না পাওয়া স্বপ্নগুলো ফিরিয়ে দিতে চায়
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম
💚আমার জীবনের গল্প 💚
💚কোটি কোটি শুকরিয়া জানাচ্ছি মহান সৃষ্টিকর্তা কে যিনি আমাকে সৃষ্টি করেছন এবং বাঁচিয়ে রাখছেন 💚
💙কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি আমি আমার বাবা - মার প্রতি যারা আমাকে জন্ম দিয়েছেন এই সুন্দর পৃথিবী দেখার সুযোগ করে দিয়েছেন, এবং সঠিকভাবে লালন পালন করে সু- শিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলেছেন আমাকে 💙
🏵️ সেই সাথে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি এই শতাব্দীর অন্যতম সেরা মানুষ, লাখো তরুণ তরুণীর আইডল প্রিয় মেন্টর, প্রিয় শিক্ষক জনাব ইকবাল বাহার জাহিদ স্যারের প্রতি, যার অক্লান্ত পরিশ্রমে গড়ে উঠেছে "নিজের বলার মতো একটা গল্প" ফাউন্ডেশনের মতো একটা সুবিশাল প্লাটফর্ম ।
আসসালামু আলাইকুম 💙
কিভাবে সরকারি চাকুরি ছেড়ে, মৃত্যুর পথ দিয়ে উদ্দ্যোক্তা হয়েছি 😢
সেই হৃদয় বিদারক ঘটনা আমার সকল ভাইবোনদের সাথে শেয়ার করবো আজকে 💛
🙇ছেলেবেলাঃ
আমরা ৫ভাই বোন ৪ বোন ১ভাই ভাই বোনদের মধ্যে আমি সবার বড় দাদা-দাদী ও নানী আর বাবা - মাকে নিয়েই আমাদের পরিবার চাচা-চাচীরা চাচার চাকরীর সুত্রে বাইবেই থাকেন আমাদের থেকে আলাদা বাবা সরকারি চাকরী করেন ফরেস্ট রেন্জ অফিসার, দাদা গ্রামের মাতুব্বর ১০ গ্রামের সমস্ত বিচার করতে হয় ন্যায় বিচারক ছিলেন বাবা-মা, দাদা-দাদী ও নানীর খুব প্রিয় আমি যেহেতু আমি বাড়ির প্রথম সন্তান সবাইকে নিয়ে বেশ আনন্দেই কাটতো আমার সময় দাদার হাত ধরে মিটিংয়ে যেতাম দাদা আমাকে খুব ভালো বাসতেন
🌷 শিক্ষা জীবনঃ
গ্রামের স্কুলে হাতে খড়ি, আমি পঞ্চম শ্রেণির বৃত্তি পরীক্ষা ট্যালেন্টপুলে বৃত্তিও পাই সবাই খুব খুশি সরকার থেকে আমাকে পুরস্কৃত করেন সেখানে আমার বাবা -মাকে ডাকেন আমার বাবার খুশি ধরে না সে কি খুশি আমার এখনো পুরাপুরি মনে আছে চোখের সামনে ভেসে ওঠে বাবার মুখের হাসি। আমি মাধ্যমিকে যাবো কোথায় ভর্তি করবে দাদা -বাবা ও বাড়ির সবাই মিলে কথা বলছে সিদ্ধান্ত হলো বাবার সাথে টাঙ্গাইল থাকতে হবে আমাকে আমি তো মহা খুশি বাবাকে আমি ভিষণ ভালোবাসি টাঙ্গাইলের মধুপুর রানী ভবানী পাইলট উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি করেন। অষ্টম শ্রেণীতে ও আমি ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পাই নবম শ্রেণিতে বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হই।