আমরা পরিবার থেকে কেউ আসার আগেই, নিজের বলার মত একটা গল্প ফাউন্ডেশনের ভাইয়েরা ছুটে এসেছে।
ফাউন্ডেশন থেকে প্রাপ্তি।
এক কথায় বলা যাবেনা।
একটা পরিবার পেয়েছি, যেইখানে নিজের সুখ, দুঃখ, ঘুরে দাঁড়ানো, হতাশা, সব কিছু শেয়ার করতে পারি।
পেয়েছি এমন কিছু লিড়ার যাদের যেই কোন প্রয়োজনে নক দেওয়া যায়, ব্যাস্ততা, অসুস্থতা, সব কিছুর পরও আমার কথা গুলিকে গুরুত্ব দিয়ে শুনছেন, দিক নির্দেশনা দিতেছেন।
ধর্ম বর্ন নির্বিশেষে সবাই সবাইকে সম্মান দিয়ে কথা বলে।।
এমন কিছু ভাই বোন পেয়েছি, যারা নিজের ভাইয়ের মত ভরসা করে, অফলাইন মিটআপে যখন দেখা হয়, কথা হয়, মনে হয় মায়ের পেটের ভাই বোন।
পেয়েছি একজন শিক্ষক , চোখ বন্ধ করে যার কথা মানা যায়।কৃতজ্ঞতা প্রিয় Iqbal Bahar Zahid স্যার।
পেয়েছি সোর্স, যারা আমাকে ঠকায়নি, যাদের কথায় কাজে মিল পেয়েছি।
যখনই গত ২৫-১১-২২ ফেনীতে দূর্ঘটনার শিকার হই, আমরা পরিবার থেকে কেউ আসার আগেই, নিজের বলার মত একটা গল্প ফাউন্ডেশনের ভাইয়েরা ছুটে এসেছে।
কি পরিমান কল পেয়েছি, মেসেজ পেয়েছি, তা লিখে শেষ করা যাবে না।
পেশায় আমি একজন ম্যাকানিক্যাল ইন্জিনিয়ার।
আলহামদুলিল্লাহ, ভালো একটা সেলারি পাই।
এই ভাবে চলছিলো।
আমি ব্যাবসা করবো আমাকে দিয়ে ব্যাবসা হবে স্বপ্নেও কল্পনা করি নাই।
যেহেতু পাশ করেই চাকরি শুরু করি। চাকরি করেই চলতে হবে।
হঠাৎ করনা, এসে একটা চরম পরিস্থিতি সামনে চলে আসলো।
সহ ধর্মীনি Ferdous Ara Yeasmin, সব সময় বলতো, চাকরির পাশা পাশি কিছু একটা শুরু করো, আমি রাগ হয়ে যেতাম, বলতাম, চাকরি করে আবার কি করবো, আমাকে দিয়ে অন্য কোন কাজ সম্ভব হবে না।
চাকরি করে আরোযে কিছু করা যায়, একজন ব্যক্তি এক সাথে কয়েকটি কাজ করতে পারে, এই শিক্ষা এই খানে না এলে, শিখা হতো না।
যাক তারপরও কি করা যায়, কি করতে পারি।
এরই মাছে ছেলে কয়েকটি কোয়েল পাখি কিনে নেয় একজন হকার থেকে।
কি খায়, কি ভাবে লালন-পালন ইউটিউব থেকে দেখতে শুরু করলাম।
আবার বাসাটা ছিলো ৫ রুমের বিশাল বাসা।
জমিদারের সাথে কথা বলে এক রুমে শুরু করলাম কোয়েল পাখির খামার।
শুরুতে ১০০ পাখি, ডিম পাড়ে ৮০+, কি করবো, অফিসে সবাইকে বলতে শুরু করলাম, অর্ডার আসতে থাকলো,।
করোনার লকডাউন শুরু পাখির খাদ্য কি ভাবে সংগ্রহ করবো?
পড়ে গেলাম চিন্তায়, সর্বশেষ কি আর করা পাখি বিক্রি করে দিলাম।
করনার প্রাধান্য কমতে শুরু করলো।
ঐ সময় অর্গানিক পন্য নিজে ব্যবহার করতে ছিলাম, আমার কিছু কলিক ও আমার দেখা দেখি শুরু করলো,।
আস্তে আস্তে অর্গানিক পন্য নিয়ে কাজ শুরু করলাম।
তখনও ফাউনডেশনের খোজ আমার কাছে ছিলো না।
হতাশা চলে আসলো, তেমন অর্ডার পাচ্ছি না,।
নিজের সমস্যা যাচাই করবো এমন কোন দিক নির্দেশনা পাচ্ছি না।
এরই মাঝে দেখি, আমার ঘরণী, রাত ১০.০০ অনলাই কি মিটিং করে। দীর্ঘ সময় চলে কমসেকম ১ঘন্টা।
একদিন দেখি আমার ছেলে হুজাইফা কোরআন তেলাওয়াত করতেছে।
তখন চিন্তা করলাম এইখানে সম্ভবত ভালো কিছুও হয়।
একদিন দুপরে দেখাল নোট করতেছে।
আমি জানতে চাইলাম, কি নোট করো, বললো সেশন নোট করি।
সেশন আবার কি?
