আমার বাবার একটা হাত না থাকা সত্ত্বেও লাঙ্গল দিয়ে সব ধরনের কাজ করতে পারে।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আমার জীবনের গল্প
সবাইকে আসসালামু আলাইকুম
আশাকরি আল্লাহর অশেষ রহমতে সকলেই অনেক বেশি ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ্ আমিও আল্লাহর রহমতে পরিবারের সবাইকে নিয়ে ভালো আছি।
শুরুতেই শুকরিয়া আদায় করছি মহান আল্লাহতালার দরবারে যিনি আমাকে এত সুন্দর পৃথিবীতে সৃষ্টির সেরা আশরাফুল মাখলুকাত হিসেবে বানিয়ে পাঠিয়েছেন। এত সুন্দর জীবন -যাপন করার তৌফিক দান করেছেন।
অনেক বেশি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি আমার মা - বাবার প্রতি এত কষ্ট করে, নিজের সকল সুখ গুলোকে ভূলে গিয়ে তাদের সবটুকু দিয়ে এই পৃথিবীতে সব চেয়ে ভালো রেখে মানুষের মতো মানুষ করা চেষ্টা করে গেছেন। অনেক বেশি স্নেহ, আদর,মায়া, মমতা দিয়ে বুকে আগলে রেখে মানুষ করেছেন।এখন পযন্ত আমার কিসে ভালো হবে সেই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। অনেক বেশি ভালোবাসি আমিও তোমাদের বাবা - মা
অসংখ্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি, শতাব্দীর সেরা আবিষ্কার জীবন্তকিংবদন্তি, আমাদের শিক্ষা গুরু,প্রিয় মেন্টর জনাব ইকবাল বাহার জাহিদ স্যারের প্রতি এত সুন্দর চিন্তা চেতনার মধ্যমে " নিজের বলার মতো একটা গল্প ফাউন্ডেশন - উদ্যোক্তা তৈরির কেন্দ্র " তৈরি করে আমাদের উপহার দেওয়ার জন্য এবং লাক্ষো লাক্ষো মানুষের মনের মধ্য থাকা সুপ্ত স্বপ্নগুলোকে এই প্ল্যাটফর্ম ও স্যারের দেওয়া চমৎকার সেশন, বাণি,মনমুগ্ধকর কথার মাধ্যমে দিকনির্দেশনা দিয়ে ভাগ্য বদলাতে সহযোগিতা করার জন্য। স্যারের জন্য,স্যারের পরিবারের সকলের জন্য অনেক বেশি শুভকামনা ও দোয়া রইলো মহান আল্লাহর দরবারে
প্রতিটি মানুষের জীবনে সেই জন্মের পর দেখে বেড়ে উঠার পিছনে অনেক সুখ, দুঃখের গল্প থাকে, তেমনি আমার জীবনেও আছে। আর সেই ছোট জীবনের কিছুটা গল্প আজ সকলের সামনে তুলে ধরব। সকলের প্রতি বীনিত অনুরোধ রইলো আপনাদের মূল্যবান সময় থেকে কিছুটা সময় ব্যয় করে আমার জীবনের গল্পটা পড়ার এবং গঠনমূলক কমেন্ট করে আমাকে সামনে এগিয়ে যাওয়ার অনুপ্রাণে দেওয়ার জন্য।
আমার পরিচয়
আমার নাম জিনিয়া আফরিন মলি। বাড়ি নরসিংদী জেলার পাচঁদোনা ইউনিয়নের চরপারা গ্রামে।বর্তমান অবস্থান রাজেন্দ্রপুর ক্যান্টনমেন্ট, গাজীপুর।
আমার বাবা মো: আব্দুল করিম মিয়া, মাতা : নাসিরা বেগম।আমরা চার বোন দুই ভাই, ভাই- বোনদের মধ্য আমি ৫ম।সবাই বলে পরিবারের ছোট এবং বড় সন্তান সবচেয়ে বেশি আদর পায় কিন্তু আমার কাছে মনে হয় একজন বাবা-মার ডান হাত কাটলে বা আঘাত লাগলে যেমন ব্যাথা পায় বাম হাতের বেলাও সেম তেমনি। আমিও অনেক আদর আর ভালবাসায় বড় হওয়া একটি ছোট পরিবারের সন্তান।পরিবারের সকলের অনেক আদর ভালবাসা পেয়েছি এবং এখনো পাচ্ছি, আলহামদুলিল্লাহ্
আমার শৈশব
মা - বাবা, ভাই - বোন, দাদ - দাদী,চাচা- চাচি, ফুফু এবং আত্মীয়-স্বজন সকলের অনেক বেশি ভালোবাসায় কেটেছে আমার ছোট বেলা। আমার তিন দাদার বিশাল বড় বাড়ি, অনেক মানুষের মধ্য বেড়ে উঠা।বাড়ির চতুর্দিকে আম, কাঁঠাল ও সুপরি গাছে ভরা ছিল, একদিকে আনারস বাগান, আরেক দিকে নারিকেল গাছ সারিয়ে সারিয়ে দাড়ানো, পেয়ার, জাম, কলা ইত্যাদি বিভিন্ন ফল গাছে ভরাছিল বাড়ির চারপাশ। বাড়ির পাশের জমিতে বিভিন্ন সবজী বাগান। এখনো মনে পরে সেই কচু ক্ষেত, সিমের টাল, বেগুন ক্ষেত, মূলা,গাজর ইত্যাদি আরো কত কি ছিল আমাদের। সবাই এক নামে চিন্ত আমাদের বাড়ি "গনি মেম্বারের বাড়ি "বলে।আমার বাবা ছিলেন একজন স্কুল শিক্ষক। অনেক সুন্দর নিয়ম কারন মেনে চলা পরিবারের বেড়ে উঠা আমার ছোট বেলা।
