মধ্যবিত্ত পরিবারের ইমরান শেখ আকাশ এর জীবনের গল্প।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
"আমার জীবনের গল্প"
আসসালামু আলাইকুম,
আল্লাহর রহমতে সবাই ভালো আছেন আশা করি। সবার প্রতি অনেক অনেক ভালোবাসা জানাচ্ছি।
অন্তরের অন্তস্তল থেকে কৃৃতজ্ঞার সাথে স্মরণ করছি সেই মহান ব্যক্তি কে যার অক্লান্ত পরিশ্রম এবং লেগে থাকার কারনে আমরা ভালো মানুষের বিশাল একটা পরিবার পেয়েছি!! লাখো তরুণ-তরুণীর আইডল প্রাণপ্রিয় শিক্ষক, প্রিয় মেন্টর, ভালো মানুষ গড়ার কারিগর, আমার দেখা একজন মহত মানুষ।
সময়ের সেরা বিপ্লবী মেন্টর ,যার সুযোগ্য নেতৃত্বে হতাশাগ্রস্থ ব্যক্তি আলো পেয়েছে, লাখো স্বপ্নবাজ তরুণ উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন দেখছে, ৪০ লাখ গ্রাজুয়েট বেকার নতুন ভাবে বাঁচার অনুপ্রেরণা পেয়েছে।
আমাদের সকলের প্রিয় জনাব Iqbal Bahar Zahid স্যারের প্রতি। দোয়া করি স্যারের পরিবার-পরিজনের সকল সদস্যদের জন্য। আল্লাহ স্যারকে আরও শতবছর আমাদের মাঝে বাঁচিয়ে রাখুক। আমিন!
আজকে নিজেকে নিয়ে কিছু গল্প বা কথা তুলে ধরবো। ভুলত্রুটি হলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
নাম:মোঃ ইমরান শেখ আকাশ
পিতা: মো: ইকরাম শেখ
মাতা: মোসা: শাহীনা বেগম।
একটি নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারে আমার জন্ম,১৯৮৯ সালের ৫ই মে মাসে বাগেরহাটের জেলার, ফকিরহাট থানার, আট্টাকা গ্রামে নানার বাড়িতে আমি জন্মগ্রহন করি। আমাদের বড় দুই বোন তারপর আমি আমার ভাই এর পর আমার ছোট বোন। বাবা মা ও পাঁচ ভাইবোন নিয়ে আমাদের পরিবার। ছোটবেলা গ্রামেই কেটেছে ৩ টা বছর তারপর খুলনা চলে আসি। ছোট বোন টা খুলনাতেই জন্মায়। শৈশবে খুবই খেলাধুলা করতাম অনেক, লেখাপড়া পারদর্শী ছিলাম মোটামুটি ক্লাসে টপ লেবেল এর ভেতর। লেখাপড়ার জন্য আমায় খুব বেশি বকা খেতে হয়নি কখনোই। ক্লাস ৮ পর্যন্ত কোন টিউশন নিতে হয়নি আমার। হা তবে প্রাইমারিতে বৃত্তি দেয়ার জন্য আমাদের স্কুলের একজন ম্যাডাম তার বাসায় আমাদের কয়েকজন কে ফ্রী টিউশন করাতেন, এবং তার এই টিউশনের জন্যই আমাদের ভেতর কয়েকজন ৫ম শ্রেণিতে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পায়। আমার বড় দুই বোন আদর শাসন দুটোই করতো। বাবা মায়ের পর বড় বোনদের শাসনে বড় হই।