এস,এস,সি পরিক্ষা দিয়েছি গোপালগঞ্জ সৈয়েদুনন্নেছা মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে যদি আমি তখনো টাঙ্গাইল থাকি। রেজাল্ট ও ভালো হয় এইচএসসি তে খুলনা সরকারি মহিলা কলেজ বয়রা তে ভর্তি হই কারণ বাবার পোস্টিং খুলনাতে হয়। এইচএসসি পরীক্ষার আগেই আমার বিয়ে হয় আমি বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী পড়ে যাই বিপাকে কি করবো বুঝতে পারছি না তারপর ও আমি কলেজ হোস্টেলেই থাকতাম কিন্তু কলেজ হোস্টেলে বিবাহিত মেয়েদের রাখা নিষেধ আবার শশুর বাড়িতে কেউ চায়না আমি লেখা পড়া করি এই নিয়ে আমার বাবা মায়ের সাথে ঝামেলা শুরু হয় শশুর বাড়ির সবাই এক সময় আমি কনসেভ করি সবাই চুপচাপ হয়ে যায় কিন্তু আমি থেমে থাকিনি লেখা পড়া করছি আমার পরীক্ষা এসে পড়ে এদিকে আমি দূর্বল হয়ে পড়ি তবু্ও আমার স্বামীর সহযোগিতা পরীক্ষা দি পরীক্ষার শেষ দিন আমি আমার প্রথম সন্তানের মা হয়েছি আলহামদুলিল্লাহ। রেজাল্ট ও ভালো হলো শশুর বাড়িতে কেউ আর পড়তে দেবে না আমার স্বামী চুরি করে আমাকে আবারও বোটানিতে ভর্তি করে বয়রাতেই বলে তোমার সমস্যা হবে না সব পরিচিত। আমি অসুস্থ হয়ে পড়ি হঠাৎ ডাক্তার দেখানো হয় কিন্তু কিছু বুঝতে পারেনা কয়েকটা পরীক্ষা করেন তাতেও কিছু ধরা পড়ে না বেশ কয়েক মাস পরে আমি বুঝতে পারি আমি আবারও মা হতে যাচ্ছি খুব টেনশন হচ্ছে মেয়ে টা খুব ছোট এখন আর একটা বাচ্চা অন্য দিকে লেখা পড়া যাক এভাবেই কাটছে দিন বাবা বললো ভেবোনা সব ঠিক হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ। প্রথম সন্তান আমার মেয়ে, দ্বিতীয় সন্তান ছেলের জন্ম হলো বাবা আর আমাকে শশুর বাড়িতে যেতে দেয়না আমার ছেলে মেয়ে নিয়েই সময় পার করে কর্ম স্থলে ও যায়না ৩০তারিখে যায় ১/২তারিখের মধ্যে সবাইকে বেতন বুঝিয়ে দিয়ে চলে আসে আমি লেখা পড়া করছি মহা আনন্দে।
😥আমার অসুস্থতা ও বাবাকে হারানো ঃ
অনার্স পরীক্ষার ৯ মাস আগে রমজানের
২৬টা রোজ আমি আছি মনে অনেক আনন্দ আমি সুস্থ আছি আলহামদুলিল্লাহ আমি ৩০টা রোজা রাখবো কিন্তু ভাগ্য আমার অনুকূলে নেই, ২৭শে রমজানের রোজা রাখবো তারাবির নামাজ ও শেষ বেতের নামাজের ছানা ও বাধছি হঠাৎই পেটের যন্ত্রণা আমি চিৎকার করে উঠি জায়নামাজের উপরেই পড়ে যাই আর কিছু জানিনা , আমি জ্ঞান ফিরে দেখি আমি কোনো এক হাসপাতালের বেডে আমার পাশে আমার বাবা মা খুব কাঁদছে পাশে দাঁড়ি আমার ভাই ওস্বামী ওরা ও কাঁদছে