পারিবারিক অবস্থা
আমাদের পারিবারিক অবস্থা খুবই ভালো ছিল দাদারা অনেক সহায় সম্পত্তির মালিক ছিলেন।আমার বাবা চাচারা অনেক কর্মজীবী ছিলেন। আমার আম্মা আমার দাদার বাড়িতে এসে কোন কিছু অভাব দেখেনি। অনেক আদর আর ভালবাসা পেয়েছিল বাড়ির বড় বউ হিসাবে। আস্তে আস্তে আমার বাকি চার চাচা বিয়ে করেন। আমরা চার বোন দুই ভাই জন্মগ্রহণ করি। আমাদের চাচাতো ভাই-বোন জন্মগ্রহন করে।পরিবারের সদস্য বাড়ে, পরিবার আরো অনেক বড় হয় আর সংসারে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। আমার বাবা চাচাদের তুলনায় কম ইনকাম করে। আমরা ভাই বোন বেশি তাই তারা আর আমাদের একসাথে রাখতে চায় না আলাদা করে দিবে, যেই ভাবনা সেই কাজ আমাদেরকে আলাদা করে দেয়। আমাদের কোন জমি-জামা, চাল-ডাল, হাঁড়িতে রান্না করে খাওয়াবে আমাদের মা এমন কোন কিছু না দিয়ে আলাদা করে দেওয়া হয়।সেই থেকে শুরু হয় আমার বাবা - মার আমাদের নিয়ে কষ্ট করে পথ চলা। পরে অবশ্যই জমি - জামা দিয়েছিল। আমাদের সেই দুঃখের সময় পাশে ছিলেন আমার নানুর বাড়ির সবাই, আমার খালাম্মা - খালু অনেক সহযোগীতা করেছিলেন আমাদের। অনেক বেশি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি তাদের প্রতি।বর্তমানে আমাদের চার বোনের অনেক ভালো পরিবারের বিয়ে হয়েছে, বড় ভাইকে বিয়ে করিয়েছি।ছোট ভাই চাকরি করে। আমার মা- বাবা এবং আমরা সকলেই অনেক ভালো আছি, আলহামদুলিল্লাহ্।
আমার বাবা মা
আমার বাবা ছিলেন একজন স্কুল শিক্ষক,,,,,সবাই করিম মাস্টার এক নামে চিনে আমার বাবাকে। আমার বাবার একটি হাত নেই। আমার বাবার ছাত্র জীবনেই দূর ঘটনাটা ঘটে। একটা এক্সিডেন্টে আমার বাবার হাতরে একটা রগ কেটে যায় সাথে হাতটাও ভেঙ্গে যায়।সেই সময়ের নরসিংদীর একজন বড় ডাক্তারের মাধ্যমে বাবার হাতের চিকিৎসা করানো হয় কিন্তু ডাক্তার ভূলবশত হাতের রগ জয়েন না করেই হাতটা প্লাসটার করে ফেলেছিল। কিছুদিন পর থেকে বাবা হাতে ব্যথা অনুভব করেন । দাদাদের জানান কিন্তু ওনারা বলেন ভাঙ্গা হাত প্লাসটার করেছে একটু ব্যথা করবেই। আমার বাবারও ধৈর্য ক্ষমতা অনেক বেশি থাকায় ভেবেছে সেটা স্বাভাবিক ব্যথা তাই আর তেমন গুরুত্ব দেননি বাবা এই ব্যথাকে।কিছুদিন পর যখন হাতে পচন ধরে তখন বাবাকে নিয়ে যাওয়া হয় ঢাকা হাসপাতালে, সেখানের ডাক্তার জানান আমার বাবার হাতটা কেটে ফেলে দিতে হবে। তা নাহলে এই পচন আসতে আসতে পুরো শরীরে ছড়িয়ে পরবে তাই যতটুকু পচেঁছে তার চেয়ে উপরে ভালো অংশ থেকে আমার বাবার হাতটা কেটে ফেলে দেওয়া হয়
আমার বাবার একটা হাত না থাকা স্বত্বেও শুধু ধান কাটা আর লাঙ্গল দিয়ে হাল চাষ করা বাদ দিয়ে সব ধরনের কাজ করতে পারে। আমার বাবার এক হাত দিয়ে বাশ কেটে সেই বাশের বেতি করে এটা দিয়ে রান্না ঘরের উপরে ছানি,মাছ ধরার চাই, আরো বিভিন্ন ধরনের জিনিস খুবই সুন্দর করে তৈরি করতে পারতেন এবং ধানের খর বা কুটা বলে এটা দিয়ে একা খুব সুন্দর করে একটা ঘরের মতো করে বানিয়ে রাখে এটাও খুবই চমৎকার করে বানাতে পারতেন।আমার বাবা নিজের হাতে একটা ঔষুধ বানিয়ে সেটা মানুষকে বিনামূল্য দেয়,,,এই ঔষুধ বানানো শিখিয়েছিলেন বাবার মামা আমার বাবাকে। অনেক দূর- দুরান্ত থেকে মানুষ এসে ঔষুধ নিয়ে যায়। আমি আমার বাবাকে দেখে এটা বিশ্বাস করি আল্লাহতালা মানুষের শরীরের একটা অঙ্গ যদি কম দিয়ে এই পৃথিবীতে পাঠায় বা কোন কারনে একজন মানুষের একটা অঙ্গ নষ্ট হয়ে যায় তাহলে বাকি অঙ্গের ক্ষমতা হাজার গুন বাড়িয়ে দেয়।