আমি ছোট্ট বেলা থেকেই কাজ পাগলা মানুষ ছিলাম। কথা কম বলতাম কাজ বেশি করতাম। আমার এলাকা মুরব্বিরা এখনো জানে আমি কথা বলতে পারিনা সব সময় মাথা নিচু করে এলাকা থেকে বের হতাম আবার মাথা নিচু করেই প্রবেশ করতাম। লেখাপড়ায় বেশ ভালো ছিলাম কিন্তু পারিবারিক ভাবে ততটাও সাপোর্ট পাইনি আর্থিক অসচ্ছলতার কারনে। পড়াশোনা প্রায় বন্ধ হওয়র উপক্রম হয়েছিল তখন আমার একমাত্র খালামনি আমায় তার বাড়িতে বরিশাল নিয়ে যান। খালুজান আমায় তার নিজের ছেলেদের থেকেও যেন বেশি আদর ভালোবাসা দিয়েছে। সবার প্রিয় হওয়ার চেষ্টা করতাম এবং এর ধারাবাহিকতা এখনো বজায় আছে।। ছোট্ট বেলা থেকেই মানুষকে সাহায্য করতে পছন্দ করতাম। কেউ যদি আমার কাছে সাহায্য চাইতো আমার পকেটে হাত দিয়ে যা পাই সবটাই দিয়ে দিতাম আজো একি কাজ ই করি প্রায়ই, দেখা যায় পরে আমার কাছে রিক্সা ভাড়ার টাকাটাও থাকেনা। আমার কাছে এমন কিছু আছে আর সেটা কেউ আমার কাছে চেয়েছে আমি না করি নাই। ছোট্টবেলা থেকেই খেলাধুলা খুব ভালো লাগতো বিশেষ করে ক্রিকেট + ফুটবল খেলাটা আমার পছন্দের ছিল। যখনই সময় পেতাম তখনই খেলতে বেড়িয়ে পড়তাম এ জন্য বাবা রাগ করতো মাঝেমধ্যে মায়ের মার খেতাম। বাবা খুব বেশি মারতেন না রাগ করতেন। তবে মারলে একটু বেশিই মারতেন। একবার বাবার কাজে সাহায্য করতে গিয়ে পা ভেঙ্গে গিয়েছিল। ৪র্থ ক্লাসে একটা পরিক্ষা দিতে পারিনি পা ভাঙ্গার কারনে, আমাকে কাধে করে নিয়ে যেতো আমার প্রতিবেশী ক্লাসমেট মাসুম কিন্তুু ঐদিন নিয়ে যায়নি। খুব কেদেছিলাম আমি ৫ম শ্রেনিতে রোল ৪ - ২৮ হয়ে যায় আমার।
আমি যখন খুলনা আসি তখন আমার পাশের বাড়ির একজন আন্টি আমাদের তিনজন ছেলেকে ১০ টাকা করে ফি দিয়ে প্রাইমারিতে ভর্তি করে দেন। আমাকে পরিবার থেকে বিদ্যালয়ে ভর্তি করিয়ে দেওয়া হয়নি। সেই আন্টির জন্যই আমার পড়াশোনা শুরু হয়। ৮ম শ্রেনি ফাইনাল পরিক্ষার সময় বাবা বাড়ি থেকে রাগ করে চলে যান ৩ মাস বাড়িতে ফেরেনি। কর্মজীবন শুরু হয় আমার। সারা রাত মাটি কাটার কাজ করেছি ভোর সারে চারটা ৫ টা পর্যন্ত, সকালে ১০ টায় পরিক্ষা দিতে গেছি।
অনেক চরাই উতরাই পেরিয়ে পড়াশোনা পাঠ চুকিয়ে ২০০৯ সালে একটা প্রাইভেট ব্যাংক ছোট একটা পদে চাকরি পাই ২০১৮ সাল এর মে মাস পর্যন্ত বহাল ছিল চাকরি। এই চাকরি চলাকালিন আমার মনে হতো এটা দিয়েই হয়ত জীবন পার করে দিতে পারবো। কিন্তুু বেতন যা পেতাম তাতে ততটা সন্তুষ্টি ছিলনা। আর সবথেকে বড় কথা স্বাধীনতা ছিলনা চাইলেই ছুটি পেতামনা। মনে মনে ভাবতে লাগলাম নিজের একটা পরিচয় তৈরি করার। চাকরি থাকাকালীন অফিস এর বিভিন্ন কাজ কন্ট্রাক্ট নিয়ে করতে শুরু করলাম। ইলেকট্রিকাল কাজ বা ডেকোরেশন যে কাজ হোক ৩ টা কোম্পানি থেকে কোটেশন নিয়ে পাঠানো হতো হেড অফিস এ যে টা পাশ হয়ে আসতো সার কে বলতাম কাজ টা আমি করে দিবো, অফ ডে তে অফিস খুলে সাথে মিস্ত্রি নিয়ে কাজগুলো