মুন্সিগঞ্জে জেলার ইসা হাবিবুল্লাহ (ইউসুফ) ভাইয়ের জীবনের গল্প।
"বিসমিল্লাহির রহমানির রাহিম"
সকল প্রশংসা পরম করুনাময় মহান রাব্বুল আলামিনের যিনি আমাকে আশরাফুল মাখলুকাত করে সৃষ্টি করেছেন ও সুস্থ্যতার সাথে ইবাদত করার সুযোগ দিয়েছেন।
সালাম আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (স:)এর প্রতি। যার উম্মত হবার পরম সৌভাগ্য হয়েছে আমাদের ।
শুরু করার আগে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার সাথে স্বরন করছি আমার মা ও বাবাকে। যাদের নিঃসার্থ মায়া মমতা ও ত্যাগের ঋণ কখনও শোধ করা সম্ভব না।
কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি আমাদের সকলের প্রিয় মেন্টর, অভিভাবক, বর্তমান সময়ের আলোর দিশারী শ্রদ্ধেয় Iqbal Bahar Zahid স্যার এর প্রতি। অত্যন্ত চমৎকার একটি ভালো মানুষের প্ল্যাটফর্ম আমাদেরকে উপহার দিয়েছেন। কেবলমাত্র প্ল্যাটফর্মটি উপহার দিয়েই আমাদেরকে ছেড়ে দেননি। প্রতিনিয়ত গাইড করে যাচ্ছেন, আমরা যেন কোন ভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত না হই। মহান আল্লাহ তায়ালা প্রিয় স্যারের এই মেহনত কবুল করুন এবং উত্তম বদলা দান করুন, আমিন।
নিজের বলার মতো একটা গল্প,,প্লাটফর্ম এর একজন সদস্য হতে পেরে সব সময় নিজেকে গর্বিত মনে করি।
চলে যাচ্ছি গল্পের মূল পর্বে,,,,,
ভালোবাসা রইলো" নিজের বলার মতো একটি গল্প ফাউন্ডেশনের "সকল দায়িত্বশীল ব্যাক্তিবর্গের প্রতি।সকলের সুস্থ্যতা ও দীর্ঘআয়ু কামনা করছি।আশা করি সবাই ধৈর্য্য সহকারে পাশে থাকবেন,,,,,,,
আমি ইসা হাবিবুল্লাহ (ইউসুফ), পাঁচ ভাই বোনের মধ্যে আমি চতুর্থ, বাবার ব্যবসার সুবাদে -এবং ছোটবেলা কেটেছে ব্যবসায়ের কাজে বাবার সাথে থেকেই। বাবার কঠোর অনুশাসন,আদর -স্নেহ, যা আমার জীবনে মাইলফলক হয়েছে,, ছোটবেলা থেকেই খেলাধুলার চাইতে ব্যাবসার প্রতিই ঝোক ছিলো অনেক বেশি,আর তারই ধরাবাহিকতায় Graduation Complete করার পর নিজেকে বিজনেসে জড়িয়ে ফেলি,
১৯৮৯ সালের ৯ জানুয়ারি আমার জন্ম,,, ভোলাতে। পরিবারের ছোট্ট সদস্য হওয়ায় --আদর ভালোবাসা র কমতি ছিল না,, বিশেষ করে বাবার কাছে,,আমাদের মধ্যবিও পরিবারে সকলের চাইতে আমার চাওয়া ও পাওয়ার পরিমান টা বেশি ই থাকতো, ধর্মীয় অনুশাসন, শৃঙ্খলা, লেখাপড়া আদর ভালোবাসা এসব ছিলো সমানতালে,,,,তখন খুব বিরক্তবোধ হতো,,, বাবা ছিলেন খুব রাগী,,অন্য দিকে বিদ্যানুরাগী,,,
শৈশব কৈশোর এর যে দুটো বিষয় আজও আমাকে নাড়া দেয় তা হলো
