শুরু করলাম ত্রিশ হাজার টাকা দিয়ে
🌹🌹🌹বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
পরম করুনাময় আল্লাহর নামে শুরু করছি। যিনি এত সুন্দর পৃথিবীতে আমাদেরকে পাঠিয়েছেন। আমরা সবাই তারি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি। হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু সালামের তারই উম্মত আমরা সকলেই।
♥️♥️♥️যাদের উসিলায় এই পৃথিবীর আলো দেখতে পেয়েছি তারা হলেন মা বাবা। তাদের জন্য আমরা সকলেই প্রাণভরা ভালোবাসা এবং দোয়া রইলো। তাদের সুস্থতা কামনা করি সর্বক্ষণ ।
♥️♥️♥️আমাদের সকলের প্রিয় নায়ক জাহিদ ইকবাল স্যারের অনুসারী সবাইকে জানাই আমার আন্তরিক ভালোবাসা। যে স্যারের উছিলায় আমরা জীবনে বেঁচে থাকার জন্য প্রত্যেকটা দিক খুঁজে পেয়েছি এবং উঠে দাঁড়াতে শিখছি। স্যারের জন্য থাকলো অনেক দোয়া এবং ভালোবাসা। আল্লাহতালা যেন পৃথিবীতে এরকম হাজারো জাহিদ ইকবাল স্যার তৈরি হইতে পারে।
♥️♥️♥️এবারে নিজের জীবনের একটু কাহিনী শুরু করি সবাই কষ্ট করে পড়ে নিবেন। আমরা চার বোন দুঃখের বিষয় একটা ভাই নেই। আমার বাবা সেনাবাহিনীতে চাকরি করতো। বিগত ২৬ বছর চাকরি করে এসেছে খুবই সততার সাথে। এবং আমাদের সব সময় সাথে সাথে বাসায় নিয়েই থাকতো। আমরা বিভিন্ন সেনাবাহিনী স্কুল কলেজে পড়াশোনা করছি। চার বোনের ভিতর আমি ছিলাম বড়। খুব ছোটবেলায় আমার বাবা-মা শখ করে ছেলে নেই সেই কারণে আমাকে বিয়ে দিয়ে দেয়। সেও সেনাবাহিনীতে চাকরি করতেন। এবং তিন বোনের ইনশাআল্লাহ খুবই ভালো জায়গায় খু বিয়ে-শাদী হয়ে যায়। ছোট বোনদের ছোটবেলায় দেখাশোনার দায়িত্ব আমারই ছিল। ভাই নেই যেহেতু। বিয়ে-শাদী অনুষ্ঠান আমার বাবা অনেক বড় করে করতেন। সেই দায়িত্বগুলো আমার পালন করতে হতো। ওরাও আল্লার রহমতে শান্তিতে আছে। আমি বড় হলে আমার অনেক দায়িত্ব সব সময় থাকে এবং এখনো আছে। আমার বাপ চাচা ফুফু মোট ছয় জন ছিল। এবং আমার বাবা ছিল সবার বড় সবাইকে লেখাপড়া শিখিয়ে বিয়ে-শাদী দিতে দিতে হয়েছে আমার বাবার দায়িত্ব। ক্লাস নাইনে থাকতে আমার বিয়ে হয়ে যায়। তারপরে খুব কষ্ট করে এসএসসি পাস করি। তার ভিতরে আমি আমার বড় ছেলে হয়। তারপর আবার কলেজে ভর্তি হই এসএসসি সেকেন্ড ইয়ারে ফাইনাল পরীক্ষা দেওয়ার ভাগ্যে জোটে নেই। শ্বশুর যে নিয়ে আসে শ্বশুর বাড়ি এখন শুরু হলো জীবন যুদ্ধ।
