বাস্তবতা মানেই গল্পের সূচনা
#বাস্তবতা_মানেই_গল্পের_সূচনা।
☘️বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম ☘️
আসসালামু আলাইকুম
শুরু করছি মহান আল্লাহ তায়ালার নামে।
প্রথমেই শুকরিয়া জ্ঞাপন করছি মহান রাব্বুল আলামিনের কাছে যিনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন তারপর আমার মা বাবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ যাদের উসিলায় এই পৃথিবীর আলো দেখতে পেয়েছি।
আজ চলে আসলাম আপনাদের সাথে শেয়ার করতে আমার বাস্তব জীবনের চরিত্র থেকে কিছু স্মৃতি নিয়ে ছোট্ট আকারে একটা গল্প।
🌷🌷আমার জীবনের গল্প 🌷🌷
আমি কাজী সবুজ। সিলেট জেলার, ওসমানি নগর থানার।
, সাদিপুর গ্রামের এক মধ্যবিত্ত পরিবারের মেজ ছেলে।
আমরা ৫ ভাই ১ বোন আমি সবার ছোট।আমার আব্বা একজন ব্যবসায়ী ছিলেন।
আম্মা-আব্বার খুব ইচ্ছে ছিল ভালো করে লেখাপড়া করে নিজের পায়ে দাড়াবো। আমরা তিন ভাই লেখাপড়া করছিলাম আব্বা আম্মা ও ভাই বোন সবাইকে নিয়ে এক সুখি পরিবার ছিল। কিন্তু সুখের স্থায়িত্ব বেশি দিন থাকে না।এটাই যে প্রকৃতির নিয়ম।
দুঃখকে আলিঙ্গন করতে হয়।সুখের মাঝে হঠাৎ করে শুরু হল দুঃখের দিন গুলো।
তখন সাল ছিল ২০০৪ , আমাদের জীবনে নেমে আসে ঘোর অমানিশার অন্ধকার । শুরু হল ভয়াবহ বন্যা চারিদিকে নেমে এলো দুর্ভিক্ষ, আমাদের গ্রামে ও চারিদিকে পানি থইথই করছে। হঠাৎ করে পানি আসাতে আব্বার দোকানের অনেক ক্ষতি হয়েছে তার উপরে দোকান বন্ধ ছিল
অনেক দিন।
এই ক্ষতি আব্বার মনে অনেক বড় ধাক্কা লাগে। বন্যা যাওয়ার কিছু দিন পর হঠাৎ আব্বার ব্রেইন স্টোক করেন। চোখে অন্ধকার দেখছি আমরা।
😭😭 শুরু হল দুখের দিন 😭😭
আব্বার প্যারালাইস হয়ে এক সাইড অবশ হয়ে গেল
দেখানো হল ব্রেইনের ডাক্তার ঔষধ ও থ্যারাপি করানোর কথা বলে দিলেন।
কিছু দিন পর আবার ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেলাম এভাবে অনেক বার ডাক্তার দেখানো হলো কোন ফল পাওয়া যায়নি।
কিছু দিন পর আব্বার শারিরীক অবস্থার অবনতির দিকে যেতে লাগলো, তখন ছিল রমজানের প্রথম রাত সেই রাতে আমার আব্বা ইন্তেকাল করলেন। মাথার উপর ছাতা টা হারিয়ে ফেলেছি কিছুই বুঝে উঠতে পারছিলাম না।
পরিবারে নেমে এলো অন্ধকার, কিছু দিন যাওয়ার পর পরিবারে দেখা দিল অভাব অনটন। বড় ভাই লেখাপড়া ছেড়ে সংসারের হাল ধরতে ড্রাইভিং শিখা শুরু করলেন। শুধু আসা যাওয়ার ভাড়াটা ও কিছু টাকা দিত এতে কি আর সংসার চলে এমন অনেক দিন গেছে শুধু রুটি খেয়ে দিন কাটাতাম,এক বেলা ভাত খেতাম। ঠিকমতো তিনবেলা খাবার জোটেনি। দুঃখে কষ্টে জর্জরিত ছিল জীবন।
পেছনের সেই দিন গুলো কোনদিনও ভোলার নয়। এখনও মনে পড়লে চোখে জল চলে আসে।
তখন আমি দশম শ্রেণিতে পড়তাম।
আম্মা চেয়েছিলেন লেখাপড়া করবো কিন্তু সংসারে অভাব অনটন দেখে আর লেখাপড়ায় মন বসতো না,
কিছুদিন পর আমিও লেখাপড়া ছেড়ে কাজের সন্ধানে চলে এলাম শ্রীমঙ্গল তখন থেকে শুরু হল আমার জীবন যুদ্ধ। প্রথমে একটি ফার্মেসীতে কিছুদিন ছিলাম।
সেখানে অল্প টাকা দিত, এতে আমার তেমনএকটা পোষাতো না। কেননা সংসারে অভাব, কিভাবে বেশি টাকা পাব সেই চিন্তা ছিল মনে তাই বেছে নিলাম ইলেক্ট্রিক কাজ প্রথম অবস্তাতেই ভালো বেতন দিল তাই এই কাজ শিখা শুরু করলাম।