সুন্দর ভাবে সম্পন্ন করতাম সার রা আমার কাজে খুশি ছিল সবসময়, আমি আমার নিজের কাজ মনে করেই নিখুতাবে করার চেষ্টা করতাম। সবাই অফিস করতো ৯টা ৫টা আমি করতাম ৯টা থেকে কখনো কখনো রাত ১২ টা ১টা পর্যন্ত। আমার বারতি ইনকামও হতো অফিস এর কাজগুলো ও সুন্দর ভাবে শেষ হতো। কিন্তুু দুর্ভাগ্য সততার মুল্যটা বেশিদিন পাইনি। সন্দেহজনক ভাবে আমায় সাসপেন্ড করা হয় এবং পরবর্তী তে অলিখিত ভাবেই চাকরি থেকে অব্যহতি। নতুন করে চাকরির চেষ্টা করি কিন্তুু ঘুষ ছাড়া চাকরি সম্ভব হয়না।
চাকরি পাওয়ার পর থেকেই বাসা থেকে বিয়ের জন্য চাপ আসতে থাকে। এমনও হয়েছে মেয়ে পক্ষ আমায় দেখতে আসছে আমি নিজেই জানিনা। মা কে একদিন ডেকে বললাম মা আমি এখন বিয়ে করতে চাইনা আামার নিজের একটা পরিচয় হোক আগে তারপর বিয়ে তার আগেনা, আর যদি কাউকে ভালো লাগে তোমাদের জানাবো। তার আগে যদি তোমরা এমন কিছু করো তবে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাব আর ফিরবোনা। তারপর আর চাপ দেয়নি। মায়ের পছন্দে আমার কাজিন এর সাথে বিয়ে হয় ২০১২ এর জুন মাসে। পারিবারিক ভাবে বনিবনা না হওয়ায় ৬ বছরের সংসার ভেঙে যায় চাকরিও চলে যায় একি সাথে ২০১৮ সালে! মানসিকভাবে অনেকটাই ভেঙে পড়েছিলাম।
যেদিন চাকরি চলে যায় বিনা অপরাধে সেদিন থেকে প্রতিজ্ঞা করি বাংলাদেশে চাকরি করবোনা পারলে চাকরি দিব। খুলনা থেকে ঢাকায় পাড়ি জমাই ২০১৮ এর শেষের দিকে অক্টোবর এ। কাজের সন্ধানে ছুটি, তিন মাস পেরিয়ে গেলেও কিছুই করে উঠতে পারিনা। বাড়ি থেকে টাকা এনে চলতে থাকি। ২০১৯ এর জানুয়ারীতে একটা ইন্টেরিয়র ফার্মে কর্পোরেট বিজনেস ম্যানেজার পদ নিয়ে ৪০% প্রফিট শেয়ারিং পার্টনার হিসেবে যোগদান করি। কাজ শিখতে থাকি মেটামুটি ভালোই চলছিলো। একটা সরকারি প্রজেক্ট নিয়ে কাজ করার চেষ্টা করতে থাকি, ঘুরে দাড়ানোর প্রবল এক আকাঙ্খা জেগে ওঠে। সব ঠিকঠাক চলছিল করনা মহামারির লকডাউন সব আশা ভেঙে চুরমার করে দিল।
বাড়িতে চলে গেলাম বেকার ঘুরে বেড়ানো মাঝে ওয়াশার কিছু কাজ করি কন্ট্রাক্ট নিয়ে। ঢাকা থেকে ডাক পড়ে ডি পি এইচ ই তে প্রায় ৩ মাস ইন্টেরিয়র এর কাজ করি। এরপর রংপুর থাকা হয় ৩ মাস ইন্টেরিয়র এর কাজ এ। ঢাকায় ফিরি আবার সেই ইন্টেরিয়র ফার্ম এ যুক্ত হয়ে কাজ করতে থাকি। তবে নিজের কিছুই তখনও করে উঠতে পারিনি। গতবছরের মাঝামাঝি জনাব ইকবাল বাহার সার এর কিছু ভিডিও আমার চোখে পড়ে এবং ভালোলাগা শুরু হয়, সার এর কথার সাথে আমার মনের চাওয়া মিলে যায়, বিশেষ করে চাকরি করবোনা চাকরি দিবো, নিজের একটা পরিচয় একটা ব্রান্ড তৈরি করবো এমন অনেক কিছুই। সঙ্গে