,আমার খুব ভালো করেই মনে আছে-- যখন আমি Class 1,দিনটি ছিলো রবিবার--বাবার সাথে আমি রবিবার বাজারে গিয়েছিলাম ; মনডা মিঠাই এসবের প্রতি আমার এক অন্য রকম দুর্বলতা--মিঠাইওয়ালা পরিচিত ছিলেন, গেলেই হাতে লুচি মিঠাই দিতেন ; সেদিন আমি ওনার দেয়ার জন্য অপেক্ষা না করেই ছোট্ট একটা টুকরো হাতে নিয়েছি,,আব্বা দেখেছেন সাথে সাথে দোকানীকে অবগত করালেন "আপনের ভাতিজা মিঠাই হাতে নিয়েছে", দোকানী হেঁসে বললো কি যে বলেন,,, বাসায় গিয়ে আব্বা মাকে বললো ""আমি তো কারো কিছুতে অন্যায় ভাবে ধরছি বলে মনে হয়না"" ইউসুফ কোথাথেকে না বলে নেওয়া শিখলো"" আমি বারান্দা থেকে শুনলাম,,,,নীতি নৈতিকতার বিষয়ে বাবা আমাদের কাছে আপোষহীন ছিলেন,,,যা আজও আমার জন্য আলোকবর্তিকা।
এতটাই কঠিন অনুশাসন ও আন্তরিক পরিবেশ পেয়েছিলাম, আমি ধন্য; বাবার কাছে নালিশ আসতো --তুমি নাকি ওমুক কে সালাম দাওনি,,,তুমি নাকি ওমুক চায়ের দোকানে সামনে দাঁড়িয়ে ছিলা,,,কিংবা অতি উতসাহী কেউ কেউ কলেজে পরার সময় TEA STALL এ দেখলে বাসায় খবর দিতো এই বলে"" ভাবি আজকে কি বাসায় চা বানান নাই"" ইউসুফ তো অমুক দোকানে ্্্
আমাদের যে আর্থিক অসচ্ছলতা ছিলো তার মাঝেও আমাদের লেখাপড়া করিয়েছেন,,,যা ভাবলে আজও শিউরে উঠি,,,পাচ ভাইবোনের মধ্যে আমি ই ব্যাবসায় করি,,,বড় বোন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে Graduation করে English Medium এর টিচার,, মেজোবোন বরিশাল মেডিক্যাল থেকে MBBS এখন সে MS of Opthalmology (চোখের ড:)ছোট বোন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে Graduation করে Botani লেকচারার, বড় ভাই English Lecturer, আর আমি সপ্নের পথে এগিয়ে চলছি,
2015 সালে M.com পরীক্ষা শেষ করে তার পরদিনই কসমেটিক বিজনেস শুরু করি,,,আসলে ঠিক তখনই বুঝতে পারলাম জীবন সংগ্রাম কি? নতুন ব্যাবসায়, সল্প পুজি, তারল্য সংকট, এসব তো ছিলো ই এর সঙ্গে যুক্ত হয়ছিলো--প্রিয় মানুষদের ছলচাতুরী, বিশ্বাসঘাতকা,যাদের উতসাহে শুরু করে ছিলান পথচলা তারাই হলো আমার Anti party, বিজনেসের পরিধি আলহামদুলিল্লাহ বাড়তে থাকলো,,সেই সাথে বাড়লো নানান প্রতিকুলতা,আমার দোকান যেখানে ছিলো,,যাদের ভালোবাসা য় এলাকায় যাএাবারি তে দোকান নিলাম,,একসময় তারা পাশে না থাকায় কেমন যেন Refugee হয়ে গেলাম,,অবশেষে যখন দেখলাম যে নাহ্ এভাবে রিফুজি হয়ে বিজনেস চালিয়ে যাওয়া নিরাপদ নয়,,,, তখন ৪ বছরের মাথায় --নিজের অক্লান্ত পরিশ্রমে তিলে তিলে গড়ে তোলা Yellow Touch বন্ধ করে দিলাম,,,
বিজনেস গুটিয়ে নেওয়ায় অনেক ক্ষতি হলো,নিজেকে এ বলে সান্তনা নিজেই দিলাম আমি কিছুই হারাইনি,শিখেছি অনেক কিছু, পেয়েছি শত গ্রাহকের আস্থা,ভালোবাসা,,