তখন আমাকে বললে, সব মাথার উপর দিয়ে যায়নি কিছু কিছু বুঝলাম।
আজকে আমার রেষ্ট বাসায় আছি, মা ছেলে সেশন বিশ্লেষণ করতেছে শুনলাম।
পরের দিন আমাকে বললো কোরআন তিলাওয়াত করতে পারবে?
আমি রাজি হয়ে গেলাম।
ঐ দিন সঞ্চালনায় কে ছিলো মনে নেই, তবে সেশন বিশ্লেষণ করেছিলেন J M Faruk ভাইয়া।
ওয়াও এত চমৎকার বিশ্লেষণ!
আমিতো অবাক, সেশন পড়াটা আমিও শুনেছি, বাট ভাইটি উদাহারন দিয়ে স্বল্পসময়ের এত সুন্দর করে বুঝিয়ে দিলেন আমি হতাবাক না হয় পারি নাই।
সেশন শেষে শুরু হলো প্রশ্ন উত্তর, কারো কোন সমস্যা আছে কিনা?
আমি মনে মনে বলি, সমস্যা কিসের?
পরে বুঝলাম, উদ্যোগ শুরু করে বা করতে গিয়ে কারো কোন সমস্যা আছে কিনা?
এই দিকে আমার রেজিষ্ট্রেশন করে দিয়েছে, ফেরদৌসের, বললো আমার ব্যাচ ১৫.
রেজিষ্ট্রেশন নং কাগজে লিখে দিলো ৬৯৯২৩.
আগামীকাল পরিচয় দেওয়ার সময় বলতে হবে।
১০ টায় সেশন, নামাজ খাওয়া সব শেষ।
সেশন নিয়ে কি বলবো, ফেরদৌস আমাকে নোট করে দিলো।
আমি খুব আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছি কখন ১০ টা বাজবে। বার বার মেসেঞ্জারে চেক করতেছি, লিংক কেন আসে না?
বাসার সবাই রেডি হয়ে বসে আছি।
এক সময় লিংক আসলো যুক্ত হলাম।
যথাক্রমে কোরআন তিলাওয়াত দিয়ে শুরু হলো শপথ পাঠ হলো।
শপথের কথা গুলি খুবই ভালো লাগলো,মা বাবার সেবার কথা বলা হলো।
এই যে শুরু হলো, এখনো চলছে।
যেই খানে থাকি, গাড়িতে, বাড়ীতে, অফিসে, দোকানে, সেশন চর্চা মিস করি না।
বেডাতে গেছি ঐ খানেও সেশন মিস করি না।
আলহামদুলিল্লাহ , অনলাইনের পাশা পাশি প্রিয় স্যারের শিক্ষা নিয়ে অফলাইনে শুরু করেছি।
আলহামদুলিল্লাহ গত মাসে আমার সেল ছিলো (১৭০৪০০) এক লক্ষ সত্তুর হাজার চারশত।
আমি এখন, কোন কাজকেই ছোট মনে করি না।
রাস্তায় দাঁড়িয়ে হকারিও করতে পারি।
কষ্ট পেয়েছি, বুক পেটে কান্না এসেছে, যেই দিন নিজের বলার মত একটা গল্প ফাউন্ডেশন হারিয়ে পেললাম।
এর পর আলহামদুলিল্লাহ , নতুন শক্তি নিয়ে আবার পথ চলা শুরু।
সর্ব অবস্থায় আলহামদুলিল্লাহ।।
আলহামদুলিল্লাহ অনেক কিছু পেয়েছি।
আপনিও ইনশাআল্লাহ পাবেন।
লেগে থাকুন।
এখন কেউ যদি আমাকে প্রশ্ন করে ফাউন্ডেশন থেকে আপনি কি শিখেছেন?
এক কথায় উত্তর দিবো লেগে থাকা শিখে গেছি।।
অনেক কথা বলেফেললাম ভুল ত্রুটিগুলো ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
মোঃ মোতাহের হোসেন
ব্যাচ নং ১৫/৬৯৯২৩
উপজেলা এম্বাসেডর সোনাগাজী।
এগ্রোফোরাম চট্টগ্রাম বিভাগীয় সমন্নয়ক।
ব্লাড ম্যানেজমেন্ট টিম ফেনী জেলা।
স্ট্যাটাস অব দ্যা ডে -৯৫৪
তারিখ ২৯-০৭-২০২৩