দশ হাজার টাকা নিয়ে ব্যবসা শুরু আর এখন ১২ লক্ষ টাকা পুজি
🌿বিসমিল্লাহ রাহমানির রাহিম🌿
🌿 আসসালামু আলাইকুম🌿
🕋সর্বপ্রথম আমি শুকরিয়া আদায় করছি মহান সৃষ্টিকর্তার প্রতি, যিনি আমাদেরকে এই সুন্দর পৃথিবীতে সকল প্রকার বিপদ আপদ থেকে রক্ষা করে এখনো পর্যন্ত সুস্থ এবং নিরাপদ রেখেছেন আলহামদুলিল্লাহ !
💞শ্রদ্ধাও ভালোবাসার সাথে স্মরণ করতে চাই, আমার মমতাময়ী মা ও বাবা প্রতি, যাদের দোয়ায় আমি এখনো সুস্থ আছি।আর সেই সাথে তাদের মন খুলে বলতে চাই বাবা ও মা আমি তোমাদের অনেক বেশি ভালোবাসি যত টা বলতে পারছি তার চেয়ে ও অনেক বেশি ভালোবাসি।তাদের জন্য আমি সুন্দর পৃথিবীতে আলোর মুখ দেখেছি এবং মহান সৃষ্টিকর্তার সৌন্দর্যকে উপভোগ করতে পারছি আলহামদুলিল্লাহ।
💞সেই সাথে শ্রদ্ধার নিয়ে স্মরণ করছি আমাদের সকলেরই প্রিয় মেন্টর ও শিক্ষক এবং তরুণ প্রজন্মের আইডল-আইকন, লক্ষ লক্ষ তরুণ উদ্যোক্তা তৈরির কারিগর যিনি স্বপ্ন হারা মানুষদের স্বপ্ন দেখান সবার প্রিয় মুখ মাননীয় Ikbal Bahar Zahid স্যার,, যার সুন্দর স্বপ্ন ও পরিকল্পনার মাধ্যমে আমরা মনমুগ্ধকর একটা প্ল্যাটফর্ম উপহার হিসেবে পেয়েছি।
#আমার_জীবনের_গল্প_
💞ভালোবাসা প্রকাশ করছি এই প্লাটফর্ম এর সকল ভাই ও আপুদের প্রতি, যারা আমাকে স্বপ্ন পূরনে প্রতিনিয়ত সহযোগিতা করে যাচ্ছেন । কৃতজ্ঞতা এই প্লাটফর্ম এর প্রতি, হয়ত এই প্লাটফর্ম না পেলে আমার জীবনের গল্প অজানাই রয়ে যেতো।
💞ভালোবাসার পরিবার
#গ্রামে একটি মধ্যেবিও পরিবারে আমার জন্ম, পাঁচ ভাই ও বোন এবং মা-বাবা মিলে আমাদের পরিবার।
মা-বাবার পাঁচ সন্তানের মধ্যে আমি দ্বিতীয়,, আমার মা-বাবা দুজনই আমাকে অনেক আদর করতেন। দাদা -দাদির আদর পাইনি কারন তারা আমার বুজ হওয়ার আগেই এই পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছেন। আমার নানা কেও দেখিনি,,, নানি আলহামদুলিল্লাহ এখনও আছেন যতটুকু আদর পাওয়ার তার কাছ থেকেই পেয়েছি। আল্লাহ যেন আমার দাদা -দাদিকে এবং আমার নানাকে জান্নাতুল ফেরদৌস দান করেন। আমার দাদার বাড়ি ও নানার বাড়ি কাছাকাছি থাকায় বেড়ানোর আনন্দ কম ছিলো, তবে মামাতো ভাই ও বোনদের সাথে খেলাধুলা করেছি,, অনেক মজাও করেছি ।
💞আমার মা-বাবার আদর্শ
আমার বাবা একজন খুবই ভালো মনের মানুষ ছিলেন,,, অপরের কষ্টে তিনি সর্বদা সহযোগিতা করেছেন। অন্যের ক্ষতি হোক এমন কোন চিন্তাই করতেন না,,অথচ অন্যের দ্বারা অনেক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। আমার বাবা প্রবাস জীবন শেষে একজন ব্যাবসায়ী হন,আমাদের নামাজের টুপি তৈরীর ব্যাবসা ছিলো। আমার বাবা নিজের কষ্ট হলেও আমাদের আবদার পূরণ করতেন এবং আমাদের অনেক ভালোবাসতেন। পৃথিবীর সকল দোয়া ও ভালবাসা তার জন্য, আল্লাহ যেন তাকে ভালো রাখে এই দোয়া করি। আমার মা একজন আদর্শ মা। তার গুনা গুন বলে শেষ করা যায় না। তিনি অনেক যত্নে আমাদের মানুষ করেছেন, মা আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি। আমার মা এখনও আছেন,, আমার "মা"য়ের জন্য সবাই দোয়া করবেন ইনশাআল্লাহ।
