১০ দিন পর আসন্ন মৃত্যুপথযাত্রী থেকে বেচে ফিরে উদ্যোক্তা হওয়ার গল্প
জীবনের গল্প....
গল্পটা পড়ার অনুরোধ রইলো.
🌿🌿 বিসমিল্লাহির রাহমানির
রাহিম।🌱🌱
সবার প্রতি আমার সালাম আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ🌿🌿
🌿🌿 প্রথমে কৃতজ্ঞতা আমাদের সৃষ্টিকর্তা মহান রব্বুল আলামীনের প্রতি যিনি আমাকে এখন অনেক সুস্থ রেখেছেন ভালো রেখেছেন আলহামদুলিল্লাহ 🌿🌿
🌿🌿তারপর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি আমার মা-বাবা প্রতি তারা নাহলে আমি এই পৃথিবীতে আসতাম না তারা আমাকে পরম যত্ন করে ও ভালোবাসা দিয়ে বড় করেছেন মা-বাবা হচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে মহা মূল্যবান সম্পদ
🌿🌿আমি আরো কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি প্রাণপ্রিয় ভালোবাসার গ্রুপ নিজের বলার মত একটা গল্প ফাউন্ডেশন এর প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান সকলের ভালোবাসার কেন্দ্রবিন্দু সবার নয়নের মনি লাখো বেকার যুবক যুবতীদের হৃদয়ের আলো প্রজ্জলন কারী কথা হতাশাগ্রস্থদের আশার আলো প্রদানকারী প্রিয় মেন্টার জনাব ইকবাল বাহার জাহিদ স্যারের প্রতি। তিনি না থাকলে হয়তো আপনাদের সাথে সাক্ষাৎ হতো না তাহার কারণেই ভালো মানুষ হিসেবে নিজেকে নতুন করে গঠন ও উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন দেখছি, প্রাণ প্রিয় স্যারের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা ও ভালবাস
🌿🌿 চলে যাচ্ছি মূল গল্পে ......
আমি আমার জীবনের কিছু কথা আপনাদের সাথে শেয়ার করতে চাই আমি বরিশাল পটুয়াখালী মির্জাগঞ্জ থানার মেয়ে কিন্তু জন্মসূত্রে আমি খুলনার মেয়ে আমার বেড়ে ওঠা খুলনাতে। আজ আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করব আমার জীবনের কিছু মর্মস্পর্শী গল্প।
জীবন মানেই অনেকগুলো গল্পের সমাহার, কিছু গল্প বড় হয় আবার কিছু গল্প ছোট এই নিয়ে আমাদের জীবন আমার সারা জীবনের বৃহৎ গল্পের কিছু অংশ আজ আপনাদের সাথে বলতে চাই। সবার কাছে অনুরোধ আমার এই গল্পটা সবাই একটু পড়বেন।
আমার জন্ম একটি মধ্যোবিত্ত পরিবারে বাবা-মায়ের খুব আদরের মেয়ে, কারণ আমার আগে আমার সাত ভাই বোন হয়ে মারা গেছে। তার অনেক বছর পর আমি আসলাম পৃথিবীতে সবাই খুব খুশি কিন্তু ছোট থেকেই আমি খুব অসুস্থ ছিলাম যাইহোক আমার আট বছর পর আমার আরেকটা বোন হল তারও অনেক বছর পর আমার ছোট বোন হল আমাদের তিন বোনের কোন ভাই নেই এই হল আমাদের সুখী একটা পরিবার।
আমি এস এস সি এইচ এস সি পাস করার পর চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নার্সিং ভর্তি হই নার্সিংয়ের যখন প্রথম সেমিস্টার তখন আমি প্রেম করে বিয়ে করি। কিন্তু আমার বর বিয়ের সাতদিন পর দুই বছরের জন্য মিশনে চলে যায়।