আমার অল্প কিছু "বলার মতো গল্প"
আমার অল্প কিছু "বলার মতো গল্প"
এই প্রথম আমার, নিজের বলার মতো একটা গল্প ফাউন্ডেশন এবং জারিক লিঃ নিয়ে এতো বিস্তারিত লিখছি। সব সময় ভেবেছি সফল হতে পারলে কোন একদিন সবাইকে জানাবো। ২০০৭ থেকে জব এবং ২০১২ থেকে বিজনেস করছি আমি নিজের উদ্যোগে। যদিও পারিবারিকভাবে ২০০৭ এর আগে থেকেই কিছু বিজনেস সময় দিয়েছি এবং সেখানে ভালো অভিজ্ঞতা হয়েছে কয়েক সেই সময়ে। ২০২৩ এ এসে মনে হলো পারিবারিকভাবে অভিজ্ঞতার ৩ বছর, নিজের ৪ বছর জব এবং ১০ বছর বিজনেস নিয়ে মোট ১৭ বছরের জার্নির কিছু কিছু বিষয় আপনাদের সাথে শেয়ার করা আমার নৈতিক দায়িত্ব। তাই অল্প কিছু গল্প লিখছি।
যদি স্বপ্ন পূরণ হয় তবে আরো বিস্তারিত জানাবো ইনশা-আল্লাহ।
আমার সেই স্কুল জীবন থেকেই পারিবারিক বিজনেসে সময় দিয়ে হাতেখড়ি হয় বিজনেসে। সেখান থেকে অন্যদিন বলবো ইনশা-আল্লাহ। ধাপে ধাপে চেষ্টা করবো পার্ট বাই পার্ট জানাতে ইনশা-আল্লাহ। আজ সামারী আকারে লিখছি।
আমি
মো: যায়েদ হাসান ইমরান লেখাপড়া করেছি বি.এস.সি ইন কম্পিউটার সাইন্স এন্ড
ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে( স্কুল, কলেজ, ইউনিভার্সিটি এগুলো অন্য ধাপে আসবে
ইনশা-আল্লাহ)।
অন্য
দশ জনের চেয়ে আমার কর্মজীবনের শুরুটা বেশ কঠিন ছিল। এই কথাটা অনেকেই বলে।
কিন্তু আমার জীবন সেই কঠিন থেকেও কঠিন ছিলো যখন শুরু করি।
২০০৭
সালে, আমার একজন খুব বেশি পরিচিত না এমন বন্ধুর কাছ থেকে ১০,০০০ হাজার
টাকা ধার করে প্রথম ফুডস এর ব্যবসায় শুরু করি। তাই প্রথম ইনভেস্টমেন্ট
১০০০০ টাকা বলা যেতে পারে। কিন্তু সফলতার দেখা না পাওয়ায় কিছুদিন পর জব এ
জয়েন করি।
৪ বছর জব করার পর ২য় বারের মতো আবার ২০১২ এর ডিসেম্বর এ বিজনেস এ হাত দেই।
2012
থেকে 2019 সালের মধ্যে ৭ বছরে, একাডেমিক এন্ড এডমিশন কেয়ার কোচিং সেন্টার,
স্কুল, মাদ্রাসা, ই-কমার্স, আইটি বিজনেস সহ মোট ৬টি খাতে ব্যবসায় করি।
সবগুলোতেই ফেইল। সফলতা যেন সোনার হরিণ!!
ফেসবুকের মাধ্যমে নিজের বলার মতো গল্প ফাউন্ডেশন এর সাথে পরিচয়। প্রিয় মেন্টর Iqbal Bahar Zahid স্যারের সেশন করে নিজেকে নতুন করে আবিস্কার করি।
শুরু হয় নতুন পথচলা, আইটি সেক্টরে...
প্রথম দিকে ট্রেনিং দিয়ে শুরু করি।
এরপর ওয়েবসাইট, সফটওয়্যার এভাবে আইটি কোম্পানিতে রুপ নেয়। যা আজ লিমিটেড কোম্পানি - জারিক লিঃ (Zariq Ltd)।
এটা আমার ৮মতম ব্যবসা, সফল হয়েছি কি না জানিনা তবে আলহামদুলিল্লাহ অনেক ভালো আছি...
