এগিয়ে যাক নিজের বলার মতো একটি গল্প ফাউন্ডেশন! বেঁচে থাকুক মানবতার ফেরিওয়ালা
✊৯০০ তম দিনের অনুভূতি প্রকাশ✊
"আজ স্ট্যাটাস অব দ্যা ডে" চালু করার ৯০০ তম দিন!!!
একজীবনের গল্পতো একই রকম হবে! তাই একই গল্প বার বার আপডেট করেই রিপ্রেজেন্ট করছি!
❤️তবে স্ট্যাটাস অব দ্যা ডে হওয়ার পর বুঝতে পেরেছি-- এই গল্প টা ডে বাই ডে সফলতার বর্ণ দিয়ে আপডেট করতে হবে! ❤️
তাই আজও সফল কিছু শব্দের মিশ্রনে আরো কয়েক ধাপ নিজেকে এগিয়ে নিলাম!!! আবার পড়ুন আমার জীবন গল্প! কি দিয়েছে আমাকে নিজের বলার মতো একটি গল্প ফাউন্ডেশন -----✌️✌️✌️✌️
পড়ুন🙏🙏🙏
থেমে যাবার জন্য নয়! বরং অতীত কে মনে রাখতে চাই, বেঁচে থাকার জন্য! আমি টাঙ্গাইলের প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চল থেকে জন্ম গ্রহণ করেছি
আমি সাগরিকা ২০০৬ সালে SSC পাশ করি। কলেজে ভর্তি হই। তার পর আমার জীবনে খুব বড় একটা দূর্ঘটনা ঘটে ( সেটাও একদিন বলবো)।পড়াশোনা বন্ধ হওয়ার অবস্থা শুরু হয়ে গেল একটা বেচে থাকার জন্য হলেও যুদ্ধ অনেক কষ্টে কোন ভাবে HSC শেষ করি২০০৮ সালে। তার পর বন্ধ হয়ে যায় পড়াশোনা আমার পরিবারের কারোর সাথে আমার তেমন একটা যোগাযোগ ছিলনা আম্মুর সাথে মাঝে মাঝে যোগাযোগ করতাম খুব বেশী যখন দেয়ালে পিঠ ঠেকে যেত।নিজের সমস্যা ও প্রয়োজন মেটানোর জন্য সেলাই মেশিনে কাজ করতাম বীমার টাকা কালেকশন করে দিতাম কিন্ডারগার্ডেন এ শিক্ষকতা করতাম রাত ১১ টা পর্যন্ত টিউশনি করতাম বিশেষ দিন গুলোতে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপলক্ষে বাচ্চাদের নাচ শিখাতাম তার সাথে তো নিজের দৈনন্দিন কাজ আছেই এভাবে বহু কষ্ট আর অত্যাচারে জীবন টা আমার নরক হয়ে গিয়েছিল সিদ্ধান্ত নিলাম আর না, এবার যা হয় হবে। পরিবারের কাছে ফিরে যাবো ক্ষমা চাইলাম সবার কাছে নিজের ভুলের জন্য। সময় টা ছিল ২০১২ সালের ২৩ শে সেপ্টেম্বর।দীর্ঘ ৭ বছর মুক্তির স্বাদ এক অমানুষিক অত্যাচার থেকে কিন্তু মুখ ফিরিয়ে নিলেন আমার বাবা আশ্রয় পেলাম ফুফাতো ভাইয়ের বউয়ের কাছে। না সেখানেও তাদের একটি থাকার রুম, আর একটি রুম নিবে তাই ভাড়া চাইল আম্মুর কাছে কিন্তু আমাকে এতো টাকা দিয়ে বাসা ভাড়া করে দিবে কেমন করে আম্মু কারন বাবা তো সাপোর্ট দিচ্ছে না চলে এলাম ফুফাতো বোনের কাছে, তার পরে গিয়ে পা ভেঙে গেছে তার বাসার রান্না তার মল পরিষ্কার করার জন্য লোক দরকার সবই করতাম। কিন্তু ঐ যে পড়াশোনা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল এবার চিন্তা করলাম সেই পড়াশোনা আবার চালু করবো। আম্মুর সাথে কথা বললাম।