আমার জীবনের গল্প
আমার জীবনের গল্প
"বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম"
"আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু"
সর্বপ্রথম আমি শুকরিয়া আদায় করছি মহান রাব্বুল আলামিনের দরবারে যিনি আমাকে এতো সুন্দর করে সৃষ্টি করেছেন,এবং দুনিয়াতে বেঁচে থাকার তৌফিক দান করেছেন।
🌹তারপর শুকরিয়া আদায় করছি আমাদের সকলের প্রিয় মেন্টর ইকবাল বাহার জাহিদ স্যারের প্রতি, যিনি এতো সুন্দর একটা প্লাটফর্ম আমাদের উপহার দিয়েছেন।
👉আমার পরিচয় :
আমি সুদাদ শারমিন, সুদাদ অর্থ সৎ ব্যাক্তি। আর আমি আমার জীবন টাকে খুব সহজ সরল,এবং সৎ ভাবে কাটাতে চাই।আমার চারপাশে যা ই ঘটে যাক না কেন আমি কেন জানি কঠিন করে নিতে বা ভাবতে পারি না।
👉আমার পরিবার:
খুব সাধারণ মধ্যেবিত্ত একটা পরিবারে আমার জন্ম। দুই বোন এক ভাই এর মধ্যে আমি সবার ছোট। আমার বাবা একটা প্রাইভেট কোম্পানি তে জব করতেন।আর মা ছিলেন গৃহিণী। আমি কাদেরিয়া হাই স্কুল থেকে এস.এস. সি,উত্তরা আইডিয়াল কলেজ থেকে এইস.এস. সি এবং টংগী সরকারি কলেজ থেকে স্মাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রী অর্জন করি।
আমার বাবা এখন গ্রামের বাড়িতে থাকেন।আমার মা নেই আজ প্রায় ৪ বছর। আমার মা মারাযান রাত ২.৩০ এর দিকে। মা আমাকে ফোন দিয়েছিলেন রাত ১১ টার দিকে।আমি রান্না ঘরের কাজ করছিলাম তাই বেশি কথা বলিনি। ওটাই ছিল মায়ের সঙ্গে আমার শেষ কথা। যানিনা মা কি বলতে চেয়েছিলেন আমাকে।এখন আমার অনেক কষ্ট হয়, কেন যে সেদিন মায়ের সাথে কথা বলিনি!
🌹🌹"নিজের বলার মত একটা গল্প" ফাউন্ডেশন এ যুক্ত হওয়ার পরে, মা বাবা নিয়ে স্যারের দেওয়া একটি সেশন পেয়েছিলাম, মা / বাবা ফোন করলে ১ মিনিট হলে ও যেন কথা বলি, হয়ত ওই ১ মিনিট ই আপনাকে বাঁচিয়ে দিতে পারে বড় কোন দূর্ঘটনা থেকে। আমাদের জীবনের যা কিছু অর্জন তার সবটাই বাবা মার দোয়ার কারণে। যদি আমি "জনাব ইকবাল বাহার জাহিদ" স্যার এর সেশন টি আগে পেতাম তা হলে সে দিন আমি মায়ের শেষ কথা টা শুনতে পারতাম।যারা এ লেখা টি পড়ছেন, সবার প্রতি আমরা অনুরোধ মা বাবা ফোন করলে এক মিনিট হলেও কথা বলবেন,।🌹🌹
আমার কর্ম জীবন :
আমার খুব ইচ্ছা ছিল শিক্ষক হব।একটা কিন্টারগার্টেন এ জব ও নিয়েছিলাম।ভালোই চলছিল,কিন্তু ওখানের কিছু শিক্ষিকারা দুই দলে বিভক্ত, একদল আর একদল কে পছন্দ করে না,এ টা আমার ভালো লাগেনি।