স্ট্রাগলঃ
আমার কষ্টের কথা বলতে গেলে মনে পরে সেই দিন গুলো
১। যখন ৬০ টাকা রিক্সা ভাড়া বাঁচিয়ে পায়ে হেঁটে অফিস এ যেতাম।
২। ২০ টাকার বাস ভাড়ার রাস্তার অর্ধেক ১০ টাকায় যেয়ে বাকি ১০ টাকার বাস ভাড়ার পথ পায়ে হেটে অফিসে যেতাম।
৩। যখন আলদা বাসা ভাড়া নিতে না পেরে, বেঞ্চে রাতে ঘুমিয়েছি, বাসে রাতে ঘুমিয়েছি।
৪। টিম মেম্বারদের সেলারি, অফিস ভাড়া দিতে যেয়ে কত কত দিন যে ৩বেলা খাবার খাইনি তার হিসেব নেই।
৫।
ফ্যামিলির সবাই চাইতো আমি জব করি। ফ্যামিলি থেকে আর্থিক সাপোর্ট না পাওয়ায়
বাড়ির সবার সাথে কথা বলে নিরাশ হয়ে কান্না করে ঢাকা চলে এসেছি।
যদিও তারা পরবর্তিতে আর্থিক সাপোর্ট দিয়েছে বিজনেস বড় করতে।
ফাউন্ডেশন থেকে পাওয়াঃ
নিজের বলার মতো গল্প ফাউন্ডেশন থেকে কি পেয়েছি তা বলে শেষ করা যাবে না।
স্যার
এর দেওয়া শিক্ষাগুলো আমি আমার জীবনে এপ্লাই করার চেষ্টা করি। বুকে হাত
দিয়ে বলতে পারি আমি একজন ভালো মানুষ এবং মানবিক সফল উদ্যোক্তা হতে চেষ্টা
করে যাচ্ছি।
দেশের প্রতি, মানুষের প্রতি দায়িত্বশীলতা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে এই গ্রুপে যুক্ত হয়ে।
১।
শুরুর দিকে স্যার যখন কথা বলার জড়তা কাটাতে আমাদের নিজের সম্পর্কে ৩০
সেকেন্ড বা ১ মিনিট বলতে বলেছিলেন তখন সেই ভিডিওটা করতে ৪/৫ বার ডিলিট করতে
হয়েছিলো।
অথচ আজ আলহামদুলিল্লাহ আপনাদের সামনে কথা বলছি যেখানে কয়েক হাজার মানুষ আছেন।
২। শিখেছি কিভাবে কথা না বলে কাজের মাধ্যমে জবাব দিতে হয়।
৩। শিখেছি ভালো মানুষ সব সময় থাকতে হবে। কোন কথা বা কাজের দ্বারা যেন সেটা নষ্ট না হয়ে যায়।
৪। শুধু একা বড় হলেই হবে না । সবাইকে নিয়ে বড় হতে হবে এটাও শিখেছি।
৫।
কিভাবে ফোকাসড হয়ে কোন একটা বিষয়ে লেগে থাকতে হয় তা শিখছি খুব ভালোভাবে।
যখন দেখেছি স্যার হাসপাতালে আইসিওতে থেকেও আমাদের সেশন দিচ্ছেন তখন
এর থেকে ভালো আর কোন উদাহরণ আমার কাছে নাই।
৬। ভুল হলে সেটা মেনে নিয়ে এবং সেই ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে সামনে এগিয়ে যেতেও শিখেছি।
৭। জীবনকে নিয়ে নতুন করে ভাবতে শিখছি। শিখেছি কিভাবে সামনে এগিয়ে যেতে হয়।
৮। আজ ৬৪ জেলা এবং পঞ্চাশ টির বেশি দেশে নেট ওয়ার্ক ছড়িইয়ে গেছে। যার মাধ্যমে নিজের এবং কোম্পানির ব্র্যান্ডিং হচ্ছে।
সেই সাথে দেশের বাহিরে সফটওয়্যার এক্সপোর্ট করার জন্য মার্কেট এ্যানালাইসিস করছি কোন রকম খরচ ছাড়াই।