✍️আমার পড়াশোনা
#আমার পড়াশোনা হয়েছিল আমার বাবার হাতে,ওনি আমাকে প্রথম নাম লিখে শিখান,তারপর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হই। আমার ছাত্র জীবন খুবই ভালো ছিলো কারণ আমি খুব ভালো ছাত্র ছিলাম । সব সময় ক্লাসে ১ম হয়েছি, পুরস্কার ও পেয়েছি অনেকবার। SSC তে স্টার মার্ক ও HSC তে science এ ১ম বিভাগে উত্তীর্ণ হই। আমার স্বপ্ন ছিলো ডাক্তার হবো সব কিছু মোটামুটি ঠিক হয়েও যায়, ঠিক সেই মূহুর্তে আমাদের ব্যাবসায় বড় ধরনের লস হয়, আমাদের জীবনে নেমে আসে অর্থনৈতিক বিপর্যয়। সব কিছু সামলাতে গিয়ে আমার আর পড়াশোনা হয়ে ওঠে না। তখন এক ডাক্তারের সাথে আমার খুব ভালো সম্পর্ক ছিলো,ওনি আমাকে অনেক আদর করতেন,যেহেতু আমার জন্মগতভাবে পায়ের সমস্যা ছিলো তাই ওনি আমাকে ফার্মাসিস্টে পড়াশোনা করার পরামর্শ দিলেন,আমিও তার কথামতো আল্লাহ পাকের অশেষ রহমতে ফার্মাসিস্ট পাশ করে ফার্মেসী ব্যাবসা দিয়ে সফলতা লাভ করি। তখন পরিবারের ও অনেক সহযোগিতা হয় ব্যাবসা ও খুব ভালো চলছিলো।
💞নতুন জীবনে আগমন💞
#বাবা_মার ইচ্ছেতে ২০০৬ সালে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হই,,নতুন এক জীবন শুরু হয়। স্ত্রী হিসেবে আল্লাহ পাক আমাকে একজন নেককার স্ত্রী দান করেন। ও আমাকে সব সময় পাশে থেকে বিপদে আপদে সাপোর্ট করেছে। বিবাহিত জীবনে আল্লাহ পাক আমাকে একটি পুত্র সন্তান দান করেছেন শুকরিয়া আদায় করছি ।
বিয়ের ৮ বছরের মধ্যে আমার বাবা মারা যান ডায়াবেটিস জনিত ইনফেকশনের কারণে। সেই সময় আমি একদমই ভেঙ্গে পড়ি, আমার স্ত্রী ওই সময় আমাকে অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে ধৈর্যের সাথে কঠিনতম সময় পার করার জন্য,,, আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি আমার স্ত্রী প্রতি।
✍️ আমার উদ্যাোক্তা হয়ে উঠা
আমার বাবা আমার পাশে থেকে আমাকে উদ্যোক্তা হতে সহযোগিতা করেছেন। হঠাৎ বাবার ডায়াবেটিস জনিত ইনফেকশন ধরা পড়ে পায়ে। সাথে সাথে তাকে প্রাইভেট হাসপাতালে ভর্তি করি,,, তখন সবে মাত্র বাড়ির কাজ কম্পিলিট করছি এবং ঔষধের পাইকারী দোকান চালু করেছি। হাতে নগদ টাকা তেমন কিছু ছিলো না। বাবার চিকিৎসা করাতে আমাকে তার সাথেই হাসপাতালে থাকতে হতো,আমি না থাকলে বাবা কান্নাকাটি শুরু করে দিতো বলতো সে মারা যাবে। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে আমার দোকানের কর্ম চারীরা আমার অনেক টাকার ঔষধ চুরি করে আমাকে নিস্ব করে পালিয়ে যায়। এদিকে বাবার ইনফেকশনে পাঁ কেটে ফেলতে হয়,বাবাকে যেদিন বাড়িতে এনেছি সেই দিনই বড় ভাই এর পাঁ ভেঙে ৩ টুকরো হয়ে যায়,কিযে হৃদয় বিদারক দৃশ্য আর মেনে নিতে পারছিলাম না...