আমি কথা বলতে চাইছি কিন্তু বলতে পারছি না আমার নাকে মুখে পাইপ দেওয়া, আমি তাকিয়ে দেখছি আর ভাবছি কি এমন হলো আমার সবাই কাঁদছে আমি ভাবতে ভাবতে চোখ বন্ধ করি কিন্তু কেউ তখনও খেয়াল করেনি যে আমার জ্ঞান ফিরছে আমার বাবা মা কাঁদছে আর বলছে ডাক্তার কিছু কেন বলছেন না ৫দিন হয়ে গেল, আমি বুঝতে পারলাম আমি ৫দিন অজ্ঞানে আছি কিন্তু এটা কোথয়? হঠাৎই আমি আমার বড় কাকার কন্ঠ শুনতে পাই কাকা বলছে ভেঙ্গে পড়লে হবে না শক্ত হতে হবে আমাদেরকে আমার বাবা তখন বলছে দাদা বলনা কি হয়েছে আমার মেয়ের কাকা বলছে শোন এখানে আমাদের কোন হাত নেই ওর লিভার ক্যান্সার হয়েছে আর ডাক্তারা বোড বসিয়ে এটাই ধারণা ও আজকে রাতের মধ্যেই আমাদের ছেড়ে চলে যাবে! সবাই চিৎকার করে কেঁদে উঠলো আমি নিজের কানে শুনতে পেলাম আমি এই রাতের মধ্যে হারিয়ে যাবো আমার খুব কষ্ট হচ্ছে কিন্তু আমি আর তাকিয়ে দেখতে চাই না চোখ বন্ধ করে আমার ছোটো ছেলে মেয়ের কথা ভাবছি ওরা আমাকে ছাড়া বাঁচবে কি করে! আমার কাকা সেনাবাহিনীর একজন ডাক্তার কাকা ছুটি নিয়ে বাবাকে বলে চল বাড়িতে ওর ছেলে মেয়েকে দেখতে দি বাবা কোন কথাই বললো না আমার স্বামীকে বললো তোমার দুলাভাইকে বলো যেভাবেই হোক আমাদের ভারত যাবার ব্যবস্থা করতে এখনই মানে এখনই আমি সবই শুনছি কিন্তু কিছুই বলতে পারছি না আমার মনে হচ্ছে আমি সত্যিই মরে যাচ্ছি আমার জীবনের কোন কিছুই হলোনা যাক কথা মতো কাজ আমাকে সোজা ভেলরে নিয়ে যায় আমার বাবা ও স্বামী সেখানে ডাঃ ফৌজিয়া চিকিৎসা করেন আমার ৭ মাস পরে আমার বাংলাদেশে আসা আমাকে দেখে সবাই ভয় পয়ে যায়, আমার মাথায় কোন চুল ছিল না আমার ওজন তখন ১৩কেজী আমাকে ১১টা কেমোথেরাপি দেওয়া হয়েছে, কেমোথেরাপি তে ভিষণ যন্ত্রণা ভিষণ কষ্ট, আমি সহ্য করেছি ভাবিনি কখনো বেঁচে থাকবো,আলহামদুলিল্লাহ আমি বেঁচে আছি, আমাকে দেখে সবাই ভয় পেলেও আমার মা ও ছেলে মেয়ে কেউ ভয় পাইনি ওরা আমাকে ফিরে পেয়ে মহা খুশি, আমি আস্তে আস্তে সাভাবিক হতে শুরু করলাম আমার বাবাও মহা আনন্দে দিন কাটাচ্ছেন, আমি ৩মাসের মধ্যে বেশ সুস্থ হয়েছি হাটতেও পারছি একটু একটু এমনই সময় আমার জীবনের সব চেয়ে প্রিয় সবচেয়ে আপন আমার বাবা অসুস্থ হয়ে পড়েন,নেমে আসে আমার জীবন জুড়ে অন্ধকার! আমার বাবার গায়ে জ্র এসেছে আমি আর বাবা পাশাপাশি শুয়ে আছি তখন আমার বাবা আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে আর আমাকে বলছে তোর সাথে কিছু কথা ছিল কিন্তু বলতে পারছি না