আল্লাহর অনেক বড় নিয়ামতঃ
আমার
জীবনে আজকের স্থানে আসার জন্য বাবা-মা, ভাই-বোন, শিক্ষক, বন্ধু, অনেকেরই
অবদান আছে। যাদের কথা বলতে গেলে অনেক সময়ের ব্যাপার। তাই ধারাবাহিক
ধাপগুলোতে তাদের নিয়ে লিখবো ইনশা-আল্লাহ।
তবে স্পেশ্যালি ২ জন মানুষ আমার জীবনে আল্লাহর অনেক বড় নিয়ামত। এক জন হলে আমাকে যিনি আইটিতে কাজ শিখিয়েছেন A M Robiul Islam এবং কাজ শেখার পর আজকের অবস্থানে আসার জন্য যার অবদান সবচেয়ে বেশি তিনি হলেন আমাদের শ্রদ্ধেয় মেন্টর Iqbal Bahar Zahid স্যার। সেই সাথে পেয়েছি নিজের বলার মতো গল্প ফাউন্ডেশনের অনেক আন্তরিক ভাইবোন যাদের ছাড়া আজকের জীবন চিন্তা করাই অসম্ভব।
সফলতাঃ
জারিক লিঃ সম্পর্কে অল্প কিছুঃ
অফিস
থেকে স্যালারি না নিয়ে সেই টাকা কোম্পানির জন্য রি-ইনভেস্ট করতাম। তিল তিল
করে গড়ে তুলে আমার স্বপ্নের প্রতিষ্ঠান জারিক যা আজ আমাদের প্রতিষ্ঠান।
জারিক অর্থ হলো স্বচ্ছ। শতভাগ স্বচ্ছতার সাথে কাজ করে যাচ্ছে জারিক লিঃ।
জারিক
মূলত একটি সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি। সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট এর
পাশাপাশি ই-কমার্স, কর্পোরেট ব্যবসার প্রতিষ্ঠানের জন্য
প্রফেশনাল ক্রিয়েটিভ ওয়েব ডিজাইন এবং ডেভেলপমেন্ট, আইটি সলিউশন, ডিজিটাল মার্কেটিং সহ বিভিন্ন আইটি কনসালটেন্সি দিয়ে থাকি।
দেশের পাশাপাশি অস্ট্রেলিয়া, কুয়েত, সৌদি আরবের কোম্পানির সাথে কাজ করার বাস্তব অভিজ্ঞতা রয়েছে।
এ পর্যন্ত আমরা যত কাজ করেছি এবং এখন করছি তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো :
ঢাকা
মেডিকেল কলেজ , আকিজ গ্রুপ, সেন্ট্রাল হসপিটাল লিমিটেড, এন বি এ, নিজের
বলার মতো গল্প ফাউন্ডেশন , ডিসকাউন্ট সারভিস ২৪ , আলাদিন কিডস, এপল, বিডি
হোলসেল এছাড়াও আরো অনেক অনেক কোম্পানির সাথে কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে
আলহামদুলিল্লাহ।
দোয়াঃঃ
সবাই
ভালো থাকবেন। দোয়া করবেন আমার জন্য , দোয়া করবেন জারিক লিঃ (Zariq Ltd)
এর জন্য। আজ যে ছবিটা দিয়েছি সেটা হলো নিজের বলার মতো গল্প ফাউন্ডেশন থেকে
পাওয়া ২০২২ এ আইটিতে বছরের সেরা উদ্যোক্তা।
"স্ট্যাটাস অব দ্যা ডে"- ৯২০
Date:- ২৪/০১/২০২৩ইং
আপনাদের সহযোগিতায় পাশেই আছিঃ
মোঃ যায়েদ হাসান ইমরান
ম্যানেজিং ডিরেক্টরঃ Zariq Ltd
কোর ভলান্টিয়ার এবং মডারেটর
টিম লিডার ( অল আইসিটি সাপোর্ট)
রেজিষ্ট্রেশনঃ ১৭