যাই হোক অনেক কষ্টে দিনগুলো পার করেছি। বাবা চিকিৎসার ১ বছর পর মারা যান। তখন আমার অর্থ নৈতিক অবস্থা খুবই খারাপ ছিলো।
✍️এরপর বাবা মারা যাওয়ার পর পাইকারী দোকান করা সম্ভব হয় না, কারন অর্থ নৈতিক সংকটের কারনে। এদিকে ধার দেনার কিছু চাপ,,পরে দোকান বিক্রি করে, ধার পরিশোধ করে গাজীপুর আমার এক আত্মীয়ের বাড়িতে মাত্র ৪৫০০ টাকা নিয়ে চলে যাই । সেখানে ওনি বলেন খুচরা ঔষধের ব্যাবসা ওখানে ভালো, কিন্তুু আমার কাছে তখন ব্যাবসার করার মত টাকা নেই । ইচ্ছে ছিলো,, তখন ওনি আমাকে একজনের কথা বললেন, যে তার কাছ থেকে দোকান নিয়ে দিতে পারবেন এডভান্স পরে দিলে চলবে। কি করব তখন জীবন চালাতে টাকা লাগবেই, তাই সাহস করে দোকান নিয়ে নিলাম। তারপর ডেকারেশন করতে অনেক টাকার দরকার কি করি চিন্তা করছি,,ঠিক তখনই ওই দোকানের মালিক ফোন দেয়, যে তার আরেক দোকানের ভাড়াটিয়া ডেকোরেশন বিক্রি করবে। আল্লাহর রহমতে আমি তা মাত্র ২৫০০ টাকায় কিনে নিলাম,,, দুই ধাপ পার হলাম, এবার মেডিসিন কেনা,তাও ব্যবস্তা হলো আমার রক্তের কোন সম্পর্কের লোক নয়,, আমাদের বাড়ীতে একবার বেড়াতে এসেছিলো তার বাড়ী ছিলো গাজীপুর, তার সাথে দেখা হয়ে যায় তাকে সব খুলে বলার পর সে আমাকে জোর করে ১০ হাজার টাকা দেয় শর্ত সে এটা আর নিবে না । সেই টাকা দিয়ে শুরু করে আল্লাহ্ রহমতে অনেক টাকা উপার্জন করি । যখন আমি স্বাবলম্বী আমি কয়েকবার তাকে টাকা দেওয়ার চেস্টা করেও ব্যর্থ হই,,, যাই হোক সেই ১০ হাজার টাকা দিয়ে আল্লাহর নামে শুরু করে,, আজ প্রায় ১২ লক্ষ টাকার মতো পুজি করেছি,,, আরো অনেক কিছুই করেছি,,, সবই সম্ভব হয়েছে মা-বাবার দোয়ায় ও মহান সৃষ্টিকর্তার বরকতে। আমি ওইখানে ৮ বছর ব্যাবসা করেছি, তারপর নিজ জেলায় নারায়ণগঞ্জ চলে আসি।
আল্লাহর অশেষ রহমতে মা-বাবার দোয়ায় আজ আমি ঘুরে দাড়িয়েছি,,, মা-বাবার দোয়া থাকলেই এটা সম্ভব আমি তার বাস্তব প্রমান।
👉আমার স্বপ্ন
আমার স্বপ্ন একটি প্রতিষ্ঠান করার। বাবা সবসময় বলতেন ব্যাবসা করার জন্য কারন স্বাধীনতা। তাই আমার উদ্দেশ্য আমার সৃজনশীলতা কাজে লাগিয়ে সফল উদ্দোক্তা হবো ইনশাআল্লাহ।
✍️যেভাবে ফাউন্ডেশনে আসা
একদিন ইউটিউবে স্যারের একটি লাইভ দেখলাম, যেখানে একটি মেয়ের আত্মহত্যার মতো ঘৃণিত কাজ থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প ছিলো । যা আমার হৃদয় ছুয়ে যায় , আমার অনুপ্রেরণা যোগায় আমি রেজিষ্ট্রেশন করে ১৯ তম ব্যাচের সদস্য হই। কিন্তুু আমি কিভাবে সেশন ক্লাসে যুক্ত হবো সেটা বুজতে পারছিলাম না,,, তখন সৌদি প্রবাসী সাইদুর ভাই রোমান ভাই এর কথা বলে এবং তার নাম্বার দেন। আমি তার মাধ্যমে সেশনে যুক্ত হই। যুক্ত হবার ২ দিন পর ঈদপূর্নমিলনী মিটআপ এর আয়োজন হয়,সেখানে শামিম ভাই, জহিরুল ইসলাম জয় ভাই, জামান ভাই, আরো অনেকের সাথে পরিচয় হয়, সবাই আমাকে সহযোগিতা করেন। আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি সবার প্রতি, তাদের জন্যই আজ ভালোমানুষের প্লাটফর্ম এ আসতে পেরেছি,,অনেক কিছু শিখতে পেরেছি। স্যারকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাদেরকে এমন একটা ফাউন্ডেশন উপহার দেওয়ার জন্য ।
💞 সবশেষে বলতে চাই
সকলের জন্য অনেক অনেক দোয়া ও ভালবাসা এবং শুভকামনা রইলো । সবাই আমার ও আমার পরিবারের জন্য দোয়া করবেন ।
প্রিয় ভাই ও আপুরা এতক্ষণ যারা কষ্ট করে আমার জীবনের গল্প পড়েছেন, সবাইকে আন্তরিক ভালবাসা ও অভিনন্দন । আশা করি সবাই সাপোর্ট করবেন এবং একটা লাইক কমেন্ট করে পাশে থাকবেন ইনশাআল্লাহ
ধন্যবাদ সবাইকে পাশে থাকার জন্য।
স্ট্যাটাস অফ দ্যা ডে -৯১১
তারিখ -০৫/১২/২০২২ ইং
আমি মোঃ কবির হোসেন
ব্যাচ নং - ১৯
রেজিষ্ট্রেশন নং -১০৩১০৯
নিজ জেলা - নারায়নগঞ্জ
যুক্ত আছি ভালোবেসে নিজের বলার মত একটা গল্প ফাউন্ডেশনে