আমি আমার মতো করেই চলছিলাম, তারপর ও কেন জানি একদল আমকে পছন্দ করতেন না। স্কুলের অফিস রুম থেকে আমার সদ্য কিনা মোবাইল ফোন টা চুরি হয়ে যায়,কে নিয়েছে সে টা জানার পরে ও আমি বিচার পাইনি।আমার বাবা বলেছিলেন যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এর টিচার চোর ও খানে থাকার দরকার নাই।
প্রায় দুই মাসের সন্মানি রেখেই আমি জব টা ছেড়ে দেই। তারপর গাজীপুরায় একটি স্কুলে জব নেই,এক বান্ধবীর বোনের মাতৃত্বকালীন ছুটিতে তার যায়গায় ৩ মাসের জন্য, প্রায় দুই মাস ওখানে কোনো সেলারী পাইনি, পরে অফিস থেকে আমাকে জানায় আমি যার জায়গায় এসেছি, তার থেকে হাফ সেলারী নিতে। এটা কোন কথা?আমাকে জব টা না দিলে তো ওই আপুটা পুরো সেলারীই পেত।তাই নিজেই জব টা ছেড়ে দিলাম,তার ১ বছর পর উত্তরায় আর একটা স্কুলে জব নেই,সবে বাচ্চারা আমায় ভালোবাসতে শুরু করেছিল,এর মধ্যে আমার বড় বোন এর বিয়ে ঠিক হয়,আমি ৭ দিন এর ছুটি নিয়ে গ্রামের বাড়িতে গিয়েয়েছিলাম, আপু কে বিয়ে দিয়ে আমার বাবা মা দুই জন ই খুবই অসুস্থ হয়ে যায়।আমার খালা আমাকে বলেছিল, আজ সব ছেড়ে তুই বাবা মায়ের সেবা কর, আল্লাহ তোকে একদিন সব কিছু দিবেন,সব মিলিয়ে ৩ মাস গ্রামের বাড়িতে ছিলাম। ৩ মাসে অনেক গুলো স্টুডেন্ট পড়ালাম, এতো ভালো লাগতো বাচ্চাদের পড়াতে যে ঢাকায় এসে আরো কিছু স্টুডেন্ট পড়ানো শুরু করি,
।কেমন যেন জেদ চেপে গেলো টিচার আমাকে হতেই হবে,আমার বান্ধবি তামান্না আর আমি মিলে যখনি কোনো স্কুলের সামনে দিয়ে যেতাম একটা করে সি.ভি ড্রপ করে যেতাম।তারপর জিনিয়াস স্কুল এর দত্তপাড়া শাখায় আমার জব হয়,যেহেতু আমি বাচ্চা ভালোবাসি,তাই আমি ও হয়ে উঠেছিলাম সবার প্রিয় শারমিন মিস। টানা চার বছর জব টা করি, আমার শশুর বাড়ি কলেজ গেইট,আর আমার বাবার বাড়ি দত্তপাড়ায়, ( যেহেতু স্কুল জয়েন করার পর আমার মা মারা গিয়েছিলেন) তাই আমার বাবা এবং বাবার বাড়িতে আমাকেই সব করতে হতো। রোজ সকালে আমি কলেজ গেইট থেকে আগে বাবার বাসায় যেতাম,বাবা কে নাস্তা দিয়ে স্কুলে যেতাম। স্কুল ছুটি হলে বাবা কে রান্না করে দিয়ে বিকেলে কোচিং করাতাম তার পর শশুরবাড়ি আসতে আসতে মাগরীববের সময় হয়ে যেত। আমার শশুর বাড়ির মানুষ গুলো অসম্ভব ভালো, তা নাহলে দুটো সংসার , আর জব আমি এক সাথে চালাতে পারতাম না।তারপর করোনা কালীন সময়ে স্কুল বন্ধ হয়ে যায়।আর আমার কোল জুড়ে আসে আমার সন্তান তাওফীক।এর পরে আর জয়েন করা হয় নি।
আমার বৈবাহিক জীবন :