সঙ্গে নিজের কোম্পানির জন্য লাইসেন্স এর আবেদন করে ফেলি এবং আগস্ট এই পেয়ে যাই লাইসেন্স, "এন এ কর্পোরেশন" নামে। কনস্ট্রাকশন, মেনুফ্যাকচারার ও সাপ্লায়ার হিসেবে। এই নামটা আর আমার এই পেজ টা সেই ২০১৯ সালেই তৈরি করেছিলাম আমি। খুব শীঘ্রই লিমিটেড কোম্পানিতে নিবন্ধন করতে যাচ্ছি ইনশাআল্লাহ। অনলাইন গেম খেলার সময় পরিচিত হওয়া এক বড় ভাই, Kamruzzaman Hira তার কথা না বললেই নয়! আমার মনে হয় আমার পরিবারের পরে আমায় নিজের ছোট ভাই এর মত স্নেহ ভালোবাসা পেয়েছি আমি তার কাছেই। আজ তাকে আমার কোম্পানির চেয়ারম্যান, আমাকে ম্যানেজিং ডাইরেক্টর করে লিমিটেড কোম্পানি নিবন্ধন করতে যাচ্ছি ইনশাআল্লাহ। তার কাছ থেকে যে ভালোবাসা পেয়েছি নিজের বড় ভাই থাকলেও হয়তো এমন নিশস্বার্থ ভাবে কেউ কাউকে এতটা ভালোবাসা দেয়না। ওনার মত মানুষ খুব কমই আছে এই দুনিয়াতে। আর ওনার পরেই আরেকজন ভালো মহত মানুষের দেখা পেয়েছি এই গ্রুপ এ এসে জনাব ইকবাল বাহার জাহিদ সার কে।
আমার বাবা একজন সত্যবাদী মানুষ। সে মিথ্যা কথা বলে না ও মিথ্যা কে পছন্দ করে না। তবে খুব রাগি বদমেজাজি যাকে বলে। তাকে যদি লাখ টাকা দেওয়া হয় তারপরও তার মুখ থেকে মিথ্যা বের হবে না। এটাই আমার বাবার আদর্শ। জীবন ও জীবিকার তাগিদে আমার বাবাকে বহু পেশার সাথে জড়িত হতে হয়েছে। দাদা বেচে থাকাকালীন বাবা চিংড়ি মাছের পোনার ব্যবসা করতে গিয়ে মোটা অংকের টাকা লস করছেন দাদাই তার বেশিরভাগ যোগান দিয়েছিল তখন। পরবর্তীতে দাদা মারা যাওয়ায় চাচারা বাকি সম্পত্তি জালিয়াতি করে তাদের নামে করে নেয়! আমার বড় চাচা একজন মুক্তিযোদ্ধা সরকার থেকে বাড়ি ভাতা সবই পাচ্ছে কিন্তুুু আমাদের হক থেকে বঞ্চিত করেছেন।
বাবা সিজনাল ফলের ব্যবসা করতো, দেখা যেতো ট্রাক ভরে ভরে ফল আনতো বিক্রিও করতেন ভালো। সিজন শেষে আড়তদার রা টাকার জন্য বাসায় আসতো। তখন জানতাম কতটাকা লস করেছেন। তারপরও ব্যবসা ছাড়তেননা বাবা। এর জন্যই ব্যবসার প্রতি এক প্রকার ঘুনা জন্মেছিল মনে। যে আর যাই করি ব্যবসা করবোনা কখনো। তবে চাকরি ছাড়ার পর সেই ব্যবসা-ই করার স্বীদ্ধান্ত নেই।
আমার মা আমার সবচেয়ে প্রিয় আমার পরিবারের, যেহেতু তারা সেহেতু তাদের দায়িত্বটাও বেশি। মা হাজারো কষ্ট থেকে আমাদেরকে হাসি খুশি রাখার চেষ্টা করতেন সব সময়। দেখা যেত বাবা অনেক সময় ঠিকমত বাজার ও করতেন না, সিজন ছাড়া যে সময়টা ঐ সময়টা এমন হতো। মা না খেয়ে থেকেও আমাদেরকে খাইয়েছেন। নিজেরা কষ্ট করতেন তবুও আমাদের কষ্ট পেটে দিতেন না। এদের ঋণ শোধ করি বার মতো না। মা বাবার ঋন কখনোই শোধ করা যায়না!