Importar,Supplier, Wholesaler সকলের সাথে এক অন্যরকম সু সম্পর্ক,, সর্বদা সচেষ্ট ছিলাম Payment এর Commitment ঠিক রাখতে, আলহামদুলিল্লাহ পেরেছিলামও,,,যা আজও ব্যাবসার দুঃসময়ে চালিকাশক্তি হয় আছে,
তবে যে কথা না বললেই নয়,,,Customers কে সর্বদা Authentic products দিয়েছি এবং Gurrenty, Warrenty,এবং বিক্রিয়োত্তর সেবা যথাযথ সন্মান দিয়ে ই দেয়ার চেষ্টা করেছি,,,আলহামদুলিল্লাহ তাদের অধিকাংশ ই রিপিট কাস্টমার,
এরপর সিফ্ট হই যমুনা ফিউচার পার্কে, ,, আলহামদুলিল্লাহ ভালোই যাচ্ছিলো,,এলো মহামারী কোভিড,বাবার মৃত্যু, ব্যবসায় মন্দা,তারল্য সংকট, নিয়তি যেন পিছু ছারছিলো না,,,ঘুরে দাঁড়াই আবার হোঁচট,, এমনই করে আমার জীবনে এলো ২০২২ সালের ২৪ মার্চ --কালোরাএি,,জীবন হারালো সকল রং সৌন্দর্য, আমাকে করলো লান্চিত- বন্চিত,আমার জন্য রয়ে গেলো হতাশা ও নিরাশার এক বিশাল পৃথিবী।
যেই হাত আমায় ছেড়ে দিয়েছে বারবার
আমি সেই হাত ধরতে চেয়েছি হাজারবার,
যেই হাতে হাত রাখবো বলে দেখেছি হাজার স্বপ্ন
সেই হাতেরি তৈরি পথে আমি দেখেছি এক বাস্তব দুঃস্বপ্ন,
কর্ম জীবনে --পেয়েছি হারিয়েছি,,ঘুরে দাড়িয়েছি-আবার পরে গেছি -আবার অবিরাম চেষ্টা করছি ঘুরে দাঁড়াতে,,,
তবে নিজের "প্যাশন" থেকে পিছুটান দেইনি,,,মহান রবের অনুগ্রহে নিজের সপ্নের পথে হেটে চলেছি,,
জীবনে চলার পথে এটুকু বুঝতে পেরেছি --Psssion থাকতে হবে,, এবং passion না থাকলে Passion Create করতে হবে,
অনেক কে বলতে শুনেছি এটা খায় না পিন্দে নাকি মাথায় দেয়??
প্যাশন হল এমন একটা কাজ,যেটা করতে আমাদের ভালো লাগে,, যে কাজটা একবার শুরু করলে,একঘন্টার জায়গায় ২/৪ কি়ংবা আরও বেশি সময় লাগলেও আমরা বোরড হইনা,
প্যাশন মোটামুটি তিন রকমের হয়
১ম টা মন চাইলে প্যাশন---এটা যাদের হয় তারা হলো হুজুগ বাংগাল,নতুন কিছু দেখলে দুদিন লাফাবে, তিনদিনের দিন ছেড়ে দিবে,এদের প্যাশানের গভীরতা নেই
২য় টা হল --শক্ত মনোভাবের তবে এটাই সত্যি কারের প্যাশন,যা সহজে চেন্জ হয়না,,,অন্ধ প্রেমের মতন,,ফ্যামিলি বাঁধাদিক,না করুক, কিচ্ছু যায় আসেনা,,তারা এটার পেছনে লেগে থাকবেই এবং সফলতার জন্য আপ্রান চেষ্টা করবে।
৩য় টা হলো টেম্পোরারি প্যাশন-এরা পেটের দায়ে সাংবাদিকতা,করবে, শিক্ষকতা করবে ইত্যাদি ইত্যাদি,। আর ছুটির দিন গান করবে,মাছ ধরবে কিংবা কবিতা লিখবে। যতদিন সিংগেল থাকবে 🤕ততদিন টুকটাক চলবে,,,,,একসময় সংসারী হবে,--গিটার টা আলমারিতে তুলে রাখবে, রংপেন্সিল গুলোতে ধুলো জমবে -এটাও লাইফের একটা সিস্টেম, সবাই সবসময় একই সিস্টেম চালিয়ে নিতে পারবেনা
কেহ বাস্তবতা বশে আনবে,কেহ পালিয়ে যাবে আবার কেউবা কমপোরোমাইজ করবে