আমার মা আমার কাছে একজন আর্দশ মাতা। আমি সেই ছোট থেকে দেখেছি কিভাবে নিজের মনের সব ইচ্ছা,দুঃখ,কষ্ট, আবেগ,অনুভূতি, চাওয়া- পাওয়া গুলোকে দূরে রেখে আমাদের ভাল রাখা যায়, আমাদের সকল আবদার মেটানো যায় সেই চেষ্টা করেছেন এবং আমার বাবা যেন কখনো এটা মনে না হয় আজ আমার একটা হাত নেই বলে আমি আমার ছেলে মেয়েদের ইচ্ছা পূরন করতে পারছি না সেই চেষ্টা করে গেছে। সারাদিন সংসারের কাজের ফাঁকে ফাঁকে নিজে হাতে সুঁই সুতার কাজ করেছে,এবং গর্ভবতী মায়েদের পুষ্টি খাবার দেওয়া হতো সেটা তৈরি করেছে ঘরে বসে।এভাবে টাকা ইনকাম করে আমাদের সংসারের চাহিদা পূরন করছে এবং আপুরা একটু বড় হবার পরেই পড়াশোনার পাশাপাশি মায়ের সাথে ওরাও সেলাই কাজ করত। সব সময় আমাদের নিজের কাছে রেখে নিজের মতো করে মানুষ করার চেষ্টা চালিয়ে গেছে কেউ যেন আমার বাবার দিকে হাত তুলে আমাদের নিয়ে কিছু বলতে না পারে এমন কাজ থেকে বিরত রেখেছেন।আমার বড় বোন এস এস সি পাশ করার পর একটা এনজিও সংস্থায় চাকরী হয়। আপু পড়াশোনার পাশাপাশি চাকরী করে আমাদের পরিবারের হাল ধরেছে আমার বাবা -মার সাথে এবং আমাদের পড়াশোনা খরচ চালিয়েছে এবং নিজেও পড়াশোনা চালিয়ে গেছে।
আমাদের সংসারের অভাব থাকলেও বাহিরের কেউ এসে আমাদের দেখে বুঝতে পারেনি আমরা একবেলা না খেয়ে থাকলেও কারো কাছে খাবারের জন্য যাইনি, বলিনি আমাদের খাবার দাও, সবাই হাসি মুখে বলেছে এখন ক্ষুদা নেই পরের বেলা খাব।শত কষ্টের মধ্য হাসি খুশি ভালো থাকা যায় এই শিক্ষা গুলো দিয়েছে আমার বাবা-মা। সেই রকম করে ছোট থেকে আমাদের গড়ে তুলেছে। আমার বাবা সব সময় একটা কথা বলত আমাদের তুমি যত উপরে তাকাবে নিজেকে তত অসুখী মনে হবে আর যত নিচের দিকে তাকাবে, রেল লাইনের পাশে,বাস ট্রেনের পাশে বস্তিতে থাকা মানুষ গুলোর দিকে তাকাবে তখন নিজেকে সুখি মনে হবে। আমি সেই ছোট থেকে এখনো চলার ক্ষেত্রে সব সময় এই কথাটা মনে রাখি আর মহান আল্লাহতালার কাছে লাক্ষো কোটি শুকরিয়া আদায় করি,, আলহামদুলিল্লাহ আমি অনেক ভালো আছি।
আমার_লেখাপড়া
আমাদের প্রাইমারি স্কুলের নাম মূলপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। আমাদের বাড়ি থেকে প্রাইমারি স্কুল ছিল অনেক টা দূরে হেঁটে যেতে সময় লগতো প্রায় ৩০মিনিটের মতো। এখন একটা সি এনজিতে গেলে সময় লাগে মাত্র ৫ মিনিট, ভাড়া ১০টাকা লাগে কিন্তু আমাদের সময় হেঁটেই যাওয়া হতো গাড়িতে করে যাওয়ার কোন অভ্যাস বা স্বামর্থ্য ছিলনা আমাদের। আর এখনতো বাড়ির আশেপাশে কত কিন্ডার গার্ডেন স্কুল হয়েছে,এত দূর পায়ে হেঁটে কষ্ট করে প্রাইমারি স্কুলে পড়তে যায় না তেমন আমাদের এলাকা থেকে। ২০০৫ সালে প্রাইমারি স্কুল শেষ করে মাধ্যমিক স্কুলে ভর্তি হই। আমাদের হাই স্কুলের নাম গয়েশপুর পদ্ম লোচন উচ্চ বিদ্যালয়। এই স্কুলে হেঁটে যেতে সময় লাগতো ৩০- ৪০মিনিটের মতো। আমি স্কুলে সব সময় শান্ত স্বভাবের ছিলাম। কখনো খুব বেশি আড্ডা, স্কুলের কারো সাথে ঝগড়া করতাম না, সবার সাথেই মিশতাম। যাদের ভালো লাগতো না নিজের মতো করে দূরে থাকতাম কাউকে এই বিষয়ে কিছু বলতাম না।
