বাগেরহাট জেলার A+ রক্তযোদ্ধা
আসসালামুআলাইকুম।প্রিয় নিজের বলার মতো গল্প ফাউন্ডেশন ভাই ও বোনেরা আশা করি আল্লাহর রহমতে সবাই ভালো আছেন???
শুরুতে মহান আল্লাহ নিকট শুকরিয়া আদায় করছি এই করোনা পরিস্থিতিতে এখন ও আমাদের সুস্থ রেখেছেন।
♥️অসংখ্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা আমাদের প্রিয় অভিভাবাবক আমাদের আইডল ইকবাল বাহার জাহিদ স্যারের প্রতি যিনি আমাদের এতো সুন্দর একটা পরিবার উপহার দিয়েছেন। সেই সাথে মহান আল্লাহ নিকট এই মানবতার ফেরিওয়ালার সুসাস্থ ও দীর্ঘ আয়ু কামনা করি। সত্যিই আমাদের প্রিয় স্যার ভালো মানুষ গড়ার কারিগর, স্যার এর শিক্ষা নিয়ে সারা বাংলাদেশ সহ অনেক প্রবাসী বাংলাদেশি তরুণ আজ নিজেকে ভালো মানুষ হিসাবে পরিচয় দিয়ে গর্ব বোধ করে। লক্ষ তরুণ আজ নিজেকে সেচছাসেবক হিসাবে মানবতার সেবায় নিয়োজিত করেছেন। আলহামদুলিল্লাহ স্যার এর দেওয়া শিক্ষা গ্রহণ করে ও প্রিয় নিজের বলার মতো গল্প ফাউন্ডেশন মানব সেবার কাজ থেকে অনুপ্রেরণা পেয়ে আমি নিজে ও একজন সেচছাসেবক হতে পেরেছি।একজন ভালো মানুষ হিসাবে নিজেকে গড়ার চেষ্টা করছি।
♥️ প্রিয় সহযোদ্ধা গন আজ আপনাদের শুনাবো আমার রক্ত যোদ্ধা হয়ে উঠার গল্প। ২০১৬ সালের ঘটনা আমার সেজো খালাম্মা (আমার মায়ের সেজোবোন) একটা মেজর অপারেশন এর জন্য খুলনা গাজী মেডিকেল এ ভর্তি হয়।ডক্টর বলে অপারেশন এর সময় ৪ ব্যাগ ও+ রক্ত লাগবে।আমার অনার্স ২য় বর্ষ পরীক্ষা চলছিল তাই আমি যেতে চাইনি কিন্তু খালাম্মা যখন ফোন দিয়ে বলছিল ও আব্বা তুমি থাকবা না আমার কাছে অপারেশন এর সময়।সাথে সাথে যেন চোখে পানি এসে গেল। তার ভালোবাসার এই আবদার আমি ফেলতে পারলাম না(উল্লেখ্য যে আমার মামা, খালাম্মারা সবাই ভালোবেসে আব্বা বলেই ডাকে আমাকে) ।তাই আমার পরীক্ষা নাই এমন একটা দিন দেখে খালাম্মার অপারেশন এর ডেট করতে বললাম, তো সেই ডেট মতো আমি খুলনা চলে গেলাম।রাত ৯ টা বাজে খালাম্মা কে অপারেশন এর জন্য নেওয়া হলো, ডক্টর এর কথা মতো ৪ ব্যাগ রক্ত রেডি করে রাখা হলো কিন্তু অপারেশন চলাকালীন সময় যখন একে একে চার ব্যাগ রক্ত দেওয়া শেষ হলো ঠিক সেই মূহুর্তে ডক্টর এর এক সহকারী ডক্টর চার নম্বর ব্যাগ রক্ত নেওয়ার সময় বললো রোগীর অবস্থা ভালো না অপারেশন এ সমস্যা হচ্ছে আরো চার ব্যাগ রক্ত ম্যানেজ করুন। কথাটা শুনে আমাদের মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়লো এতো রাতে, এতো তাড়াতাড়ি কিভাবে চার ব্যাগ রক্ত মেনেজ হবে। ব্লাড ব্যাংকে খোঁজ নিলাম ও + কোন রক্ত নাই। ব্লাড ব্যাংক এ থাকা লোককে অনেক অনুরোধ করলাম এমন কি পা ধরে কান্না কাটি করলাম কিন্তু রক্তের কোন ম্যানেজ হলো না।ওদিকে ফোনে সকল পরিচিত দের কল দিয়ে রক্ত ম্যানেজ এর চেষ্টা করছিলাম, একটা সময় দুই ব্যাগ রক্ত ম্যানেজ হলো কিন্তু বিপত্তি হলো তাদের আসা নিয়ে এতো রাতে কি করে আসবে তাছাড়া বাইরে টিপ টিপ বৃষ্টি হচ্ছিল।
বসে বসে কাদছি আর ভাবছি খালাম্মাকে মনে হয় রক্তের অভাবে আর বাঁচাতে পারবো না,মাকে ফোন দিয়ে বললাম মা, খালাম্মার জন্য একটু দোয়া করো, তার অবস্থা ভালো না মা ও তখন কান্না শুরু করলো,মায়ের কান্না শুনে কলিজাটা ফেটে যাচ্ছিল একটা সময় ব্লাড দিতে চাওয়া একটা বোনের মায়ের সাথে ফোনে সব কিছু খুলে বললাম সমস্যার কথা সব কিছু শুনে ও আমার কান্না দেখে সে বললো আচ্ছা বাবা দেখছি কি করা যায়। আমি অবাক হয়েছিলাম ওই রাতে বৃষ্টিতে ভিজে সেই আপুকে রক্ত দেওয়ার জন্য তার বাবা- মা নিজেরা সাথে করে নিয়ে আসছে, তারা রক্ত দিয়ে চলে যাওয়ার পর আর এক ভাই একা বৃষ্টিতে ভিজে বাইক চালিয়ে এসে রক্ত দিয়ে যায়। আমি আজও কৃতজ্ঞ সেদিনের সেই ভাই ও বোনের প্রতি, সেদিন এর সেই গর্বিত বাবা- মায়ের প্রতি। আলহামদুলিল্লাহ তাদের সহযোগিতা ও আল্লাহর রহমতে আমার খালাম্মা এখন ও বেঁচে আছে।
♥️আমি সেদিন মনে মনে শপথ নিয়েছিলাম, আজ থেকে আমি ও একজন রক্ত যোদ্ধা হবো মানুষের বিপদের সময় পাশে থেকে তাদের চোখের পানি মুছে দিবো, তার পর থেকে নিয়মিত রক্ত দান করে যাচ্ছি।গত ১৭-০৮-২০২১ রোজ মঙ্গলবার ১১ তম বার রক্ত দান করলাম।
নিজের বলার মতো একটা গল্প ফাউন্ডেশন সকল ভাই বোনদের প্রতি বিনীত অনুরোধ আসুন নিজেকে রক্ত যোদ্ধা হিসেবে গড়ে তুলি। একে অন্যের বিপদের দিনে পাশে থাকি রক্তের অভাবে যেন কোন পরিবার কে তাদের আপন জন না হারাতে হয় সেই শপথ করি।
ধন্যবাদান্তে
♥️♥️♥️♥️
♥️নজরুল ইসলাম
♥️ব্যাচঃ১০
♥️রেজিঃ১৯০১৩
♥️ রক্তের গুরপঃ এ+
♥️উপজেলা এম্বাসিডর,
♥️কচুয়া,বাগেরহাট