এবার পড়াশোনা করার পক্ষে পেলাম Mohima (কাজিন) আপু ও তার স্বামী কে। তার সাপোর্টেই চলে এলাম আমার ছোট খালামনির বাসায়। এবার শুরু হলো আর এক যুদ্ধ। এসে খুব একটা দেরি করি নাই। কম্পিউটার ট্রেনিং সেন্টার এ ভর্তি হলাম| সেই সাথে ভর্তি হওয়ার চেষ্টা করলাম অনার্সে, কিন্তু মাঝে অনেক গ্যাপ থাকায় সরকারি কলেজে ভর্তি হতে পারলাম না।আর প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের খরচ আমার আম্মু দিতে পারবে না বাবার আড়ালে। এবার আমার পরিবার টা আরও একটু কাছে পেলাম যাদের উৎসাহেই আমার নতুন করে পথ চলা ভর্তি হলাম BOU তে বিএসএস।কম্পিউটার ক্লাসে আমি অনেক ভালো করায় আমাকে ছাত্রী অবস্থায়ই ওখানে ট্রেইনার পোষ্টে চাকরি দিল কম্পিউটার ইনস্টিটিউটের মালিক। বেতন ২৫০০/- সাথে সকাল আর দুপুরের খাবার।যেন আশার আলো দেখতে পেলাম আমি বোরকা পরে কম্পিউটার পরিক্ষা দেই ২০ মিনিট বাকি ৪০ মিনিট বোরকা ছেড়ে পরিক্ষা হলের ডিউটি পালন করি কারন আমি ছাত্রী + শিক্ষিকা আমি অবশ্যই ভালো একটি শিক্ষিত ও মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে। তবুও ভাগ্যের পরিহাসে আমাকে পুরাতন শীতের কাপড়ের মার্কেট থেকে ১০ টাকা করে শীতের জামা পরতে হয়েছে এরই মধ্যে সার্কুলার বেসরকারি সুনামধন্য এনজিও আলহামদুলিল্লাহ জবটি আমার হয়ে যায় ৭০০০/- বেতনে।৬/১২/২০১৩ সাল জয়েন করি। এবার আমি আবার পরিবার থেকে দূরে ঢাকা পোষ্টিং। কত রাত যে টাকার জন্য পানি খেয়ে ঘুমিয়েছি তার হিসাব নাই।কত যে পোড়া ভাত খেয়েছি এই বিপদে পড়ে কত যে কাছের মানুষকে অন্য ভাবে জেনেছি তা বলে বুঝানো যাবেনা নিজের জীবন বাচানোর জন্য খুব বেশি দিন ঢাকায় থাকতে হয়নি।যেহেতু আমি কম্পিউটার ট্রেইনার ছিলাম।সেই সুবাধেই ৫ মাসের মাথায় আমার পোষ্টিং হয় টাংগাইলে হেড অফিসে আইটি সেকশনে আর এর এক মাস পরেই ১৬/০৬/২০১৪ পারিবারিক ভাবে বিয়ে হয় আমার। এবার পাশে পাই আমার মা- বাবা সবাইকে এটা আমার জন্য বিয়ে না, ছিল একটা সাপোর্ট এবং হারানো পরিবার ফিরে পাওয়া আমার স্বামী আমার অতীত বর্তমান সব জেনে আমাকে বিয়ে করে, এবং আমার বাবার কাছ থেকে কিছুই নেয়নি,উল্টো আমাকে সাজিয়ে এনেছে তার সামর্থ্য অনুযায়ী পাশে পাই এক সহযোদ্ধা কে। তার উৎসাহেই পড়াশোনা টা এবার শক্ত হাতে ধরলাম।