২০১০ সালে আমার এস এসসি পরিক্ষা। প্রথম পরিক্ষা দিলাম, ২য় পরিক্ষা দিন আমার বড় ভাই তার কাজের যায়গায় এক্সিডেট হয়। কারেন্টের সট সার্কিট হয়। ভাইয়া একটা দেওয়ালের উপর দাঁড়িয়ে কাজ করতে ছিল নিচ থেকে একজন ভাইয়া হাতে রড দেয় সেই রড গিয়ে লাগে কারেন্টের তারে সেই রড যদি ভাইয়া ছেড়ে দেয় তাহলে নিচের ছেলেটির মাথায় পরবে সে গুরুতর আহত হবে এটা ভেবে ভাইয়া আর তার হাত থেকে রড ছাড়েনি। এমন সময় নিচে থাকা সেই ছেলেটি ভাইয়ার এই অবস্থা দেখে চোখের সামনে একটা ইট পায় সেটা দিয়ে উপরে ছুড়ে মারে এবং আল্লাহর অশেষ রহমতে সেই ইটা গিয়ে কারেন্ট এর তারের সাথে যে রট লেগে ছিল সেই যায়গায় লেগে যায় ভাইয়া সেখান থেকে নিচে পরে যায়। যেই ছেলেটাকে বাঁচাতে চেয়ে ভাইয়া নিজে মৃত্যুর মুখে চলে গিয়েছিল আবার সেই ছেলের একটা ইট ছুড়ে দেওয়ার মাধ্যমে ভাইয়া প্রানে বেঁচে গেল। যদি সেই ছেলেটার ছুরা ইটটা সেখানে সেই সময় না লাগতো তাহলে হয়তবা আরেকটা ইট ছুড়ার সময় পেতো না এর আগেই ভাইয়া প্রানে শেষ হয়ে যেত। প্রানে বেঁচে গিয়েছিল কিন্তু ভাইয়ার দুই হাত, পাঁ এবং শরীরের বিভিন্ন অংশ পুরে যায় নরসিংদী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু ওখানের ডাক্তার ঢাকা বার্ন ইউনিটে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। তার পর ঢাকা বার্ন ইউনিটে যাওয়া হয় সেখানে প্রায় ৩ মাসের মতো ভাইয়ার চিকিৎসা করানোর পর আলহামদুলিল্লাহ্ ভাইয়া সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে। এর মধ্য আমার পরিক্ষা চলে।বাড়িতে কেউ না থাকায় নিজে রান্না করে খেয়ে গিয়ে পরিক্ষা দিতে হয়। আমাদের পরিক্ষার সেন্টার পরে ঘোড়াশাল পাইলট স্কুলে। সবাই ভাইয়ার কাছে হাসপাতালে ছুটাছুটি করে তাই আমাকে একাই যেতে হতো পরিক্ষা দিতে। আমার বড় ৩ বোনের পরে আল্লাহ এক ভাই দিয়েছে সেই ভাইয়ার এই অবস্থা, আমাদের পরিবারের সবাই মানষিক ভাবে অনেক ভেঙ্গে পরে। আমি আর ভাইয়া দু বছরের ছোট বড়। ভাইয়ার পড়াশোনা ভালো লাগে না, তাই সে পড়তে চায়নি বেশি। সবাই কে দিয়ে সব কিছু হয় না তাই আর ভাইয়াকে পড়াশোনা করতে চাপাচাপি করে তেমন লাভ হয়নি। ভাইয়া আর আমি অনেক দুষ্টুমি করতাম একসাথে। প্রথম পরিক্ষার দিন ভাইয়াকে সালাম করে গেলাম, আমার পরিক্ষা যেন ভালো হয় দোয়া করতে বললাম আর পরে দিন সেই ভাইয়া হাসপাতালের বেডে শুয়ে আছে ভেবে খুবই কষ্ট হতো।যাই হোক পরিক্ষা শেষ, রেজাল্ট বেরলো দুই সাবজেক্টে ফেল করি। এটা নিয়ে তেমন কষ্ট পাইনি যেই অবস্থার মধ্য দিয়ে পরিক্ষা দিয়েছি। তাই ফেল করাটা স্বাভাবিক ছিল আমার এবং আমার পরিবারের সবার কাছে। ২০১১সালে আবার পরিক্ষা দিলাম, পাশ করলাম। স্টুডেন্ট হিসেবে খুবই ব্রিলিয়ান্ট ছিলাম না আবার অনেক খারাপও ছিলাম না,,, মোটামুটি ভালো ছিলাম। এস এস সি পাশ করার সাথে সাথেই বিয়ে হয়ে যায় বিয়ের পর ইন্টার পর্যন্ত পড়াশোনা করি,এরপর সন্তানের মা হয়ে যাওয়ায় এখানেই পড়াশোনার ইতি ঘটে।
বিবাহিত_জীবন
২০১১ সালে এস এস সি পাশ করার পরই বিয়ে হয়ে যায়। এস এস সি পরিক্ষা শেষ আমি আর আমার চাচাতো বোন মিলে যাই পলাশ বেড়াতে। আমার বাবার খালাতো ভাইয়ের বাসায় মানে আমাদের কাকার বাসায়। কাকার বাসায় ছিল আমার ফুফায় শাশুড়ি মানে আমার কাকার শাশুড়ি ওনি আমাকে সেখানে দেখেন প্রথম।এর কিছু দিন পর কাকা আমার আম্মাকে ফোন করে বলে আমাকে নিয়ে আম্মা কাকার বাসায় বেড়াতে যেতে। বিয়ের বিষয়ে কিছু বলেনি। আবার আমার হাজবেন্ড মানে আমার কাকার শেলক আমার শাশুড়ি মাকে নিয়ে ওনার বাসায় বেড়াতে যেতে। সেখানেই আমার হাজবেন্ড আমাকে প্রথম দেখে। এর পর আমার শশুর বাড়ি থেকে গার্ডিয়ান হিসেবে আমাদের বাড়িতে ১০-১৫ জনের মতো আসে। সকলের পছন্দ হয় এবং বিয়ের দিন ঠিক করা হয় ২২/০৭/২০১১ইং
