স্মৃতির পাতায় থাকা অনুভুতি
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম,
স্মৃতির পাতায় থাকা অনুভুতি
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ, ফাউন্ডেশনের সকল ভাইয়া আপুদের উদ্দেশ্যে আমার কিছু স্মৃতি আপনাদের সাথে শেয়ার করতে চলে আসলাম । আশা করছি সকলেই ধর্য সহকারে পড়বেন,,,
প্রথমে শুকরিয়া জানাই মহান রাব্বুল আলামীনের প্রতি যিনি পঞ্চম ইন্দ্রিয় দিয়ে সৃষ্টির সেরা জীব হিসেবে দুনিয়ায় পাঠিয়েছেন। যার মাধ্যমে আমরা ভাল,মন্দ বিচার বিবেচনা করতে পারি। শেষ নবীর শেষ উম্মত হিসেবে পাঠিয়েছেন।আমাদের নবীর প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে দুরুদ ও সালাম পাঠ করি। আসসালাতু আসসালামু আলাইকুম ইয়া রাসুলুল্লাহ্।
আর সেই সাথে আল্লাহ কাছে হাজার হাজার শুকরিয়া করছি তিনি এতো বড় ভয়াবহ মহামারি করোনার হিংস্র ছোবলের হাত হতে আামাদের স্যার সহ সবাই কে রক্ষা করেছেন।,আলহামদুলিল্লাহ।
তার পরেই শ্রদ্ধা ও ভালবাসা জানাই আমার জনম দুখিনি মাকে,যে আমাকে জন্ম না দিলে দুনিয়ার কোন আলো বাতাস কিছুই আমি দেখতাম না। বাবাও সারাদিন কষ্ট করেছে তাও সেটা আমাদের একটু ভাল থাকার জন্যই। কথায় বলে শরীরের চামড়া কেটে তাদের জুতা বানিয়ে দিলেও তাদের ঋন শোধ হবে না, আসলেই তাই। সেই সাথে আমার মেঝো বোনকেও জানাই শ্রদ্ধা ও ভালবাসা ও আমার দ্বিতীয় মা।
আমার মা আমাকে জন্ম দিয়েছে ঠিকই কিন্ত আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে ওর হাতটাই বেশি। নিজের সন্তানের মত ভালবাসা দিয়ে মানুষ করেছে। কোন কিছুর অভাব বুঝতে দেয়নি।আমার মানুষ হিসেবে বেড়ে ওঠা, লেখাপড়ার পেছনে ওর অবদান অনেক বেশী যা বলে শেষ করা যাবেনা।
করোনার আগে আমি ইউটিউবে বিভিন্ন লাইভ প্রোগ্রাম গুলো দেখতাম। মোবাইলে বিভিন্ন কিছু লিখে সার্চ করতাম আর দেখেতাম। দেখতে দেখতে একদিন "ঘুরে দাড়ানোর গল্প"প্রোগামটা চলে আসে আমার মোবাইলে।এ থেকেই আমার যাত্রা শুরু। প্রতি দিন উদ্দোক্তা হওয়া গল্প শুনতাম। স্যার নিজে ৬৪ জেলার আনাচে কানাচে থেকে দুইজন উদ্দোক্তা নিয়ে প্রোগ্রাম টা করতো।আমি দেখতাম আর চিন্তা করতাম আমি যদি কিছু করতে পারতাম। একদিন হঠাৎ ফেসবুকে নিজের বলার মত একটা গল্পের রেজিষ্ট্রেশন ফ্রমটি দেখলাম। তখন আমার এক আংকেলের সাহায্যে ফ্রামটি ফিলাপ করি।
এখানে বলা দরকার আমার সেই আংকেল আজ আর নেইকরোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।