♥️♥️♥️১৯৯৮ সালে আমার বিয়ে হয় মার্চ মাসের ১০ তারিখে । বাড়ি ছিল পিরোজপুরে শ্বশুরবাড়ি সাতক্ষীরায়। এক এক জায়গার কালচার এক এক রকম ছিল আমার যা বুঝতে অনেক দেরি হয়েছে এবং অনেক ছোট ছিলাম যার কারণে বুঝতে পারিনি। শশুর শাশুড়ির অত্যাচার সব সহ্য করে নিরবে থাকতে হয়েছে। কিন্তু স্বামী অনেক ভালো ছিল যার কারণে আমি থাকতে পারছি। আর আমার মা একটা কথা বলতেন মেয়েদের অনেক ধৈর্য সহ্য নিয়ে জীবন কাটাতে হয় ।ধৈর্যশীলকে আল্লাহ অনেক পছন্দ করে। মার সেই কথা নিয়ে বসে থাকতাম। মার কথা সবসময় মনে করতাম। তারপর আমার স্বামী বাসায় নিয়ে আসে কোয়ার্টারে থাকি। বড় ছেলে হওয়ার পর তার সাত বছর পরে আবার একটা ছেলে হয়। আমি দুই ছেলের মা। ছেলেরা এখন মাশাল্লাহ বড়ই হয়েছে বড় ছেলে অনার্স থার্ড ইয়ার পরে। ছোট ছেলে ক্লাস দশম শ্রেণীতে পড়ে।
♥️♥️♥️এবার চলে আসি সংসার জীবনে। সং আবার সার। এর বিশ্লেষণ আসলে অনেক বলে শেষ করা যাবে না। বিয়ের পর কিছুদিন শ্বশুরবাড়ি আর বাবার বাড়ি। তারপরে চলে যাই বাসায় সিলেট ক্যান্টনমেন্ট। সেখানে আমার বড় ছেলের জন্ম স্থান। বড় ছেলে আর আমি ১৫ বছর বয়সের ডিসটেন্স। তাহলে তো বুঝতেই পারতেছেন কত ছোটবেলায় বিয়ে হয়েছে। সংসার বলতে কিছুই বুঝতাম না বাবার খুব আদরের মেয়ে ছিলাম। আমার বাবা সব মেয়েদের অনেক আদর করতো। সেখান থেকে চলে আসি আবার যশোর ক্যান্টনমেন্টে। শশুর শাশুড়ি কখনোই দেখতে পারতো না। হঠাৎ করে চলে আসে শাশুড়ি বাসায় খুব অসুস্থ চিকিৎসার জন্য । ডাক্তার দেখানোর পরে ডক্টর বলে উনাকে অপারেশন করতে হবে খুবই দ্রুত। তখন আবার আমার মত ভাল মানুষ তার কাছে কেউই ছিল না। শাশুড়ির যত চিকিৎসা সবকিছু বিপদ-আপদ ইনশাল্লাহ আমিই দেখি। কিন্তু যখনই দেখা শেষ তারপর আর আমার কথা কখনোই তার মনে থাকে না। কোনদিন কি তার কাছে ভালো হতে পারব না জানি না। কিছুদিন থাকার পরে আবার ট্রান্সফার হয় ।তারপরে চলে যাই খাগড়াছড়ি ক্যান্টনমেন্ট পাহাড় পর্বত এলাকা অনেক সুন্দর দৃশ্য। সেখানে অনেক বছরের ছিলাম সেখানে আমার ছোট ছেলের জন্ম হয়। সেখানে এক ঘটনা ঘটে গেছে আমার বড় ছেলেকে নিয়ে। তার পায়ে কি হয়েছিল জানিনা ডান পায়ে। সে হাঁটতে পারত না এবং সিঁড়ি থেকে একদিন দেখে গড়িয়ে পড়ে গেছে হঠাৎ করে। ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাই। ডাক্তার বলে ওখানে ইনফেকশন হয়েছে। যদি আজকে দিনের ভিতর অপারেশন না করেন। তাহলে পা কেটে বাদ দিতে হবে। খাগড়াছড়ি সিএমসি অপারেশন হয়। অপারেশনের পরে আর জ্ঞান ফেরেনা এ অবস্থায় অনেকক্ষণ থাকে। তারপরে অনেক মার দর থাবা দেওয়ার পরে তার জ্ঞান ফিরে । আল্লাহর রহমতে।এবং হুইল চেয়ারে একমাস চলে। সর্বক্ষণ আমি তার সেবা যত্ন নিই সি এম এস। সে যেন এক কঠিন পরীক্ষা। সেখান থেকেও আল্লাহ পাস করিয়েছেন। তারপর খাগড়াছড়ি থেকে থেকে চলে আসি ।ময়মনসিংহ ক্যান্টনমেন্টে। সেখানে থাকাকালী মর্মান্তিক ঘটনা। আমার ছোট ছেলের যখন ছমাস তখন সে হামো করি দিতে পারে। ফিডার খেতো। আমি ওর জন্য সুজী গরম করে ফিডারে ভরে দেব । যার কারনে রান্না করে গিয়েছিলাম।