যেই দিন বিয়ের ডেট ঠিক করা হয় সেই দিন রাতে আমার দাদি আমাদের ঘরের উঠান থেকে পরে গিয়ে মেরুদণ্ডের হাড় ভেঙ্গে যায় এবং বিছানা থেকে আর উঠে দাঁড়াতে পারেনা এবং ১০দিন পর আমার দাদি মারা যান
এর ১২দিন পরে আমার বিয়ের ডেইট। তাই আমাদের বাড়ি থেকে বিয়ের ডেইট পিছেয়ে দিতে চায়, কিন্তু আমার শশুড় বাড়ি থেকে বলে সেই ডেইটেই বিয়ে করাতে চায় আর তাই সেই অবস্থায় আমার বিয়ে হয় নির্ধারিত তারিখে। আমাদের বাড়িতে তেমন কোন বিয়ের আনন্দ হয় নি, কিন্তু আমার শশুর বাড়িতে, বাড়ির বড় ছেলের বিয়ে তারা অনেক আনন্দ করে বড় যাত্রী গিয়ে বিয়ের কাজ সম্পন্ন হয়।
বিয়ের পরের জীবনটা আর বিয়ের আগের জীবনটা প্রতিটি মানুষের জীবনেই ভিন্নতা আসে। বাবার ঘরের রাজ কন্যা অন্য ঘরে গিয়ে নতুন করে জীবন শুরু করা অনেকটা কঠিন পথ অতিক্রম করতে হয়। বিয়ের আগে মা মেয়েকে খাবার তৈরি করে বলে মা খেয়ে নাও। আর বিয়ের পর বউমা রান্না করে বলতে হয় মা আসেন খাবার খাই। প্রতিটি মানুষের মতো আমার জীবনেও সুখ এবং দুঃখের মধ্য দিয়েই কেটেছে। তবে এখন বুঝতে পারি জীবনে দুঃখ আছে বলেই সুখের এত মূল্য।
বিবাহিত জীবনের শুরুতেই যদি সব সুখ পেয়ে যেতাম তাহলে এখন মনে হতো জীবনটা অনেক তিক্ত।
বিবাহিত জীবনের শুরুতে হয়ত বা আমি অনেক কষ্ট করেছি এবং মানষিক ভাবেও অনেক কষ্টে ছিলাম তার কারন আমি যে পরিবার থেকে এসেছি সেখানের সবার আচরন, ব্যবহার, কথা, বার্তা, চলা,ফেরা কোন কিছুর সাথে আমি যেই পরিবারের বউ হয়ে এসেছি সেটার কোন মিল নেই। আর আমার পরিবারের সবার ছোট মেয়ে আমি আর আমার শশুর বাড়িতে এসে পরেছি বাড়ির বড় বউ হিসাবে। বাড়ির সবার ছোট আদরে আবদারের মেয়েটি যখন তার নিজের সব ইচ্ছা গুলোকে তুচ্ছ করে অন্যের সুখে নিজেকে বিলিয়ে দিতে হয় তখন সেই মানুষটা মানষিক ভাবে নতুন পরিবেশে মানিয়ে নিতেও সময় লাগে আর আমি একটা কথায় খুব বিশ্বাসী,, তুমি যাকে ভালোবাস হয় তুমি তার মতো হয়ে যাও,,, না হয়,,, তুমি তাকে তোমার মতো করে নাও।দেখবে জীবনটা অনেক সুন্দর হয়ে গেছে।
প্রথম_মা_হওয়ার_অনুভূতি
আমার বিয়ের ৩ বছর পর আমার কোল আলো করে আল্লাহর দেওয়া আমার জীবনের সব চেয়ে দামী উপহার আমার প্রথম কন্যা সন্তান আসে। সেই দিনের অনুভূতি কখনো কাউকে বলে বুঝনোর মত নয়। আর একটা কথা আমি কখনো ভুলতে পারব না, আমার হাজবেন্ড যখন বুঝতে পেরেছে আমি তার সন্তানের মা হতে চলেছি সেই দিন থেকে আমার বাবার বাড়িতে যাওয়ার আগ পর্যন্ত আট মাস অনেক যত্ন সহকারে আমার দেখাশোনা করেছে। আমাকে নিজে রান্না করে খাইয়ে দিয়েছে, আমার কাপড়-চোপড় নিজে কেচে দিয়েছে আমি কি খেলে ভালো হবে আর কি খেলে আমার ক্ষতি হবে সকল বিষয়ে অনেক যত্নশীল ছিল। আমর হাজবেন্ড সব সময় আমার প্রতি ভালো কেয়ার করে কিন্তু সেই সময় অনেক বেশি কেয়ার করেছে যা আমার মনে গাঁথা আছে এবং সব সময় থাকবে। বড় মেয়ে হওয়ার প্রায় ৭বছর পরে আবার আমাদের ঘরে আসে আমাদের ২য় কন্য সন্তান,,,, আলহামদুলিল্লাহ্