রেজিষ্ট্রেশনের পরে বিভিন্ন কন্টেন্,পোষ্ট আসতো।কিন্তু কাউকে চিনতামও না কথাও বলতাম না
একদিন আমি পল্টনের একটা শপে যাই। যেটা কিনা আমাদের ফাউন্ডেশনের এক ভাইয়ার শপ ছিল। আমি জানতাম ও না সেখানে গিয়ে কথা বলছিলাম আর ভাইয়াকে দেখে মনে হচ্ছিল কোথায় যেনো দেখেছি।
পরক্ষনে মনে হয়ে গেল ফেসবুকে দেখেছি।আমি উনাকে রিয়াজ ভাইয়া নাম বলাতেই্ উনি অবাক। পরে আমাদের ফাউন্ডেশনের নাম বলাতে উনার চোখ দুটা জ্বল জ্বল করে জ্বলে উঠলো । আমার মন আনন্দে ভরে গেল ভাইয়ার অমায়ীক ব্যবহার,সম্মান দেখে। । সেই থেকে ওনি আমার ছোট ভাই। আমি ওনার বড় বোন। আজো ভাইবোনের সম্পর্ক।
সেইদিন ই ভাইয়া আমাকে মতিঝিল জোনে জয়েন করে দেন।
সেই থেকে শুরু হলো আমার নতুন অধ্যায়,নতুন পথ চলা। আমি রেজিষ্ট্রেশন করি ১৬ তম ব্যাচে কিন্তু সেশন চর্চা আরম্ভ করি ১৯ তম ব্যাচ থেকে। ভাইয়ার সাথে দেখা না হলে হয়তো এখনও জয়েন হতে পারতাম না।
প্রতিদিন ৯.৩০ বাজলেই যেনো মনের ভিতরে একটা একটা এলার্ম বেজে উঠে । সেশনে যাওয়ার আর সেটা ভালবাসার টানে হোউক আর কিছু শিখার টানে হোউক । সেই দিন থেকে আজও লেগে আছি সেশন চর্চার সাথে প্রতি টি নতুন ব্যাচ আসে নতুন নতুন ভাইয়া আপুদের সাথে পরিচয় হয় এ যেনো এক অফুরন্ত ভালবাসার গল্প ।
মাঝে মাঝে দেশ ছেড়ে বিদেশে চলে যাই বিনা টিকেটে শুধু মাত্র ভালবাসার টানে । প্রিয় পরিবারের প্রতিটা ভাই বোন অমায়িক ও আন্তরিক । দেশ কিংবা বিদেশ প্রতিটি জেলা জোন সবখানেই ।
প্রথম যখন অফলাইন মিট আপে গেলাম তখন ভালো লাগা আরো বেড়ে গেলো সামনা সামনি সবাইর আন্তরিকতা দেখে আমি মুগ্ধ হয়ে গেলাম ।
আরো বেশি দুর্বল হয়ে পড়লাম ফাউন্ডেশনের প্রতি। প্রিয় স্যার এর শিক্ষায় বিনয়ের এক ধাপ এগিয়ে মতিঝিল জোন আমার মনে জায়গা করে নিলো। শ্রদ্বেয় লিডারদের বিনয়ী আচরণ আমাকেও বিনয়ী হতে অনুপ্রেরণা যোগায়।
হাতির ঝিল অনুষ্ঠিত হলো ম্যাচ মেকিং উদ্বোধন প্রোগ্রাম । এতো কাছে স্যার আসবে শুনতে দেরী উপস্থিত হতে দেরী করলাম না । কাছ থেকে শিক্ষাগুরু কে দেখার এতো বড়ো সুযোগ হাত ছাড়া করলাম না । আমার হাসব্যান্ড কে নিয়ে মতিঝিল জোন এর আরো ভাইয়া আপুদের সাথে আমিও উপস্থিত হয়ে গেলাম । সেদিনই প্রথম খুব কাছ থেকে দেখলাম লাখো তরুণের আইডল জনাব ইকবাল বাহার জাহিদ স্যার কে। কথায় আছে যে যত বড় সে তত বিনয়ী। আসলেই সত্য । কি সুন্দর উনার ব্যবহার, আচার আচরণ। আমরা সবাই মুগ্ধ,বিমোহিত।।
সে দিন টি ছিলো আমার জীবনের স্মরণীয় একটা দিন । স্মৃতির এলবামে গাঁথা থাকবে সাড়া জীবন ।