বিয়ের এক বছরের মাথায় আমাদের একটি ছেলে সন্তান হলো। তাকে সাথে নিয়েই বিএসএস শেষ করলাম। এতেও আমার আত্মতৃপ্তি হলোনা আমার ৩৪ টা ডিস্ট্রিকই মুভ করতে হতো চাকুরির জন্য। তাই এবার পড়াশোনা টা আমার কাছে আরও কষ্টকর হলো। আমার সহযোদ্ধার সাপোর্ট ও আম্মুর আর্থিক সহযোগিতা সাথে নিয়ে ভর্তি হয়ে গেলাম MSS ২০১৮ সালে। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাদ এবার আমি বুঝলাম। শনি- বৃহস্পতিবার অফিস করে রওনা দিতাম ঢাকার উদ্দেশ্যে। বৃহস্পতিবার থাকায় জ্যাম থাকতো তাই পৌছাইতাম রাত ১২ টায়।কখনো ৩ টাও বেজে যেত। এবার আমার এই যুদ্ধে পাশে পেলাম কাজিন Lubna Khanamও তার স্বামী Sohrab Hossain Sohel ভাইকে। আমি তাদের কাছে চির কৃতজ্ঞ। যারা আমার জন্য রাত জেগে বসে থাকতো খাবার নিয়ে । শুক্রবার ক্লাস করে রওনা দিতাম ৪ টা ৫ টা বিকালে।ক্ষুধায় যে কত মুখ লুকিয়ে বাসে কান্না করছি তা আল্লাই জানে। দুপুরে বাসায় যেতে বললেও যেতাম না।আমার ছোট বাচ্চা টা যে একা থাকতো বাড়িতে টাংগাইলে পৌঁছাতে ৮-৯ টা বাজতো। আমার স্বামী চাকুরীর কারনে কুমিল্লা থাকে তাই তার সাথে কখনো কখনো আশুলিয়ায় বাসের জানালা দিয়ে দেখা হতো। সে আসতো আমি যাইতাম, আবার সেই যাইতো আমি আসতাম।২ মাস পর পর এটাই ছিল আমাদের দেখা সাক্ষাৎ এতো কষ্টর পর এবার ২ বছর পর২০১৯ সালের শেষে হাতে পেলাম আমার সেই স্বপ্ন, সেই যুদ্ধ, সেই আশার মাস্টার্সের সার্টিফিকেট !! আলহামদুল্লিলাহ!!! আমি সন্তান, সংসার, চাকুরি, পড়াশোনা আর আমার সেই ভয়ংকর রকমের অতীত টা লালন করে আজ আমি সাগরিকা হতে পেরেছি। আর ঐ যে নিজে কিছু করার স্বপ্ন দেখেছিলাম,ইউটিউবে নিজে কিছু করতে চাই লাভজনক ব্যবসা চাই এসব সার্চ দিতে দিতে সেই চাওয়া থেকেই আমি হঠাৎ ফেসবুকে নিজের বলার মত গল্প ফাউন্ডেশন কে খুঁজে পাই 11 তম ব্যাচের রেজিস্ট্রেশন করি সারাদিন অফিস শেষে রাতের বেলায় সময় দেওয়া শুরু করলাম এই ফাউন্ডেশনে 90 দিনের স্কিল শেখা শুরু করলাম এবং অপেক্ষায় ছিলাম এই 90 দিন শেষে আমার টাঙ্গাইলের তাঁতের শাড়ি নিয়ে কাজ শুরু করলাম প্রথমে এবং আমার প্রথম মূলধন ছিলাম মাত্র 3 হাজার 490 টাকা!স্বামীর আড়ালে গোপনে অনলাইনে করতে চাওয়া বিজনেস শুরু করেছিলাম 2015 সালে এবার সবার সামনে সৎ সাহস নিয়ে শখের হাট পেইজের নামকরণের মধ্য দিয়ে শুরু করি এবং আমি এতকিছু মাঝেও আজ আমার একটু পরিচয় গড়ে তুলেছি এবং আমার স্বামী ইকবাল হোসেন যার সহযোগিতায় আমার পরিচয় হয় নতুন করে অনলাইন জগতের সাগরিকা ইকবাল নামে !