আমাদের দুই মেয়েকে নিয়ে আমাদের দাম্পত্য জীবন অনেক সুখে শান্তিতে কাটছে। আমাদের বিবাহিত জীবনের ১২ বছর চলেছে কিন্তু মনেই হয়না এতো গুলো বছর দুজনে এক সাথে কাটিয়ে ফেলেছি। এই ভাবে সব সময় ভালোবেসে আমার এবং আমাদের সন্তানদের পাশে থেক,,, ভালবেসে আগলে রেখ। বাকি জীবনটা এমনি করে তোমার পাশে কাটিয়ে দিতে চাই।
আমার_স্বপ্ন_পূরন
প্রতিটি মানুষের মনের মধ্যে ছোট বড় অনেক স্বপ্ন থাকে। অনেকের স্বপ্ন পূরন হয় আবার অনেকের "স্বপ্ন" স্বপ্নই রয়ে যায়। তেমনি আমার মনের মধ্যেও কিছু ছোট ছোট স্বপ্ন ছিল এখনো আছে। সব সময় আমরা একটা কথা বেশি শুনি ""মেয়েদের আসলে কোন বাড়ি নেই"" বিয়ের আগে জন্মের পর থেকে কতগুলো বছর পার করে বাবার বাড়িতে, সেই বাড়ি ছেড়ে চলে আসতে হয় নতুন একটি বাড়িতে ""শশুর বাড়ি"" শশুর বাড়িতে পান থেকে চুন গসতেই কিছুনা কিছু হলেই বলে এটা তোমার বাড়ি না,,এখানে এসব চলবে না। আসলে ক্ষণস্থায়ী যায়গায় আমাদের নিজের বলতে কিছুই নেই তবুও জীবিকার তাগিদে নিত্যপ্রয়োজনীয় চাহিদা মেটাতে নিজের কিছু না কিছু হলোও থাকা প্রয়োজন। সেই প্রয়োজনীয়তা থেকে আমার মনে সব সময় একটা স্বপ্ন বা ইচ্ছা ছিল আমাদের """ছোট একটা বাড়ির """ যেখানে আমি আমার হাজবেন্ড ও আমাদের সন্তানদের নিয়ে নিজের মতো করে থাকতে পারব। কেউ গাছ থেকে একটা পাতা ছিড়লে বলবেনা আমার গাছের পাতা কেন ছিড়লে তুমি, গাছ থেকে শখ করে একটা ফল ছিড়ে খেতে গেলে হাজারটা কথা শুনতে হবে না,ঘরের কোন জিনিস ধরলে কেউ বলবেনা এটা আমার তুমি ধরবেনা,,,,, কোন ধরা বাধা নিয়ম ছাড়া, কারোর অনুমতি ছাড়া, কোন টেনশন ছাড়া, ছোট নীড়ে আমরা শান্তিতে বসবাস করতে পারব এমন একটা "ছোট বাড়ির চাই,
আল্লাহতালার অশেষ রহমতে আর আমার হাজবেন্ড এর সৎ ইচ্ছায় ও আমার বাবা মার সাপোর্টে ২০১৭ সালে আমরা একটি জমি কিনতে পারি রাজেন্দ্রপুর ক্যান্টনমেন্ট, গাজীপুরে এবং ২০২০ সালে সেই জমিতে বাড়ি বানানোর কাজ শুরু হয়,,,, আলহামদুলিল্লাহ্ ফাইনালি ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারির ৫ তারিখে আমরা আমাদের স্বপ্নের সেই "ছোট বাড়িতে " বসবাস করতে শুরু করি। আমার দু মেয়ে মনের আনন্দে বাড়ির বাগান থেকে শাক-সবজি,ফল-মূল ওঠায়, নানা রঙের ফুল নিয়ে খেলা করে।
আমার হাজবেন্ড এর কাছে, আমার বাবা মার কাছে এবং মহান আল্লাহর কাছে আমি লাক্ষো কোটি শুকরিয়া আদায় করছি
আরো অনেক ছোট বড় স্বপ্ন মহান আল্লাহর রহমতে পূরন হয়েছে, আলহামদুলিল্লাহ্।
ফাউন্ডেশনে আমি যুক্ত হওয়ার পর আমার হাজব্যান্ড ও মেয়েকে যুক্ত করার একটু অনুভূতি শেয়ার করছি :
আমি ফাউন্ডেশনে যুক্ত হওয়ার কিছুদিন পরেই আমাদের প্রাণের ফাউন্ডেশনের চতুর্থ প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী। আমি প্রথম সেই টিকেট ক্রয় করার জন্য যেতে চাই আমাদের গাজীপুরেরর সদর জেলা এম্বাসেডর রহিমা আক্তার স্বপ্না আপুর শোরুম দি বেস্ট কালেকশনে।কিন্তু আমার হাজবেন্ড প্রথমে বলে আমি বাসায় নেই একা দুই মেয়েকে নিয়ে রাজেন্দ্রপুর থেকে গাজীপুর যাবে, না যেতে হবেনা কিন্তু পরে আমি তাকে বুঝিয়ে ফাইনালি যেতে পারি আপুর শোরুমে এবং আমার জন্য টিকেট ক্রয় করে নিয়ে আসি। আমি সেখান থেকে আসার পর ফাউন্ডেশনে আমাদের সেই টিকেট সেলিং পোগ্রাম এর ছবি সবাই ফাউন্ডেশনে পোষ্ট করে এবং আমি এসে আমার হাজবেন্ডকে বলি আমার টিকেট কনর্ফাম করেছি আমি মহাসম্মেলন যেতে চাই। আমি ভেবে ছিলাম এটা শুনে হয়তবা আমাকে যেতে দিবেনা কিন্তু তা হলো না,,,,, আমার হাজবেন্ড বলে তোমি একা যাবে আমরা যাব না আমাদের টিকেট