প্যাশন রিলেটেড ক্যারিয়ার হতে পারলে ভালো,,তাহলে কাজে মজা আসে।
তবে যে কথাটি না বললেই নয়-তাহলো সবাই চাইলেও ফাস্ট হতে পারবেনা,,তবে সবাই চাইলে কিছু না কিছুতে খুব ভালো হতে পারবে:
শুরু করতে হবে এবং মহান রবের উপর ভরসা করে লেগে থাকতে হবে।
# জন্ম সূত্রে বেড়ে উঠা বরিশাল ভোলায়
সুজলা সুফলা শস্য শ্যামলা দীপজেলা ভোলা,-আমার প্রিয় জন্মভুমি,,,,,শৈশব কৈশোরে র হাজারো সৃতিবিজরিত ভোলা,,২০০৮ সালে ওয়েস্টার্ন পাড়ার বাড়ি বিক্রি করে আমরা দাদাবাড়ি বিক্রমপুরে চলে আসি,,
আমি বিশ্বাস করি মানুষ তার সপ্নের সমান বড়ো,,আর কিছুই হোক বা না হোক ঃঅন্তত একজন ভালো মানুষ হয়ে বাঁচতে চাই এটাই প্রাথনা আল্লাহর কাছে
প্রিয় ফাউন্ডেশনের সাথে যুক্ত
হয়েছি আমি ২২তম ব্যাচ থেকে আলহামদুলিল্লাহ, প্রিয় ফাউন্ডেশনে। সবসময় সার্বিক সহযোগিতা করে পাশে আছেন প্রিয় মুন্সীগঞ্জ জেলা টিম এর সকল ভাই-বোনেরা, বিশেষ করে Ferdous vai,Jashim vai, Tarek musa vai, Beauty apu এবং জেলা এম্বাসেডর সামিয়া আপু ও নীরব ভাই র কথা না বললেই নয়
তাদের থেকে প্রতিনিয়ত শিখছি
অনেক শুভকামনা রইল তাদের জন্য আমার পাশে থাকার জন্য।
প্রিয় ফাউন্ডেশন যুক্ত হয়ে কি পেলাম???
এই ফাউন্ডেশনে যুক্ত হয়ে, নিয়মিত সেশন চর্চা ক্লাস করে, আমি অনেক কিছু জানতে পেরেছি।
👉কি ভাবে ভালো মানুষ হওয়া যায়
👉নেগেটিভ চর্চা থেকে বিরত থেকে পজিটিভ হওয়া
👉 লেগে থাকার মনোবল
👉ফান্ড মেনেজ
👉ব্যাবসার আইডিয়া
👉 সমাজের উন্নয়নমূলক কার্যক্রম শিক্ষা
আর বিশাল প্লাটফর্ম প্রতিটি সেশন থেকে আমি অনেক কিছু জানতে পারলাম স্যারের সেশন গুলো একটা মানুষের জীবনের মোর ঘুরিয়ে দিতে পারে, আমি বিশ্বাস করি ইনশাআল্লাহ চাই শুধু লেগে থাকা :যা বিজনেসের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রত্যেকটা সেশনেই নতুন নতুন তথ্য যোগ করা হয়েছে,এবং তা বাস্তব ভিওিক।
এছাড়াও নিয়মিত স্যারের ভিডিও গুলো দেখি, উদ্যোক্তা ভাই বোনদের জীবনের গল্প থেকে অনেক কিছু শিখতে পারছি প্রতিদিন,,, মুন্সিগন্জ জেলার বিভিন্ন কার্যক্রমে অংশ নেয়ার চেষ্টা করছি, একজন সফল উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য চেষ্টা করছি, সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন ইনশাআল্লাহ।
কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি সকলের প্রতি - সময় নিয়ে আমার লিখাটা পড়ার জন্য।
সকলের ব্যবসায়ীক সফলতা এবং সকলের সুস্বাস্থ্য কামনা করছি।
স্ট্যাটাস অব দ্যা ডে-৯৭১
তারিখ -০৮/১২/২০২৩ ইং
ধন্যবাদান্তে,,
নাম : ইসা হাবিবুল্লাহ
ব্যাচ :২২
রেজিষ্ট্রেশন নং :১,১৮,৬৫৩
জেলা : মুন্সীগন্জ
উপজেলা : লৌহজং