এখান থেকেই আমার যুদ্ধ শুরু, আমার তিন নাম্বার ভাই সে লেখাপড়ার পাশাপাশি ভালো গোলকিপার ছিল হায়ার হিসাবে খেলতে যেত আমরা তিন ভাই মিলে সংসারটাকে একটু একটু এগিয়ে নিয়ে যেতে শুরু করলাম। আল্লাহর রহমতে কিছুটা শান্তি ফিরে এলো সংসারে, সবাই আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করলাম।২০১২ সালে আমি বিবাহ বন্দনে আবদ্ধ হলাম। আমি ভেবে ছিলাম আমার স্ত্রী বড় ও যৌত পরিবারে মানিয়ে নিতে পারবেকিনা, আলহামদুলিল্লাহ আমার জীবন সঙ্গীনি হিসাবে এমন একজন কে পেয়েছি যে আমার সুখে দুখে আমার অবস্থা বুঝে মানিয়ে নিয়েছে নিজেকে । বর্তমানে আমার ১ ছেলে বয়স ৯ ও ১ মেয়ে ৩ বছর। আমাদের বড় পরিবার মোট ১৪ জনের এক বিশাল সংসার। আমারা একটি শপ দেওয়ার চিন্তা করলাম,তখন ২০১৯ সাল ফাস্টপোডের শপ দিলাম ভালই চলছিল মাশাআল্লাহ। কিন্তু ২০২০ সাল কাল হয়ে ধারালো আমাদের জন্য মহামারি করুনার কারনে টিক মত ব্যবসা হয়নি কয়েক মাস দোকান বন্ধছিল এই দোকান থেকে যাবতিয় খরছ চালাতে হয়েছে। এই ব্যবসাতে ও অনেক বড় লস হল আর ঘুরে দাড়াতে পারিনি।
আমার ও কাজ বন্ধ ছিল লকডাউনের কারণে কেউ বাইরে বের হতে পারছিলনা, ঘরথেকে বের হলেই পুলিশ লাঠি পেটা করতো, তখন আমি একটা উদ্যাগ নেই শ্রীমঙ্গল থেকে বাড়ি যাওয়ার সময় মাত্র ২ কেজি চা নিয়ে যাই ৪ টি চায়ের দেকানে চা দেই তারা ভালো রিভিউ দিল।
তখন আমি উৎসাহিত হলাম পকেটে টাকা ছিলনা আমার মামার দোকান থেকে ২০ কেজি চা নিয়ে গেলাম।করুনার লকডাউনে এই ২ কেজি দিয়েই আমার ব্যবসার শুরু, আসলে ব্যবসা না শিখে শুরু করলে যা হয় তাই হল, ১ পুজি থেকে টাকা ভাঙ্গা ২ লাভের টাকা থেকে খরচ করা ও বুঝে নাবুঝে বাজার কম্পিটিশনে নেমে বাকিতে ব্যবসা করার ফলে অনেক টাকা ধরা খেয়ে গেলাম, আবারও ব্যবসায় লোজার হয়ে ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেল। ২০০৪ সালে আমার আব্বা ইন্তেকালের পর এখন ২০২৩ সাল আলহামদুলিল্লাহ এতো ঝর জাপটার পরে ও আমরা পরিবারের সবাই এখনো যৌথভাবে আছি।
যখন সবকিছুতে ব্যর্থতার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। ঠিক তখনই আগমন
❤️❤️২০২৩ সাল ❤️❤️
আমার জীবনের আনন্দময় এক বছর ২০২৩ কারণ এই বছর খোঁজে পেয়েছি আমি আমার নতুন একটি পরিবার যে পরিবারে আমি যুক্ত হয়েছি ২২ তম ব্যাচে, যুক্ত হয়ে নিজেকে ধন্য মনে করছি। কারণ দেশের বিভিন্ন জায়গায় টাকা দিয়ে যে কোন কোর্স করতে হয় সেখানে ফেরেস্তা হয়ে এসেছেন আমাদের মাথার উপর ছায়া হয়ে,যিনি বিনা মূল্যের ও নিঃস্বার্থে উদ্যাগতাদের ৯০ দিনের শিক্ষা দিয়ে যাচ্ছেন ভালবাসার আরেক নাম আমাদের প্রিয় মেনটর
❤️ @ইকবাল বাহার জাহিদ স্যার@ ❤️যার হাতে তৈরি হয়েছেন লাখ উদ্যাগতা। স্যারের শিক্ষা ও অনুপেরনা নিয়ে আবার ও চা নিয়ে কাজ শুরু করেছি। সবাই দোয়া করবেন আমার জন্য ও আমার ব্যবসার জন্য। কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি স্যারের প্রতি আমাদের উপহার দিয়েছেন নিজের জীবনের গল্প বলার জায়গা হিসাবে।
🌹 নিজের বলার মতো একটা গল্প ফাউন্ডেশন 🌹
উদ্যাগতা তৈরির কারখানা।
📌 স্ট্যাটাস অফ দ্যা ডে ৯৬৯
তারিখ ১২-১১-২০২৩ ইং
ধন্যবান্তে
কাজী সবুজ
আমার বর্তমান ঠিকানা
জেলা মৌলভীবাজার
থানা শ্রীমঙ্গল
ব্যাচ নং ২২
রেজিষ্ট্রেশন নং ১২০০৭৬