নিলেনা এটা শুনে আমি খুশিতে আত্মহারা। পরে আমার হাজবেন্ড এবং মেয়ের জন্য টিকেট কনর্ফাম করি এবং মহাসম্মেলন যাই পরিবারের সবাই মিলে। আমার হাজবেন্ডকে রেজিস্ট্রেশন করিয়ে দেই ফাউন্ডেশনে এবং আমার বড় মেয়ে ক্লাস থ্রিতে পড়ে সেও আমাদের স্যারের অনেক বড় ফ্যান। গতবছর তার জন্মদিনের দুদিন আগে আমাদের গাজীপুরের ফ্যামিলি পিকনিক হয় মাওনা টেঁপির বাড়িতে। সেখানে প্রধান অতিথি উপস্থিত ছিলেন আমাদের প্রিয় মেন্টর জনাব ইকবাল বাহার জাহিদ স্যার । আমার মেয়ের প্রাইভেট থাকায় নিয়ে যেতে পারেনি কিন্তু আমাকে একটা ডাইরি দিয়ে বলেছে স্যারে কাছ থেকে তার জন্য একটা অটোগ্রাফ নিয়ে আসতে হবে,সেটা হবে তার জন্মদিনের সেরা গিফ্ট।আলহামদুলিল্লাহ্ আমি স্যারের কাছ থেকে অটোগ্রাফ এনে দিতে পেরেছি,মেয়ে দেখে মহা খুশি। মেয়ের নভেম্বর মাসে পরীক্ষা শেষ এখন তাকে ফাউন্ডেশনে রেজিস্ট্রেশন করিয়ে দিয়েছি। সে অতন্দ্র গাজীপুর জেলার সেশন চর্চা ক্লাসে যুক্ত হয় নিজের পরিচয় তুলে ধরে সকলের সামনে। স্যারের দেওয়া চমৎকার শপথনামা পাঠ করে, সেশন পাঠ করে এবং আমাকে বলে আমি আম্মু তোমার মত উপস্থাপনা করতে চাই। স্যারের দেখানো পথে চলতে চাই এটা আমার জীবনে অনেক বড় পাওয়া।এবারও পরিবারের সবাই মিলে ৫ম মহা সম্মেলন প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে যাওয়ার জন্য টিকেট কনর্ফাম করেছি,,,ইনশাআল্লাহ যাব।
ফাউন্ডেশনে_যুক্ত_হওয়ার_গল্প
আমরা যারা অনলাইনে কাজ করি তাদের বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপ থেকে জয়েন ইনভাইট আসাটা খুবই স্বাভাবিক বিষয়। তাই আমার কাছেও অনেক গ্রুপ থেকে জয়েন ইনভাইট আসে কিন্তু এত গ্রুপে যুক্ত আছি যে আর সব ইনভাইট গ্রুপে যুক্ত হওয়া হয় না। ২০২২ এর জানুয়ারি মাসে কেউ একজন, আমার নামটা ঠিক মনে নেই "" নিজের বলার মতো একটা গল্প ফাউন্ডেশন - উদ্যোক্তা তৈরির কেন্দ্র "" বর্তমানে আমার প্রানের ফাউন্ডেশনে ইনভাইট করে। আমি ফাউন্ডেশনের নামটা পরেই কেমন যেন একটা প্রেমে পরে যাই। খুবই আগ্রহ নিয়ে জয়েন করি গ্রুপে এবং গ্রুপের সকলের পোষ্ট, স্যারের সেশন, ভিডিও ফলো করতে শুরু করি। আমার খুবই ভালো লাগে আমার মনে হয় এটাই খুজছিলাম আমি এতদিন।এরপর আমি রেজিস্ট্রেশনের জন্য আমাদের ফাউন্ডেশনের গাজীপুরের Lokman Mamun ভাইয়াকে ইনবক্সে নক করি। ভাইয়া আমাকে রেজিস্ট্রেশনের লিঙ্ক দেন আমি নিজেই ১৭তম ব্যাচে রেজিস্ট্রেশনের কাজ সমপন্ন করি। তারপর গ্রুপে পোষ্ট করি আমার বর্তমান অবস্থান গাজীপুরের মেসেঞ্জার গ্রুপে যুক্ত হতে চাই লিখে।আমাদের গাজীপুরের এম্বাসেডর খুবই ভালো একজন মানুষ রহিমা আক্তার স্বপ্না আপুর মাধ্যমে মেসেঞ্জার গ্রুপে যুক্ত হয়েছি।নিয়মিত গ্রুপে এক্টিভ থাকার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি সেই সাথে আমাদের অতন্দ্র গাজীপুরের সেশন চর্চা ক্লাসে যুক্ত আছি।১৭তম ব্যাচের ১১তম দিন,১১তম সেশন থেকে নিয়মিত ক্লাস করছি, ক্লাসের বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করার চেষ্টা করছি,কখনো হোষ্টিং, কখনো উপস্থাপনা, স্যারের দেওয়া চমৎকার শপথনামা পাঠ,সেশন পাঠ,সেশন বিশ্লেষণ করে নিজেকে একজন ভালো মানুষ হিসাবে তৈরি করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি, নিজের পরিচিত, নিজের পন্যর পরিচিতি বাড়ানো চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আমি নিজেকে অনেক ভাগ্যেবান মনে করি এই নিজের বলার মতো গল্প ফাউন্ডেশনে যুক্ত হতে পেরে, স্যারের মতো এত ভালো মনের মানুষকে শিক্ষক হিসাবে পেয়ে। স্যারের দেওয়া চমৎকার বানী গুলোকে নিজের জীবনে কাজে লাগিয়ে একজন ভালো মানুষ হয়ে বেঁচে থাকার চেষ্টা চালিয়ে চাচ্ছি।