খুব ছোট বেলায় তার সাথে আমার পরিচয়।আমার দীর্ঘ আট বছরের প্রেমিক এখন আমার সন্তানের বাবা।আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ সমালোচক ও বন্ধু। এবং আমাদের একমাত্র সন্তান তাওফীক আল( তুশান) কে নিয়ে আমার পরিবার।আমি যৌথ পরিবারের বড় বউ। ছোট বেলা থেকেই ধৈর্যই আমার একমাত্র সম্বল ও সৌন্দর্য।তাই উনারাও আমকে অসম্ভব ভালোবাসেন। আমার শাশুড়ী আমার বিজনেস এর বড় সহায়ক ও আমার সামনে চলার অনুপ্রেরণা।
👉নিজের বলার মতো একটা গল্প ফাউন্ডেশন যুক্ত:
নিজে কিছু করার নেশা টা সবসময় ই ছিল,তাই এক বড় ভাই এর মুখে এই এই ফাউন্ডেশনের গল্প শুনে, রেজিষ্ট্রেশন করি ১৮ তম ব্যাচ এ। ইউটিউবে স্যারের ভিডিও সেশন গুলো দেখে পড়ে খুবই অনুপ্রানিত হই।
এবং নিজের একটি অনলাই বিজনেস শুরু করি।এখনো বিজনেস নিয়ে বলার মত কোন গল্প তৈরি হয়নি।
🥀প্রতিদিন স্যারের দেওয়া সেশন চর্চা ক্লাস উপস্থিত থেকে অনেক অনেক অনেক কিছু জানতে ও শিখতে পেরেছি। কথা বলার জড়তা কাটানোর চেষ্টা করছি। আগে আমি শুধু কথা বলতেই খুব ভালো বাসতাম,কিন্তু ক্লাস এ জয়েন করার পরে এখন আমি একজন ভালো শ্রোতাও।
🌹অতন্দ্র গাজীপুর জেলা কর্তৃক আয়োজিত সেশনচর্চা ক্লাস এ নিয়মিত উপস্থিত হয়ে অনেকের সাথে পরিচিত হতে পেরেছি,
️নিজের ব্র্যান্ডিং এবং নেটওয়ার্ক বৃদ্ধি হয়েছে। মানুষের সামনে কথা বলার যেই ভয় ভিতি ছিল সেটা দূর হয়েছে। বিজনেস করার যাবতীয় কলা কৌশল শিখতে পেরেছি। একজন ভালো মানুষ হব এটা ভাবতে পেরেছি।
👉যে কথাটি আমকে বেশি অনুপ্রেরণা দিয়েছে,,,,,
"সপ্ন দেখুন, সাহস করুন, শুরু করুন, লেগে থাকুন সফলতা আসবেই",,,",ইকবাল বাহার জাহিদ স্যার।"
👉আমার উদ্যোগতা জীবন :
স্যার এর ক্লাস থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে গত বছর কুরবানির ঈদের সময় আমার বাবুর সালামির কিছু টাকা, ও বাবুর বাবার ঈদ বোনাস এর কিছু টাকা দিয়ে সামান্য কিছু প্রডাক্ট দিয়ে বিজনেস শুরু করি,কুস্টিয়া বিখ্যাত বেডশিট নিয়ে কাজ করছিলাম,ভালো মানের প্রোডাক্ট হওয়ার কারণে খুব সাড়া পেয়েছিলাম।শুরু টা করেছিলাম মাত্র ১২৫০০টাকা দিয়ে তার পারের মাসে ২০০০০ তার পর ৩০০০০ এবং আমার খালাতো ভাই শামসুল আরিফিন এর দেওয়া কিছু প্রডাক্ট নিয়ে চলছে নিজেকে এগিয়ে নেওয়ার প্রচেষ্টা.................
যারা এতক্ষণ গল্পটি ধৈর্য সহকারে পড়েছেন তাদের সকলকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
👉আমি সুদাদ শারমিন
👉ব্যচ নং ১৮
👉রেজিষ্ট্রেশন নং ৯৭০০৭
👉আমার নিজ জেলা লক্ষীপুর
👉বর্তমান অবস্থান গাজীপুর।