বিষয়টা আমার মামা ছাড়া কেউ জানতো না, নার্সিং এ যখন থ্রি সেমিস্টার তখন বাবা জানতে পারে, অনেক ঝামেলার পরে পারিবারিক ভাবে আবার নতুন করে বিয়ে হয় তার সাথে বেশ ভালো কাটছিল দিনগুলো আমার হাসবেন্ড বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে ছিলেন। তিনি জবটা ছেড়ে দেন এবং বিজনেস শুরু করে ভালই লাগছিল দুইজনেই বিজনেসটা দেখতাম আমার হাজব্যান্ড এর ইচ্ছায় আমি ২০১৫ সালে সাংবাদিকতায় জয়েন করি আলহামদুলিল্লাহ ভালোই কাটছিল জব সংসার বিজনেস কিন্তু সুখ কপালে সইলো না আমি জানতে পারি আমার বরের অন্য কোথাও সম্পর্ক আছে পরে আর মেনে নিতে পারলাম না। বিয়ের সাত বছর হয়ে গেছে বাচ্চাও নেই সবকিছু মিলিয়ে মনে হয়েছিল আমি খুব অসহায় তখন আমি একটা ভুল ডিসিশন নিয়ে ফেলি আত্মহত্যা করার মত একটা নিকৃষ্ট কাজ আমি করি। পরে আমাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নিয়ে যাওয়া হয় তারা আমাকে দেখে বলেছিল আমি আর পৃথিবীতে নেই তখন আমাকে এমার্জেন্সি ভাবে ঢাকা নিয়ে যাওয়া হয় কিন্তু হায়াত থাকতে যে মৃত্যু নেই আমি তিনমাস আই সি ইউতে থাকি পরে সুস্থ হয়ে উঠলাম বেশ কিছুদিন পরে জানতে পারি আমি মা হব ততদিনে ডিভোর্সের জন্য উকিল নোটিশ পাঠাই তার কাছে কিন্তু সে একসেপ্ট করে না কোটে জানায় আমার প্রেগনেন্সির কথা তখন আর ডিভোর্সটা হয় না যাইহোক তখন ভাবলাম তাকে লাস্ট একটা চান্স দেই আমার মা বলছিল হয়তো সে বাচ্চার জন্য ভালো হয়ে যেতে পারে কিন্তু কথাই তো আছে কুকুরের লেজ সোজা হবার নয় তখন ভাবলাম যে এভাবে জীবন চলতে পারে না তখনই তাকে ডিভোর্স নোটিশ আবার পাঠায় বাচ্চার বয়স তখন এক বছর তিন মাস এভাবেই চলে গেল কিছুদিন পরে ডিপ্রেশনে গিয়ে আমি অনেক অসুস্থ হয়ে পড়ি আমি তিনটা বছর নিজের জীবনের সাথে অনেক যুদ্ধ করেছি আমি হাটতে পারতাম না কথা বলতে পারতাম না কাউকে চিনতাম পর্যন্ত না শুধু জানতাম আমার একটা বাচ্চা আছে বাকি কোন কিছু আমার মাথায় ছিল না বাবাকে পর্যন্ত চিনতাম না নিজের নামটা ভুলে গিয়েছিলাম তারি ভিতর হল আবার করোনা অনেক অসুস্থ বাঁচবো না বলেই বলে দিয়েছিলেন ডক্টররা পরে আমার রিপোর্ট ঢাকা পাঠানো হয় সেখান থেকেও রিপোর্টগুলো রিটান আসে বলেছিলেন আমার কোন ট্রিটমেন্ট নাই পরে বিশ জন ডাক্তার মেডিকেল বোর্ড বসে আমাকে 2021 এর ডিসেম্বর মাসের ১০ তারিখে বাসায় ফিরিয়ে দেন এবং বলে মাত্র ১০ দিন আর পৃথিবীতে আমি আছি তখন আমার বাবা-মা খুব ভেঙে পড়েছিলেন খুব কান্নাকাটি সবাই বাসায় নিয়ে আসা হলো বাসায় আনার তিনদিন পরে আমার একটা আন্টি আমাকে একটা ডক্টরের কাছে নিয়ে যান এবং তার ট্রিটমেন্টে থাকার পর থেকেই একটু ভালোর দিকে যাচ্ছিলাম এর মধ্যে কিছু অলৌখিক ঘটনা আমার সাথে ঘটে গেছে যাই হোক হায়াত ছিল এবারও বেঁচে গেলাম।
পরম আল্লাহর দরবারে লাখো লাখো শুকরিয়। কিন্তু ভাবলাম যেহেতু সুস্থ হয়েছে তাহলে কিছু একটা করা দরকার। তখন ভাবলাম যে এখন তো আমি বাহিরে কোন কাজ করতে পারবো না তাহলে বাসায় করতে পারি এমনকি আমি ভালো জানি যেটা দিয়ে আমি বাসায় বসেই টাকা ইনকাম করব। তখন ইকবাল বাহার জাহিদ স্যারের কথা আমার খুব মনে পড়ে। এবার আসি ইকবাল বাহার জাহিদ স্যারকে আমি কিভাবে চিনি ইকবাল বাহার জাহিদ স্যার হচ্ছেন আমার অনেক বছর আগে থেকেই ফেসবুক ফ্রেন্ড আমার প্রত্যেক বছর আমার বাবা-মায়ের লেট হতে পারে বার্থডে উইশ করাটা কিন্তু ইকবাল স্যার বারোটা বাজার সাথে সাথেই আমাকে উইশ করতে কোন বছরই ভুলেন নি। তিনি এত বড় মাপের একজন মানুষ হয়েও আমাকে মনে রাখতেন স্যারের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ভালোবাসা।