ফাউন্ডেশন_থেকে_আমার_পাওয়া
ফাউন্ডেশনে যুক্ত হয়ে শুরুতেই পেয়েছি জনাব,ইকবাল বাহার জাহিদ স্যার এর মত এমন একজন ভালো মনের মানুষকে শিক্ষা গুরু হিসেবে। তার সাথে পেয়েছি অসংখ্য ভালো মানুষের একটি পরিবার। অনেক অনেক ভালো মনের ভাই - বোন। সেই সাথে পেয়েছি বাংলাদেশের ৬৪ জেলা সহ বিশ্বের ৫২টি দেশের মানুষের সাথে পরিচিত হওয়ার জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম , নিজের পণ্যকে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরার সুবর্ণ সুযোগ। আরো পেয়েছি স্যারের চমৎকার বাণী গুলো থেকেঃ-
১/যে নিজেকে ভাল রাখে এবং অন্যকেও ভাল রাখে-
তিনি একজন ভালো মানুষ! শুধু ভালো মানুষ হবার প্রতিযোগিতা হোক।
স্যারের এই চমৎকার উক্তিটি থেকে আমি শিখেছি,,,,, ভালবাসি নিজেকে,,ভালবাসি নিজের কাজকে,, ভালবাসি নিজের পরিবারকে,,,,,,ভালোবাসি নিজের দেশকে,,,,,, ভালোবাসি সমাজে প্রতিটি শ্রেণীর মানুষকে,,,,,, এভাবে সব সময় ভালবেসে যাব,ইনশাআল্লাহ
২/সব সময় জিততেই হবে এই মানসিকতা আপনাকে অসুস্থ করে তুলবে। কোন কোন হার নতুন পথ দেখায়।
স্যারের এই চমৎকার উক্তি থেকে আমি শিখেছি,,,,,
আমি জীবনে চলার পথে যতবার পড়বো ততবার উঠে দাঁড়াবো,,,,,নতুন করে জীবনকে সাজিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাব,,
৩/বৃষ্টি সবার জন্যই পড়ে তবে ভিজে কেউ কেউ।
স্যারের এই চমৎকার উক্তি থেকে আমি শিখেছি,,,,,,
আমি বৃষ্টির পানিতে ভিজতে পারি না,,, আমার হাতের তালু পায়ের তালু প্রচন্ড ব্যথা করে এবং লাল হয়ে যায়। তাই বলে বৃষ্টিতে ভিজবো না,,,, তা তো হতে পারে না,,,,, আমি ভিজবো,,,,, আমার স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার বৃষ্টিতে আমি ভিজবো।
৪/জীবনে সবচেয়ে বড় অর্জন হচ্ছে একজন ভালো মানুষ হওয়া।
স্যারের এই চমৎকার উক্তি থেকে আমি শিখেছি,,,,,,,
আমি সর্বদা চেষ্টা করে যাব অন্যের ভালো করার,,, অন্যের জন্য নিজেকে বিলিয়ে দেওয়ার,,, যদি অন্যের ভালো নাও করতে পারি,,,,, আমার দ্বারা যেন কোন মানুষের বিন্দু পরিমাণ ক্ষতি না হয়।
৫/"স্বপ্ন দেখুন,সাহস করুন
শুরু করুন এবং লেগে থাকুন,,,,,
সাফল্য আসবেই "
স্যারের এই চমৎকার উক্তি থেকে আমি শিখেছি,,,,,
স্বপ্ন দেখেছি,,, সাহস করেছি,,,,, শুরু করেছি এবং লেগে থাকার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আমি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি সফলতা একদিন আসবেই,,,, ইনশাআল্লাহ।
স্যারের আরো অনেক চমৎকার চমৎকার বাণী আছে। সেগুলোর আমার বুকে ধারণ করি এবং জীবনে চলার পথে প্রতিটি ক্ষেত্রে কাজে লাগানোর চেষ্টা করছি।
পরিশেষে আর একটি কথা বলি ফাউন্ডেশনর প্রতিটি ভাই - বোনের জন্য আমার ভালবাসা ও শুভকামনা সব সময়। আমাদের অতন্দ্র গাজীপুরের সকল প্রিয় ভাই - বোনদের প্রতি আমার অন্তরের অন্তরস্থল থেকে জানাই প্রাণঢালা শুভেচ্ছা অভিনন্দন, দোয়া ও অভিরাম ভালোবাসা
"স্ট্যাটাস অব দ্যাডে"- ৯১৩
Date:-১২/১২/২০২২ইং
জিনিয়া আফরিন মলি
ব্যাচ নং
রেজিস্ট্রেশন নং
নিজ জেলাঃ-নরসিংদী
বর্তমান অবস্থানঃ রাজেন্দ্রপুর ক্যান্টনমেন্ট, গাজীপুর।
আমার স্বপ্নঃ নিজের বলার মতো একটা গল্প তৈরি করা।