তারপরে আবার ও স্যার কে দেখার সৌভাগ্য হয়েছিল হ্যালো ঢাকা প্রোগ্রামে ।
দিনটি ছিল ফাউন্ডেশনের কার্যক্রম টানা ২০০০ তম দিন উদযাপন । সেদিন ও
স্যারের সব কথার মধ্যে একটা শ্রেষ্ঠ কথা ছিল সব কিছু চলে গেলে ও স্যার থাকবেন আমাদের মাঝে । যে কথা আমার মত অনেকের ই হৃদয় নাড়া দিয়েছে । অম্লান সে বাণী ,,,,,,
#ফাউন্ডেশন থেকে আমার পাওয়া,,,,,
স্যার অসাধ্য কে সাধন করে দেখিয়েছেন। এই অনলাইনের মাধ্যমে । কত শত মানুষের এই প্লাটফর্মের মাধ্যমে আয়ের ব্যবস্থা হয়েছে স্যারের নিয়ম নীতি অনুসরন করে। আমিও তাদের একজন , ছেলে মেয়ে বড় হয়ে গেছে যে যার মতো পড়াশোনা কর্ম জীবন নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে ।
আমি আমার মত বাসায় সময় কাটাতাম । কেনো যেনো নিজেকে বড়ো অসহায় লাগতো মনে হতো কোনো কিছু করতে পারলে হয়তো ভালো থাকতে পারতাম সময় টা ভালো কাটতো । সেই ভাবনা থেকেই শুরু করলাম । স্যার এর প্রতিটি সেশন থেকে যে শিক্ষা অর্জন করেছি, তা কাজে লাগিয়ে নিজের দক্ষতা বলতে ছিলো ট্রেইলরিং এর কাজ ।
এই ফাউন্ডেশনের দেখা না পেলে প্রিয় মেন্টর কে না পেলে কখনোই আমার মতো গৃহিণী উদ্যোক্তার পথে হাঁটার স্বপ্ন দেখতে পারতাম না।
এখন আমিও আরো দশ টা মেয়ের মত স্বামী সন্তান ঘর সামলে নিজের একটা পরিচয় তৈরি করার চেষ্টায় আছি । আপনারা পাশে থাকলে ইন শা আল্লাহ্ আমি সফল হবো।
স্যারের কিছু কথা, কিছু সেশন আমাদের জীবনের সাথে মিশে যায়।
আমাদের দূর্গম পথকে সুর্গম করতে স্যারের কিছু কথা টনিকের মত কাজ করে।
আমাদের ফাউন্ডেশনের ভাইয়া, আপুদের ভালবাসাা ও দোয়া কাজে লেগে থাকার অনুপ্রেরণা যোগায়।
চাকুরী করবোনা চাকুরী দিব এই শ্লোগানকে সামনে রেখে স্বপ্নদেখুন,সাহস করুন,শুরু করুন,লেগে থাকুন। স্যারের এই কথা গুলো অসাধারণ ভাবে আমাকে অনুপ্রাণিত করে।
ইনশাআল্লাহ আমরা এই মনোবল নিয়ে নিজেকে দূর্বার গতিতে এগিয়ে নিয়ে যাবো।
সর্বশেষে প্রিয় মেন্টর এর প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করে এখানেই শেষ করছি। সকলের দোয়ায় রাখবেন পাশে থাকবেন পাশে পাবেন ইন শা আল্লাহ্।
"স্ট্যাটাস অব দ্যা ডে"- ৯৫১
Date:- ২৫/০৭/২০২৩ইং
আমার পরিচয়;-
আয়শা আলম
ব্যাচ : ১৬
রেজিঃ৫৪৩৩১
মতিঝিল জোন,খিলগাঁও
আমার একটি পেইজ আছে Jannat's Lounge
কাজ করছি, ট্রেইলরিং সেক্টরে মেয়েদের ডিজাইনার ড্রেস ও বাচ্চাদের সকল ধরনের ডিজাইনার ড্রেস নিয়ে । আমি নিজেই তৈরি করি আপনি কাপড় দিয়ে ডিজাইন দিয়ে কাস্টমাইজ করে নিতে পারবেন।