍀
বিয়ের পর সবকিছু খুব ভালো চলছিলো কিন্তু নিজের পায়ে দাড়ানোর প্রয়োজন টা তখনি উপলব্ধি করি যখন আমার চোখের সামনে অসুস্থ মা কাতরাতে থাকে কিন্তু টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছিলাম না। আমার শ্বশুর বাড়ির অবস্থা খুব ভালো কিন্তু তাই বলে তো তারা আমার মায়ের চিকিৎসার জন্য টাকা দিবে না। নামাজ পড়ে আল্লাহর কাছে অনেক কেদেছি যাতে আমার নিজের উপার্জনের কোনো পথ খুজে পাই।
উদ্যোক্তা বিষয়ক কোনো কিছুই আমার জানা ছিলো না। অনলাইনে বিজনেস করা যায় সেটাও জানতাম না। একদিন পরিচিত এক আপু আমাকে একটা গ্রুপে ইনভাইট করে। ওই গ্রুপে জয়েন হয়ে দেখলাম অনেক মেয়েই বিভিন্ন পন্য নিয়ে বিজনেস করছে। কয়েকদিন গ্রুপ ঘুরে ঘুরে বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জানলাম। এরপর আমি পুতির পন্য নিয়ে কাজ শুরু করলাম। কিন্তু তেমন সাড়া পেলাম না। পরবর্তী কুশির পন্য নিয়ে কাজ শুরু করলাম আলহামদুলিল্লাহ অল্প সময়েই খুব ভালো একটা পরিচিতি গড়ে ওঠলো। বেশ ভালো সেলও হতো। মাকেও হেল্প করতাম কিছু টাকা সঞ্চয় ও করতাম। কিন্তু ভাগ্য আবারও আমার বিরুদ্ধে চলে গেলো। দেড় বছর কাজ করার পর,চোখে সমস্যা দেখা দিলো। আমার আশেপাশে কোনো কর্মীও পায়নি যাকে দিয়ে কাজ করাবো৷ আমার দেড় বছরের পরিশ্রম নিমেষেই বাষ্পীভূত হয়ে গেলো। আবারও হতাশায় ভুগতে থাকলাম। মাকেও আর হেল্প করতে পারছিলাম না 😔
🍀 প্রিয় ফাউন্ডেশনে আসার গল্প 🍀
আগের বিজনেস টা বন্ধ করে দিয়ে আমি অনেক নিরাশ হয়ে পরেছিলাম। একদিন পরিচিত এক আপু আমাকে ট্যাগ দিয়ে ফাউন্ডেশনে পরিচিতি পোস্ট করে। যদিও ফাউন্ডেশনে অনেক আগে থেকেই জয়েন ছিলাম কিন্তু এর বিষয়ে আমার কোনো ধারণা ছিলো না। ওই আপুর পরিচিতি পোস্ট দেখে আমার জানার কৌতুহল হলো কী এই ব্যাচ? কিসেরই বা রেজিষ্ট্রেশন নাম্বার?? এরপর ফাউন্ডেশনে স্যারের দেয়া বিভিন্ন ভিডিও সেশন ও সেশন গুলো পড়তে থাকি খুব ভালো লাগে আমার। স্যারে একটা বানী আমাকে ভিতর থেকে চাঙ্গা করে তোলে👇
"স্বপ্ন দেখুন, সাহস করুন, লেগে থাকুন, সফল হবেন ইনশাআল্লাহ "
এই লাইনটি পড়ার পর মনে হলো এখান থেকে আমারও অনেক কিছু শিখার আছে তাই রেজিষ্ট্রেশন করার জন্য আমিও কমেন্ট করলাম। তুফানের বেগে দ্বায়িত্বরত ভাইয়ারা আমার রেজিষ্ট্রেশন করালো এবং মেসেনজারে এড করলো। এরপর থেকে স্যারের দেয়া সেশন গুলো নিয়মিত পড়তাম আর সেশন চর্চা ক্লাস করতাম। নিজের হারিয়ে যাওয়া
আত্নবিশ্বাস আবারও ফিরে পেলাম। নতুন করে নতুন উদ্যোগ গ্রহন করলাম। আলহামদুলিল্লাহ মাত্র এক মাসেই অনেকটা এগিয়ে গেছি। বাচ্চা ছোট বলে আমার উদ্যোগে এখন খুব একটা সময় দিতে পারিনা তবে ইনশাআল্লাহ আস্তে আস্তে আরও বেশি সময় দিতে পারবো।
🍀আমার স্বপ্ন 🍀
আমার জীবনের লক্ষ হচ্ছে আমার মায়ের সেই সকল আশা পূর্ণ করা যা আজ অব্দি সকলের অগোচরে অপূর্ণই রয়ে গেছে। হয়তো মায়ের চিকিৎসা করানোর মতো এতো টাকার জোগাড় করতে পারবোনা কিন্তু আমার উদ্যোগ আমার মাকে অতিরিক্ত অসুস্থতার সময় বিনা চিকিৎসায় কষ্ট পাওয়া থেকে রক্ষা করবে৷ আমার উদ্যোগ আমার মায়ের না বলা অপূর্ণ আশা গুলো পূর্ন করবে। আমার উদ্যোগ আমার মায়ের মুখে হাসি ফোটানোর চেষ্টা করবে৷ আমার উদ্যোগ আমার অসহায় বাবার বৃদ্ধ কালের লাঠি হয়ে দাড়াতে সাহায্য করবে। আমার উদ্যোগ আমার ভাইদের পরিশ্রমকে একটু কমাতে সাহায্য করবে। আমার উদ্যোগ আমার পরিবারের সবার মুখে হাসি ফুটিয়ে সবার মাঝে আমার আমিকে খুজে দিবে।
জানি পারবো ইনশাআল্লাহ। প্রিয় স্যারের অনুপ্রেরণায় আমি আজ আত্নবিশ্বাসে বলিয়ান হয়ে ওঠেছি। আমি পারবো কারণ আমার মা বাবার দোয়া আমার পাশে আছে, আছে হাসবেন্ডের সহযোগিতা, আর আছে প্রিয় এই পরিবারের লক্ষ লক্ষ ভাই বোনের দোয়া ও ভালোবাসা।
📌স্ট্যাটাস অফ দ্যা ডে ৮৮৮
তারিখ ২০-১০-২০২২ইং
আমি ইয়াসমীন আক্তার পান্না
১৮ তম ব্যাচ
রেজিষ্ট্রেশন নাম্বারঃ ১০১৫৪৪
জেলাঃ গাজীপুর
পেইজঃ
সবাই ভালো থাকবেন আমার জন্য দোয়া দোয়া রাখবেন। আমার গল্প থেকে যদি কেউ বিন্দু মাত্র অনুপ্রেরণা পান তবেই আমার সার্থকতা।
আল্লাহ হাফেজ