যেটা ভাবলাম সেটাই করলাম স্যারকে বললাম আমি তো এখন সুস্থ হয়েছি তাহলে এখন আমি কি করতে পারি তখন স্যার আমাকে বলল যে আগে ঠিক কর তুমি কি করতে ভালোবাসো সেই কাজটা শুরু করো পরে বললাম আমি কি করতে চাই। তখন স্যার বলল খুলনাতে অনেকেই আছে। যারা তোমাকে এই বিষয়টা নিয়ে সাহায্য করতে পারবে আমি ওদের কাছে তোমার লিংক টা দিয়ে দিচ্ছি তখন শিমু আপুকে আমার লিংকটা দিয়ে দিলেন এবং শিমু আপু আমাকে ফোন দিলেন আমার সাথে কথা হল পরে আমি শিমু আপুর অফিসে যাই আপুর অফিসে না গেলে বুঝতাম না যে আসলেই শিমু আপু এত আন্তরিক এত ভাল একজন মানুষ আমি যাওয়ার পরে আপুর আন্তরিকতা ভালোবাসা দেখে আমি জাস্ট অবাক হচ্ছিলাম এবং আপুকে আমি সবটা খুলে বলি। পরে একদিন আপু আমাকে অফলাইন মিটাআপে ডাকলেন তখন আমি রেজিস্ট্রেশন করিনি অফলাইন মিটআপে যাওয়ার পরে সবার সাথে দেখা হবার পর বিশেষ করে জাকিয়া মুন আপু এবং দ্বিপ ভাইয়া এদের কথা না বললেই নয় আমার এই রেজিস্ট্রেশনের জন্য দ্বিপ ভাইয়া অনেকটাই কষ্ট করেছে ধন্যবাদ দিয়ে আমি আসলে তাদেরকে ছোট করতে চাই না তারপর থেকে আছি ভালোবেসে এই প্লাটফর্ম নিজের বলার মত একটি গল্প ফাউন্ডেশনে। আমার জন্য সবাই দোয়া করবেন আমি যেন স্যারের প্রত্যেকটা কথা নিজের অন্তরে গেথে রাখতে পারি শুধু গেঁথেই না এটা যেন অক্ষরে অক্ষরে আমি পালন করতে পারি এবং সফল একজন উদ্যোক্তা ও ভালো মানুষ হতে পারি জীবনে যেন একটা মানুষকে উঠে দাড়ানোর জন্য সাহায্য করতে পারি এই দোয়াটাই করবেন সবাই
🌹🌹ফাউন্ডেশনে যুক্ত হয়ে আমি অনেক কিছু জানলাম যে শুধু নিজে পরিবর্তন হলেই হবে না অন্যকেও পরিবর্তন করতে হবে 🌹🌹
১. অসৎ কাজ বা ব্যবসার সাথে জড়িত হবো না
২. কাউকে কখনো খারাপ পণ্য বা সেবা দিব না
৩. দেশের পণ্যকে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরব
৪. কাউকে কোনদিন ঠকাবো না জীবনের যেকোনো মূল্যে পজেটিভ থাকবো
৫.পরিবার সমাজ ও দেশের জন্য কাজ করব
৬. জীবনে অন্তত একটা মানুষের ভাগ্য বদলাতে সাহায্য করবো এবং আজীবন বুক ফুলিয়ে বেঁচে থাকব। এটা শুধু একটা শপথ নয় এটা একজন ভালো মানুষ হবার দিকনির্দেশনা।
আসলে একটা মেয়ের জীবনে একটা স্বামী সব হতে পারে না একটা মেয়ে চাইলে স্বাবলম্বী হতে পারে আর আমি সেই স্বাবলম্বী নারী হতে চাই এবং অন্যকেও স্বাবলম্বী করতে চাই জীবনে কত টাকা ইনকাম করতে পারব কি পারব না সেটা ভাবছি না কারণ পরিশ্রম করলে টাকা ইনকাম হবেই কিন্তু স্বপ্ন একটাই আমার কারনে যেন কিছু পরিবার সুন্দর মত বাঁচতে পারে এই স্বপ্নটাই আমি রাত দিন দেখি আমার জন্য সবাই দোয়া করবেন যেন আমার এই স্বপ্নটা পূরণ হয় ।
স্টাটাস অফ দি ডেঃ৯১০
তারিখঃ ০২-১২-২২
আসসালামু আলাইকুম
আমি: প্রিয়া জামান
ব্যাচ নং: ১৮ তম
রেজিস্ট্রেশন নং: ১০১৯২২
জেলা: খুলনা