সুযোগের অভাবে আমি বললাম এখন বলো বাবা বললো সময় লাগবে রে মা তবে তোকে একটা অনুরোধ করবো, বললাম বলো তখন বলছে তুই আমার কাছ থেকে কোথাও যাস না আমার পাশেই থাক আর পারলে কোরআন শরিফ পড় আমার বাবা তখন ফরেস্ট সিসিএফ খুলনা হেড অফিসে ফোন দেয় বলে শরীর ভালো না বাবাকে কখনো এমন দেখিনি আমি! আমার খুব কষ্ট হয় বাবাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়া হয় ডাক্তার জানায় সময় শেষ! মেয়ে ও বাবার একই রোগ মেয়েকে বাচিয়ে দিয়ে বাবা চলে যাবে! সরকারি ভাবে বাবার চিকিৎসা হয় কিন্তু কোনো লাভ নেই ১১দিন বাবার জ্বর আমার মতো পেট ফুলে ফেঁপে শক্ত হয়ে ওঠে বাবাকে হাসপাতাল থেকে বাড়িতে আনা হয় আমার বাবা তখনও আমাকে শক্ত করে ধরে রাখে শুধু বলছে আমার থেকে দূরে যাসনা আর ফিরে পাবিনা! আমি ৩দিন ৪রাত বাবার পাশে বসে বসে শুধুই সূরা ইয়াসিন পড়েছি রাতের খাবার খেতে সবাই টেবিলে আমাকে ডাকছে আমার বাবা বলছে এখন যাস না সময় নেই আমার পরে খেতে পারবি আমি ও যাইনা সেই দিন ছিল বৃহস্পতিবার রাত ১১টা তারিখ ০৮,১০,২০০৮ইং আমার বাবা দক্ষিণ দিকে মাথা দিয়ে শুয়ে আছে হঠাৎই বলছে বাড়িতে কতো হুজুর এসেছে বসতে দাও তোমরা আর আমাকে বলছে মা আমাকে উত্তর দিকে মাথা দিয়ে শুয়ে দে এই ১১টা দিনে আমার বাবার বেডের পাশে ও কাউকে যেতে দেয় না শুধু আমি আর বাবা! আমি আমার স্বামীকে বলি বাবাকে ধরে উঠাও বাবা ঘুরে শুতে চাইছে আমি কি বোকা আমাকে রেখে চলে যেতে চাইছে আমি বুঝতে ও পারছি না! আমরা দুজন বাবাকে ধরে উঠাই আস্তে আস্তে ঘুরিয়ে শুয়ে দিচ্ছি তখন আমার বাবা আমাকে ডাক দেয় কল্পনা ডাক্তার আছে আমি উত্তর দি হ আমার মুখ থেকে হ শব্দ টা বের হওয়ার আগেই আমার বাবার পেটের মধ্যে খুব জোরে একটা শব্দ হয় সাথে সাথেই আমার হাতের উপর আমার বাবার মুখ দিয়ে রক্ত বেরিয়ে আসে আমার সারা মুখ ভিজে যায় রক্তে আমি অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে দেখছি বুঝতে পারছি না কি করবো কি করা উচিৎ আমার আমি কখন যে বাবার বুকের উপর পড়ে যায় জানি না আমার বাবা আমাকে ছেড়ে চলে যায় আমি হারিয়ে ফেলি আমার সব স্বপ্ন বেঁচে থাকার ইচ্ছে আমি বাক রুদ্ধ হয়ে যাই! অন্ধকারে ছেয়ে যায় আমার জীবন!
আমার চিকিৎসা চলছে আস্তে আস্তে সাভাবিক হই কিন্তু আজ ও আমি আমার দু'হাতে বাবাকে দেখতে পাই।
আমি অসুস্থ অবস্থায় লেখা পড়া চালিয়ে যাই বাবার সহযোগীতায় আজ বাবা নেই আমার হাত ধরে পথ দেখানোর মানুষ টাকে হারিয়ে ফেলেছি!!