ও যে আমার পিছন পিছন চলে আসছে আসলে আমি কিছুই বুঝতে পারিনি। শুধু একটা শব্দ হলো। দেওয়ালে দারা করানো ছিল শীল হাত দেওয়ার সাথে সাথে হাতের উপর পড়ে গেছে ।পিছন দিক ফিরে দেখি আমার ছেলের হাতের অনামিকা আঙ্গুলটা একবারে থেতলে গেছে । ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেছে সিএমএসে । যখন যাচ্ছিলাম আমার পায়ে কোন জুতা ছিল না শুধু দৌড়া আর দৌড় সি এম এস বাসা থেকে নিকটে ছিল। কিন্তু কোলে নিয়ে যে দৌড়াচ্ছি কে বলল না ।রোডে অনেক লোক যে ছেলেটা আমার কাছে দেন।আমি নিয়ে ডাক্তারের কাছে যাই। ডাক্তার প্রচন্ড আকারে আমাকে বকাবকি করতেছে আঙ্গুল কেটে ফেলো। আমার মাথায় কোন কাজ করতে ছিল না।ওটি রুমে যে থাকে কাছে অনুরোধ করি ভাই যা করলে হয় যেভাবে আংগুল ছেলের নখ বের হয় সেভাবেই কাটে আল্লাহর অশেষ রহমত আল্লাহ সবকিছু পারেন। আল্লাহতালা নখ দিয়েছেন। এভাবে ময়মনসিং কেটে যায়। তারপরে আসে চিটাগাং। চিটাগাং ক্যান্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজে বড় ছেলে পড়তো। চিটাগাং থাকাকালীন শ্বশুর শাশুড়ি কখনোই ভালো জানত না। ছেলের কাছে বিভিন্ন কথা বলে আমাকে দোষারোপ করতো। ছেলের কাছে খারাপ বানিয়ে রাখত। তখন শুরু হলো সংসারে অশান্তি। খুবই বেশি। চিটাগাং বাসা থাকা শেষ ওখান থেকে চলে আসি আবার সেই যশোর। বিভিন্ন জাগায় থাকা হয়েছে চাকরির ক্ষেত্রে। যশোর ক্যান্টনমেন্ট আসার পরে চাকরির সমাপ্তি। যশোরে বিমানবন্দর এলাকায় জমি কিনে বাড়ি করি। বিভিন্ন রকমের সংসারের যুদ্ধ সংগ্রাম চালিয়ে এই জমি কিনা। এখন ইনশাআল্লাহ খুবই ভালো আছি। এবং অনেক জমি কিনছি। আমাকে শ্বশুরবাড়ি লোক সবসময় বলতে পাগলী। আমি জানতাম যে মেয়েরা শুধু গৃহিণী রান্নাবান্নার কাজেই থাকবে তা ছাড়া কিছুই তার দ্বারা সম্ভব না। জীবনে যেদিন থেকে নিজের বলার মত গল্প সন্ধান পেয়েছি ইউটিউবে। সেদিন থেকে মনে হচ্ছে যে না আমার দ্বারা সম্ভব আমি কেন পাগলী হব। আমি সবই পারি আমি হারবো না আমার দ্বারাই সবই সম্ভব। এবং আমার স্বামী অনেক অসুস্থ ছিলাম ভর্তি থাকে একবার ৪৫ দিন একবার ১৫ দিন। তাকে সরকার মেডিকেল বোর্ড আউট দিয়ে বাদ দিয়ে দেন। মনে করলাম যে কি করে জীবনে আর বাঁচবো কিভাবে সংসার চালাবো। ইনশাআল্লাহ এখন আল্লাহর রহমতে খুবই ভালো চলে সংসার। স্যারের এই গ্রুপে জয়েন্ট হয়ে মনে হচ্ছে একটু বেঁচে থাকি। সবকিছু মানুষের দ্বারাই সম্ভব।