আমার ভাই পড়াশোনা করতে চাইতো না! ছোট ভাইকে বহু স্কুল মাদ্রাসায় ভর্তি করানো হয় কিন্তু সে পড়াশোনার করতে আগ্রহী ছিল না! এক পর্যায়ে বাবার পক্ষে পরিবার চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়ে উঠে না। তখন নিজের থেকে কাজ করতে শুরু করি। যখন যে কাজ পেয়েছি। এভাবেই কাজ পড়াশোনা করে দিন কেটেছে ২০০৯ এ চাকরি পাওয়া পর্যন্ত।
আমার মা একজন সহজ সরল মানুষ। এমন মা পৃথিবীতে আর হয় না। মা আমার বেঁচে থাকার অক্সিজেন। কখনো ক্লান্ত হয়ে বিরক্ত হয়ে আমাদের ছেড়ে যাননি। ছিলে না থাকার জন্য তেমন ঘর। আমাদের বাড়িটা ছিলো গেলপাতার ছাউনি বাশের খুটি আর বাবার হাতে বোনা সুপারি গাছের বেড়া দিয়ে তৈরি অনেক সুন্দর ছিলো আমাদের বাড়িটা। আমার ঠিক মনে আছে বাবার সাথে গিয়ে সুপারি গাছ কাটার সেই মুহুর্তের কথা। বৃষ্টির ঝড় বন্যা ভেতর থাকতে হয়েছে বৃষ্টিতে ভিজতে হয়েছে বহুবার।।। শহরে এসেও প্রথমে এমনি কুড়ে ঘরেই থেকেছি তারপর আজ ফ্লাট বাসায় থাকি। খুব সম্ভবতঃ ১৯৯২ সালে আমরা খুলনা শহরে চলে আসছি। আমার বাবার হাতের কারু কাজ অনেক ইউনিক আর সুন্দর। আমার স্কুল এর চারুকলা পরিক্ষার জন্য বাবা মাটির জিনিস বানিয়ে দিত আর সেটা স্কুলে নিলে সবাই বলতো আমি কিনে আনছি হয়তো কামার এর কাছ থেকে। আমার মায়ের জীবনটা কেটে গেছে কষ্টে দুঃখে। সুখের ছোঁয়া হয় তো বেশি দিন পাওয়া হয়নি। একবার বাবার কাছে ঈদে শপিং করার জন্য টাকা চেয়েছিলাম বাবা বলেছিল তিনি নিজে গিয়ে কিনে দিবেন আমি বলেছিলাম না আমি একা কিনবো বাবা দেয়নি বলে টানা ৭ টা বছর আর ঈদে শপিং করিনি আমি। তবে চাঁদ রাতে মার্কটে যাওয়া বাদ ছিলোনা সারা রাত মার্কেট এ ঘোরা আর কয়েকবার কয়েকটা রেস্টুরেন্টে খাওয়াই ছিল সব থেকে মজার। তবে এখন আর নিজের জন্য কিছু কেনার থেকে অন্যদের জন্য কিছু কিনতে পারলে শান্তি পাই।
বাবা সবাই কে দিয়ে নিজে কিছুই কিনতোনা সেই সামর্থ্য টুকু ছিলনা। তারপর বাবা কোন অসৎ উপায় অবলম্বন করেননি। সৎ পথে করিও ভ্রমন যদিও হয় একটু দেরি। বাবা এটাই আমাদের বুঝিয়েছেন।
বর্তমানে পারিবারিক অবস্থান
প্রথমেই আলহামদুলিল্লাহ......