কঠোর শ্রম আর সাধনার মাধ্যমে নিজের বলার মত একটি গল্প ফাউন্ডেশনে নিজের নেটওয়ার্কিং তৈরি করে ফেলি এবং মাত্র কয়েক মাস এই মাসে 1 লক্ষ প্লাস সেল কে থাকি! আমন্ত্রিত হয়ে স্যারের ইউটিউবে যাই নিজের জীবন গল্প বলতে❤️ ব্যাপক ব্যান্ডিং এবং প্রচারণার ফলে সেখান থেকে ফিরে আর আমাকে পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি ব্যাপক চাহিদার কারণে শুরু করি তাঁতের থ্রি পিস প্রোডাকশন। নিজের বলার মত গল্প ফাউন্ডেশন যত বড় হচ্ছে ততো বড় হচ্ছে আমার মার্কেট। 2022 সাল মানে তিন বছর চলছে এখন আমার এই প্লাটফর্মে আর সেল বেড়েছে কয়েক গুণ! এখন আমি চাকুরীর পাশাপাশি মাত্র কয়েক ঘণ্টা সন্ধ্যার পর সময় দিচ্ছি এই প্লাটফর্মে! আলহামদুলিল্লাহ এই প্লাটফর্ম থেকে এখন আমার মাসিক সেল ১২ লক্ষ টাকা! শুধু তাই নয় ঈদের মধ্যে ব্যাপক চাহিদা থাকার কারণে সেল গিয়ে দাঁড়িয়েছিল 18 লক্ষ টাকা এক মাসে! বর্তমান আমার সেই 3490 টাকা দাঁড়িয়েছে দশ লক্ষেরও বেশি মূলধনে। 85% এর বেশি সেল প্লাটফর্মে হয় এখন! সব চেয়ে ভাল লাগার বিষয় হল আমার শাশুরি এখন আমার কাছে মায়ের মতোই! যা প্লাটফর্মে আসার আগে এই ভাবে ফিল করতাম না আমি এখন চুপ থেকে ভালোবেসে লেগে থাকতে শিখে গেছি। নারী হিসেবে একটা কথাই বলবো "সংসার সুখের হয় রমনীর গুনে" এই উক্তিটি বাস্তবায়ন করতে শিখেছি শুধুমাত্র এই প্লাটফর্ম থেকে! আজ আমি চোখ বন্ধ করে অনুভব করি আমি একজন ভালো সন্তান, ভালো বউমা, ভালো স্ত্রী, ভালো মা, সর্বোপরি আমি একজন ভালো মানুষ! স্বপ্ন দেখি আমার মত জীবনযুদ্ধে হেরে যাওয়া মানুষগুলোকে নতুন করে বেঁচে থাকার অবলম্বন করে দেওয়ার! শখের হাট কে একটা সর্বোচ্চ ভালো কুয়ালিটির সুলভ মূল্যের তাতঁ প্রোডাক্টের ব্যান্ড হিসেবে পরিচিত করানোর❤️
এগিয়ে যাক নিজের বলার মতো একটি গল্প ফাউন্ডেশন! বেঁচে থাকুক মানবতার ফেরিওয়ালা জনাব ইকবাল ভাই বাহার জাহিদ স্যার, তৈরি হোক হাজারো হেরে যাওয়া পথিকের সফলতার গল্প❤️
https://m.facebook.com/groups/youngentrepreneursbdiqbal/permalink/1019085601896129/
আমার SOD হওয়া পোস্টের লিংক❤️✌️✌️✌️
📌স্ট্যাটাস অফ দ্যা ডে ৯০০
তারিখ ১৩-১১-২০২২ইং
সাগরিকা ইকবাল
১১
২০৫২৪
জেলা প্রতিনিধি টাংগাইল
নারী রিসার্চ টিম সদস্য