♥️♥️♥️এই পৃথিবীতে যদি সবচেয়ে বেশি ভালোবেসে থাকে সে হলেন আমার বাবা-মা। আমার বাবা সব চেয়ে বেশি ভালোবাসি ।আমি যা ভাষায় প্রকাশ করতে বলতে পারছিনা । সে বাবা একদিন ছোট বোনের বাসায় বেড়াতে যায় ঢাকাতে । ছোট বোন একদিন ফোন দিয়ে বলে আপু বাবা স্টক করছেন । শুনে আমার কাছে কি যে মনে হয়েছে বোঝাতে পারবো না। আমি সঙ্গে সঙ্গে যশোর থেকে রওনা দিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে চলে যাই। ঢাকা সিএমএসে ওর বাবাকে ভর্তি রাখে । ওখানে প্রায় ১৫ দিনের মতো থাকার পরও কোনো পরিবর্তন এসে আসে নাই। রাতদিন ওখানে বাবার সাথে পরিশ্রম করেও কোন কিছুই করতে পারলাম না। ওখান থেকে প্রাইভেট হাসপাতালে নিয়ে আসলাম বাবাকে তাও কোন উন্নতি করতে পারল না। ছোট বোন ঢাকায় ডেন্টিস বোনাইও ডেন্টিস। দুজনে কে দুজনে ই আব্বা-মাকে সব সময় টাকা পয়সা দিও পর্যাপ্ত হেল্প করে কিন্তু আব্বা পেনশন পায় তারপরও চলো অনেক কষ্ট। মাসে ৩০০০ টাকার ওষুধ লাগে ।
♥️♥️♥️এবার আমি নিজের বলার মত গ্রুপে কিভাবে জয়েন হলাম সেটা সবার সাথে শেয়ার করতে চাচ্ছি। আমি মোবাইল বিষয়ে অত কিছু বুঝতাম না। করোণা চলাকালীন তখন ওয়াইফাই সংযোগ দিলাম । বাচ্চাদের অনলাইনে ক্লাস হবে যার কারণে। youtube চালাতে চালাতে ইকবাল স্যারের ভিডিও দেখতে পাই । এই শুরু হয়ে গেল জীবন। স্যারের ভিডিও যখন চোখে পড়ে একদিনে ৩০ টা ভিডিও দেখছি পরপর এরকম ৭০ ৮০ পর্যন্ত দেখা শেষ। কিভাবে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে আমি পারিনা । ছেলেদের কাছে রিকোয়েস্ট করতে করতে এক মাস চলে যায়। তারপরে ছেলেরা এখানে জয়েন করে দেয় । এভাবে হলো নিজের বলার মত একটা গল্প প্ল্যাটফর্মে জয়েন করার মূল গল্প।
♥️♥️♥️বাবার পিছনে এক টাকাও খরচ করার মত নিজের কোন সমর্থই ছিল না। মনে হয় কিছু একটা করি কিভাবে টাকা ইনকাম করা যায়। নিজের ইচ্ছা মতো বাবার পিছে খরচ করব । এবার শুরু হয়ে গেল বিজনেস। শুরু করলাম ত্রিশ হাজার টাকা দিয়ে। আস্তে আস্তে ভালোই বড় করছিলাম । কিন্তু সংসারের অভাবে মূলধন ধরে রাখতে পারিনি। বিজনেস একটু ডাউন আছে। ইনশাআল্লাহ আবারো শুরু হয়ে যাবে ফুল দমে। সবাই দোয়া করবেন আমার জন্য আমি যেন। বিজনেস শুরু করে। মা বাবা যতদিন বেঁচে আছে তাদের সেবা করতে পারি এবং তার পাশে দাঁড়াতে পারি এই দোয়া করবেন। এখন আমার বাবা-মা বর্তমানে পিরোজপুরি আছে। বাবা বাম হাত দিয়ে কিছুই করতে পারেন না। কিন্তু লাঠি ভর করে একটু একটু হাঁটতে পারেন।
♥️♥️♥️তবে আমি মনে করি নিজের বলার মত এক গল্প প্ল্যাটফর্মে মানুষ শুধু উদ্যোক্তাই হবে না ভালো মানুষের এক পরিবার আমরা। মানুষের মত মানুষ হতে পারবে ইনশাআল্লাহ। ৯০দিনে যে সেশন গুলো আমাদের দিয়েছেন । আমরা সবাই যদি মনে প্রানে ভালোবেসে সবগুলো কাজ করি ইনশাআল্লাহ কারো কোনদিন কোন কষ্ট থাকবে না। পিছনে ফিরে তাকাতে হবে না।
সবাইকে অনেক কষ্ট দিয়ে পড়ার জন্য অনুরোধ করতেছি ।🌹🌹
📌স্ট্যাটাস অফ দ্যা ডে ৯০১
তারিখ ১৫-১১-২০২২ইং
বিউটি আক্তার সালমা
ব্যাচ ১৬
রেজিস্ট্রেশন নাম্বার ৭৯০৫
কাজ করি লেডিস আইটেম নিয়ে
বাসা যশোর বিমানবন্দরের পাশে
আমি পিরিজপুরের মেয়ে। ♥️♥️♥️