একটি পরিবারে যা যা প্রয়োজন সেটা হয়তো এখনো তৈরি করতে পারিনি আমি। সামনে কিছুদিনের ভেতর বাবা মা কে ঢাকা নিয়ে আসবো আমার কাছে। গত ৭ই নভেম্বর আমি দ্বিতীয়বার বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছি। সকলেই আমাদের জন্য দোয়া করবেন।এখন যে এই পর্যায়ে এসেছি সেটা হয়তো কিছু মানুষের কাছে স্বপ্নের মত! মহান আল্লাহ আমাকে যে অবস্থানে রেখেছেন আলহামদুলিল্লাহ।
এত কিছুর পর হয়তো বলতে পারেন ভালো থাকিস কিভাবে?
এক কথায় বলি...
এই কথা গুলো মনে রাখি না!
জন্ম হোক যথা তথা কর্ম হোক ভালো। সর্বদাই ভালো মানুষ হয়ে যেন থাকতে পারি সেই প্রত্যাশায়।
"আমার স্বপ্ন ও আগামী ২০ বছরের পরিকল্পনা"
জীবনে স্বপ্ন আমার অনেক বড় যেতে হবে বহুদূর দিতে হবে অনেকটা পথ পাড়ি, কখনো হাসবো নয়তো কখনও বা কাদবো, থেমে যাওয়া যাবেনা।
ছোট্ট বেলা থেকেই চাকরি প্রতি তেমন আগ্রহ ছিলো না। কিন্তুু রাজনীতি ভালো লাগতোনা বলে। তার কিছু কারন বলি। রাজনীতি যারা করেন তাদের বেশির ভাগই দেখা যায় প্রয়োজনে ব্যবহার করে। আজ আমি কাউকে মারবো তো কাল কেউ আমাকে মারবে এমনটাই দেখে আসছি। যদিও সবাই এমন না বা সবার সাথে এমন হয় এমনটাও নয়। তখন মা কে বলেছিলাম মা আমি ২ টাকা বেতনের চাকরি করে খাবো তাও রাজনীতির সাথে আমি নাই। নিজে কিছু করার চিন্তা থেকে আজ আমার এই কোম্পানির যাত্রা শুরু হয়। আমি আমার প্রতিষ্ঠান কে গ্রুপ অব কোম্পানি রুপান্তর করতে চাই। ইন্টেরিয়র এক্সটেরিয়র কনস্ট্রাকশন, হলো ব্লক ফ্যাক্টরি এমন আরো বড় বড় কোম্পানি করবো ইনশাআল্লাহ। এবং আমার লক্ষ্য ৬৪ জেলায় অসংখ্য সেলস অফিস আর ফ্যাক্টরি হবে আমার। আমি চাই হাজারো মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে। গরিব অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে। এবং দেশের জন্য কিছু করে যেতে। পরিবারের জন্য এমন কিছু করতে পারা যেটা দিয়ে তারা আলোর মূখ দেখতে পারবে। বাবা মাকে হজ্ব করানো। এবং বর্তমানে আমার নতুন অফিস টা খুব সুন্দর করে তৈরি করা। পরবর্তী তে সেটিকে আরো বিশাল আকারে তৈরি করা। নিজের একটা স্থায়ী ঠিকানা নতুন করে তৈরি করতে চাই। আল্লহ যদি সহয় হন তাহলে একটা হাসপাতাল করার ইচ্ছা আছে। দেখছি নতুন নতুন স্বপ্ন। মনে পড়ে গেল স্যারের স্লোগানের কথা,সময় নিন সময় দিন সময় বদলে দেবে সবকিছু।
নিজের বলার মত গল্প ফাউন্ডেশনে যুক্ত হওয়ার মুহূর্ত। আমি স্যারের অনেক ভিডিও দেখেছি এবং তার লেখাগুলো পড়েছি সেই থেকেই অনুপ্রেরণা এই কারনেই নিজের মত একটা গল্প ফাউন্ডেশনে যুক্ত হওয়া।
কিভাবে যুক্ত হলাম। কিভাবে জয়েন হতে হয় তা জানতাম না!