আমার লিভার অপারেশন পুরো লিভার চেঞ্জ ১৪ই এপ্রিল ২০১৮ইং ভাবিনি যে অপারেশন থিয়েটার থেকে ফিরে আসবো অপারেশনের জন্য ডাক্তার আমাকে বাচ্চা নিতে বলেন কারণ আমার শরীরের ওজন মাত্র ১৩কেজি থেকে ২৫কেজি হয়েছে শরীর দূর্বল অপারেশনের জন্য পর্যপ্রপ্ত রক্ত নেই দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না তাই জন্য বাচ্চা নিতে বলেন ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী বাচ্চা কনসেপ্ট হয় কিন্তু এ বাচ্চা পৃথিবীর আলো দেখবে না তাকে মেরে ফেলা হবে কারণ তার মধ্যে ক্যান্সারের জীবাণু থাকবে, ডাক্তার কনসেপ্টের ৫মাস পরে অপারেশন করবেন এমনই কথা হয় কিন্তু অনেক টাকার প্রয়োজন তো যোগাড় হতে সময় লাগে তাই ৭মাস হয়ে যায় আল্লাহর অশেষ রহমতে আমার অপারেশন ভালো ভাবেই সম্পূর্ণ হয় এবং আমার বাচ্চাটা ও আলহামদুলিল্লাহ সুস্থ সাভাবিক হয় ডাক্তার আমার স্বামী ও মেয়েকে বলেন আপনাদের একটা মেয়ে হয়েছে তা কি করবো মেরে দিবো না কাউকে দিয়ে দিবো? বেবির মধ্যে ক্যান্সারের জীবাণু নেই ও সম্পূর্ণ সুস্থ আমার স্বামী ও মেয়ে আঁতকে উঠল বললো আমাদের বেবি আমাদের কাছে দেন বেবিকে পেয়ে ওরা বাবা মেয়ে হয়তো আমাকে ভুলে গিয়েছিল আমি ঠিক জানি না আমার জ্ঞান ফিরছে ৪দিন পরে আস্তে আস্তে সাভাবিক হই দেখতে পাই আমার নতুন অতিথি যেটা মেঘ না চাইতে বৃষ্টির মতো কষ্ট আমার এটাই যে আমার সন্তান কিন্তু আমি কোলে নিতে পারছি না আমি কখনো আমার ছোট মেয়ে টাকে কোলে করতে পারিনি আমার বড় মেয়েই ওকে বড় করছে আলহামদুলিল্লাহ এখন আমি দুই মেয়ে ও এক ছেলের মা কখনো ভাবিনি অপারেশন থিয়েটার থেকে ফিরে আসবো নতুন করে সবার মাঝে আলহামদুলিল্লাহ ফিরে এসেছি আমি ।।
🌷 অভাবের দিন গুলোঃ
জীবনে অভাব কাকে বলে বুঝিনি বাবাকে হারিয়ে অভাব কে বুঝতে শিখেছি আমার লিভার চেঞ্জ করতে ডাক্তারকে দিতে হয়েছে ৭৫লক্ষ টাকা আর ঔষধ থাকা খাওয়া দিয়ে কোটি ছাড়িয়ে।আমি সুস্থ আলহামদুলিল্লাহ তবে বাংলাদেশে এসে দেখি আমার স্বামীর ব্যবসা শেষ আমাদের ম্যানেজার সব গুটিয়ে পালিয়েছে। যশোর সিটি প্লাজায় শাড়ীর দোকান দোতলায়, যশোর কালেক্টরেট মার্কেটে দোকান, সব শেষ আমার স্বামী পাগল হয়ে গেল নাকি বোবা সে মানুষ না অন্য কিছু, কিছুই বোঝা যায়না সবসময় চুপ চাপ বসে থাকে এ ভাবে কতো দিন চলে জমানো