প্রথমে গ্রুপ এ নক দেই অনেকেই সাড়া দেয় কোন এক ভাইয়ের সাহায্যে আমি রেজিষ্ট্রেশন করি নাম ঠিক মনে নেই ভাইয়ের। আমাকে কোর ভলেন্টিয়ারর ও মডারেটর Ismat Hasan ভাই, ঢাকা জেলা এম্বাসেডর Hazrat Ali ভাই ওয়ারি জোন মেসেঞ্জার গ্রুপ এ পরিচয় করিয়ে দেন সবার সাথে। আমাদের উপজেলা এম্বাসেডর খুলনা Md Mehedi Hasan ভাই আমাকে নিজ জেলা মেসেঞ্জার গ্রুপে এড করে নেন এবং দিক নির্দেশনাগুলো বুঝিয়ে দেন।
তারপর নিয়মিত যখন সেশন ক্লাসে যুক্ত হওয়ার চেষ্টা করি। তবে হয়ে ওঠেনা আমার কাজের জন্য। দেখা যখন ক্লাস শুরু হয় আমি তকন গাড়িতে বা অফিস এর কাজে ব্যস্ত। তবে তখন থেকে গ্রুপের প্রতি,সেশন চর্চার প্রতি ভালোবাসা তৈরি হয়। আমি ক্লাস এ নিয়মিত না হলেও সেশনগুলো পড়ে নেই প্রতিদিনই। চেষ্টা করে যাচ্ছি আগামীতে বিরতিহীন ভাবে টানা লেগে থাকার যা আজও চলমান এবং থাকবে ইনশাআল্লাহ।
"গ্রুপ থেকে প্রাপ্তি"
গ্রুপ থেকে প্রাপ্তি আমার অনেক কিছু যা আসলে ভাষার মাধ্যমে সবটুকু ফুটিয়ে তোলা সম্ভব নয়। অনেকগুলো ভালো মানুষের সান্নিধ্য পেয়েছি। প্ল্যাটফর্মে যুক্ত হবার পর থেকে সেশন পাঠ করে যেভাবে অনুপ্রাণিত হয়েছি উৎসাহ পেয়েছি তার সাথে সাথে পেয়েছি সেশন চর্চা ক্লাসে যুক্ত হয়ে অনেকের ভালোবাসা, অনুপ্রেরণা, উৎসাহ। আমাকে অনেক সাহায্য করেছেন যাদের কথা না বললেই নয়, কোর ভলেন্টিয়ার Ismat Hasan ভাই,, ঢাকা জেলা এম্বাসাডর Hazrat Ali ভাই, ঢাকা জেলা এম্বাসাডর Tanzila Zannat Suchana আপু, সুত্রাপুর থানা এম্বাসেডর Habibullah Mesbah ভাই, ডেমরা থানা এম্বাসেডর MD Soliman Mia ভাই আমাকে অনেক সাহায্য করেছেন এদের প্রতি অনেক বেশি কৃতজ্ঞতা জানাই। তারা আমাকে অনেক সাহায্য সহযোগিতা করে আসছেন ।
" এক কথায় প্রকাশ "
কেন প্রিয় স্যারের ছায়ায় আগে আসলাম না।"
" আমার স্লোগান "
জন্মিলে মরিতে হবে এ বাণী চির সত্য
জীবনে এমন কিছু যা থাকিবে স্মরণীয়।
আমি পারি আমিই করে দেখাবো।
সময় একটু লাগে লাগুক।
আবেগ প্রকাশ করতে গিয়ে হয়তো একটু বেশি লিখে ফেলছি। আসলে জীবনের গল্প লিখে শেষ করা যাবে না। যারা এতক্ষন ধৈর্য্য সহকারে আমার গল্পটুকু পড়লেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি এবং সবার জন্য মহান আল্লাহর কাছে দোয়া করছি। আল্লাহ প্রত্যেককে ভালো রাখুক সুস্থ রাখুক। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন।
স্ট্যাটাস অব দ্যা ডে-৯৮২
তারিখ-০৫-০৬-২০২৪ইং
আমি.....
মোঃ ইমরান শেখ আকাশ
ব্যাচ নং -২২
রেজিষ্ট্রেশন নং - ১১৭৬৯৪
নিজ জেলাঃ খুলনা
উপজেলাঃ সোনাডাঙা
বর্তমান অবস্থানঃ যাত্রাবাড়ী থানা, ঢাকা ওয়ারী জোন।