টাকা তো আমার চিকিৎসার পিছনে শেষ এখন কি করবো কিছু বুঝতে পারছি না আমার দ্বারা তো সম্ভব না কোন কাজ করা তারপর অনেক চেষ্টা করছি কিছু করার কোথাও কোন কাজ পাচ্ছি না আসলে কি কজ করবো বা করতে পারি সেটা ও জানি না সারা দিন শুধু ঘুরে ঘুরে ঘরে ফিরে ছেলে মেয়েদের কষ্ট সত্যি নিতে পারছি না কি করবো মাথায় এলো আবার ব্যবসা শুরু করি কিন্তু মুলধন কোথায় ? আমার নিজের একটু জমি বিক্রি করে ছোট একটা লাইব্রেরী করি পুরাতন বইয়ের কোন রকম চলছি ছেলে মেয়ে বড় হচ্ছে খরচ বাড়ছে দিনে দিনে কিন্তু আয় বাড়ছে না ছেলে মেয়ে দেব ভালো কোথাও পড়তে পারছি না পারছি না ভালো কিছু করতে ওদের জন্য
🌷চাকরী জীবনঃ
আমার চাকরি জীবন খুব অল্প সময়ের আমি অনার্স সেকেন্ড ইয়ারে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকরি পাই প্রায় ২বছর চাকরি করার পর আমার লিভার ক্যান্সার ধরা পড়ে তখন আর আমার দ্বারা চাকরি করা সম্ভব হচ্ছিল না। চাকরি টা আমার আজও আছে তবে সেখানে আমি নেই আছে আমার বান্ধবী, আমি সুস্থ হবার পরে আমাকে অনেক অনুরোধ করেছে চাকরি টা ফিরিয়ে নিতে আমি পারিনি পারবো ও না কখনো আমার পরিচয়ে ও পরিচিত সত্যি খুব ভালো মানুষ আমার ও খুব ভালো লাগে বিষয় টা ভেবে।
ও আমার কষ্টের সময় প্রায় ১ বছর ওর পুরা বেতন টা আমাকে দিয়েছে আমি অনেক নিষেধ করেছি কিন্তু ও ঠিকই মাস শেষে বিকাশ করে দিত যদি ও নিষেধ করছি কিন্তু মনে মনে ভাবতাম ও টাকা না দিলে🌷 উদ্দ্যোক্তা জীবন শুরু: কডাউনে যখন সব আঁটকে পড়লো তখন আমি কি করবো ভাবছি আমাকে আমার মেয়ে বললো তুমি তো অসুস্থ অবস্থায় যুবো উন্নয়ন থেকে ট্রেনিং করেছিলাম। শুরু করি ঘরে বসে সেলাই মেশিনের কাজ। কাজের সুনাম বেশ ছড়িয়ে পড়ে তারপর সিদ্ধান্ত নিলাম দোকান নেওয়ার আমি পহেলা জানুয়ারী ২০২২তারিখ দোকান নিলাম আমার ছোট একটা দোকান হোল শুরু করলাম ব্যবসা।।
🌷এ গ্রুপের সাথে ২২-০৯-২২তারিখে হঠাৎই আমার চোখে পড়ে স্যারের একটা ভিডিও আমি মনোযোগ সহকারে দেখি দোকান থেকে রাতে বাসায় এসে আমার মেয়েকে বলি আমাকে এখানে রেজিষ্ট্রেশন করে দিতে মেয়ে হেসেই উড়িয়ে দেয় আমি নাছোড় বান্দা না দেওয়া পর্যন্ত ওর পিছু ছাড়ছি না এক সময় ও রেগে গিয়েই আমার রেজিষ্ট্রেশন করে দেয় ১৯ তম ব্যাচের ৫৯ তম সেশনের দিন এখানে আসার পর থেকে আমার মধ্যে হারিয়ে যাওয়া স্বপ্নগুলো যেনো আমি ফিরে পাচ্ছি আগে যে ভয়টা পেতাম পারবো কিনা এখন আর সেটা পায় না আমার সকল ভাই বোনেরা আমার এক একটা উদাহরণ তারা পারলে আমিও পারবো ইনশাআল্লাহ
🌷 ২০বছর সংসার জীবনের অনেক কথা অনেক না পাওয়ার বেদনা যার কিছুটা শেয়ার করলাম কস্ট দেওয়া মানুষ গুলো এখন আমার খুব আপন আমি কাউকে কস্ট দিতে চায়না
তবে তারা আমাকে এখন যে ভাবে সাপোর্ট করে হয়তো ঐ সময় করলে আমি কিছু করতে পারতাম
তবে না পাওয়ার হিসাব মিলাতে চায় না, আমাকে কে কি দিলো সেটা বড় না আমি কার জন্য কতটুকু করতে পারবো সেটাই বড় কথা যার কারনে বাবার বাড়ি ও শ্বশুর বাড়িতে সবাই আমাকে খুবই ভালোবাসে
সবার ভালোবাসা নিয়ে সারাজীবন ভালো হয়ে থাকতে চায়
সবাই দোয়া করবেন
🌷 পরিশেষে আপনাদের সকলকে অনেক অনেক শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি আপনারা যারা এতক্ষণ পর্যন্ত ধৈর্য ধরে আমার লেখাটা পড়েছেন, প্রিয় ভাই ও বোনেরা আমি স্বপ্ন দেখি আমার পাশের মানুষ গুলোকে নিয়ে, যারা আমার সুখে দুঃখে পাশে ছিলো
আমার মা,ভাই,বোনও স্বামীর পাশে দাড়াতে চায়, তাদের না পাওয়া স্বপ্নগুলো ফিরিয়ে দিতে চায়, আমার একমাত্র ভায়টাকে কিছু করে দিতে চায় সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন।
🌻আমার জীবন চলার পথে আপনাদের দোয়া, ভালোবাসা এবং সহযোগিতা আমার ভীষণ প্রয়োজন! ফাউন্ডেশনের সাথে যুক্ত হয়ে প্রতি নিয়ত শিখছি যশোর জেলার ভাই বোনদের সহযোগিতায় এগিয়ে চলার সাহস পাচ্ছি আশা করছি ভালোবেসে পাশে থাকবেন সবসময়, সবশেষে আপনাদের সবার সুখি ও সুন্দর জীবন কামনা করি, সুন্দর হোক আপনাদের সবার আগামী জীবনের প্রতিটি দিনের প্রতিটি ক্ষণ, শুভ কামনায় আজকের মত এখানেই বিদায় নিচ্ছি, ভালোবাসা অবিরাম...
📌স্ট্যাটাস অফ দ্যা ডে ৮৯৮
তারিখ ১১-১১-২০২২ইং
🌹🌹ধন্যবাদান্তে 🌹🌹
--------------
কে,এম,রিতা পারভীন
ব্যাচঃ ১৯তম
রেজিঃ ১০৭৩১২
জেলাঃ যশোর সদর
বর্তমান অবস্থানঃ যশোর সদর
💮কাজ করছি যশোর সদর থেকে সকল প্রকার লেডিস্ পণ্য, খেজুর, মধু,ঘি,মিক্স ড্রাই ফুড, তেতুল কাঠের ঘানি ভাঙ্গানো সরিষার তেল ও যশোরের বিখ্যাত খেজুরের গুড় নিয়ে।
প্রতিনিয়ত আপনাদের সাহসে এগিয়ে যাবো ইনশাআল্লাহ।।
সকলে আমার জন্য দোয়া করবেন।
🌼আমার ভালোবাসার ছোঁয়ায় তৈরী
কল্পনা ফ্যাশন 🌼